http://www.charpoka.org/2017/07/17/bangladesh-64-districts-naming-history/
Saturday, 31 March 2018
বিশ্বাসের কোন হরমোন নেই... বিশ্বাসের হরমোন ; ভালবাসা।
এইইই তোমার ফোন রাতে ওয়েটিং কেন ?'
একশজন মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেল প্রায় ৯৭ জন তাদের সম্পর্কে এই ইস্যু নিয়ে ঝগড়া করেছে।
আমি খুব অবাক হই। আশ্চর্য হই।
আমি ধরেই নিলাম তোমার প্রেমিকা রাতে তার কোন ছেলে বন্ধুর সাথে কথা বলছে। ব্যাপারটা দোষের কেন হবে ?
একটা ছেলে এবং একটা মেয়ে যদি আসলেই বন্ধু হয় তারা কি মাঝে মাঝে রাতে কথা বলতে পারে না ??
তুমি কি কখনো বল নি ??
......একজন মানুষের প্রতি একজন মানুষের এইটুকু রেস্পেক্ট থাকবে না অথচ দিনের পর দিন সম্পর্কের সীল লাগিয়ে ঘুরবে !
ব্যাপারটা হাস্যকর এবং লজ্জাকর।
তার ফোন রাতে ওয়েটিং থাকার মানে যদি এই হয়- সে অন্য কারো সাথে লাইলি মজনুর গপ করতেছে তাহলে তার সাথে ঝুলে থাকার কোন দরকার আছে ???
এত খাটাশ কেন আমরা ?
হয় তাকে পুরোপুরি বিশ্বাস কর , না হয় পুরোপুরি অবিশ্বাস। এখানে মাঝামাঝির কোন স্থান নেই।
......কয়েকজনকে এই কথা বলার পর তারা জানাল , তারা বিশ্বাস করে তাদের কাছের মানুষ তাদের সাথে প্রতারণা করছে না। তবে যদি বিপরীত লিঙ্গ কারো সাথে কথা বলে তাহলে হয়ত তারা দুর্বল হয়ে যাবে...
তাই বাড়তি সতর্ক হিসেবে এই ব্যাবস্থা !!!
আমি আশ্চর্য হই ! যে মানুষ কারো সাথে দুই দিন কথা বলার পর তার প্রতি ঝুঁকে যাবে... সেই মানুষটার সাথে থাকার কোন দরকার আছে কী ??
এত খাটাশ কেন আমরা ?
......যে নষ্ট তাকে তুমি পাহারা দিয়ে ঠিক করতে পারবে না। সে প্রচুর মিথ্যা কথা বলবে। অন্য সিম ইউজ করবে।
এটা কোন চোর পুলিশের খেলা না।
তোমাকে কেউ ঠকাতে চাইলে সে তোমাকে ঠকাবেই। এখন ব্যাপারটা তোমার হাতে...
বিশ্বাস করে ঠকতে চাও ? নাকি অবিশ্বাস করে... !!
প্রেমে পড়ার ব্যাপারটিকে আমরা ডোপামিন ,সেরোটোনিন ইত্যাদি হরমোন দিয়ে একটা সংজ্ঞা দাড় করিয়ে ফেলি।
বিশ্বাসের কোন হরমোন নেই... বিশ্বাসের হরমোন ; ভালবাসা।
একশজন মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেল প্রায় ৯৭ জন তাদের সম্পর্কে এই ইস্যু নিয়ে ঝগড়া করেছে।
আমি খুব অবাক হই। আশ্চর্য হই।
আমি ধরেই নিলাম তোমার প্রেমিকা রাতে তার কোন ছেলে বন্ধুর সাথে কথা বলছে। ব্যাপারটা দোষের কেন হবে ?
একটা ছেলে এবং একটা মেয়ে যদি আসলেই বন্ধু হয় তারা কি মাঝে মাঝে রাতে কথা বলতে পারে না ??
তুমি কি কখনো বল নি ??
......একজন মানুষের প্রতি একজন মানুষের এইটুকু রেস্পেক্ট থাকবে না অথচ দিনের পর দিন সম্পর্কের সীল লাগিয়ে ঘুরবে !
ব্যাপারটা হাস্যকর এবং লজ্জাকর।
তার ফোন রাতে ওয়েটিং থাকার মানে যদি এই হয়- সে অন্য কারো সাথে লাইলি মজনুর গপ করতেছে তাহলে তার সাথে ঝুলে থাকার কোন দরকার আছে ???
এত খাটাশ কেন আমরা ?
হয় তাকে পুরোপুরি বিশ্বাস কর , না হয় পুরোপুরি অবিশ্বাস। এখানে মাঝামাঝির কোন স্থান নেই।
......কয়েকজনকে এই কথা বলার পর তারা জানাল , তারা বিশ্বাস করে তাদের কাছের মানুষ তাদের সাথে প্রতারণা করছে না। তবে যদি বিপরীত লিঙ্গ কারো সাথে কথা বলে তাহলে হয়ত তারা দুর্বল হয়ে যাবে...
তাই বাড়তি সতর্ক হিসেবে এই ব্যাবস্থা !!!
আমি আশ্চর্য হই ! যে মানুষ কারো সাথে দুই দিন কথা বলার পর তার প্রতি ঝুঁকে যাবে... সেই মানুষটার সাথে থাকার কোন দরকার আছে কী ??
এত খাটাশ কেন আমরা ?
......যে নষ্ট তাকে তুমি পাহারা দিয়ে ঠিক করতে পারবে না। সে প্রচুর মিথ্যা কথা বলবে। অন্য সিম ইউজ করবে।
এটা কোন চোর পুলিশের খেলা না।
তোমাকে কেউ ঠকাতে চাইলে সে তোমাকে ঠকাবেই। এখন ব্যাপারটা তোমার হাতে...
বিশ্বাস করে ঠকতে চাও ? নাকি অবিশ্বাস করে... !!
প্রেমে পড়ার ব্যাপারটিকে আমরা ডোপামিন ,সেরোটোনিন ইত্যাদি হরমোন দিয়ে একটা সংজ্ঞা দাড় করিয়ে ফেলি।
বিশ্বাসের কোন হরমোন নেই... বিশ্বাসের হরমোন ; ভালবাসা।
Sunday, 18 March 2018
“লিখতে হলে পড়তে হবে”
হুমায়ুন
আহমেদ স্যারকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, ভালো লেখক হতে হলে কী প্রয়োজন?
এর উত্তরে
তিনি বলেছিলেন, ‘আসলে ভালো লেখক হতে
হলে আগে নিজেকে জানতে হবে। নিজের জ্ঞানের গভীরতা মাপতে শিখতে হবে। আমি কী লিখতে
চাই, কীভাবে লিখতে চাই, কোন ঢং-এ লেখাটা উপস্থাপন করবো,
পাঠকের ফিডব্যাক কী হতে পারে, সবকিছুই ভালো
লেখকের এক একটি উপকরণ। সমসাময়িক চাহিদা বোঝার মানসিকতা মাথায় রেখে লিখতে বসলে
এমনিতেই পাঠক যা চায় তা-ই লিখতে পারবে একজন লেখক। সবচেয়ে বড় কথা হলো, পাঠকের মাঝে নিজের নবজন্ম লেখাটার স্থান করে নেয়ার মধ্যেই কিন্তু লেখকের
তপস্যার ষোল আনা নির্ভর করে। এর ওপরেই লেখকের জনপ্রিয়তা কিংবা ভালো লেখক হওয়ার
রহস্য নির্ভরশীল। আরেকটা বিষয় মাথায় রাখবে হবে তা হলো অধ্যয়ন। চেষ্টা করতে হবে
দেশের বাইরের সাহিত্যিকদের গল্প, উপন্যাস, জীবনী পড়ার। দেশীয় সাহিত্য তো অবশ্যই পড়তে হবে।’
লিখতে হলে
পড়তে হবে—তরুণ লেখকদের প্রতি
প্রথমত এটিই আমার বলার কথা। মনে রাখতে হবে, লেখকের পথ বড়ই বিপদসংকুল। এটা সম্পূর্ণ
একার পথ। কঠিন এক সাধনা। কোনো লেখকের পক্ষে কি বলা সম্ভব, তিনি
কেন লেখক হয়েছেন? মাঝেমধ্যে আমার মনে হয়, লেখক না হয়ে উপায় ছিল না বলেই শেষ পর্যন্ত লেখক হয়েছি। খুব ছোটবেলা থেকে
কেন যে কবিতা, গল্প—এসব লিখতাম, আজ সেটা
স্মৃতি খুঁড়ে বের করা কঠিন। বলা যায়, যে পৃথিবীতে বেঁচে আছি
সেই পৃথিবীর একটা অর্থ ও ব্যাখ্যা তৈরি করতে পারি লেখার মাধ্যমে। এটি হয়তো
প্রত্যেক লেখকই পারেন। তবে এ ক্ষেত্রে একজন লেখকের সমাজ-রাষ্ট্র-পৃথিবী সম্পর্কে
সুনির্দিষ্ট একটা ধারণা থাকা জরুরি। লেখক হতে চাইলে তুমি যা কিছু করতে চাও,
তার সবই তোমাকে লেখার ভেতর দিয়ে প্রতিফলিত করতে হবে। ব্যক্তি ভেদে
একেকজন লেখকের লেখার কৌশল একেক রকম। আমি যেমন সাধারণত একটি লেখা একবারেই লিখে ফেলি।
কিন্তু লেখাটি লেখার আগে, তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা থাকে বিস্তর।
কীভাবে আগের লেখা থেকে নতুন লেখাকে আলাদা করা যায়—এই ভাবনাও থাকে। আমি
মনে করি, প্রত্যেক লেখকই তাঁর নিজস্ব জগৎ তৈরি করে নেন একান্ত তাঁর মতো করে।
-হাসান
আজিজুল হক
* আইসল্যান্ডে
একটা প্রবাদ আছে- ‘এড
গানগা মেড বক আই মাগানাম’।
এর মানে হলো, প্রত্যেকের পেটেই একটা করে বই আছে। প্রবাদটা আইসল্যান্ডের বেলায় খুবই
সত্য। দেশটিতে প্রত্যেক ১০জন লোকের মধ্যে একজনকে পাওয়া যাবেই যিনি বই প্রকাশ
করেছেন। আইসল্যান্ডের রাজধানী রেকজাভিকে লেখকদের এড়িয়ে চলাই মুশকিল। দেশটিতে লোকসংখ্যা
মোটে ৩ লাখ। কিন্তু লেখক অনেক, বইও অনেক। আর এখানকার লোকেরা
পৃথিবীর যে কোনো জায়গায় চাইতে বই পড়েনও বেশি।
* সম্পাদনা
ও পুন:লিখন : গল্প লেখা শেষ হবার পর আপনাকে বসতে হবে সম্পাদনার খুব ধারালো কাঁচি
নিয়ে। প্রথমে শুরু করতে হবে বানান, বিভক্তির ব্যবহার,
ক্রিয়াপদের ব্যবহার এসব ঠিকঠাক করার জন্য। বানান সমতার একটা বিষয়ও
আছে। রবীন্দ্রনাথের পাণ্ডুলিপির ভেতরের সম্পাদনার বহু চিহ্ন মিলে ছবির আকৃতি ধারন
করেছে। পাশ্চাত্যের পেশাদার লেখকরা একই লেখা কমপক্ষে তিন বার লেখেন। প্রথম খসড়াকে
তাঁরা অখাদ্য বিবেচনা করেন। এটা কাউকে দেখতে পর্যন্ত দেন না। প্রথম খসড়া বড়ো জোর
গল্পটা সম্পর্কে ধারনা সৃষ্টির কাজেই ব্যবহার করা হয়। দ্বিতীয় খসড়াও তাঁরা ত্রুটি সংশোধনের
জন্য সম্পাদনা করেন না। এটা ব্যবহার করা হয় কাঠামো বদল (যদি দরকার মনে করেন লেখক)
প্লট বা গল্পের সব চরিত্রের ঘষামাজা বা মূল বক্তব্যের সঠিক উপস্থাপন কৌশল ঠিক করার
জন্য। তৃতীয় খসড়ায় গিয়ে চূড়ান্ত ঘষা মাজা করে সম্পাদকের টেবিলে পাঠান (কেউ কেউ
পাঁচ/সাতবারও লেখেন একই লেখা)।
পাশ্চাত্যের
বড়ো প্রকাশকরা পেশাদার সম্পাদকদের মাধ্যমে সম্পাদনা ছাড়া কোন লেখা প্রকাশ করেন না।
এটা সুপারহিট লেখক বা নোবেল পুরস্কার জয়ী লেখকদের জন্যও প্রযোজ্য। নোবেল জয়ীদের
ক্ষেত্রে ঘষামাজার মাত্রা বাড়ে বই কমে না।
*স্টাইল
নিয়ে দুশ্চিন্তা নয়
একজন খাঁটি
লেখক তার লেখা নিয়েই চরম ব্যস্ত। স্টাইল নিয়ে মাথা ঘামানোর এত সময় কই! “আমি মনে করি কোন গল্প
নিজেই স্টাইল ধরে নেয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই। লেখককে এত দুশ্চিন্তা করতে নেই। স্টাইল
নিয়ে অতি দুশ্চিন্তার ফলে একটা মহামূল্যবান (!) ‘বাজে সাহিত্য’ জন্ম নিবে।
ঐগুলো আসলেই অর্থহীন। হয়তোবা দেখতে সুন্দর, শ্রুতিমধুর মনে
হবে কিন্তু ভেতরে মাল (সার) নেই।”
-নোবেল
বিজয়ী লেখক উইলিয়াম ফকনার
* আপনি
যদি আইডিয়া নোট করে রাখতে যান তাহলে আপনি হয়ত রাখতে পারবেন। কিন্তু আবেগ
বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বেন। আপনি হয়ে যাবেন একজন অবজার্ভার। তাই আমি বলি, ভুলে যান নোট রাখার কথা।যা গুরুত্বপূর্ণ তা এমনিতেই থাকবে। যা গুরুত্বপূর্ণ
না তা চলে যাবে।
আপনি যদি খুব
খুব গবেষনা করে, প্রচুর তথ্য উপাত্ত্ব দিয়ে বই লিখেন তাহলে নিশ্চিত আপনি হয়ে উঠবেন একজন বিরক্তিকর
লেখক আপনার পাঠকের কাছে। বই আপনি কত টা জানেন তা দেখাতে নয়। বই আপনার আত্নার
শক্তি দেখাতে।
-দি
আলকেমিস্টের লেখক পাওলো কোয়েলহো
*‘এটা আগেও বলেছি যে আমি
মনে করি লেখকরা চোর-বাটপার। অন্যদের থেকে প্রয়োজনমত সে চুরি করে নেয়। এটা অনেকটা
প্রকাশ্যে সততার সাথে করে থাকে। তবে এ চুরির মাহাত্ম্য হলো এই যে, সে ও তার চেয়ে
(যার থেকে চুরি করেছে) ভালো কিছু উপহার দিতে চায়। যাতে ভবিষ্যতে অন্য কোন নতুন চোর
তার থেকে চুরি করে তাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে।’’
-নোবেল
বিজয়ী লেখক উইলিয়াম ফকনার
* জীবনের
গভীর পর্যবেক্ষণ ভাল লেখালেখির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাহিরের ঘটনাবলি শুধু
দেখা ও শোনাই যথেষ্ট নয়, এগুলো তোমার মনোজগতে কি প্রভাব ফেলে
তাও খেয়াল করতে হবে। কি কারণে কি ধরনের প্রভাব ঘটে তা ব্যাখ্যা করার ক্ষমতাও থাকতে
হবে। তোমার আবেগের ও অনুভূতির পেছনের সুনির্দিষ্ট কারণ যদি ধরতে পারো এবং তোমার
গল্পে যথাযথভাবে ব্যবহার করতে পারো তাহলে পাঠকরাও তোমার আবেগ-অনুভূতিকে অনুভব করতে
পারবে।
-হেমিংওয়ে
* সকলেই
লেখেন না, কেউ কেউ শুধু বলেই যান, আর
অন্যে তা লেখে হয়ে যায় লেখক। কারও মুখের কথাই লেখা হয়ে যায় যদি তাতে প্রাণ
থাকে। “নেপোলিয়নের প্রতিটি
কথা এবং তার লেখার প্রতিটি লাইন পড়ার মতো, কারণ তাতে আছে ফ্রান্সের প্রাণ।” বলেছিলেন
অ্যামেরিকান প্রবন্ধকার র্যাল্ফ ওয়ালডো ইমারসন। এমন ব্যক্তিদেরকে মনে নিয়েই
হয়তো বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন বলেছিলেন, “হয় পড়ার মতো কিছু লেখো, নয়তো লেখার মতো কিছু করো।
*ওল্ড
ম্যান এন্ড দ্য সি-খ্যাত ঔপন্যাসিক হেমিংওয়ের ভাষ্যমতো, লেখক
হবার জন্য লেখার কোন প্রয়োজন নেই। টাইপরাইটারের সামনে গিয়ে রক্তক্ষরণ করলেই তা
হয়ে যাবে লেখা। লেখক হতে হলে ভাষাজ্ঞানের চেয়েও দরকারি বিষয় হলো একটি বিদগ্ধ
হৃদয়।
* বেকনের
ভাষায়, পড়া মানুষকে পরিপূর্ণ করে, সম্মেলন
মানুষকে প্রস্তুত করে আর লেখায় মানুষকে শুদ্ধ করে। কীভাবে একটি কবিতা শেষ হবে এই
ভেবে রবার্ট ফ্রস্ট কখনো কবিতা লিখতে শুরু করেন নি। লেখতে লেখতে তিনি আবিষ্কার
করেছিলেন নিজেকে।
কিন্তু কী লিখবো? আমার
ছাত্রজীবনে এ প্রশ্নের উত্তরে আমার প্রিয় শিক্ষক বলেছিলেন, “কিছু যে লেখতে পারছো
না, তা-ই লেখো।”
*ভালো
লেখার তিনটি গোপন রহস্য আছে, তুমি তা জানো? এক অধ্যাপক জিজ্ঞেস করলেন তার ছাত্রকে। ছাত্র তো নির্বাক। ভাবছে স্যারের
মনের কথা বলার জন্যই ভূমিকা করছেন। তাই ছাত্র অপেক্ষার দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে থাকলো
স্যারের দিকে। শেষে জিজ্ঞেসই করতে হলো, স্যার আপনি কি তা
জানেন? অন্য দিকে উদাসীন দৃষ্টি দিয়ে স্যার বললেন, নাহ, আমিও জানি না।
পরানের গহীন ভিতর - সৈয়দ শামসুল হক
১
জামার ভিতর থিকা যাদুমন্ত্রে বারায়
ডাহুক,
চুলের ভিতর থিকা আকবর বাদশার মোহর,
মানুষ বেবাক চুপ,
হাটবারে সকলে দেখুক
কেমন মোচর দিয়া টাকা নিয়া যায়
বাজিকর।
চক্ষের ভিতর থিকা সোহাগের পাখিরে
উড়াও,
বুকের ভিতর থিকা পিরীতের পুন্নিমার
চান,
নিজেই তাজ্জব তুমি একদিকে যাইবার চাও
অথচ আরেক দিকে খুব জোরে দেয় কেউ টান।
সে তোমার পাওনার এতটুকু পরোয়া করে না,
খেলা যে দেখায় তার দ্যাখানের ইচ্ছায়
দেখায়,
ডাহুক উড়াইয়া দিয়া তারপর আবার ধরে
না,
সোনার মোহর তার পড়ে থাকে পথের
ধুলায়।
এ বড় দারুণ বাজি,
তারে কই বড় বাজিকর
যে তার রুমাল নাড়ে পরানের গহীন
ভিতর।।
২
আন্ধার তোরঙ্গে তুমি সারাদিন কর কি
তালাশ?
মেঘের ভিতর তুমি দ্যাখ কোন পাখির
চক্কর?
এমন সরল পথ তবু ক্যান পাথরে টক্কর?
সোনার সংসার থুয়া পাথারের পরে কর বাস?
কি কামে তোমার মন লাগে না এ বাণিজ্যের
হাটে?
তোমার সাক্ষাৎ পাই যেইখানে দারুণ
বিরান,
ছায়া দিয়া ঘেরা আছে পরিস্কার তোমার
উঠান
অথচ বেবাক দেখি শোয়া আছে মরনের খাটে।
নিঝুম জঙ্গলে তুমি শুনছিলা ধনেশের ডাক?
হঠাৎ আছাড় দিয়া পড়ছিল রূপার বাসন?
জলপির গাছে এক কুড়ালের কোপের মতন
তাই কি তোমার দেহে ল্যাখা তিন বাইন
তালাক?
এমন বৃক্ষ কি নাই,
যার ডালে নাই কোন পরী?
এমন নদী কি নাই,
যার বুকে নাই কোন তরী?
৩
সে কোন বাটিতে কও দিয়াছিলা এমন চুমুক
নীল হয়া গ্যাছে ঠোঁট,
হাত পাও শরীল অবশ,
অথচ চাও না তুমি এই ব্যাধি কখনো
সারুক।
আমার জানতে সাধ,
ছিল কোন পাতার সে রস?
সে পাতা পানের পাতা মানুষের হিয়ার
আকার?
নাকি সে আমের পাতা বড় কচি ঠোঁটের মতন?
অথবা বটের পাতা অবিকল মুখের গড়ন?
তুঁতের পাতা কি তয়,
বিষনিম, নাকি ধুতুরার?
কতবার গেছি আমি গেরামের শ্যাষ
সীমানায়
আদাড় বাদার দিয়া অতিঘোর গহীন ভিতরে,
কত না গাছের পাতা কতবার দিয়াছি
জিহ্বায়,
এমন তো পড়ে নাই পানি এই পরানে,
শিকড়ে।
তয় কি অচিন বৃক্ষ তুমি সেই ভুবনে
আমার,
আমারে দিয়াছো ব্যাধি,
নিরাময় অসম্ভব যার?
৪
আমি কার কাছে গিয়া জিগামু সে দুঃখ
দ্যায় ক্যান,
ক্যান এত তপ্ত কথা কয়,
ক্যান পাশ ফিরা শোয়,
ঘরের বিছান নিয়া ক্যান অন্য ধানখ্যাত
রোয়?
অথচ বিয়ার আগে আমি তার আছিলাম ধ্যান।
আছিলাম ঘুমের ভিতরে তার য্যান জলপিপি,
বাঁশির লহরে ডোবা পরানের ঘাসের ভিতরে,
এখন শুকনা পাতা উঠানের পরে খেলা করে,
এখন সংসার ভরা ইন্দুরের বড় বড় ঢিপি।
মানুষ এমন ভাবে বদলায়া যায়,
ক্যান যায়?
পুন্নিমার চান হয় অমাবস্যা কিভাবে
আবার?
সাধের পিনিস ক্যান রঙচটা রদ্দুরে
শুকায়?
সিন্দুরমতির মেলা হয় ক্যান বিরান
পাথার?
মানুষ এমন তয়,
একবার পাইবার পর
নিতান্ত মাটির মনে হয় তার সোনার
মোহর।।
৫
তোমার দ্যাশের দিকে ইস্টিশানে গেলেই
তো গাড়ি
সকাল বিকাল আসে,
এক দন্ড খাড়ায়া চম্পট,
কত লোক কত কামে দূরে যায়,
ফিরা আসে বাড়ি-
আমার আসন নাই,
যাওনেরও দারুন সংকট।
আসুম? আসার মতো আমি কোনো ঘর দেখি নাই।
যামু যে?
কোথায় যামু, বদলায়া গ্যাছে যে বেবাক।
কেমন তাজ্জব সব পাল্টায়া যায় আমি
তাই
দেইখাছি চিরকাল। পরানের ভিতরে সুরাখ-
সেখানে কেবল এক ফরফর শব্দ শোনা যায়,
পাখিরা উড়াল দিয়া গ্যাছে গিয়া,
এখন বিরান,
এখন যতই আমি ছড়া দেই কালিজিরা ধান,
সে কি আর আঙিনায় ফিরা আসে?
আর কি সে খায়?
সকাল বিকাল গাড়ি,
চক্ষু আছে তাই চক্ষে পড়ে;
পলকে পলকে গাড়ি সারাদিন মনের ভিতরে।।
৬
তোমার খামাচির দাগ এখনো কি টকটাকা লাল,
এখনো জ্বলন তার চোৎরার পাতার লাহান।
শয়তান, দ্যাখো না করছ কি তুমি কি সোন্দর গাল,
না হয় দুপুর বেলা একবার দিছিলাম টান?
না হয় উঠানে ছিল লোকজন কামের মানুষ,
চুলায় আছিল ভাত,
পোলাপান পিছের বাগানে,
তোমারে পরান দিছি,
তাই বইলা দেই নাই হুঁশ,
আমি তো তোমারে নিতে চাই নাই ঘরের
বিছানে।
হ, জানি নিজের কাছে কোনো কথা থাকে না গোপন।
দিনের দুফুর বেলা যেই তুমি আসছিলা ঘরে
আতখা এমন মনে হইছিল- আন্ধার যেমন,
আতখা এমন ছায়া সোহাগের আর্শির ভিতরে।
আবার ডাকলে পরে কিছুতেই স্বীকার হমু
না।
বুকের পাষাণ নিয়া দিমু ডুব শীতল
যমুনা।।
৭
নদীর কিনারে গিয়া দেখি নাও নিয়া
গ্যাছে কেউ
অথচ এই তো বান্ধা আছিল সে বিকাল
বেলায়।
আমার অস্থির করে বুঝি না কে এমন
খেলায়,
আমার বেবাক নিয়া শান্তি নাই,
পাচে পাছে ফেউ।
পানির ভিতরে য্যান ঘুন্নি দিয়া
খিলখিল হাসে
যত চোর যুবতীরা,
গ্যারামের শ্যাষ সীমানায়
বটের বৈরাগী চুল,
ম্যাঘে চিল হারায় বারায়,
বুকের ভিতরে শিস দিয়া সন্ধা হাঁটে
আশেপাশে।
এখন কোথায় যাই,
এইখানে বড় সুনসান,
মানুষের দুঃখ আছে,
জগতের আছে কিনা জানি না-
জগৎ এমনভাবে হয়া যায় হঠাৎ অচিনা।
মনে হয় আমার থিকাও একা বৃক্ষের পরান,
আমার থিকাও দুঃখী যমুনার নদীর কিনার।
আমার তো গ্যাছে এক,
কত কোটি লক্ষ গ্যাছে তার।।
৮
আমারে তলব দিও দ্যাখো যদি দুঃখের কাফন
তোমারে পিন্ধায়া কেউ অন্যখানে যাইবার
চায়
মানুষ কি জানে ক্যান মোচড়ায় মানুষের
মন,
অহেতুক দুঃখ দিয়া কেউ ক্যান এত সুখ
পায়?
নদীরে জীবন কই,
সেই নদী জল্লাদের মতো
ক্যান শস্য বাড়িঘর জননীর শিশুরে
ডুবায়?
যে তারে পরান কই,
সেই ব্যাক্তি পাইকের মতো
আমার উঠানে ক্যান নিলামের ঢোলে বাড়ি
দ্যায়?
যে পারে উত্তর দিতে তার খোঁজে দিছি এ
জীবন,
দ্যাখা তার পাই নাই,
জানা নাই কি এর উত্তর।
জানে কেউ?
যে তুমি আমার সুখ, তুমিই কি পারো
আমারে না দুঃখ দিয়া?
একবার দেখি না কেমন?
কেমন না যায়া তুমি পারো দেখি অপরের
ঘর?-
অপর সন্ধান করে চিরকাল অন্য ঘর কারো।।
৯
একবার চাই এক চিক্কুর দিবার,
দিমু তয়?
জিগাই কিসের সুখে দুঃখ নিয়া তুমি কর
ঘর?
আঙিনার পাড়ে ফুলগাছ দিলে কি সোন্দর
হয়,
দুঃখের কুসুম ঘিরা থাকে যার,
জীয়ন্তে কবর।
পাথারে বৃক্ষের তরে ঘন ছায়া জুড়ায়
পরান,
গাঙের ভিতরে মাছ সারাদিন সাঁতরায়
সুখে,
বাসরের পরে ছায়া য্যান দেহে গোক্ষুর
জড়ান,
উদাস সংসারে ব্যথা সারাদিন ঘাই দেয়
বুকে।
তবুও সংসার নিয়া তারে নিয়া তুমি কি
পাগল,
তোলো লালশাক মাঠে,
ফসফস কোটো পুঁটিমাছ,
সাধের ব্যাঞ্জন করো,
রান্ধো ক্ষীর পুড়ায়া আঞ্চল,
বিকাল বেলায় কর কুঙ্কুমের ফোঁটা
দিয়া সাজ।
ইচ্ছা করে টান দিয়া নিয়া যাই তোমারে
রান্ধুনি,
তোমার সুতায় আমি একখান নীল শাড়ি
বুনি।।
১০
কে য্যান কানতে আছে- তার শব্দ পাওয়া
যায় কানে,
নদীও শুকায়া যায়,
আকালের বাতাস ফোঁপায়,
মানুষেরা বাড়িঘর বানায় না আর এই
খানে,
গোক্ষুর লতায়া ওঠে যুবতীর চুলের
খোঁপায়।
বুকের ভিতর থিকা লাফ দিয়া ওঠে যে
চিক্কুর,
আমি তার সাথে দেই শিমুলের ফুলের তুলনা,
নিথর দুফুর বেলা,
মরা পাখি, রবি কি নিষ্ঠুর,
আগুন লাগায়া দিবে,
হবে খাক, তারি এ সূচনা।
অথচ আমারে কও একদিন এরও শ্যাষ আছে-
আষাঢ়ের পুন্নিমার আশা আর এ দ্যাশে
করি না,
চক্ষু যে খাবলা দিয়া খায় সেই পাখি
বসা গাছে,
অথচ খাড়ায়া থাকি,
এক পাও কোথাও নড়ি না।
সকল কলস আমি কালঘাটে শূণ্য দেইখাছি,
তারে না দেইখাছি তাই দ্যাখনের চক্ষু
দিতে রাজি।।
১১
কি আছে তোমার দ্যাশে?
নদী আছে? আছে নাকি ঘর?
ঘরের ভিতরে আছে পরানের নিকটে যে থাকে?
উত্তর সিথানে গাছ,
সেই গাছে পাখির কোটর
আছে নাকি?
পাখিরা কি মানুষের গলা নিয়া ডাকে?
যখন তোমার দ্যাখা জানা নাই পাবো কি
পাবো না,
যখন গাছের তলে এই দেহ দিবে কালঘুম,
যখন ফুরায়া যাবে জীবনে নীল শাড়ি
বোনা,
তখন কি তারা সব কয়া দিবে আগাম-নিগুম?
আমার তো দ্যাশ নাই,
নদী নাই, ঘর নাই, লোক,
আমার বিছানে নাই সোহাগের তাঁতের চাদর,
আমার বেড়ায় খালি ইন্দুরের বড় বর
ফোক,
আমার বেবাক ফুল কাফনের ইরানি আতর।
তোমার কি সাধ্য আছে নিয়া যাও এইখান
থিকা,
আমার জীবন নিয়া করো তুমি সাতনরী ছিকা?
১২
উঠানের সেই দিকে আন্ধারের ইয়া লম্বা
লাশ,
শিমের মাচার নিচে জোছনার সাপের ছলম,
পরীরা সন্ধান করে যুবতীর ফুলের কলম,
তারার ভিতরে এক ধুনকার ধুনায় কাপাশ,
আকাশে দোলায় কার বিবাহের রুপার বাসন,
গাবের বাবরি চুল আলখেল্লা পরা বয়াতির,
গাভির ওলান দিয়া ক্ষীণ ধারে পড়তাছে
ক্ষীর,
দুই গাঙ্গ এক হয়া যাইতাছে- কান্দন,
হাসন।
একবার আসবা না?-
তোমারেও ডাক দিতে আছে
যে তুমি দুঃখের দিকে একা একা যোজন
গিয়াছো?
একবার দেখবা না তোমারেও ডাক দিতে আছে
যে তুমি আঘাত নিয়া সারাদিন কি তফাত
আছো?
যে নাই সে নাই সই,
তাই সই, যা আছে তা আছে,
এমন পুন্নিমা আইজ,
কোন দুঃখে দুয়ার দিয়াছো?
১৩
তোমার বিয়ার দিন মনে হইল,
সত্য নিও মনে,
এত বড় এত গোল কোনোদিন দেখি নাই চান।
তুলার মতন ফুল,
রাণী য্যান দরবারে বসা,
নদীর গহীন তলে জোছনায় দিয়া সে
প্রাসাদ।
পাথারে নিরালা গাছ আলগোছে একখানা হাত
আমার আন্ধার পিঠে দিয়া কয়,
'তোমারে সহসা
দেখাই কিভবে সব মানুষের নিজের বানান,
পরীর সাক্ষাৎ নাই গেরস্তের বাড়ির
পিছনে।'
দিঘল নায়ের মতো দুঃখ এক নদী দিয়া
যায়-
মাঝি নাই,
ছই নাই, নাই কোনো কেরায়া কি লোক।
না হয় অনেকে কয়- এক গেলে অন্য আর
আসে,
অন্যের মধ্যে কি সেই পরানের এক পাওয়া
যায়?-
তাই না সচ্ছল দ্যাশ অথচ কি বিরান
সড়ক।
মানুষ বোঝে না বইলা পুন্নিমার চান এত
হাসে।।
১৪
কি কামে মানুষ দ্যাখে মানুষের বুকের
ভিতরে
নীল এক আসমান- তার তলে যমুনার ঢল,
যখন সে দেখে তার পরানের গহীন শিকড়ে
এমন কঠিন টান আচানক পড়ে সে চঞ্চল?
কিসের সন্ধান করে মানুষের ভিতরে মানুষ?
এমন কি কথা আছে কারো কাছে না কইলে নাই?
সুখের সকল দানা কি কামে যে হইয়া যায়
তুষ?
জানি নাই,
বুঝি নাই, যমুনারও বুঝি তল নাই।
তয় কি বৃক্ষের কাছে যামু আমি?
তাই যাই তয়?
বনের পশুর কাছে জোড়া জোড়া আছে যে
গহীনে?
যা পারে জবাব দিতে,
গিয়া দেখি শূণ্য তার পাড়া,
একবার নিয়া আসে আকালের কঠিন সময়,
আবার ভাসায় ঢলে খ্যাতমাঠ শুকনার দিনে,
আমার আন্ধার নিয়া দেয় না সে একটাও
তারা।
১৫
আমারে সোন্দর তুমি কও নাই কোনো একদিন,
আমার হাতের পিঠা কও নাই কি রকম মিঠা,
সেই তুমি তোমারেই দিছি আমি যুবতীর
চিন-
চোখ-কানা দেখ নাই বিছানায় আছে
লাল-ছিটা?
তয় কি তোমারে আমি ফাঁকি দিয়া পিছন
বাড়িতে
যামু তার কাছে কও আমারে যে দিতে যায়
পান?
অথবা জিগার ডালে ফাঁসি নিয়া নিজের
শাড়িতে
ভূত হয়া তোমার গামছায় দিমু আন্ধারে
টান?
তখন আমারে তুমি দেখি হেলা করো কি রকম,
শরীল পাথর হয়া যায় কি না পানের
ছোবলে,
আমারে হারায়া দেখি জমিহারা চাষী হও
কি না?
এমন দেখতে বড় সাধ হয় আল্লার কসম,
দেখার বাসনা করে কালপোকা তোমার ফসলে,
অথচ ঘরেই থাকি,
পোড়া ঘরে থাকতে পারি না।।
১৬
যমুনার পারে আসলে তার কথা খালি মনে
হয়,
এমন পরান পড়ে- সব কিছু বিকাল-বিকাল,
লোকের চেহারা দেখি,
হাত নাড়ে, নাড়ে তারা পাও,
কথা কয়,
তাও বোঝা যায় না যে কি কয় কি কয়।
চক্ষের ভিতরে নাচে হাটবারে বাঁওহাতি
খাল,
নায়ের উপরে দাগ- একদিন রাখছিল পাও।
জলে ভেঁজা,
কত বর্ষা গ্রীষ্মকাল গ্যাছে তারপর,
কতবার নাও নিয়া পাড়ি দিছি এ কুল ও
কুল,
তাও সেই পাড় আমি চিনি নাই,
দেখি নাই গাঙ্গে।
বুকের ভিতরে ঢেলা সারাদিন কিষানেরা
ভাঙ্গে,
রাখাল নষ্টামি করে,
পড়ে লাল শিমুলের ফুল,
জলের ভিতরে নড়ে মনে বান্ধা আছিল যে
ঘরে।
কইছিল সে আমারে- সেই পাড়ে নিবা না
আমারে?
কোন পাড়?
ইচ্ছা তার আছিল সে যায় কোন পাড়ে?
১৭
এমন অদ্ভুতভাবে কথা কয়া ওঠে কে,
আন্ধারে?-
য্যান এক উত্তরের ধলাহাঁস দক্ষিণের
টানে
যাইতে যাইতে শ্যাষে শুকনা এক নদীর
কিনারে
ডাক দিয়া ওঠে,
‘আগো, চেনা কেউ আছো
কোনোখানে?’
আমি তো নিরালা মনে আছিলাম আমার সংসারে,
তার সেই ডাক,
সেই কান্দনের আওয়াজটা কানে
যাইতেই দেখি য্যান একা আমি চৈতের
পাথারে-
আমারে আমার সব নিদারুণ তীর হয়া হানে।
আমি তা্রে কি দিব উত্তর?
তারে কোন কথা কই?
সে ক্যান আমারে ডাক দিয়া গেল,
বুঝিনা ইয়াও।
আমি কি করবার পারি?
কতটুকু ক্ষমতা আমার?
উপস্থিত মনে হয়,
তারে আমি ডাক দিয়া লই,
ঝাপাইয়া ছিনতাই করি যমুনার ছিপছিপা
নাও,
সকল ফালায়া দিয়া নিরুদ্দেশ সাথে যাই
তার।।
১৮
এ কেমন শব্দ,
এ কেমন কথার আদব?
কাতারে কাতার খাড়া,
আমি তার ভেদ বুঝি নাই।
নিজের চিন্তার পাখি উড়ায়া যে দিমু
কি তাজ্জব,
খানিক হুকুম মানে,
তারপর বেবাক নাজাই।
শব্দের ভিতর থিকা মনে হয় শুনি কার
স্বর,
একজন, দুইজন, দশজন, হাজার হাজার-
আমার মতন যারা ছিল এই মাটির উপর,
এখন কবরে গ্যাছে,
করি আমি তাদেরই বাজার।
এরেই বন্ধন কয়?
এর থিকা মুক্তি কারো নাই।
যখনি তোমার ভাষা আমি কই,
তুমি ওঠো কয়া,
আমার মূর্তির মুখ আলগোছে বদলায়া
দ্যাও।
যদিবা চেতনা পায়া কিছু করি হাতে লাগে
ছ্যাও।
আসলে তোমার মতো এতখানি কেউ না নিদয়া,
যার দ্যাশ তার দ্যাশে চলে তার নিজের
টাকাই।।
১৯
পথের উপরে এক বাজপড়া তালগাছ খাড়া,
পিছের জঙ্গল থিকা কুড়ালের শব্দ শোনা
যায়,
যমুনার জলে দ্যাখে নাও তার নিজের
চেহারা,
বাতাসের কোলে মাথা কুশালের ফসল ঘুমায়,
ধুলায় চক্কর দিয়া খেলা করে বিরান
পাথার,
তুলার অনেকগুলা ফুল আটকা জিগার আঠায়,
দমের ভিতরে থামা বুকরঙ্গি মাছের কাতার,
আতখা বেবাক য্যান গিয়া পড়ছে
অচিনঘাটায়।
আমিও সেবার এক সুনসানে গিয়া পড়ছিলাম-
য্যান সব টান দিয়া নিয়া গ্যাছে সে
কার বারুন,
যেইদিকে চাই দেখি ভয়ানক নিঝুম নিথর,
নিয়া গ্যাছে নাম ধাম আর ইচ্ছার
নায়ের বাদাম,
অঙ্গের কুসুম নিয়া খেলা করছে দুফর
দারুণ,
যেদিন ফালায়া গেল আমারে সে আমার
ভিতর।।
২০
কি কামে দুফর বেলা পাতাগুলা উড়ায়
বাতাস?
আবার সে কার স্বর মাঠাপাড়ে ফোঁপায়
এমন?
কি কামে আমার চক্ষে পড়ে খালি মানুষের
লাশ?
যা দ্যাখার দেইখাছি,
বাকি আছে আর কি দ্যাখন?
সময় দেখায়া গ্যাছে বাল্যকালে আমের
সুঘ্রাণে?
যৈবন অন্যের হাতে য্যান এক কাচের বাসন,
দুঃখের পাখিরে আমি দেইখাছি বিয়ার
বিহানে,
কিভাবে কালির লেখা হয়া যায় জলের
লিখন।
আমারে ছাড়ান দিয়া যায় না সে
যেখানেই যাই,
দ্যাশ কি বিদ্যাশ কও,
চিনা কিংবা অচিনাই হও,
দুঃখের বাদাম তোলা সেই এক নাও সব
গাঙ্গে।
পালায়া নিস্তার কই?
সবখানে সেই না শানাই।
যেইখানেই যাই গিয়া,
খাড়া দেখি সেই শও শও
পুয়ারন মিস্তিরি- তারা মনোযোগ দিয়া
সব ভাঙ্গে।।
২১
হাজার দক্ষিণ দিকে যাও তুমি গাঙ্গের
মোহানা
পাও যদি কইও আমারে। আমি না অনেক দিন
আমার যৈবন আমি মোহানার খোঁজে না দিলাম,
তাও তারে দেখি নাই,
শুনি আছে ধলা গাঙচিল,
মাছের পাহারা ঘেরা খিজিরের অতল
আস্তানা,
আছে তার ইশারায় আগুনের দেহ এক জ্বীন-
যদি ইচ্ছা করে তার অসম্ভব নাই কোন কাম,
যারে না পাইতে পারি তারো সাথে দিতে
পারে মিল।
তুমি যে মনের মতো ঘরে আছো এই কথা কও-
সেই ভাগ্য মনে হয় খিজিরের বিশেষ
অছিলা।
আমার হিসাবে কয়- মানুষের সাধ্য নাই
পায়।
যতই সাধনা কর,
পরানের যত কাছে রও
সে জন দুরেই থাকে,
তুমি থাকো যেখানে আছিলা।
আমার জানতে সাধ,
মোহানায় গ্যাছে কোন নায়।।
২২
এক্কেরে আওয়াজ নাই,
নদী খালি চাপড় দিতাছে
গেরামের পিঠে আর ফিসফাস কইতাছে,
‘ঘুম,
ঘুমারে এখনতরি সাতভাই পূর্বদিকে আছে।‘
এক ফোঁটা ঘুম যে আসে না তার আমি কি
করুম?
অখনো খেজুরগাছে টুপটুপ রস পড়তে আছে,
এত যে কান্দন আছে- তয় চক্ষু ভেজে না
কেমন?
ঘাটের যুগল নাও য্যান ঠোঁটে ঠোঁট
দিয়া আছে,
আমার দক্ষিণ পাশে সরে নাই চান্দের
গেরন।
আধান শীতলপাটি ভরা এক আমাবস্যা নিয়া
দেখি রোজ উত্তরের একদল ধলাহাঁস নামে,
বুকের ভিতরে চুপ,
তারপর আতখা উড়াল-
এ দ্যাশে মানুষ নাই,
অন্যখানে তাই যায় গিয়া।
এখানে কিসের বাড়ি?
এত দ্রব্য আসে কোন কামে?
কেউ না দেখুক,
তারা দেইখাছে দুঃখের কুড়াল।।
২৩
আমারে যেদিন তুমি ডাক দিলা তোমার
ভাষায়
মনে হইল এ কোন পাখির দ্যাশে গিয়া
পড়লাম,
এ কোন নদীর বুকে এতগুলা নায়ের বাদাম,
এত যে অচিন বৃক্ষ এতদিন আছিল কোথায়?
আমার সর্বাঙ্গে দেখি পাখিদের রাতির
পালক,
নায়ের ভিতর থিকা ডাক দ্যায় আমারে
ভুবন,
আমার শরীলে য্যান শুরু হয় বৃক্ষের
রোপণ,
আসলে ভাষাই হইল একমাত্র ভাবের পালক।
তাই আমি অন্যখানে বহুদিন ছিলাম যদিও,
যেদিন আমারে তুমি ডাক দিলা নিরালা
দুফর,
চক্ষের পলকে গেল পালটায়া পুরানা সে
ঘর,
তার সাথে এতকাল আছিল যে ভাবের সাথীও।
এখন আমার ঠোঁটে শুনি আমি অন্য এক স্বর,
ভাষাই আপন করে আর সেই ভাষা করে পর।।
২৪
আবার তোমার কোলে ফিরা যায় তোমার
সন্তান,
আবার তোমার কোলে,
খালি কোল, উথলায়া পড়ে
দুধের ঘেরানে ভরা,
জননী গো, পুন্নিমার চান-
আবার সে ঘরে ফিরা আইসাছে সারাদিন পরে।
আবার সে আইসাছে করালের ঘুম চক্ষে
নিয়া,
চক্ষের ভিতরে তার গেরেপ্তার বিহানের
সোনা,
তবনের নীল খোপে শিমুলের লাল রঙ নিয়া,
আবার সে আইসাছে,
জননী গো, তুমি কাইন্দো না।
তোমার সন্তান গ্যাছে জননী গো,
সে আমার না ভাই,
আমার দেহের থিকা একখানা কাটা গ্যাছে
হাত,
উঠানে খাড়ায়া আছি,
খুলবা না তোমার দুয়ার?
আমার মতন যারা হারায়াছে আইজ তার ভাই,
য্যান শিলাবিষ্টি শ্যাষে পরিস্কার
আকাশ হঠাৎ ,
হাজার হাজার তারা ঘিরা আছে পুন্নিমা
তোমার।।
২৫
কত না দুধের ক্ষীর খায়া গ্যাছে কালের
গোপাল,
কতবার কত রোয়া কারবালা খ্যাতের খরায়,
কন না রঙিলা নাও নিয়া গ্যাছে কাল
যমুনায়,
অঘোরে হারায়া গাভি ফেরে নাই নিজস্ব
রাখাল।
কত না পুকুর দিতে পারে নাই পানি
গ্রীষ্মকালে,
বাসকের ছাল কত ভালো করতে পারে নাই রোগ,
দেহের কত না রক্ত খায়া গ্যাছে কত
ছিনাজোঁক,
কুসুম উধাও হয়া গ্যাছে কত শিমুলের
ডালে।
তাই কি ছাড়ান দিমু বিহানের ধবল দোহান?
কামারের কাছে বান্ধা দিমু এই রূপার
লাঙ্গল?
আমার বৃক্ষেরে তাই দিতে কমু জহরের ফল?
বাদ দিয়া দিমু কও পরানের গহীন কথন?
আমার তিস্তারে দেখি,
সেও পোষ মানে না ভাটিতে,
কি তার উথাল নাচ গেরস্তের সমান
মাটিতে!
২৬
ক্যান তুই গিয়াছিলি?-
আমি তরে জিগামু অখন
চান্দের ভিতর ফের,
যেইখানে জটিলতা বাড়ে,
অশথ জড়ায়া থাকে নদী নিয়া জলের
কিনারে,
আমার গেরাম ঘিরা যেইখানে খালি পলায়ন-
মানুষের,
মানুষের, আর তর চক্ষের কাজল,
যেইখানে মেলা দেয় একখান সুনসান নাও,
যে নায়ে সোয়ার নাই,
‘কেডা যাও, কেডা
বায়া যাও?’
বেকল আছাড় দিয়া ওঠে কালা যমুনার জল?
কেউ নাই,
কেউ তর নাই, তুই নিজেই জানস,
তবু ক্যান গিয়াছিলি?
ক্যান তুই দিয়াছিলি ফাল?
কিসের কি বাদ্যে তর রক্ত করে উথাল
পাথাল
আমারে ক’
দেখি তুই? ক’না
দেখি, কি চিল মানস?
ল’যাই জলের
ধারে দ্যাখ ছায়া আমার কি তর?
মানুষে মানুষে নাই কোনো ভেদ দুঃখের
ভিতর।।
২৭
আউসের খ্যাতে মাঠে যুবতীরা দিতাছে
সাঁতার,
দ্যাখো না কেমন তারা চিতলের মতো খেলা
করে,
কি তারা তালাশ করে দিনমান নাগর ভাতার-
যারা ডুব দিয়া আছে এই ধান বানের
সাগরে;
বিছনের মতো পড়ে তারাবাজি চুমার চুমার,
কি ঘাই আতখা মারে খলবল এই হাসে তারা
একজন দুইজন সাতজন নাকি বেশুমার
বুকের ভিতরে ভাঙ্গে নিশীথের শরমের
পাড়া।
আমি যেই সেইখানে আচানক গিয়া পড়লাম
চক্ষের নিমেষে তারা নাই আর কোনোখানে
নাই,
আমি যেই সেইখানে তোমারেনি খোঁজ করলাম-
কিছু না দেইখা নিজে বেয়াকুফ বড়
শরমাই।
এই ছিল এই নাই,
কই গেল, কই যার তারা?
বেমালুম কই তুমি যাও গিয়া খা’বের
ইশারা?
২৮
ঝকঝক ঝকঝক সারাদিন করে আয়নাটা-
বুকে নাই ছবি নাই পড়ে নাই একখানা ছবি,
বেবাক একাকী য্যান সুনসান ইস্কুরুপে
আঁটা,
যা চাই তা নাই তয় চমৎকার আছে আর সবি।
আছে সবি আছে এক মইষের শিঙ্গের চিরুনি,
রুমাল, চুলের ফিতা জবজবা এখনোনি ত্যালে।
বিবাহের বাসরে শ্যাষ য্যান গেছে সে
ফিরুনি-
ফেরার আশাও নাই,
ফেরা নাই একবার গ্যালে।
গেছে তো আমারে যদি বেরহম নিয়া যায়
সাথে,
আমি তো এমন ঘরে বাস করি আশা করি নাই;
য্যান হাত দিয়া আছি ইন্দুরের বিষআলা
ভাতে,
তবু তো ধরে না বিষ মুখে তুলি যত
লোকমাই।
নিজেরও পড়ে না ছবিকাটা সেই আয়নায়,
সে নাই চেহারা নাই,
খালি বড় খালি তড়পায়।।
২৯
তোমারে যে ভালোবাসে এর থিকা আরো
পাঁচগুন
আল্লার কসম আমি দিমু তারে এই জামাখান,
আমার কলম আমি দিমু তারে,
শরীলের খুন
দোয়াত ভরায়া দিমু,
অনুরোধ খালি একখান-
সে য্যান আমার থিকা আরো ভালো পদ্য
লেখে আর
যাদুমন্ত্রে রূপার শিকল হাতে দিতে
পারে তার।
তোমারে যে ভালোবাসে এর থিকা আরো দশগুন
আল্লার কসম আমি দিমু তারে এই বাড়িখান,
আমার উঠান আমি দিমু তারে,
শীতের আগুন-
নিজেই সাজায়া দিমু,
অনুরোধ খালি একখান-
সে য্যান আমার থিকা আরো ভালো নিদ্রা
যায় আর
তারেই নিকটে পায় কথা যার নিকটে
থাকার।
নচেৎ নষ্টামি জানি,
যদি পাছ না ছাড়ে আমার,
গাঙ্গেতে চুবান দিয়া তারে আমি শুকাবো
আবার।।
৩০
আরে ও ইসের বেটি,
চুলে দিয়া শিমুলের ফুল
যাস কই, কই যাস? যুবকের মাঝখান দিয়া?
মানুষ গাঙ্গের মতো,
বানে ভাসে তারো দুই কুল-
সে পানি কাতান বড়,
খলবল রঙ তার সিয়া।
আরে থাম,
কই যাস? তবু যায় ঘুরনান দিয়া?
শিমুল যতই লাল সেই লাল তবু কিছু কম
যত লাল যেইখানে দেহ তর লুকায় শরম।
খাড়া না করুক দেখি একবার কেউ তরে
বিয়া।
বেবাক পানির টান সেইকালে নরোম সোঁতায়,
তখন পরীর রানী সেও কিনা অতি বাধ্য বশ,
তখন দেখিনা তুই আইলের বেড়া নি ভাঙ্গস,
তখন শরম দেখি থাকে তর কেমন কোথায়?
নষ্ট তর পায়ে পায়ে স্বন্নলতা
আনন্তের মূল,
দিবিনে তখন তুই সিঙ্গারের আসল মাশুল।।
৩১
কে করে পরশ তার জীবনের এত জটিলতা?
তোমার অধিক টান দেয় বৃক্ষ দেয়
বিষলতা;
একবার আমারে আছাড় দিয়া সোজা করে ফের,
আমারই মতন যারা বেশুমার সন্তান
মায়ের।
কিসে যে চালনা করে এই দেহ এই ভবিষ্যৎ-
কিছুই বুঝি না,
দেখি আচানক শেষ হয় পথ;
যে পথেই মেলা দেই সেই পথে ভয়ানক ভুত-
এ বড় কঠিন জাগা,
বসবাস বড়ই অদ্ভুত।
তয় কি ছাড়ান দিমু হাতে ধরা শেষ
রশিখান?
তয় কি পাথারে দিমু হাতে ধরা বেঘোরে
পরান?
নাকি তুমি একবার হাত দিয়া ডাক দিবা
কাছে
আমারেও আমার মতন যারা একা একা আছে,
সকলেরে একজোট কইরা নি তুলবা আবার?
তোমার নিকটে রাখি নিদানের এই দরবার।।
৩২
নিঝুম জঙ্গল দিয়া যাইতেই ধনেশের ডাক।
যেমন আতখা ভাঙ্গে কাঠুরার বুকের
কাছাড়
চক্ষের পলকে তুমি দেখা দিয়া করো
মেছমার;
রতির আগুনে সব দাউদাউ,
পরিণামে খাক
আমার এ দেহ বটে,
ভবিষ্যৎ পায় না নিস্তার;
সকল কিছুর পরে দ্যাও তুমি উড়ায়া
বাদাম,
তীরের মতন তারা ধায়া যায় কও কোন ধাম?
বরং তোমার থিকা দয়াবতী জোয়ার
নিস্তার।
তবুও আবার আমি ধনেশের মতো দিয়া ডাক
আবার পাথার বন পথ ঘাট বাজার সংসার
তালাশ করুম আর গাভীনের করুম সন্ধান,
আবার দেখুম আমি ছাই-পোকা মাজরার ঝাঁক
কিভাবে আমার খ্যাত করে সব শস্য ছারখার,
আবারো বুনুম আমি এই খ্যাতে কাউনের
ধান।।
৩৩
এমন বৃক্ষ কি নাই ডালে যার নাই কোন
পরী,
এমন নদী কি নাই জলে যার পড়ে না
চেহারা,
এমন যাত্রা কি নাই যাতে নাই পবনের তরী,
এমন ডুলি কি নাই যাতে নাই নিষেধের
ঘেরা,
এমন নারী কি নাই বুকে যার নাই
ভালোবাসা,
এমন পত্র কি নাই বাক্যে যার নাই
নিরাময়,
এমন শস্য কি নাই যার বীজ বোনে নাই
চাষা,
এমন মৃত্যু কি নাই যাতে নাই খোয়াবের
লয়?
এমন কি রূপ আছে রূপ যার গড়ে না কুমার,
এমন কি দেখা আছে দেখা যার চোখে না
কুলায়,
এমন কি কথা আছে কথা যার থাকে না
ধুলায়,
এমন কি নেশা আছে নেশা যার অধিক চুমার?
পরানে পরান যদি এই মতো হাজার সোয়াল
সারাদিন যমুনায় খলবল বিতল বোয়াল।।
Subscribe to:
Posts (Atom)
অভিশপ্ত রজনী
মৃত মেয়েটিকে ধর্ষণ করার সময় মেয়েটি যে জীবিত হয়ে ওঠে সেটা খেয়াল করেনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় কাব্য।ধবধবে সাদা চামড়ার মেয়েটিকে ভোগ করার...
-
একবার সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলি একটি স্টেশনারী দোকানে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, 'ডায়মন্ড বল পেন আছে?' সেলসম্যান মুখের উপ...
-
জন্মদিনে কেকের উপর মোমবাতি জ্বালানো একটি পুরোনো রীতি , যেটা শুরু হয়েছিল অনেক বছর আগে প্রাচীন গ্রীকে। তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী ,...