মাক্কী সূরা
ক্বোরআনের মাক্কী
সূরা বলতে মুহম্মদের [স.] হিজরতের পূর্বে
অবতীর্ণ সূরাগুলোকে বোঝানো
হয়। মুহাম্মদের [স.] হিজরতের সময় অর্থাৎ মদীনায় পৌঁছার পূর্ব
পর্যন্ত যা অবতীর্ণ হয়েছে তাও মাক্কী সূরা হিসেবে পরিগণিত হয়। তৎপরবর্তী সময়ে
অবতীর্ণ হওয়া সূরাসমূহ মাদানী সূরা হিসেবে
গণ্য।
মাক্কী সূরার সংখ্যা ও তালিকা
মাক্কী সূরার সংখ্যা মোট ৮৬
টি।
মাক্কী সূরার বৈশিষ্ট্য
২। মাক্কী সূরাসমূহে কালা كلا (কখনও না) শব্দটি আছে।
৩। ২২নং সূরা ব্যতীত মাক্কী সূরাসমূহে ياأيها الناس (হে মানবজাতি) কথাটি উল্লেখ আছে, কিন্তু يأيها اللذين آمنوا (হে মুমিনগণ) বাক্যাংশটি নেই।
৪। মাক্কী সূরাসমূহে তাওহীদ এবং রিসালাতের প্রতি আহবান
জানানো হয়েছে।
৫। মৃত্যুর পরবর্তী পুনরুত্থান, পার্থিব জীবনের সকল কৃতকর্মের হিসাব-নিকাশ মাক্কী সূরাসমূহে বর্ণিত
হয়েছে।
৬। মাক্কী সূরাসমূহে পূর্ববর্তী বাণীবাহক (নবী) ও
তাঁদের অবাধ্য অনুসারীগণের (উম্মতের) করুণ পরিণতির কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে।
৭। মক্কী সূরাগুলো আকারে ছোট হলেও অতীব
ভাবগাম্ভির্যপূর্ণ।
৮। মাক্কী সূরাসমূহে বিধর্মীদের (মুশরিকদের) রক্তপাত ও
হত্যাযজ্ঞের কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে।
৯। মাক্কী সূরাসমূহে অন্যায়ভাবে ইয়াতিমদের সম্পদ ভোগ, কন্যা-সন্তানদের জীবন্ত দাফন প্রভৃতি
কুপ্রথা ও কু-আচরণ সম্পর্কিত বিষয় বর্ণিত হয়েছে।
১০। মাক্কী সূরাসমূহে প্রসিদ্ধ বস্তুসমূহের নামে শপথের
মাধ্যমে উপস্থাপিত বিষয়ের প্রতি জোর দেয়া হয়েছে।
১১। মাক্কী সূরাসমূহে বহু দেবতায় বিশ্বাসীদের দাবীকে
মিথ্যা প্রতীয়মান করে আল্লাহ’র সাথে কারো শরীক নেই এবিষয়ে
বর্ণনা উপস্থাপিত হয়েছে।
১২। মাক্কী সূরাসমূহে বিভীষিকাময় কিয়ামত (পৃথিবীর শেষ
দিবস),
স্বর্গের (বেহেশতের) অনুপম শান্তি এবং নরকের (জাহান্নামের) কঠোর
শাস্তির বর্ণনা প্রাধান্য পেয়েছে।
মাদানী সূরা
কোরআনের মাদানী সূরা বলতে মুহম্মদের [স.] হিজরতের পরে অবতীর্ণ সূরাগুলোকে বোঝানো হয়। মুহাম্মদ
[স.] এর হিজরতের পরে অর্থাৎ মদীনায় আগমনের পর অবতীর্ণ
হওয়া সূরাসমূহ মাদানী সূরা হিসেবে গণ্য।
মাদানী সূরার সংখ্যা ও তালিকা
মাদানী সূরার সংখ্যা মোট ২৮ টি। মাদানী সূরাসমূহের তালিকা
নিম্নে দেয়া হলো:
মাদানী সূরার বৈশিষ্ট্য
১। মাদানী সূরায় ইবাদাত,
সামাজিক আচার-ব্যবহার, রীতিনীতি, পরস্পরের লেনদেন, হালাল-হারাম, উত্তরাধিকার আইন, জিহাদের ফযীলত, ব্যবসা-বাণিজ্য, পররাষ্ট্র নীতি, বিচার ব্যবস্থা, দন্ডবিধি, পারিবারিক,
আর্থ সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও সমষ্টিগত জীবনের
যাবতীয় সমাধানের উল্লেখ্য রয়েছে।
২। মাদানী সূরায় বিশেষভাবে
আহলে কিতাব তথা ইহুদি ও খ্রিস্টানদের প্রতি
ইসলাম গ্রহণের জন্য আহবান জানান হয়েছে।
৩। এতে আহলে কিতাবদের
সত্যবিমুখতার কথা এবং তাদের কিতাব বিকৃতি সাধনের কথা বর্ণনা করা হয়েছে।
৪। এতে মুনাফিকদের কপট আচরণের
কথা বর্ণনা করা হয়েছে এবং ইসলামের বিরুদ্ধে তাদের ষড়যন্ত্র উদঘাটন করা হয়েছে।
৫। মাদানী আয়াত ও সূরা দীর্ঘ। এতে শরীআতের বিধি-বিধানকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরা
হয়েছে।
No comments:
Post a Comment