Tuesday, 2 November 2021

বউ যখন অবাধ্য হবে তখন কী করা উচিত?

 আপনি গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বের হলেন। নিজেই গাড়ী চালান। বের হবার সময় বাড়ির গেটে একটা ধাক্কা লাগলো। কিছুদুর যাচ্ছেন, হটাত এক রিকশার পেছনে ধাক্কা লাগলো। অফিসের কাছে চলে এসেছেন, তখন লাইট-পোস্টে ধাক্কা লাগলো। অবশেষে, অফিসে ঢোকার সময়, গেটে একটা ধাক্কা লাগলো।

আপনি চিন্তা করছেন, কি একটা অপদার্থ গাড়ী !! অফিসে যেতেই চার-পাচবার ধাক্কা লাগে। আপনি চিন্তা করছেন, এই গাড়ি বদলাতে হবে। এমন ফালতু গাড়ি আর রাখা যাবে না।

গাড়ী কখনো অপদার্থ হয় না। অপদার্থ হয় ড্রাইভার। ঠিক তেমনই, বউ কখনো অবাধ্য হয় না। বউ অবাধ্য, এই অভিযোগ পাওয়া গেলে বুঝতে হবে, স্বামী তাকে নিয়োন্ত্রন করতে পারছে না। দোষ গাড়ীর নয়, দোষ ড্রাইভারের।

যেটা বলছি, সেটা বুঝতে কস্ট হলে, আপনার নিজের আভিজ্ঞতার সাথে মিলিয়ে দেখতে পারেন। বউ অবাধ্য, বউ কথা শোনে না, এসব অভিযোগ কার কাছ থেকে পাওয়া যায়? সব সময় এমন আভিযোগ পাবেন ভদ্র ছেলের কাছ থেকে। ভদ্র ছেলে, সবার সাথে ভালো ব্যাবহার করে, নিজের কাজ ঠিকভাবে করে, মেয়েদের দিকে তাকায় না। এমন ভদ্র ও ভালো ছেলেদের বউ অবাধ্য হয়। জীবনে কোনদিন শুনেছেন, কোন লুচ্চা বদমাইশের বউ অবাধ্য হয়? লুচ্চা বদমাইশের বউ অবাধ্য হয় না, কারন লুইচ্চা জানে, নারীকে কিভাবে নিয়োন্ত্রন করতে হয়।

নিয়োন্ত্রন জিনিসটা কি, সেটার খুব সহজ একটি উদাহরন দিব। আমার তিন বছরের ভাতিজা, অর্ধেক খাওয়া আইস্ক্রিম এর কাঠি ধরে বসে রয়েছে। আর খাবে না, ওটা ফেলেও দিবে না। গায়ে মেখে জামা কাপড় ময়লা করছে। তার হাত থেকে আইস্ক্রিমটা সরাতে গেলে চিৎকার করে। ওর মা অনেক চেষ্টা করেও ওটা হাত থেকে নিতে পারছে না।

তখন আমি ভাতিজার কাছে গেলাম। গিয়ে বললাম, দেখো তো আইস্ক্রিমটা ধুয়ে পরিস্কার করতে পারো কিনা। ভাতিজা অতি আগ্রহের সাথে পানির কলের নিচে তার আইস্ক্রিমটা ধরে রাখলো। খুব দ্রুত, তার আইস্ক্রিম গলে গেল, হাতে রইলো খালি কাঠি। এরপর, ভাতিজা যেই কাঠিটি ফেলে দিলো।

এখানে লক্ষ্যনীয় হল, তিন বছরের এই ভাতিজা মায়ের অবাধ্য। তার মা যেটা করতে বলেছে, সেটা সে করেনি। ওদিকে, আমি একটি কৌশল করেছি, যার ফলে সে খুশিমনে সেই কাজটি করেছে। ভাতিজা আর মায়ের অবাধ্য থাকলো না।

তিন বছরের বাচ্চার ঘটনা নিয়ে উদাহরন দিয়েছি। এই একই কৌশল ৩০ বছরের মানুষের উপরে কাজ করবে না। তবে, প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য আলাদা কৌশল আছে। ঠিক তেমনই, বউ যাতে খুশিমনে বাধ্য থাকে, সেই কৌশলও আছে। কোন কোন বিষয়ে বউ অবাধ্য হয়, সেই বিষয়ের প্রতিটির জন্য আলাদা কৌশল আছে। যে যত কৌশল করতে পারে, তার তত নিয়োন্ত্রন আছে, তার বউ তত বাধ্য।

দ্রস্টব্যঃ আপনি জানেন কিভাবে ফুটবলে গোল দিতে হয়। কিন্তু মাঠে নামিয়ে দিলে হয়তো গোল দিতে পারবেন না। ঠিক তেমনি, আমি এত লেকচার দিলেও, নিজে ভালোভাবে বউ নিয়োন্ত্রন করতে পারি না।

Sunday, 26 September 2021

বায়োডাটা, সিভি, রিজিউমে, প্রোফাইল ও পোর্টফোলিও-এর মধ্যে পার্থক্য কী?

বায়োডাটা, সিভি, রিজিউমে এই তিনটা প্রায় একই লাগে আমাদের শুনতে কিন্তু এদের মধ্যে আকাশ-পাতাল ফারাক আছে।

বায়োডাটা: মুলত, আপনার ব্যক্তিগত তথ্যের একটা বিবরনী, তবে বিস্তারিত আকারে। যেমন: আপনার বয়স, উচ্চতা, মা-বাবা কি করে, কয়জন ভাই-বোন; তারা কি করে বা করছে, আপনি কি করেন, লেখাপড়া কতদূর করেছেন ইত্যাদি। এর ব্যবহারও আপনার জীবনের ব্যক্তিগত কাজে। যেমন: বিয়ের সময় বর/কনে পক্ষকে আপনার বৃত্তান্ত দেখানোর প্রয়োজন পরে, তখন আমরা বায়োডাটা ব্যবহার করি।
সিভি: এর ব্যবহার হয় একাডেমিক কাজে। যদিও বাংলাদেশে গড়পড়তা চাকরির কাজেও রিজিউমেকে সিভি লিখে ভুল করে। কারিকুলাম ভিটা তথা সিভি হলো আপনার শিক্ষাজীবনের বিশদ বিবরনী এবং হয় ব্যবহার হয় যখন আপনি এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে যান কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি বা অন্য কোন ডিগ্রিতে এনরোল করার জন্য আবেদন করেন। ব্যক্তিগত তথ্য এখানে গুরুত্বপুর্ণ নয়।
রিজিউমে: চাকরি কিংবা প্রফেশনাল কাজের জন্য লাগে রিজিউমে। এখানে একাডেমিক তথ্যের পাশাপাশি কারিগরি দক্ষতা, কর্মস্থলে কাজ করার অভিজ্ঞতা, সহশিক্ষা কার্যক্রম জাতীয় তথ্যই এখানে মুখ্য। সিভির মতো রিজিউমে-ও ফরমাল ভাবে লিখতে হয়।

অন্যদিকে, প্রোফাইল আর পোর্টফোলিও অনেক সাংঘর্ষিক শোনায়।

প্রোফাইল: অনেকটা বায়োডাটার মতোই কিন্তু এটা লিখিত কিংবা অলিখিত যেকোনভাবেই থাকতে পারে। প্রোফাইল বলতে সাধারনত একজন ব্যক্তির অতীত সম্পর্কিত সংক্ষিপ্তাকারে জানা/দেওয়া তথ্যকে বুঝায়। বর্তমানে সোশ্যাল-মিডিয়ায় থাকা একজনের তথ্যকেও প্রোফাইল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
পোর্টফোলিও: ধরুন , আপনি একজন মাল্টি-ডায়মেনশনাল পারসন। আপনি একাধারে অনেক কিছু করেন। যেমন: আপনি ভিডিওগ্রাফি করেন আবার সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারও। কিংবা, আপনি একধারে পেপারের বিজনেস, এগ্রোফুডের বিজনেস এবং ইলেকট্রনিকসের বিজনেস পরিচালনা করেন। এক্ষত্রে আপনার এতগুলো কাজের বিষয়কে একজায়গা সমন্বয় করে রাখাই হলো পোর্টফোলিও।

Thursday, 23 September 2021

ক্যারিয়ার গঠন

 বর্তমান বিশ্বে আপনাকে টিকে থাকতে হলে প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ সাধ্য দিয়েই চেষ্টা করতে হবে। কীভাবে আপনি নিজেকে সফল করবেন এবং আপনাকে সফলতার যায়গায় দেখবেন, তার জন্য রয়েছে কিছু করণীয়। এগুলো মেনে চললে আপনি নিজেকে আপনার কাক্সিক্ষত জায়গায় দেখতে পাবেন।

লক্ষ্য নির্ধারণ করুন : স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নির্ধারণ করুন যা আপনার ক্যারিয়ারকে সামনে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে।

নিজের কাজগুলো পর্যালোচনা করুন, আপনি যেভাবে চাচ্ছেন সেভাবেই আপনার লক্ষ্যের দিকে আপনি এগোতে সক্ষম হচ্ছেন তো? যেভাবে চাচ্ছিলেন সেভাবে হচ্ছে না, তবে কোন কোন সমস্যার কারণে পিছিয়ে পড়ছেন খুঁজে বের করুন এবং সমাধান করার চেষ্টা করুন।

নিজেকে সামনে উপস্থাপন করুন : আপনি যদি শারীরিক অথবা মানসিকভাবে কিছুটা বিপর্যস্ত হয়েও থাকেন, চেষ্টা করুন সেই সমস্যাগুলো একপাশে সরিয়ে রেখে আপনার ক্যারিয়ার এবং কাজের প্রতি দৃষ্টি নিবন্ধ করতে। চেষ্টা করুন ক্যারিয়ারের প্রতি ফোকাসড হতে।

যত পারেন নিজের দক্ষতা বাড়ান : নিজের দক্ষতা ও জ্ঞান বাড়ানোর চেষ্টা করুন। বর্তমান সময়ে অন্যরাও কিন্তু নিজের দক্ষতা ও কোয়ালিটি বাড়ানোর চেষ্টা করছে।

সেখানে আপনি যদি নিজের দক্ষতা বাড়াতে না পারেন তাহলে তো অবশ্যই আপনি পিছিয়ে পড়বেন। অনেক বই পড়ার অভ্যাস করুন। সুযোগ পেলেই ইন্টারনেটে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ভিজিট করুন এতে আপনার জ্ঞান প্রসারিত হবে।

কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়ান : সারাদিন আপনি কী করবেন তার একটি তালিকা তৈরি করুন। এর মধ্যে কোন কাজগুলো বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা নির্বাচন করুন। জরুরি কাজগুলো আগে করার চেষ্টা করবেন। কম জরুরি কাজগুলো আস্তে আস্তে করলেও আপনার কোনো সমস্যা হবে না। যখন অনেকগুলো কাজ আপনার জরুরি হবে তখন কাজের একটি শিডিউল তৈরি করুন এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা শেষ করার চেষ্টা ও অভ্যাস করুন।

অসামাজিক হবেন না : সামাজিক কর্মকা-ে যোগদান করার অভ্যাস করুন। সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতেও নিজের অংশগ্রহণ বাড়াতে থাকুন, এতে অনেক নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাবেন।

এভাবে মানুষের সঙ্গে মেশার অভিজ্ঞতা হবে এবং আপনার নতুন নতুন ক্ষেত্রের যোগাযোগ বাড়বে। কে বলতে পারে, কখন কোন কানেকশন আপনার কাজে লেগে যাবে।

নিজের কর্ম ও গুণের প্রতি সজাগ হোন : এ পৃথিবীর কেউই পরিপূর্ণ নয়, প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু দুর্বলতা আছে। নিজেকে জানুন, কোন কোন কাজে আপনি বেশি সামর্থ্যবান আর কোন কোন কাজে আপনি দুর্বল জেনে নিন এবং দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করুন।

দুর্বলতা আমাদের সবারই আছে কিন্তু যে যতটা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করতে পারে, সে-ই তত বেশি সফল হতে পারে।

চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করুন : নতুন কোনো কাজকে এড়িয়ে যাবেন না, চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করুন। আপনার অব্যাহত চেষ্টা আপনাকে অন্য এক উচ্চতায় যেতে সাহায্য করবে। চ্যালেঞ্জ নিয়ে সফল হলে আপনার আত্মবিশ্বাস যেমন বেড়ে যাবে বহুগুণ, অন্যের কাছেও আপনার যোগ্যতা আপনি প্রমাণ করতে পারবেন।

যোগাযোগে দক্ষতা বাড়ান : সময়টা এখন যোগাযোগের। যত বেশি যোগাযোগ, তত বেশি সুযোগ। অন্যদের কথা শুনুন, জানুন। কারণ প্রতিটা মানুষেরই ভিন্ন ভিন্ন অভিজ্ঞতা আছে জীবন ও ক্যারিয়ারের ক্ষেত্রে।

তা আপনার কাজে লাগুক অথবা না লাগুক। এতে আপনার জ্ঞানের পরিধি বাড়বে এবং কোনো জ্ঞানই শেষ পর্যন্ত বৃথা যায় না।

অহেতুক ঝামেলা এড়িয়ে চলুন : আপনি যেই প্রফেশনেই থাকুন না কেন, নিজের প্রফেশনের পাশাপাশি অন্যের কাজকেও সম্মান করুন। অফিসের বস, সহকর্মীদের সম্পর্কে গসিপ এড়িয়ে চলুন।

অন্যেরা করে করুক, আপনি চেষ্টা করুন এতে অংশগ্রহণ না করতে।

কাজের প্রতি তৃপ্তি খুঁজে নিন : আপনার কাজের ক্ষেত্রে সন্তুষ্ট না থাকলে, এ কাজেরই কোনো না কোনো ভালো দিক খুঁজে বের করুন এবং এই ভালো দিকটিকে ভালবাসুন। এতে আপনার হতাশা দূর হবে। তার পরও যদি সেটা না হয়, ভিন্ন কোথাও চেষ্টা করুন। কনফুসিয়াস বলেছেন, ‘এমন কাজ করুন যা করতে ভালবাসেন, তাহলে আপনার জীবনে আপনাকে একদিনের জন্যও আর কাজ করতে হবে না।’ রিলাক্স হোন : মাঝে মাঝে ভিন্ন কিছু করুন, যা আপনার ভালো লাগে; যা আপনার হবি। নিজেকে মাঝে মাঝে সময় দিলে আপনি সপ্তাহের বাকি কর্মদিবসগুলোয় কর্মষ্পৃহা ফিরে পাবেন।

জীবন অথবা ক্যারিয়ার যেখানেই সফল হতে চান, তার জন্য আগে নিজেকে তৈরি করুন, এর জন্য কোন বয়ষ নাই। নিজেকে ভালবাসুন এবং নিজেকে জানুন।

Sunday, 12 September 2021

তাসের রাজা, রানি আর গোলামের পরিচয়

বিশ্বব্যাপী পরিচিত একটি খেলা, তাস। সময় কাটানোর জন্য অনেকের কাছেই এই খেলাটি প্রিয়। এমনকি যারা কখনো খেলেননি, তারাও নিশ্চিত এই খেলা দেখেছেন বা শুনেছেন।


তাস খেলায় যে চার ধরনের প্রতীকের কার্ড ব্যবহার করা হয়, প্রত্যেকটি প্রতীক এবং তিনটি চরিত্র রাজা, রানি এবং গোলাম- চরিত্রেও রয়েছে বিভিন্ন ঐতিহাসিক চরিত্রের প্রতিফলন।

পঞ্চদশ শতকের সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর পরিচয় বহন করে তাসের চারটি প্রতীক। এদের মধ্যে ডায়মন্ডস মূলত ধনী শ্রেণীর প্রতীক। ডায়মন্ডস দিয়ে তাদের ধনদৌলত আর ঐশ্বর্যকে বোঝানো হতো। তৎকালীন সময়ে এরা ছিল শাসক গোষ্ঠী।

স্প্যানিশ শব্দ ‘স্পাডা’ থেকে এসেছে স্পেড শব্দটি। এর অর্থ তরবারি। স্পেডস দিয়ে মূলত সেই সময়ের সৈন্যেদের বোঝানো হতো।

হার্টস প্রতীকটি পান পাতা থেকে হৃৎপিণ্ডের আকার পায়। এটা মূলত পাদ্রীদের প্রতীক। পাদ্রীদের মন পবিত্র ধরে নিয়ে এই প্রতীকের আবির্ভাব।

ইংরেজি ক্লাবসের বাংলা হলো ‘মুগুর’। গরিব মানুষের মুগুরই একমাত্র সম্বল। আর তৎকালীন সময়েও এই ‘ক্লাবস’ দ্বারা সমাজের নিম্ন শ্রেণীর গরিব মানুষদেরই বোঝানো হতো।

তাসের এই প্রতীকগুলোর পাশাপাশি রাজা, রানি আর গোলামের (জ্যাক) চরিত্রেও স্থান পেয়েছে ঐতিহাসিক নানা ব্যক্তিত্ব

ইশকাপন বা স্পেড
ফিলিস্তাইন যোদ্ধা গোলিয়াথের হত্যাকারী ছিলেন রাজা ডেভিড।  বাইবেলের তথ্য অনুযায়ী এই রাজা যিশু খ্রিস্টের পূর্বপুরুষ এবং তিনি ইসরায়েল শাসন করেছিলেন। আর এই রাজা ডেভিডকেই স্থান দেওয়া হয়েছে কিং অব স্পেডস হিসেবে। ফরাসি শব্দ স্পেডস অর্থ তলোয়ার, যা রাজা ডেভিডের হাতে শোভাবর্ধন করেছে স্পেড কার্ডে। এই রাজার অন্যতম গুণ হলো তিনি কখনোই আবেগের বশবর্তী না হয়ে বুদ্ধি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নিতেন।



স্পেড বা ইশকাপন তাসের রানি হলেন গ্রিক দেবী প্যালাস। এই প্যালাস মূলত দেবী হলেও তার যুদ্ধ ছিল শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য। আর তাইতো তার এক হাতে তরবারির পাশাপাশি অন্যহাতে স্থান পেয়েছে ফুল।



এছাড়া স্পেডের জ্যাকে চরিত্রটি এসেছে ফ্রান্সের একটি জনপ্রিয় কাব্যিক চরিত্র থেকে। 



হার্টস বা হরতন
তাসের এই রাজা হলো হৃদয়ের রাজা। তবে নিজের মাথায় তলোয়ার ঠেকিয়ে নিজেকেই হত্যা করতে উদ্যত হওয়ার ফলে তাকে ‘আত্মঘাতী রাজা’ও বলা হয়। ৮০০ খ্রিস্টাব্দে ইউরোপের অর্ধেক জয় করে ফেলা বিখ্যাত রাজা শার্লেমেন-ই স্থান পেয়েছে এই হরতনে। এছাড়া আরো একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, তাসের রাজাদের মধ্যে একমাত্র হার্টসের রাজারই কোনো গোঁফ নেই।



চুম্বকীয় এবং আকর্ষনীয় হৃদয়ের হার্টসের রানিকে সমস্ত তাসের জীবন বলা হয়। শার্লেমেন এর রানি হিসেবে এই তাসে স্থান পেয়েছে তৎসময়ের বিখ্যাত লেখক লুইস ক্যারলের ‘অ্যালিস অব অ্যাডভেঞ্চার উইলসল্যান্ডে’র একটি কল্পিত চরিত্র। যেখানে তিনি প্রধান চরিত্রের প্রাথমিক প্রতিপক্ষ হিসেবে আবির্ভূত হন। এই নারীর ভালোবাসার দ্বারা অন্যদের ওপর নিজের ক্ষমতা বিস্তারের একটি স্বাভাবিক গুণ ছিল।

তাসের এই রানিকে ক্যারল একজন অসমাপ্ত শাসক হিসেবেও বর্ণনা করেছেন। মেজাজ প্রবণতা এবং স্বাচ্ছন্দ সহানুভূতি ও সমবেদনার মাধ্যমে এই চরিত্রটি অনেক শক্ত কাজও হাসিল করেছেন খুব সহজে। তবে কোনো এক সময় ক্রোধে অন্ধ হয়ে সামান্য অপরাধে একজন ব্যক্তিকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন তিনি।

অন্যদিকে অনেকেই এই তাসের রানিকে বাইবেলে উল্লেখিত নায়িকা জুডিথ বলেও গণ্য করে থাকেন। যিনি রাজার তরবারির আঘাতে আসিরিয়ান সেনাপতিকে হত্যা করেছিলেন।



হার্টসের জ্যাক হলো লা হিরে। 

বিখ্যাত এই যোদ্ধা ফ্রান্সের সামরিক বাহিনীর সেনাপতি হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন।


ডায়মন্ডস বা রুইতন
রাজা জুলিয়াস সিজার। যার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে রোম সাম্রাজ্যের উত্থানে। রোমের রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ একটা দীর্ঘ সময় সিজারের হাতেই ছিল। আর রোমের এই বিখ্যাত শাসক, রাজনীতিবিদ এবং সাহিত্যিকই হলেন কিং অব ডায়মন্ডস। মজার ব্যাপার হলো, তাসের সকল রাজাদের মুখ স্পষ্ট দেখা গেলেও একমাত্র রুইতনের রাজারই মুখ দেখা যায় অর্ধেক।



৫২ তাসের মধ্যে কুইন অব ডায়মন্ডস হলেন রাচেল। এই রাচেল ডায়মন্ডস কিং জুলিয়াস সিজারের আপন স্ত্রী। জুলিয়াস সিজারের সকল সার্থকতায় এই নারী চরিত্রটি সবসময়ই বেশ বড় ধরনের ভূমিকা পালন করেছেন।



এদিকে গ্রীক এবং রোমান পুরাণ অনুযায়ী ‘ট্রয়ের’ বিখ্যাত যোদ্ধা ছিলেন হেক্টর। আর এই বিখ্যাত যোদ্ধাকেই স্থান দেওয়া হয়েছে ডায়মন্ডস জ্যাকে।



ক্লাবস বা চিরতন
আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট। গ্রিসের মেসিডোনিয়ার এই সম্রাটের নাম শোনেননি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়াও দুষ্কর। এই প্রভাবশালী সম্রাটপৃথিবীর প্রায় পুরোটাই দখল করে বসেন ৩২৩ খ্রিস্টপূর্বের দিকে। গ্রিস থেকে মিশর ও উত্তর-পশ্চিম ভারত পর্যন্ত সাম্রাজ্য বিস্তার ছিল অ্যালেকজান্ডারের। আর এই দিগ্বিজয়ী সম্রাটই হলো কিং অব ক্লাবস।



এই রাজার রানি হিসেবে তাসে স্থান পেয়েছে ব্রিটিশ রানী প্রথম এলিজাবেথ। সমগ্র তাসের জগতে কুইন অব ক্লাবস-ই হলেন একমাত্র ইংরেজ মহিলা।



অপরদিকে ক্লাবসে জ্যাক হিসেবে স্থান পেয়েছে রাউন্ড টেবিলের বিখ্যাত নাইট, স্যার ল্যান্স লট।



Wednesday, 18 August 2021

হাড়িয়াভাঙা নদী

 


হাড়িয়াভাঙা নদী হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার অন্তর্গত সুন্দরবনের একটি জোয়ারের জলে সমৃদ্ধ নদী এটি উত্তর চব্বিশ পরগনা বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার সীমান্তবর্তী নদী

হিঙ্গলগঞ্জ পেরিয়ে ইছামতি নদী বিভিন্ন শাখানদীতে বিভক্ত হয়ে গেছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য: রায়মঙ্গল, বিদ্যা, ঝিল্লা, কালিন্দী যমুনা ভারত বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সীমানা বরাবর এই নদী হাড়িয়াভাঙা নদীটি প্রবাহিত হাড়িয়াভাঙার মুখে নিউ মুর দ্বীপ অবস্থিত 

হাড়িদোয়া নদী

 


হাড়িদোয়া নদী বাংলাদেশের উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের নরসিংদী জেলার একটি নদী নদীটির দৈর্ঘ্য ৩৮ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৬১ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক মরা হাড়িদোয়া নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের নদী নং ৬১

হালদা নদী

 


বাংলাদেশের পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের খাগড়াছড়ি চট্টগ্রাম জেলার একটি নদী নদীটির দৈর্ঘ্য ১০৬ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১৩৪ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক হালদা নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের নদী নং ১৬

নদীটি পার্বত্য চট্টগ্রামের বাটনাতলী পাহাড় হতে উৎপন্ন হয়ে এটি ফটিকছড়ির মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম জেলায় প্রবেশ করেছে এটি এর পর দক্ষিণ-পশ্চিমে পরে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে ফটিকছড়ির বিবিরহাট, নাজিরহাট, সাত্তারঘাট, অন্যান্য অংশ, হাটহাজারী, রাউজান, এবং চট্টগ্রাম শহরের চান্দগাঁও-বাকলিয়ার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে এটি কালুরঘাটের নিকটে কর্ণফুলী নদীর সাথে মিলিত হয়েছে এর মোট দৈর্ঘ্য ৮১ কিলোমিটার, যার মধ্যে ২৯ কিলোমিটার অংশ সারা বছর বড় নৌকা চলাচলের উপযোগী থাকে এটি পৃথিবীর একমাত্র জোয়ার-ভাটার নদী যেখানে রুই জাতীয় মাছ ডিম ছাড়ে এবং নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ করা হয় হালদার সাথে বাংলাদেশ এর অন্যান্য নদী যেমন পদ্মা নদী,মেঘনা নদী,যমুনা নদীর সংযোগ না থাকাতে রুই জাতীয় মাছের "জীনগত মজুদ" সম্পূর্ণ অবিকৃত রয়েছে হালদা নদী কেবলমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ঐতিহ্য নয়, এটি ইউনেস্কোর শর্ত অনুযায়ী বিশ্ব প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের যোগ্যতা রাখে

হালদা খালের উৎপত্তি স্থল মানিকছড়ি উপজেলার বাটনাতলী ইউনিয়নের পাহাড়ী গ্রাম সালদা সালদার পাহাড়ী র্ঝণা থেকে নেমে আসা ছড়া সালদা থেকে হালদা নামকরণ হয় সালদা নদী নামে বাংলাদেশে আরো একটি নদী আছে যেটি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে উৎপন্ন ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে

হালদা নদীতে পতিত দুপাশের উপনদীগুলো প্রশস্ততার বিচারে সাধারণত নদীর পর্য্যায়ে পড়েনা বেশিরভাগ ঝোড়া, ছড়া, খাল কিংবা ঝর্ণা জাতীয় তবে মানিকছড়ি, ধুরুং এবং সর্তা যথেষ্ট প্রশস্ত পূর্বদিক হতে যেসব খাল হালদার সাথে মিলিত হয়েছে তার উৎপত্তি পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ে পশ্চিম দিক হতে আসা খালগুলোর উতপত্তি স্থল সীতাকুণ্ড পাহাড় দুই পাহাড়ের মাঝখানে হালদা নদী প্রবাহিত হয়েছে উত্তর দিক হতে দক্ষিণ দিকে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড় থেকে উৎপন্ন খালগুলো হচ্ছে মানিকছড়ি, ধুরুং, তেলপারই, সর্তা, কাগতিয়া এবং ডোমখালী খাল সীতাকুন্ড পাহাড়ী রেঞ্জ হতে উৎপন্ন হওয়া খালগুলোর মাঝে আছে গজারিয়া,ফটিকছড়ি,হারুয়ালছড়ি, বারমাসিয়া, মন্দাকিনী, বোয়ালিয়া এবং পোড়া কপালী খাল

প্রতিবছর হালদা নদীতে একটি বিশেষ মূহুর্তে বিশেষ পরিবেশে রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউস কার্প জাতীয় মাতৃমাছ প্রচুর পরিমাণ ডিম ছাড়ে ডিম ছাড়ার বিশেষ সময়কে "তিথি" বলা হয়ে থাকে মা মাছেরা এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত শুধু অমাবস্যা বা পূর্ণিমার তিথিতে অনুকূল পরিবেশে ডিম ছাড়ে ডিম ছাড়ার এই বিশেষ সময়কে স্থানীয়রা "জো" বলে এই জো এর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে অমাবস্যা বা পূর্ণিমা হতে হবে, সেই সাথে প্রচণ্ড বজ্রপাতসহ বৃষ্টিপাত হতে হবে;- এই বৃষ্টিপাত শুধু স্থানীয় ভাবে হলে হবে না, তা নদীর উজানেও হতে হবে ফলে নদীতে পাহাড়ি ঢলের সৃষ্টি হয় এতে পানি অত্যন্ত ঘোলা খরস্রোতা হয়ে ফেনাকারে প্রবাহিত হয় জো এর সর্বশেষ বৈশিষ্ট্য হল নদীর জোয়ার-ভাটার জন্য অপেক্ষা করা পূর্ণ জোয়ারের শেষে অথবা পূর্ণ ভাটার শেষে পানি যখন স্থির হয় তখনই কেবল মা মাছ ডিম ছাড়ে মা মাছেরা ডিম ছাড়ার আগে পরীক্ষামূলক ভাবে অল্প ডিম ছাড়ে ডিম ছাড়ার অনুকূল পরিবেশ না পেলে মা মাছ ডিম নিজের দেহের মধ্যে নষ্ট করে দেয় ডিম সংগ্রহ করে জেলেরা বিভিন্ন বাণিজ্যিক হ্যাচারিতে উচ্চমূল্যে বিক্রি করেন


হালদা নদী এবং নদীর পানির কিছু বৈশিষ্ট্যের জন্য এখানে মাছ ডিম ছাড়তে আসে যা বাংলাদেশের অন্যান্য নদী থেকে ভিন্নতর এই বৈশিষ্ট্যগুলো ভৌতিক, রাসায়নিক জৈবিক ভৌতিক কারণ গুলোর মধ্যে রয়েছে নদীর বাঁক, অনেকগুলো নিপাতিত পাহাড়ী ঝর্ণা বা ছড়া প্রতিটি পতিত ছড়ার উজানে এক বা একাধিক বিল, নদীর গভীরতা, কম তাপমাত্রা, তীব্র খরস্রোত এবং অতি ঘোলাত্ব রাসায়নিক কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে কম কন্ডাক্টিভিটি, সহনশীল দ্রবীভুত অক্সিজেন ইত্যাদি জৈবিক কারণগুলো হচ্ছে বর্ষার সময় প্রথম বর্ষণের পর বিল থাকার কারণে এবং দুকুলের বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়ে নদীর পানিতে প্রচুর জৈব উপাদানের মিশ্রণের ফলে পর্যাপ্ত খাদ্যের প্রাচুর্য থাকে যা প্রজনন পূর্ব গোনাডের পরিপক্কতায় সাহায্য করে অনেকগুলো পাহাড়ী ঝর্ণা বিধৌত পানিতে প্রচুর ম্যাক্রো মাইক্রো পুষ্টি উপাদান থাকার ফলে নদীতে পর্যাপ্ত খাদ্যাণুর সৃষ্টি হয়, এই সব বৈশিষ্ট্যগুলোর কারণে হালদা নদীতে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে রুই জাতীয় মাছকে বর্ষাকালে ডিম ছাড়তে উদ্বুদ্ধ করে যা বাংলাদেশের অন্যান্য নদী থেকে আলাদা হালদা নদীর বাঁকগুলোকে "অক্সবো" বাঁক বলে এদের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল পানির প্রচণ্ড ঘূর্ণন যার ফলে গভীর স্থানের সৃষ্টি হয় স্থানীয় ভাবে গভীর স্থানগুলোকে "কুম" বা "কুয়া" বলা হয় উজান হতে আসা বিভিন্ন পুষ্টি অন্যান্য পদার্থ কুমের মধ্যে এসে জমা হয় ফলে পানি অতি ঘোলা হয় মা মাছেরা কুমের মধ্যে আশ্রয় নেয় এবং ডিম ছাড়ে 

 

অভিশপ্ত রজনী

  মৃত মেয়েটিকে ধর্ষণ করার সময় মেয়েটি যে জীবিত হয়ে ওঠে সেটা খেয়াল করেনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় কাব্য।ধবধবে সাদা চামড়ার মেয়েটিকে ভোগ করার...