Monday 18 January 2021

ব্যক্তিত্ত্ব

 ব্যক্তিত্ত্ব ১। বই হচ্ছে জ্ঞান ভান্ডার। সব মানুষ পাঠক হতে পারেনা। প্রতি দশ জনে একজন পাঠক হতে পারে। আর পাঠকরা সব সময় সমাজ কে বদলায়। তারা সব সময় সর্বকালে উপরের স্তরের মানুষ। যারা বই পড়ে তারা সব সময় সিরিয়াস মানুষ ,সে যদি একজন দশ বছরের বালক ও হয় ,সে ও সিরিয়াস মানুষ। সবাই বই পড়তে পারেনা। এটা অনেক কঠিন কাজ। বই পড়ার উদ্দেশ্য হলো পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ চিত্তশীল মানুষদের চিত্তের যে আলো ,সেই আলোকে নিজেকে আলোকিত করা।

পূর্ণিমা রাতে ঘাসের উপর শুয়ে আকাশের দিকে তাকালে ,চাঁদের যে স্নিগ্ধ আলো ,সেটা যেমন শরীর মনকে স্পর্শ করে। একটি ভালো বই ও তেমনি আলোয় আলোকিত করে। প্রচন্ড খড়তাপে হেটে যাওয়া একজন মানুষ যখন হাটতে হাটতে বিশালাকার বৃক্ষের নিচে আসে ,আর সেই বৃক্ষের নিচ দিয়ে পার হবার সময় ঝিরিঝিরি বাতাস যখন তার শরীর মন জুড়িয়ে দিয়ে দেহ মনের গভীরে তার পরশ বুলায় ,সেই অনুভূতিময় মানুষটি তখন আর সেই আগের মানুষ নেই। গাছের নিচে আসার পূর্বের মানুষ আর গাছের ছায়া পার হয়ে যাওয়া পরের মানুষটি পুরাই আলাদা মানুষ। গাছের সতেজ প্রাণ শক্তি তখন সেই মানুষটির ভেতর সঞ্চারিত। একটি গোলাপ গাছ হতে সুগন্ধময় পাপঁড়ি যখন দীর্ঘদিন মাটির উপর পরে সেই মাটিও সুগন্ধময় হয়ে উঠে ,তেমনি পৃথিবীর সকল মহামানব দের বইগুলো যারা ছোটবেলা থেকে পড়তে পড়তে বড় হয় ,এক সময় তারা এক একজন বড় আর বোধ সম্পন্ন মানুষে পরিণত হয়।

ব্যক্তিত্ত্ব ২। প্রতিটি মানুষ একক আর ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্মায়। প্রতিটি মানুষ যে বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্মায় ,সেই কাজটি করার জন্য তার ভেতর এক তাড়না ও কাজ করে। মানুষের সব চেয়ে বড় সমস্যা হলো সে সব সময় নিজেকে সঠিক মনে করে আমি ঠিক আর আমার বিশ্বাসটা সঠিক আর অপরের টা ভুল,এটাই মনে করে। এটাই যাবতীয় সমস্যার মূল। একজন মানুষ যা বিশ্বাস করছে সেটা হয়তোবা তার বাবা মা ,গুরুজন বা অন্য কারো কাছ থেকে তার ভেতর ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে ,আর সেটাকেই সে নিজের বিশ্বাস বলে মানছে। কিন্তু এটা তার নিজের বিশ্বাস নয়। বিশ্বাস ,ভাগ্য ,কর্ম এই তিনটির ভেতর শুধু কর্মটাই তার নিজের হাতে, বিশ্বাস এবং ভাগ্য দুটোই অপরের হাতে। তাহলে যা অপরের হাতে আর তার উপর যেহেতু নিজের কোন নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নেই ,সেটার দায়িত্ত্ব না হয় অপরের হাতেই থাক। সেটা নিয়ে ভেবে ভেবে সময় নষ্ট করার দরকার ও নেই। যা ঘটবার তাতো ঘটবেই। তাহলে একমাত্র কর্মটাই যেহেতু নিজের হাতে , সেটাই না হয় করি আর তার প্রাপ্তি ভোগ করি। প্রতিটি মানুষের জীবন তার নিজের তৈরী। ভাল মন্দ যেভাবেই মানুষ বলুক না কেন ,সেটা তার নিজের কর্মের ফল।

ব্যক্তিত্ত্ব ৩। আমরা প্রতিটি মানুষ স্বপ্নের পেছনে ছুটছি। ড্রিম ওয়ার্ল্ড এ ড্রিম জব ,ড্রিম মানুষকে খুঁজে পাবার জন্য আমরা মরিয়া হয়ে ছুটে চলেছি কিন্তু অদৌ কি ড্রীম শব্দটি এই দুনিয়াতে 'exist' করে ? স্বপ্নের মানুষ কিংবা চাকুরীটি পাবার পর যদি সেই স্বপ্নের স্বপ্নময় অনুভূতি আর না থাকে তাহলে সেই স্বপ্নের পেছনে ছুটে চলা কেন ? অবাক ব্যাপার হলো ,বেশির ভাগ মানুষের স্বপ্নের মানুষ কিংবা চাকুরীগুলো চলমান সমাজের হিসেব নিকেশের নিক্তিতে মাপে প্রতিষ্ঠিত হয়ে সে স্বপ্নময় আর তার সাথে ব্যক্তির নিজের চাওয়ার সাথে আদৌ কোন মিল নেই। যে কারণে সেই প্রাপ্তির পর হতাশাই কাজ করে। কারণ মানুষ যদি সত্যি নিজেকে জানতো আর সেই অনুযায়ী কাজ করতো ,তার প্রাপ্তির কোন সীমা পরিসীমা থাকতো না।

ব্যক্তিত্ত্ব ৪। জীবনের প্রয়োজনীয়তা কে যদি পাচ ধাপে ভাগ করা যায় তবে প্রথম ধাপে হচ্ছে জীবনের মূল প্রয়োজন অন্ন ,বস্ত্র ,বাসস্থান ,পানি, ঘুম, প্রজনন ইত্যাদি । দ্বিতীয় ধাপে আছে নিরাপত্তা, সেটা হোক ব্যক্তিগত কিংবা চাকুরী ,স্বাস্থ্য এবং সম্পত্তি । তৃতীয় ধাপে আছে মানুষিক চাহিদা
যেমন ভালোবাসা ,বন্ধুত্ব ,পরিবার ,সামাজিক সংযোগ। চতুর্থ ধাপে আছে আত্ত্ব সম্মানবোধ ,স্ট্যাটাস,পরিচিতি ,শক্তি এবং স্বাধীনতা। আর সকল ধাপ শেষে সকল প্রাপ্তির পর যে প্রয়োজন টা সবার উপরে , সেটা হলো নিজের একক বৈশিষ্ট্য নিয়ে সবার উপরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা, মানে নিজেকে জানা।
ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিক থেকে জীবনের সকল দিক বিশ্লেষণ করার পর একটা কথাই পাওয়া গেলো ,নিজেকে জানো। জীবন অনেক মূল্যবান ,তার প্রতিটি মুহূর্তকে নিজের স্বকীয় বৈশিষ্ট্য আর কর্মে অর্থপূর্ণ করে জীবনকে পরিপূর্ণ করাই জীবনের উদ্দেশ্য। প্রতিটি মানুষ নিজেকে জেনে তার স্বকীয় বৈশিষ্ট্য দ্বারা এক একজন মহাপুরুষ হবার ক্ষমতা রাখে আর সেটা শুধুই কর্মের দ্বারা। কিন্তু সেটা সে পারেনা অতিরিক্ত চাহিদা ,বাড়তি চাপ ,অপ্রয়োজনীয় কর্ম আর জিনিসের অতিরিক্ত ভীড় ,যা আগাছার মতো তার জীবনের নির্যাস খেয়ে ফেলে মহাপুরুষ হতে বাধা দেয়। সুখের কথা হলো ,কয়লার ভেতর থেকে যেমন হীরক খন্ড পাওয়া যায় তেমনি মহাপুরুষেরা সব সময় অন্যায় ,অত্যাচার আর অন্ধকারে নিমজ্জিত সমাজ আর সময় থেকেই আবির্ভূত হয়। সক্রেটিস ,বুদ্ধ কিংবা মোহাম্মদ সঃ ,তারা যে সময়ে এসেছিলেন এবং সবাই ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সে মহামানব হিসেবে আত্ত্ব প্রকাশ করেছেন। তারমানে পরবর্তী মহামানব এই বয়সে আত্ত্বপ্রকাশ করবেন কিন্তু তার রূপটা কি সাধারণ মানুষের মতো হবে নাকি ডিজিটাল যুগের কল্যানে সে হবে সুপারম্যান টাইপ অন্যকোন রূপে ! সেটাই এখন দেখার বিষয় !!!

No comments:

Post a Comment

অভিশপ্ত রজনী

  মৃত মেয়েটিকে ধর্ষণ করার সময় মেয়েটি যে জীবিত হয়ে ওঠে সেটা খেয়াল করেনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় কাব্য।ধবধবে সাদা চামড়ার মেয়েটিকে ভোগ করার...