Wednesday 6 September 2023

অভিশপ্ত রজনী

 মৃত মেয়েটিকে ধর্ষণ করার সময় মেয়েটি যে জীবিত হয়ে ওঠে সেটা খেয়াল করেনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় কাব্য।ধবধবে সাদা চামড়ার মেয়েটিকে ভোগ করার সময় মাথা ঠিক ছিল না কাব্যর।কাব্য বুঝতেই পারে নি মেয়েটি ধীরে ধীরে জীবিত হয়ে উঠছে ।মেয়েটির ঠান্ডা শরীরে ধীরে ধীরে রক্ত চলাচল শুরু হতে থাকে আস্তে আস্তে মেয়েটির শরীরে তাপ আসতে শুরু করে ।ফ্রোজেন করে রাখা মেয়েটির বডি শক্ত হয়ে থাকার কথা বরফে।কিন্তু না মেয়েটির শরীর ছিলো খুব নরম আর ঠান্ডা।যার জন্য কাব্য বুঝতেই পারে নি মেয়েটি কত দিনের মৃত। হঠাৎ করে কাব্য খেয়াল করে মেয়েটি তার দিকে একভাবে তাকিয়ে আছে,গাড়ো লাল রঙের লিপিস্টিক পরা মেয়েটির।কাব্যর দিকে তাকিয়ে মিচমিচ করে হাসছে মেয়েটি। বিষয়টা দেখে কাব্যর নেশা কেটে যায়।কাব্যর বুক ধড়ফড় করে কাঁপছে।কাব্যর বুকের স্পন্দন শুনতে পাচ্ছে মেয়েটি।চারদিকে শুনশান নিরবতা কোথাও কেউ নেই।গভীর রাতের নিরবতায় চারদিক থেকে অশরীরী রা যেনো হাতছানি দিয়ে ডাকছে।তাছাড়া কাব্য এমন একটা জায়গা আছে সেখানে শুধু লাশ আর লাশ।ভয়ের চোটে কাব্যর নেশা হারিয়ে যায়।এখন তার কাছে মনে হচ্ছে চারদিক থেকে লাশ গুলো তার দিকে তাকিয়ে আছে।লাশ গুলো হাতছানি দিচ্ছে তাকে।

রোজ রাত হলেই হসপিটালের পিছনে কাব্য আর তার বন্ধুরা নেশায় মগ্ন থাকে।কোনো মেয়ে সামনে পেলে তার সাথে বাজে ব্যবহার করে।আজ কাব্য অতিরিক্ত নেশার ঘোরে হসপিটালের মাঝে ঢুকে পড়ে। কাব্যর বন্ধুরা হসপিটালের পিছনের বাগানে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় কাব্যর বন্ধু আরিফ,তনয়,আবির,বিলাল, অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে।তাদের বন্ধু কাব্য যে মিসিং নেশার ঘোরে তাদের সেটা খেয়াল ও নেই।
কাব্য নিজের অজান্তেই হসপিটালের মর্গে প্রবেশ করে।মর্গে আজ কেউ ছিলো না।পোস্ট মর্টেম এর ডাক্তার সহ,ডোম রা অন্য দিকে বিজি ছিলো।এমন সময় কাব্য ওখানে প্রবেশ করে ফ্রোজেন করা একটি লাশ দেখে কাব্যর মাথায় জঘন্য ঘৃণ্য একটি চিন্তা আসে।কাব্য তার বিকৃত মানসিকতার পরিচয় দেই।লাশ টা একটা মেয়ের থাকে।মেয়েটার শরীর এত সাদা যা দেখে কাব্যর পৈচাশিক চিন্তা মাথায় আসে।
তারপর ই ঘটে সেই অবাস্তব ঘটনা।মেয়েটি জীবিত হয়ে ওঠে।কাব্য মেয়েটিকে দেখে ভয়ে পালানোর চেষ্টা করে কিন্তু মেয়েটি কাব্যর হাত টেনে ধরে।আর কাব্যকে বলে আমাকে বাঁচিয়ে তুলেছো তুমি কোথায় যাচ্ছো এখন।কাব্য বলে আমার ভুল হয়ে গেছে।আমাকে মেরো না।মেয়েটি বলে আমি কি ভূত প্রেত যে তোমাকে মারবো।আমাকে এরা মাঝে মাঝে অক্সিজেন দেই আর এখানে আটকে রাখে লাশ পাহারা দেওয়ার জন্য।আমি একটি সাধারণ মেয়ে।আমাকে এখান থেকে মুক্ত করো কাব্য।আমাকে এরা আটকে রেখেছে।আমাকে একটা স্বাধীন জীবন দাও কাব্য।কাব্য বলে আমাকে তুমি ছেড়ে দাও।আমি ভুল করেছি আমাকে ক্ষমা করে দাও।মেয়েটি বলে তুমি কোনো ভুল করো নি।হ্যাঁ আমাকে রেপ করেছো এটা অনেক বড় অন্যায় তোমার। তবুও এ অন্যায়ের মাধ্যমে আমাকে ওই বাক্স থেকে মুক্ত করেছো তুমি।কাব্য খেয়াল করে মেয়েটির মুখ খুব ই ইনোসেন্ট।আসলেই ও সাধারণ আর পাঁচটা মানুষের মতো।মেয়েটিকে দেখে কাব্যর মায়া হলো।তাছাড়া মেয়েটি এতই সুন্দর কাব্য প্রেমে ও পড়ে যায়।
কাব্য মেয়েটিকে বলে আপনার নাম কি?
"ফারজু"
আচ্ছা কোথায় যাবেন? বাসা কোথায় বলুন।আমি এগিয়ে দিয়ে আসি।
"আমার কোনো বাড়ি ঘড় নেই।কোথায় যাবো জানিনা।"
তাহলে এখন কি করবেন।
"ফারজু বলে,,আমাকে যখন বাঁচিয়েছেন ই তাছাড়া আমার শরীর আপনি ভোগ করেছেন।আমাকে আপনার দাসি বানিয়ে রাখুন।"
কাব্য বলে,, বিয়ে করবেন আমাকে।
ফারজু মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানায়।
পরের দিন কাব্যর বন্ধুদের নিউজ পাঠায় কাব্য যে সে বিয়ে করেছে।কাব্যর বন্ধুরা অবাক হয়ে যায় হাজার খানিক মেয়েকে ভোগ করা ছেলে নির্দিষ্ট কোনো মেয়েকে নিয়ে থাকবে।
অপর দিকে হসপিটাল থেকে লাশ উধাও।চারদিকে হৈ চৈ পড়ে গেছে লাশ নিয়ে।
নাম পরিচয় হীন মেয়েটির বেওয়ারিশ লাশ টা তিন মাস ধরে ফ্রোজেন করে রাখা হয়েছে।কিভাবে মেয়েটি মারা গেলো এখনও তার কোন সন্ধান মেলেনি। হিন্দু না মুসলিম না খ্রিস্টান কোন গোত্রের মেয়েটির সেটাও বোঝার কোন উপায় নেই তাই মেয়েটির লাশের শেষ কাজ কিভাবে করবে সেটাও কেউ বুঝতে পারেনি। এছাড়া মেয়েটির লাশ যেভাবে পাওয়া গেছে তার পরিবারের সন্ধান পাওয়া না গেলে তার শেষ কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। এই নিয়ে পত্রিকা নিউজ বিভিন্ন চ্যানেলের খবর ছড়িয়ে দেয়া হয় তবুও মেয়েটির কোনো আত্মীয়-স্বজন বা কেউ এসে কোন খোঁজ খবর নেই নেই।
মেয়েটির লাশ এক ভয়ংকর অবস্হায় পাওয়া গেছিলো।
ওইদিকে কাব্যর বন্ধু বিলাল নিঁখোজ।বন্ধুরা খুজে খুজে হন্য কোথাও তাকে পাওয়া যাচ্ছে না।হটাত আরিফের ফোনে একটি এম.এম.এস আসে। এম.এম.এস টি দেখে ভয়ে আরিফ অস্বাভাবিক হয়ে যায়।ভয়ংকর এক কালো ছায়া ছিলো এম.এম.এস এ।
বধূ বেশে একটি মেয়ে বিলাল কে ডাকে।গভীর রাতে বিলালের ঘরের দরজায় নক করছে কেউ।বিলাল নেশাগ্রস্ত অবস্থায় উঠে দেখে ওর ওয়ালে একটি কালো ছায়া।বিলাল দরজা খুলে বলে কে? এত রাতে কে আমাকে ডাকে।দরজা খুলেই বধূ বেশে অপূর্ব সুন্দরী মেয়ে দেখে বিলালের মাথা ঠিক থাকে না।
আরে এ তো মেঘ না চাইতেই জল।অনেক দিন কোনো মেয়ের শরীর ছুয়ে দেখি নি আমি।বলেই চরিত্রহীনতার একটি হাসি দিয়ে মেয়েটির হাত ধরে টান দিয়ে বিছানায় নিয়ে যায়।মেয়েটি খুব গম্ভীর কন্ঠে বলে তুমি যেমন অনেক দিন কোনো মেয়েকে স্পর্শ করো না আমিও তেমনি অনেক দিন পিপাসা মিটাই না।
বলেই বিলালের বুকে বড় বড় নখ ঢুকিয়ে হৃদপিন্ড বের করে এনে খেয়ে ফেলে মেয়েটি।বিলালের শরীরের ভিতরের সব নাড়ি ভুড়ি বের করে আনে।আর দুই হাত ভরে রক্ত নিয়ে খেতে থাকে।
হসপিটাল থেকে একটা লাশ উধাও হওয়া কম কথা নয়।এর জবাবদিহীতা হসপিটাল কর্তৃপক্ষকেই দিতে হবে।খুব চিন্তায় আছে হসপিটাল অথোরিটি।এই লাশ নিয়ে অনেক বড় ইতিহাস আছে।যেটা ভাবলে তাদের শরীর হীম হয়ে আসে।
হসপিটালের নিউ ডাক্তার মাহাদ আহমেদ এসে এই লাশের রহস্য শুনে তিনি অবাক হয়ে যান।সবাই শুধু ঘটনা টা লুকানোর চেষ্টা করে কিন্তু কেউ ই বলতে চাই না আসল কাহিনী কি।মাহাদ আহমেদ এর জোরাজোরিতে হসপিটালের নার্স সুমাইয়া মিম মাহাদ আহমেদ কে ঘটনা টা খুলে বলেন।তারা একটা কফি শপে মিট করে কারণ মিম সাহস পাচ্ছিলো না হসপিটালে দাঁড়িয়ে ঘটনা টা বলতে।
কফি খেতে খেতে মিম বলতে থাকে স্যার আপনি নিউ তাই ব্যাপার টা হাস্যকর ভাবছেন।ওই লাশের মেয়েটা কোনো সাধারণ মেয়ে ছিলো না।আপনি পুরা ঘটনা জানলে ভয়ে হসপিটাল ছেড়ে পালাবেন।মাহাদ সাহেব তাচ্ছিল্যর সাথে হেসে দিলেন।আর বললেন আমাকে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত বলুন।
মিম বলে স্যার সেদিন রাতে আমরা সবাই ফ্রি ছিলাম ডাক্তার আর নার্সরা গল্প করছিলাম।হটাত দুইটা ছেলে একটা মেয়ের লাশ নিয়ে আসে পাটিতে করে মুড়িয়ে।লাশের শরীরে যে কাফন ছিলো সেটাও পঁচে গেছিলো।মাংস হাড় থেকে এড়িয়ে গিয়েছিলো।পাটির ভিতর মেয়েটির সব মাংশ খসে খসে পড়ে গেছিলো।মেয়েটির চেহেরার কোনো আকৃতি বোঝার উপায় ছিলো না।ছেলে দুইটা হাঁপাতে হাঁপাতে লাশ টা নিয়ে আসে।আমরা জানতে চেয়েছিলাম এই লাশ কার।তখন ছেলে দুইটা বলে জানিনা কার তবে এই লাশ আমাদের গ্রাম সাফ করে দিচ্ছে তাই হসপটালে নিয়ে আসলাম।
আমরা ভীষণ কৌতুহল নিয়ে জানতে চাইলাম এই আপনাদের গ্রামের মানুষদের সাফ করে দিচ্ছে মানে। তখন ছেলে দুইটা বলে কোনো সাধারণ লাশ নয় এটা। এই মেয়েটিকে আমরা এই গ্রামে একদিন পেয়েছিলাম কারা যেন মেরে ফেলে দিয়ে গিয়েছিলো।তারপর আমরা এই মেয়েটিকে আমাদের গ্রামে দাফন করে মাটির নিচে কবর দিয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু এই মেয়েটি অস্বাভাবিকভাবে আমাদের গ্রামে রাতের বেলায় ঘুরে বেড়াতো আর মানুষের প্রাণ কেড়ে নিতো মানুষের রক্ত চুষে খেতে।
"আমরা সবাই হো হো করে হেসে উঠলাম।"
একটা মরা লাশ কখনো কারো রক্ত চুষে খেতে পারে গ্রামের মানুষ এখনও প্যারানরমাল জিনিস এত বেশি বিশ্বাস করে যে যেকোনো জিনিস কে তারা আত্মা বানিয়ে ফেলে। ছেলে দুইটস বলে আপনারা হাসবেন না এই মেয়ের ভিতর অনেক কাহিনী আছে অনেক ঘটনা আছে অনেক রহস্য ভরা এ লাশ আমরা এই মেয়েটিকে চিনিনা জানিনা কিভাবে আমাদের গ্রামে এলো। আমরা ভাল মনে করে এর দাফন শেষ করে কবর দিয়ে রাখলাম কিন্তু এ আমাদের গ্রামের মানুষকে মেরে মেরে সাফ করে দিচ্ছে। রাতের বেলা এর কবরে খুব ভয়ঙ্কর আওয়াজ হয়। চিৎকার দিয়ে কবর থেকে উঠে আসে তারপর হেঁটে বেড়ায়। প্রতিরাতে কোন না কোন মানুষের এ খেয়ে ফেলে। আমরা খুব হেসেছিলাম ঐ লোকগুলোর কথা শুনে তারপর আমরা বলেছিলাম কিন্তু যে আপনাদের মেরে ফেলছে আপনারা কিভাবে তার লাশ কাঁধে করে নিয়ে এলেন ভয় লাগল না।
তখন ছেলে দুইটা আমাদের বলে এর আত্মা তো এখন গ্রাম দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে তাই এর কবর খুঁড়ে আমরা গ্রামের সব মানুষ এর বডি বের করে এনেছি।তবে কয়েকজন হুজুর আমাদের এ ব্যাপারে সাহায্য করেছেন। এতদিনে এই মেয়েটির হাড় মাটিতে মিশে যাওয়ার কথা কিন্তু এখনো এর মাংস মাত্র পচন শুরু হয়েছে কি অদ্ভুত না ব্যাপারটা।
ছেলে দুটির কথা পাত্তা না দিয়ে আমরা লাশটাকে রেখে দিলাম। ওইটাই ছিল হয়তো আমাদের হাসপাতালের জন্য সবথেকে করা ভুল আর অভিশপ্ত একটা কাজ।
আমরা লাশ টিকে ফ্রজেন করে রেখে দেই। কিন্তু আশ্চর্যভাবে লাশটির হাড়-মাংস আবার জোড়া লাগতে শুরু করে মেয়েটির পচন কৃত মাংস আবার ঠিক হতে শুরু করে। আমরা একটা সময় দেখলাম মেয়েটি আগের মত একটি মেয়ে তে পরিণত হয়ে গেছে তখন ওর সম্পূর্ণ ফেস বোঝা যাচ্ছিল চেহারা তার আকৃতি ছিল।
মাহাদ আহমেদ বলেন,",তারপর"
মিম বলে ব্যাপার টা এ পর্যন্ত থাকলে কোনো সমস্যা ছিলো না।ব্যাপার টা অন্য পর্যায়ে চলে গেলো।
মেয়েটিঃ একটা সময় সম্পূর্ণ একটা মেয়েতে তৈরি হয়ে গেল তাকে দেখে আর বোঝার কোন উপায় ছিল না যে মেয়েটি একটি লাশ। তার ঝরে যাওয়া মাংসগুলো সব ঠিক হয়ে হাড়ের সাথে জোড়া লেগে গেল। আমরা এ ব্যাপারটা নিয়ে খুব বেশি একটা কিছু ভাবি নি এটা আমরা স্বাভাবিক মনে করেছিলাম। এরপর হঠাৎ একদিন গভীর রাতে মর্গে কর্মচারী ছিল তার চিৎকার শোনা যায়। ওর চিৎকার শুনে একজন নার্স এগিয়ে যান এবং দৌড়ে গিয়ে দেখেন এই মেয়েটির লাশ ঠায় দাঁড়িয়ে আছে নার্স মেয়েটির লাশ দেখে অবাক হয়ে যান আর প্রচণ্ড ভয় পেয়ে যান। কারণ লাশ কিভাবে বেরিয়ে এসে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে। শুধু দাঁড়িয়ে ছিল না ওই কর্মচারীর ঘাড় ধরে একটা ঝাঁকি দিয়ে ঘাড় টা ভেঙে ফেলে তারপর ওর ঘাড়ে কামড় দিয়ে ওর সমস্ত রক্ত চুষে নেয় তারপরও কে কুচি কুচি করে কাটে। কাটার পর ফ্লোরে বসে পড়ে টুকরো টুকরো মাংস গুলো খাচ্ছিল। ওই নার্সটা আমার খুব ক্লোজ ছিল।
উনি অস্বাভাবিকভাবে দৌড়াতে দৌড়াতে এসে আমাদের ঘটনাটা খুলে বলেন আমরা ঘটনাটা স্বচক্ষে দেখার জন্য ওখানে উপস্থিত হয় কিন্তু আমরা ওখানে গিয়ে দেখি পরিবেশটা স্বাভাবিকই আছে। আমরা ওই মেয়েটির লাশ যেভাবে রেখে গেছিলাম সেভাবেই আছে। ফ্লোরে রক্তের দাগ নেই কোথাও তাই সেদিন আমরা ব্যাপারটা এড়িয়ে গেলাম।বিষয় টা এতটা সিরিয়াসলি নিলাম না ব্যাপারটা আমরা মনে করেছিলাম কর্মচারী তাই হয়তো কোথাও গিয়েছ। কিন্তু একটানা ৭ দিন হয়ে গেল কর্মচারীর কোন খবর নেই তার বাড়িতে আমরা যোগাযোগ করলাম কিন্তু সেখানেও কোন খবর আমরা আর পেলাম না। এরপর আমাদের হস্পিটালের সিনিয়র ডাক্তার একদিন মর্গের রুমে প্রবেশ করে উনি আর ভয় পেয়ে যান।
---------------------------------------------------------------------------------------------------------------
"একটা কফিন থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। এরপর কফিন টার মুখে নিজে নিজে খুলে যায় তারপর,, কফিনের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে একটি মেয়ে। মেয়েটি কফিনের ভিতরে শুয়া অবস্থা থেকে হঠাৎ বসে পড়ে তারপর কফিন থেকে বাইরে বেরিয়ে এসে দাঁড়ায়। মেয়েটির চোখ দিয়ে যেন আগুন জ্বলছিল সমস্ত শরীর দিয়ে কেমন একটা ধুয়া উড়ছিল। হঠাৎ করে ধোয়ার জন্য দেখে বুঝা যাচ্ছিল না এটা আসলে কার লাশ? তারপর মেয়েটির হাত ইয়া বড় লম্বা হয়ে যায় আর লম্বা হাত দিয়ে ওখানে রাখা সদ্য একটা লাশ মেয়েটি চিবিয়ে চিবিয়ে খাওয়া শুরু করে। তবুও যেন মেয়েটির খুদা মিটছিল না তারপর তার লম্বা হাতকে আরও অনেক বড় লম্বা করে পাশের রুম থেকে একজন রোগীকে টেনে নিয়ে চলে আসে হাত দিয়ে। তারপর তার ঘাড় মটকে ভেঙে দেয় আর তার রক্ত চুষে খেতে থাকে তারপর একটা ছুরি দিয়ে তাকে কুচিকুচি করে কাটতে থাকে। কাটা মাংসগুলো বীভৎসভাবে খাচ্ছিল। সিনিয়র ডাক্তার এটা দেখে ওখান থেকে ভয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। ""
মাহাদ মুখে হাত দিয়ে খুব চিন্তিত ভাবে ছিল আর মিমের কথা গুলো খুব মনোযোগ সহকারে শুনছিল। মিস মিম আপনি কোন ভৌতিক মুভি দেখে এসে তার ডায়লগ বলছেন না তো আপনি কি ভুলে যাচ্ছেন আপনি আমাকে হসপিটালে একটা লাশ উধাও হয়েছে আর কিছু কাহিনী বলার জন্য এখানে এনেছিলেন। কিন্তু আপনি তো আমাকে হরহর মুভির কাহিনী শোনাচ্ছেন।মিম বলে না ডাক্তার এটা কোন হরর মুভি না। মাহাদ আহমেদ খুব আশ্চর্য হয়ে যান এই ঘটনা কি সত্যিই ঘটেছে। মিম বলে,, তারপরে আরো ঘটনা আছে আপনাকে তো এখনো কিছুই বলিনি আমি। মিম বলে শুনুন তারপর আরো কিছু ঘটনা। ওই ঘটনার পরের দিন সিনিয়র ডাক্তার টা নিখোঁজ হয়ে যান তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না। পরেরদিন হসপিটালের কুকরা চিৎকার দিয়ে এসে পড়ে তাদের চোখে-মুখে অনেক ভয়ের আতঙ্ক দেখা যায় আমরা সবাই প্রশ্ন করি এভাবে ভয় পেয়ে আছো কেন? ওয়া ভয়ে কথাই বলতে পারছিলো না।তারপর বলে,, আমরা গতকাল বাজার থেকে যে মাংস এনে ফ্রিজে রেখে ছিলাম ওটাও আজ বের করেছি রান্নার জন্য।
"মাংসের বরফ গলে যাওয়ার পরে দেখি ওটা মুরগী ছিলো না।আমরা বলি তাহলে,কি ছিলো"
ওরা বলে মানুষের মাংশ ছিলো।মানুষের হাত পায়ের নখ।মানুষের চামড়া সহ মাংস কাটা। একটা মানুষের সমস্ত অংঙ্গ প্রতঙ্গ। আমরা তো কেউ বিশ্বাস ই করতে পারছিলাম না।এটা কিভাবে সম্ভব।আমরা পরে রান্নাঘরে যায় আর গিয়ে দেখি ঘটনা টা সত্য।আমরা নিজেরাই চমকে গেলাম এটা কিভাবে সম্ভব।
তখন আমাদের মনে হলো বাজারের ওই লোক কে পুলিশে দেওয়া উচিত।ও মানুষ মেরে বিক্রি করছে নাতো।
পরের দিন পুলিশ নিয়ে আমরা মাংস বাজারে পৌছে গেলাম।যে লোকটার কাছ থেকে ওরা মাংস কিনছিলো আমরা তার কাছেই যায়।লোকটা আমাদের দেখে ভীষণ ভয় পেয়ে যায় আর এদিক সেদিক তাকাতে থাকে।একটা সময় লোকটা পালানোর চেষ্টা করে।কিন্ত পুলিশ হাতে নাতে ধরে।
লোকটার ব্যাপারে আশে পাশে খোজ নিলাম।সবাই খুব রহস্য জনক কথা শোনায় লোকটাকে নিয়ে।
এরই মাঝে মাহাদের ফোন বেজে ওঠে।
স্যার দ্রুত আসুন।একজন ইমারজেন্সি রুগি এসছে হসপিটালে।
মাহাদ মিম কে বলে মিম বাকিটা রাতে শুনবো।চলো ইমারজেন্সি রুগি এসছে।
এদিকে কাব্য ওর ফ্রেন্ড দের বার বার ফোন দিচ্ছে তার বউ দেখার জন্য।এই দুই দিন কাব্যর ফোন অফ ছিলো।আর সে নতুন বউ নিয়ে হোটেলেই ছিলো।এটা ফারজুর চাওয়া ছিলো যে সে হোটেলে থাকবে।
কাব্যর ফ্রেন্ড বেলাল মারা গেছে নিউজ টা শুনেই কাব্য ভেঙে পড়ে।অনেক ক্লোজ ফ্রেন্ড ছিলো তারা।এভাবে কিভাবে মারা যেতে পারে।
এইদিকে আরিফ খুব অস্বাভাবিক হয়ে পড়ে।নিজের ফোনের এম.এম.এস টা দেখে।
আরিফ বাকিদের এম.এম.এস টা দেখানোর আগেই সেটা ডিলিট হয়ে যায়।
বেলালের মৃত্যু রহস্য কেউ জানতেও পারলো না। একমাত্র আরিফ ই জানতে পেরেছিলো কিন্ত কাউকে তার প্রমাণ দেখাতে পারে নি।
কাব্য,,আরিফ,,তনয় সবাই বেলালের দাফনে যায়।কবর জেয়ারতের সময় আরিফ দেখে বেলাল তার সাথেই দাঁড়িয়ে কবর জেয়ারত করছে।
বিলালের কবর জিয়ারতের সময় আরিফ দেখতে পায় বেলাল তার পাশে দাঁড়িয়ে কবর জেয়ারত করছে আর কাঁদছে।আরিফ প্রচন্ড ভয় পেয়ে যায় আর খুব জোরে চিৎকার দেওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু আকস্মিকভাবে আরিফের গলার ভয়েস বের হয়না। আরিফ হাজার চেষ্টা করেও গলা দিয়ে স্বর বের করতে পারেনা। আরিফের সমস্ত শরীর যেন অবশ হয়ে আসে। তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে তনয়,, আরিফ তনয় কে ডাকার চেষ্টা করছে কিন্তু তনয় কিছুতেই আরিফের দিকে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে না কারণ ওরা কবর জিয়ারতের বিজি আছে। এরই মাঝে বেলাল আরিফের কানের কাছে গিয়ে কথা বলে কিরে আরিফ ওদের ডাকছিস কেন? আমিতো শুধু তোর সাথে দেখা করতে এসেছি। আরিফ বলে তুই না মারা গেছিস তাহলে তুই আমার পাশে কিভাবে এলি? বেলাল হাহা করে জোরে হেসে দেয় তার হাসিতে যেন ভুবন কাঁপছিল কিন্তু ওই হাসির সাউন্ড আর কেউ শুনতে পাচ্ছিল না একমাত্র আরিফ শুনতে পাচ্ছিল। বেলাল বলে ওরাও আমাকে দেখতে পাবে যার যার সময় হলে সে ঠিকই আমাকে দেখতে পাবে। বলেই বেলাল কবরের উপর গিয়ে শুয়ে পড়ে হাসতে হাসতে মিশে যায়। আরিফ বুঝতে পারে না তার সাথে এটা কি হচ্ছে আর তার সাথেই বা কেন হচ্ছে?
হঠাৎ করে তনয়ের ফোনে একটা ফোন আসে ফোনটা কেটে দিয়ে তনয় বলে কাব্য বেলাল এর মৃত্যুর খবর শুনে সানি আর নাঈম আসছে ওরা স্টেশনে আছে ওখান থেকে এগিয়ে নিয়ে আসতে বলছে বলছে।
কাব্য বলে তাহলে ওদের জন্য গাড়ি পাঠিয়ে দেই।তনয় বলে ওকে তাই কর।
এর পরপর ই তনয় আবার ফোন দেই সানির কাছে,,, সানি কাব্যর গাড়ি পাঠাচ্ছি তোরা চলে যায় গাড়িতে উঠে।আমরা সবাই কাব্যর বাড়িতেই যাচ্ছি।সানি বলে গাড়ি নিয়ে তো কাব্যর বউ এসছে।তনয় কাব্যকে বলে এই কাব্য তুই গাড়ি নিয়ে ভাবিকে যেতে বলেছিস।কাব্য বলে কই নাতো।তনয় বলে সানি যে বললো কাব্যর বউ এসছে গাড়ি নিয়ে।
কাব্য অবাক হয়ে যায়।ও তো ফারজু কে বলেই নি গাড়ি নিয়ে যেতে।
কাব্য তনয় কে বলে হয়তো বাসার ল্যানলাইনে ফোন দিয়েছিলো তাই ফারজু ফোন টা ধরে আমাকে না পেয়ে ওদের আনতে গেছে।তনয় বলে যাক ভাবি তাহলে যথেষ্ট বুদ্ধি মতি আছে।
কাব্য,তনয়,আর আরিফ তার বাড়িতে পৌছে যায়।এখনি পৌছে যাবে সানিরা।তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে।কাব্য বাড়িতে এসে দেখে বিভিন্ন রকমের খাবার রান্না করে রাখা।কাব্য অবাক হয়ে যায় ফারজু তো বাসায় নেই তাহলে রাঁন্না টা করলো কে।
কাব্য ফ্রেশ হওয়ার জন্য নিজের রুমে যায় সেখানে গিয়ে কাব্য আবার ও চমকে যায়।একি ফারজু এখানে সুয়ে আছে।তাহলে গাড়ি নিয়ে ওদের আনতে গিয়েছে কে?কাব্য ফারজু কে ডাকে এই ফারজু ফারজু।ফারজু গভীর ঘুমে মগ্ন আছে।অনেক ক্ষণ ডাকার পরে ফারজুর জ্ঞান ফিরেছে।ফারজু বলে আপনি।এভাবে ডাকছেন কেনো?
"তুমি এখানে সুয়ে আছো।তুমি না সানি দের আনতে গিয়েছো"
"সানি কে"
"হোয়াট সানি কে মানে।সানি আমার ফ্রেন্ড।তুমি না ওদের আনতে গেলে"
"আমি কিভাবে আনতে যাবো।আমি কি তাদের চিনি কাব্য বাবু।"
"কিন্তু সানি যে বললো আমার বউ তাদের আনতে গেছে"
"কাকে আপনার বউ ভেবেছে কি জানি।আচ্ছা ওরা এলেই তো দেখতে পাবেন আমি ওদের সাথে আছি কিনা"
"তুমি এভাবে সুয়ে ছিলে কেনো"
আসলে আমি খুব ভয় পেয়েছিলাম।আপনাকে বলা ঠিক হবে কিনা জানিনা।
কিসের ভয়।আমাকে বলো।
ওই যে আপনি বললেন না আপনার কিছু গেস্ট আসছে। তাদের জন্য রান্না করতে।তাই আমি রান্না করছিলাম।হটাত রান্না ঘরে দেখি কেউ একজন আমার চোখ বেঁধে দিলো।আমি আপনাকে মনে করেছি।কিন্ত কিছুক্ষণ পর দেখি একটা অপরিচিত মানুষের কন্ঠ।সে নাকি আমাক্ব খেয়ে ফেলতে চাই।মানুষ খাওয়া নাকি তার অভ্যাস।তারপর যে কি হলো আমি জানিনা।আপনি ডাকলেন আর আমি ঘুম থেকে উঠলাম।
আমার গায়ে একটা চিমটি কাটেন তো আমি বেঁচে আছি কিনা।
কাব্য মনে করে ফারজু ভীষণ ভয় পেয়ে এমন বলছে।কাব্য আস্তে একটা চিমটি কাটার সাথে ফারজুর শরীর কেটে কালো কুচকুচে রক্ত বেরিয়ে এলো।
কাব্য এমন কালো রক্ত দেখেই চমকে গেলো।
একি ফারজু তোমার শরীরের রক্ত কালো কেন?
ফারজু বলে দীর্ঘদিন ফ্রোজেন ছিলাম তো তাই রক্ত জমে গিয়ে এমন হয়ে গেছে।
এরই মাঝে নিচে গাড়ির হর্ণ শোনা যায়।
সানি আর নাঈম গাড়ি থেকে নেমে আসলো।
কাব্য আর ফারজু গাড়ির কাছে আসাতেই নাঈম বলে আরে ভাবি আমাদের আগেই চলে এসছেন।
ফারজু আর কাব্য একে অপরের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে।কাব্যর কাছে গভীর রহস্যর লাগে ব্যাপার টা তাই কিছু না বলেই সানিদের ভিতরে আসতে বলে।
ফারজুকে খাবার রেডি করতে বলে কাব্য।
এদিকে কাব্য সানিকে বলে আচ্ছা ফারজু তোদের আনতে গেছিলো কি কি হয়েছিলো বল তো।
সানি বলে আমরা স্টেশনে ছিলাম।হটাত ভাবি এসে বলে আমি কাব্যর বউ।কাব্য বেলালের কবর জেয়ারত এ বিজি আছে। তাই আমাকে গাড়ি দিয়ে পাঠালো।তোর গাড়িটা দেখে নিশ্চিন্ত হলাম উঠে পড়লাম।কিন্তু মাঝ রাস্তায় এসে বলে আমাদের গাড়ি নিয়ে চলে আসতে উনি কিছু বাজার রেখেছে ওগুলো নিয়ে আসবেন।
ওই দিকে হসপিটালের লাশ উধাও হওয়ার ঘটনায় আতঙ্কে আছে পুরা হসপিটালের মানুষ। রোজ রাতে পুলিশে পাহারা দিচ্ছে হসপিটাল এর চারদিক।
মাহাস আহমেদ মিম কে ডেকে পাঠান।
মিম এসে বলে স্যার ডেকেছেন।
হ্যাঁ ডেকেছি।
সেদিনের পরে কি হলো বাকিটা তো আর বললেন না।আজ পুরাটা শুনতে চাই।
মিম তারপর থেকে বলা শুরু করে।
স্যার আমরা মাংস বাজারে গেলাম যে লোকটা মুরগীর পরিবর্তে মানুষের মাংস মিশিয়ে দিয়েছিলো সেই লোকটার চোখ মুখ অন্য রকম লাগছিলো।আশে পাশের দোকান গুলাতে খোজ লাগালাম।তারা বলে ওই লোকটা কারো সাথেই মিশে না।গভীর রাতে আসে।তবে গরু বা খাসি নিয়ে আসে না একটা করে মানুষ এনে জবাই দেই আর তার ই মাংস বিক্রি করে।লোকটা কখন আসে আর কখন যায় বুঝি না।এই মাস খানিক হইছে তার এমন অদ্ভুত আচরণ।এস আই আই শুভ লোকটাতে লাঠি দিয়ে কয়েক ঘা দেওয়ার পর বেরিয়ে আসে তার কাহিনী।যার মাংশ বিক্রি করেছে তার কাটা মাথাটা বেরিয়ে নিয়ে আসে।।।
কাটা মাথা দেখে আমি সেন্সলেস হয়ে গেছিলাম।এই মাথাটা আর কারো নয় আমাদের সিনিয়র ডাক্তারের।
আশে পাশের লোকজন অদ্ভুত রহস্যময়ী কিছু জিনিস বলে।।।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------

অনু_গল্প : (১৫ বছরের বউ )

 " লজ্জা করেনা! এই ৩৫ বছরে এসে ১৫ বছরের যুবতি মেয়ে কে বিয়ে করতে?

" আসলে হয়েছে কি!
"যৌ'বন উতল্লাছে আপনার যে আমাকে বিয়ে করছেন। নিজেকে দেখেছেন একবার আয়নায়।
"আমার কোন ইচ্ছেই ছিলো না আপনাকে বিয়ে কারার? কিন্তু আমার মা বাবা জোর করে বিয়েটা দিছে।
"জানা আছে আপনাদের মতো লোকদের? এমন সুন্দরী মেয়ে দেখলে কার বা মাথা ঠিক থাকে।
"আমি অন্য কারোর মতো না।
"সেটা দেখাই যাচ্ছে আপনি কেমন!
"চিন্তা করিয়েন না। আমি আপনাকে ডিভোর্স দিবো। তবে এর জন্যে কিছু দিন ধৈর্য ধরতে হবে।
"আমি এখনি ডিভোর্স চাই।
"এটা তো চাইলেই হবে না। এর জন্যে অপেক্ষা করতে হবে। আর আপনার যদি খুব সমস্যা থাকে তো আপনি আমাকে ডিভোর্স দিতে পারেন।
"এখন তো কতো বাহানা বের হবে।
"চুলুন এখন ঘুমিয়ে পরি। আজ অনেক চাপের মধ্যে দিয়ে গিয়েছি।
"যতো তারা তারি পারেন আমাকে ডিভোর্স দিবেন। আপনার সাথে আমি থাকতে পারবো না।
"ঠিক আছে চেষ্টা করবো।
"তো এর পরে এই ভাবে একটি মাস কেটে যেয়। কেউ কারো সাথে প্রয়োজন ছারা কথা বলে না।
"হঠাৎ একদিন মেয়েটি আলমারি তে কিছু একটা খুজতে গিয়ে একটি ডাইরি পায়। অনেক চিন্তা ভাবনার পরে কাউকে না বলে চুপি সারে পরতে থাকে।
#ডাইরিতে লেখা ছিলো :
-মা তোমার মৃ'ত্যুর ঠিক এক মাস পরেই বাবা বিয়ে করলো! বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই আমার সেই বাবা আর আগের বাবা নেই। ভাবছো কেনো! কারন তুমি যে নেই এই জন্যে । বাবা কে বলে ছিলাম বাবা আমি পরাশুনা করবো..? তখন সৎ মা বলেছিলো তুই পরাশুনা করলে এই সংসার কে চালাবে হ্যা। জমিতে কাজ করবে কে হ্যা। এর পরে সেখানেই আমার পরাশুনা ইতি। জানো মা সারা দিন রৌদ্রে কাজ করে আসি। কিন্তু এসে একটু খাবার পাইনা। মা আমার শরীরে রোদ লাগবে এই জন্যে তোমার মাথার কাপর দিয়ে আমার শরীর ঢাকতে। এখন দেখো তোমার এই ছেলে দিব্বি রোদে কাজ করে বেরায়। আমার বাব এখন আমার কথা শুনে পায়না। কারন আমি নাকি মিথ্যা বলি। মা তোমার চলে যাওয়াতে আমি এই জীবনটা মরূভূমি হয়ে গিয়েছে। তুমি কি জিনিস ছিলে মা এখন বুজি? জানো মা তোমার ওই সুন্দর দেখতে ছেলেটা কাজ করতে করতে কুৎসিত হয়ে গিয়েছে। আরো জানো মা যখন বিয়ের বয়স হলো তখন আমাকে বিদেশ পাঠিয়ে দেয়া হলো টাকা উপাচার্যের জন্যে । ............ এই ভাবে মেয়েটি ডাইরিটি পরতে পরতে শেষ পৃষ্টায় চলে আসে।
--জানো মা ভেবেছিলাম জীবনে শুখ তো করতে পাইলম না। একটি বিয়ে করে শুখের জীবন কাটাবো। কিন্তু সেটাও হলোনা এই অভাগার কপালে। কেনো জানো মা ওই টাকা কামাই করতে করতে কখন যে যৌবনের বয়সটা চলে গেছে ভাবতেই পারিনাই। বলো এই 35 বছরে এসে তোমার ছেরেকে কোন মেয়ে পছন্দ করবে। তবুও বিয়ে একটি করলাম কিন্তু বাসর ঘরে ডুকতেই তোমার বউমা আমাকে এতো কথা শুনিয়েছে যে বিয়ে করে শুখের সংসার করার ইচ্ছেটাই মারা গিয়েছে। তাকে কথা দিতেছি মা আমি ডিভোর্স দিবো। জানো মা আমার কষ্টটা তুমি ছারা আর কেউ বুজলো না।
( এখানে বুঝা যায় ছেলেটির মা ছোট্ট থাকায় মা"রা গিয়েছে )
--এই সব কিছু মেয়েটি পরার পরে, তার চোখে অশ্রু ঝরতে থাকে। কারন একটি মানুষ একটু শুখের জন্যে কতো কষ্ট করেছে আর সেই মানুষটাকেই এতো কস্ট দিয়েছি। না আর একটু ও কষ্ট পাইতে দিবো না তাকে। আমার ভালোবাসা দিয়ে তার জীবনটা রাঙ্গিয়ে তুলবো। এই সব ভাবতেছে ঠিক সেই সময় কারো একজন আসার শব্দ পাওয়ার সাথে সাথেই ডাইরিটা লুকিয়ে ফেলে।
"লুকানো সাথে সাথে দেখতে পায় যে এটা তার স্বামী । রুমে এসেছে।
বউ : এই যে শুনুন।
স্বামী : হুম বলো!
বউ: আমাকে মাপ করে দিন।
স্বামী : কেনো! কি করলে যে মাপ করবো।
বউ : আপনাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি।
স্বামী : আরে না কিসের কষ্ট?
বউ : আপনি আপনার ডাইরিটা পরেছি।
"এই কথাটি শুনার পরে পরেই স্বামী স্রী দুজনেই কিচুক্ষন নিরব থাকে।
বউ : প্লিজ আমাকে মাপ করে দিন। আমার ভূল আমি বুজতে পারছি।
স্বামী : ঠিক আছে মাপ করে দিলাম।
"মাপ করার কথাটি শুনেই মেয়েটি কান্না করতে করতে স্বামী কে জরিয়ে ধরে।
বউ : সত্যি তুমি অনেক ভালো । যা আমি আগে বুজতে পারিনাই।
স্বামী : পাগলি বউটা আমার আমি জানতাম তুমি একদিন সব মেনে নিবে।
"আর এখানেই এই অনু গল্পটি শেষ হয়।


ত্যাগ

 :-আমাদের ডিভোর্স কি আজই হয়ে যাবে পরশ ?

,
:- মায়ের এটাই ইচ্ছে !
,
:- ও , তোমার কোনও ইচ্ছে নেই ? আর একটু যদি তুমি ভেবে দেখতে?
,
:- অবনী , আমি কতো বার বলবো মা আমার সন্তান দেখতে চান। আমাদের বিয়ে হয়েছে এই চার বছর । অনেক ডক্টর আমরা দেখিয়েছি। সবার এক কথা তুমি কোনও দিন মা হতে পারবে না। এখন তুমি বলো আমি কি করতে পারি ?
,
:- আমাদের দু বছরের ভালোবাসা আর চার বছরের সংসার তুমি এতো তাড়াতাড়ি শেষ করে দিতে চাও ?
,
:- আমি অপেক্ষা করেছি তোমার আমার ভালোবাসার কথা চিন্তা করে । কিন্তু মাকে আমি কথা দিয়েছি তাকে তাঁর শেষ ইচ্ছে পূরণ করতে দেবো।
,
এই বলেই পরশ গটগট করে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল । আমি ধপ করে বসে পড়লাম বিছানায় । দুচোখ বেয়ে অঝোরে জল গড়িয়ে পড়ছে । বাঁধ মানছে না কিছুতেই ।
আমার আর পরশের প্রথম দেখা একটা শপিং মলে। আমি একটা দোকানে বসে কসমেটিক্স দেখছিলাম হঠাত্ করে পিছন থেকে কেউ একজন বলে উঠলো ,
,
:- এক্সকিউজমি , একটু শুনবেন ?
এভাবে ডাক শুনে চমকে উঠলাম । আবার সে বললো ,
,
:- এই যে ম্যাম , আপনাকেই বলছি ?
,
আমি একটু অবাক হয়ে কাছে গিয়ে বললাম ,
,
:- আপনি আমাকে বলছেন ?
,
:- জী আপনাকে । আসলে বন্ধুর বউয়ের জন্য একটা শাড়ি কিনতে আসছি। কিন্তু চয়েজ করতে পারছি না । প্লিজ যদি একটু হেল্প করতেন ।
,
:- ঠিক আছে আপনি কতো টাকার ভিতরে কিনতে চান বলুন আমি পছন্দ করে দিচ্ছি।
,
:- টাকা নিয়ে টেনশন নেই। যতো দাম হোক আপনি একটা শাড়ি পছন্দ করুন ।
সেদিন খুব সুন্দর একটা শাড়ি পছন্দ করে দিলাম । লোকটা খুশি হয়ে ফোন নম্বর দিয়ে বললো ,
,
:- আমি পরশ একটা বিদেশি কম্পানিতে জব করি। আপনি কি করেন জানতে পারি ?
,
:- আপাতত একটা স্কুলে জব করছি। আচ্ছা আসি ভাল থাকবেন ।
,
:- কিছু মনে না করলে আপনার নম্বর টা যদি দিতেন । কখনও এমন সিচুয়শনে পড়লে ফোন করে ডেকে নিব।
সেদিন ওর কথা শুনে হেসে দিলাম । তারপর থেকেই শুরু । ভালোলাগা ভালোবাসা । দু বছর এভাবে কেটে গেল । একদিন বাসা থেকে চাপ দিলো বিয়ে করতে হবে । পরশ কে বলতেই ও বললো , " আজই মায়ের সাথে কথা বলবো।
পরশ ছিল বিরাট কোটিপতির ছেলে । আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের সামান্য একটা স্কুল মাস্টারের মেয়ে । তাই পরশের মা সব কিছু শুনে বললো ,
,
:-ওই ঘরের মেয়ে আমার বাড়ির বউ হবার যোগ্য নয়।
পরশ তুমি ওকে ভুলে যাও।
কিন্তু না পরশ আমাকে ভুলিনি। বিয়ে করে নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল । পরশের মা আমাকে তিন বছর পর মেনে নিল ।
তারপর ও আমি ভিষন খুশি ছিলাম পরশের মতো এতো দায়িত্ববান স্বামী পেয়ে ।
,
কিন্তু আজ পরশ মায়ের কথা রাখতে আমাকে ডিভোর্স দিতে প্রস্তুত । আমি কোনও দিন মা হতে পারবো না এটাই আমার অপরাধ । তাই পরশ ঠিক করেছে আগের বারের ভুল টা শুধরে মায়ের বাধ্য সন্তান হতে ।
,
আমাদের ডিভোর্স টা হয়েই গেল । আমি শেষ পর্যন্ত স্থির ছিলাম । একটু ও কাঁদিনি। চোখ দুটি বড্ড শান্ত ছিল । পরশের মুখে ছিল বিজয়ের হাসি। হয়তো বাবা হবার স্বপ্ন ওকে নতুন করে ' বাঁচতে শেখাচ্ছিল।
,
কেটে গেল পাঁচ বছর । লোক মুখে শুনেছিলাম পরশ নিজের কাজিনকে বিয়ে করে বেশ সুখেই আছে । ও সুখে থাকুক সেইটাই চেয়েছিলাম সব সময় ।
,
:- অবনী আমার শার্ট কোথায়? যলদি দাও অফিসে জরুরি মিটিং আছে ।
,
:- এই নাও ,তোমার চোখের সামনেই ছিল । আচ্ছা ফারহান তুমি সব সময় কাছাকাছি সব কিছু থাকতে ও আমাকে ডাকো কেন ? তুমি যানো না তোমার মেয়ে কে সামলাতে গিয়ে আমি হিমসিম খাই।
,
:- ডাকি কারণ আমার লক্ষি বউটাকে না দেখে বাইরে যেতে ইচ্ছে করে না।
,
:- হয়েছে হয়েছে আর আহ্লাদ করতে হবে না। মেয়ে দেখছে সব কিছু ।
,
:- দেখুন তাতে আমার কি। ও জানুক ওর বাবা ওর মাকে কতোটা ভালোবাসে।
,
:- আচ্ছা শোন, পরশু পরীর জন্মদিন তুমি অফিসের সবাই কে বলবে কিন্তু । আমি চাই ওর প্রথম জন্ম দিনে সবাই উপস্থিত থাকুক ।
,
:- ভাল কথা মনে করিয়ে দিলে । আজই বলবো সবাই কে । আমার অফিসের বস কে ও বলবো। জানো অবনী স্যার বিয়ে করেছেন পাঁচ বছর কিন্তু কোনও বাচ্চা নেই।
,
:- ওহহহহ ! আচ্ছা ঠিক আছে তুমি তাকে ও আসতে বলো।
,
বিকেল থেকে অতিথি সব আসতে লাগলো। অনুষ্ঠান শুরু হতে বেশি বাকি নেই। হঠাত্ করে একটা পরিচিত মুখের দিকে দৃষ্টি আটকে গেল । পরশ ! দীর্ঘ পাঁচ বছর পর দেখা । পরশ ও আমাকে দেখে চমকে গেল । কারো বুঝতে বাকি নেই কে কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে ।
,
পরশ আমাকে দেখে ঘামতে শুরু করেছে। হিসেব মিলাতে ব্যস্ত পরী কে ? আমার তো কোনও দিন মা হবার কথা ছিল না তাহলে এই সন্তান ?

পরিবর্তন

 সকালে অফিসে যেতে দেরি হয়ে যাচ্ছিলো দেখে শ্রাবণী তাড়াহুড়ো করে গোসল করে কাপড় গুলো না ধুয়েই অফিসে চলে যায়। আমি শ্রাবণীর ভেজা কাপড়গুলো ধুয়ে ছাদে যখন শুকাতে নিয়ে যাই তখন দেখি আমার পাশের ফ্ল্যাটের আনোয়ার ভাই ছাদে দাঁড়িয়ে ব্রাশ করছে। আমি দড়িতে যখন শ্রাবণীর ভেজা শাড়িটা মেলে দিচ্ছিলাম আনোয়ার ভাই আমায় দেখে মুচকি হেসে বললো,

~ পিয়াস ভাই, আপনায় একটা কথা বললে কিছু মনে করবেন?
আমি বললাম,
-- বলেন কি বলবেন
আনোয়ার ভাই হাসতে হাসতে বললেন,
~ ভাই, আপনি পুরুষ মানুষতো না কি? কিছু মনে করবেন না, আপনাকে আমার কোনো এংগেলে পুরুষ মানুষ মনে হয় না
কথাটা শুনে আমি এই বিষয়ে কিছু না বলে বললাম,
-- ভাই আমি যাই। বাসায় আমার কিছু কাজ আছে
আনোয়ার ভাই তখন বললো,
~বাসায় গিয়ে তো মিয়া মেয়েদের মত থালাবাসন পরিষ্কার করবেন আর ঘর ঝাড়ু দিবেন
আমি তখন হেসে বললাম,
-- শুধু থালাবাসন আর ঘর পরিষ্কার না দুপুর আর রাতের জন্য রান্নাও করতে হবে
আমার কথা শুনে আনোয়ার ভাই মনে হয় কিছুটা রেগে গেলো। উনি তখন বললেন,
~যান মিয়া, মেয়েদের কাজ করেন গিয়ে। হাফলেডিস কোথাকার
আমি আর কিছু না বলে চুপচাপ নিচে নেমে আসলাম। আমাদের সমাজের কিছু মানুষ এখনো ঘরের কাজ গুলোকে শুধু মেয়েদের কাজ মনে করে। ৬ বছর প্রেম করার পর আমি শ্রাবণীকে বিয়ে করি। আর বিয়ের পর দুইজনেই চাকরিতে জয়েন করি। দুই বছর চাকরি করার পর আমি কিছু কারণে চাকরিটা ছেড়ে দেই। এখন আপাতত বাসায় আছি বাসার কাজ কর্ম করছি আর নতুন চাকরির জন্য চেষ্টা করছি।
ঘর গোছানোর কাজ যখন শেষ তখন শ্রাবণী ফোন দিয়ে বললো,
- পিয়াস, রাতে দেশি মুরগি আর জাম আলু দিয়ে পাতলা ঝোলের তরকারি খেতে ইচ্ছে করছে।
আমি মুচকি হেসে বললাম,
-- ঠিক আছে আমি রান্না করছি...
---
-----
বাইক নিয়ে ৪০ মিনিট ধরে শ্রাবণীর অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে আছি অথচ শ্রাবণীর আসার নাম নেই। তাছাড়া শ্রাবণীর ফোনের সুইচ-অফ। মনে মনে ভাবলাম ও হয়তো মিটিংয়ে আছে আসতে দেরি হবে। তাই পাশের চায়ের দোকান থেকে একটা সিগারেট কিনে মনের সুখে কয়েক টান দিতেই খেয়াল করি শ্রাবণী আমার সামনে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে। রাগলে শ্রাবণীর নাকে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে যায় আর ফর্সা চেহারাটা একদম গোলাপি হয়। খুব অদ্ভুত রকম সুন্দর লাগে তখন। আমি সিগারেটটা দূরে ফেলে দিয়ে বললাম,
--ভুল হয়ে গেছে, এই কান ধরছি আর জীবনেও কখনো খাবো না। এইবারের মত মাফ করে দাও
বাইক চালানোর সময় শ্রাবণী আমায় খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললো,
- পিয়াস, তোমায় আমি প্রচন্ডরকম ভালোবাসি। তোমার কিছু হলে আমি সত্যি মরে যাবো
আমি বললাম,
-- আরে পাগলি, আমি জানি তো তুমি আমায় প্রচন্ড ভালোবাসো
শ্রাবণী তখন আমার পিঠে সমানে কিল ঘুষি মেরে বলতে লাগলো,
- জানিস তাহলে সিগারেট খাস কেন? আমি চোখের থেকে আড়াল হলেই তুই সিগারেট খাস
আমি হাসতে হাসতে বললাম,
-- ছিঃ ছিঃ স্বামীকে তুই করে বলতে নেই
শ্রাবণী তখন আমায় আবার শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললো,
-পুরোনো অভ্যাস তো...
---
----
কুরবানী ঈদের ৯ দিন আগেই আমি শ্রাবণী গ্রামের বাড়ি এসে পরেছি। বাবার হাতে কুরবানীর গরু কিনার জন্য টাকা দিতেই বাবা অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে বললো,
~ আমি বেহালাল রোজগারের টাকা দিয়ে গরু কুরবানী দিতে পারব না?
আমি অবাক হয়ে বললাম,
-- বেহালাল বলছো কেন বাবা?
বাবা তখন রেগে গিয়ে বললো,
~নিজে বাসায় মেয়েদের মত বসে থেকে বউকে দিয়ে রোজগার করাচ্ছো। লজ্জা করে না বউয়ের টাকা দিয়ে চলতে?
আমি তখন বাবাকে বললাম,
-- এইখানে লজ্জার কি আছে? স্ত্রী যদি সংসারের হাল ধরে তাহলে সমস্যা কি? আর মেয়ে মানুষ টাকা ইনকাম করলেই সেটা বেহালাল হবে এটা কেমন কথা?
বাবা আরো রেগে গিয়ে বললো,
~তোমার এত প্রশ্নের উত্তর আমি দিতে পারবো না। তোমার বউয়ের টাকায় আমি কুরবানী দিবো না
বাবার কথা গুলো সহজে মেনে নিতে পারছিলাম না। তাই আমি আর শ্রাবণী ঈদ না করেই ঢাকায় আবার এসে পরি। বিকালের দিকে বেলকনির গ্রীল ধরে যখন বাহিরে তাকিয়ে ছিলাম তখন হঠাৎ শ্রাবণী এসে বললো,
- তোমার একটা ভালো চাকরি হলেই আমি আমার চাকরিটা ছেড়ে দিবো।
আমি অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে বললাম,
-- কেন?
শ্রাবণী চোখের কোণে জমে থাকা জলটা মুছতে মুছতে বললো,
- তোমায় কেউ বাজে কথা বললে আমার খুব কষ্ট হয়
আমি শ্রাবণীকে কাছে টেনে বুকের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললাম,
-- সমাজের কিছু মানুষ খারাপ কথা বলবেই। এতে কষ্ট পাওয়ার কিছু নেই। কথা গুলো এক কান দিয়ে ঢুকিয়ে অন্য কান দিয়ে বের করে দিবে। দেখো একদিন সমাজের সকল মানুষ বুঝবে আর সেদিন এই সমাজটা পরিবর্তন হয়ে যাবে
এমন সময় আনোয়ার ভাইয়ের ফ্ল্যাট থেকে ভাবীর চিৎকারের শব্দ শুনে আমি শ্রাবণী দৌড়ে উনাদের ফ্ল্যাটে গেলাম৷ গিয়ে দেখি আনোয়ার ভাই উনার স্ত্রীকে মারছেন। আমি আনোয়ার ভাইয়ের হাত থেকে লাঠিটা কেড়ে নিয়ে বললাম,
-- আরে, আপনি ভাবীকে মারছেন কেন?
আনোয়ার ভাই রেগে গিয়ে বললো,
~ আমি পুরুষ তাই আমি আমার স্ত্রীকে মারছি। আপনার মতো হাফলেডিস না যে ঘরে বসে মেয়েদের কাজ করবো আর বউয়ের ইনকাম খাবো
আমি উনার কথা শুনে বললাম,
-- তারমানে নিজের পুরুষত্ব প্রমাণ করার জন্য স্ত্রীর গায়ে হাত তুলতে হবে?
আনোয়ার ভাই যখন আমায় কিছু বলতে যাবে তখন শ্রাবণী রেগে গিয়ে বললো,
- আপনার নিজেরও তো একটা মেয়ে আছে। আপনার মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার পর আপনার মেয়ের জামাই আপনার মেয়েকে মেরে তার পুরুষত্বের প্রমাণ দেয় তখন আপনার কেমন লাগবে?
শ্রাবণীর কথা শুনে আনোয়ার ভাই একদম চুপ হয়ে আছে। শ্রাবণী তখন আনোয়ার ভাইয়ের কাছে গিয়ে বললো,
- আমার স্বামীর পুরুষত্ব নিয়ে যদি আপনার সন্দেহ হয় তাহলে একটা কাজ করেন। নিজের---
শ্রাবণী আনোয়ার ভাইয়ের কানে কানে কি যেন একটা বললো। আনোয়ার ভাই কথাটা শুনে মাথা একদম নিচু করে আছে। আমি রুমে এসে অবাক হয়ে শ্রাবণীকে বললাম,
-- তুমি কানে কানে কি এমন বললে যে আনোয়ার ভাই একদম মাথা নিচু করে ফেললো?
শ্রাবণী আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বললো,
- খারাপ কথা গুলো এক কান দিয়ে শুনে আরেক কান দিয়ে বের করে দিতে হয় না। প্রতিটা খারাপ কথা গুলোর জন্য প্রতিবাদ করতে হয়। যেন নেক্সট টাইম এই খারাপ কথাগুলো বলার আগে দ্বিতীয়বার ভাবে। সমাজ এমনি এমনি কখনোই পরিবর্তন হবে না। প্রতিটা খারাপ কাজ আর খারাপ কথার সঠিক জবাব দিতে পারলে সমাজ এমনিতেই পরিবর্তন হবে

মাতাল

 এক বুড়ো 'বারে' গিয়ে ম দ গিলতো,

.
.
.
আর মা/তা/ল হয়ে তার গায়ের চাদর হারিয়ে আসতো।
.
.
.
তাই তার বউ বুড়োকে খুব ঝা/ড়/তো।
.
.
.
একদিন বুড়ো ঠিক করলো আজকে 'বারে' যাওয়ার আগে গায়ের সাথে চাদরটা খুব টাইট করে গিট লাগিয়ে নেবে, তাহলে আর হারাবে না।
.
.
.
রাতের বেলা হেবি করে মা ল টা ল খেয়ে বুড়ো বাসায় ফিরলো।
.
.
.
বুড়িকে টলতে টলতে বলল, 'দেখেছো, আজকে গায়ের চাদর ঠিকঠাক আছে।'
.
.
.
বুড়ি বলল, 'চাদর তো ঠিকঠাক আছে। কিন্তু , . .তোমার লু/ঙ্গি কই ...???

শ্বশুর বাড়ি

 বিয়ের পর শ্বশুর বাড়িতে ঘুরতে গিয়েছি।আমার একমাত্র শালিকা সকালে তার হাতের গরম গরম চা নিয়ে এলো ,হাসি মুখে শালিকা কে বললাম,শালিকা তোমার চোখগুলো তোমার বোনের চেয়েও বেশি সুন্দর

🙈বউ দরজায় দাড়িয়ে শুনে ফেললো।তারপর থেকেই আমার শ্বশুর বাড়ি যাওয়া বন্ধ,বউ বলে দিলো যেদিন আমার বোনের বিয়ে হবে সেদিনি তুমি শ্বশুর বাড়ি যেতে পাড়বে তার আগে না।🥺
অফিসের কলিগ শান্তার সাথে হেসে সেদিন দুটো সেলফি তুলেছিলাম।শান্তা আমার আইডি ট্যা'গ করে ফেসবুকে আ'প'লো'ড করে দিলো।বউ সেই ছবিগুলো দেখার পর,সেদিন রাতে অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পর দাঁত কেলিয়ে বউয়ের সাথে পুরো ছয়'শো ছবি তুলতে হয়েছিলো।পরের দিন অফিসে যেয়েও আমার দাঁত কেলানি বন্ধ হচ্ছিলোনা।কলিগ শামসুল ভাই বললেন, তার মেয়ের হাত ভেঙ্গে গেছে হসপিটালে ভর্তি কথাটা শুনার পর ও আমার দাঁত কেলানি বন্ধ হচ্ছিলোনা,এই দেখে শামসুল ভাই আমাকে রাম ধলাই দিয়ে চলে গেলেন। সেতো আর জানে না বউয়ের সাথে দাঁত কেলি ছ'শো ছবি তোলার পর আমার মুখ আর বন্ধ হচ্ছে না।
অফিস থেকে ৪দিনের ছুটি পেয়েছি।আজকাল বউয়ের মন মেজাজ ও ভালো।রাতে খেতে বসেছি এমন সময় ডোরবেল বেজে উঠলো বউ গিয়ে দরজা খললো, পাশের ফ্ল্যাটের ভাবি এসেছেন, হাতে একটা বাটি।ভাবি হেসে হেসে আমার বউকে বললেন,ভাই সেদিন ফেস'বুকে পোস্ট দিয়েছিলেন শুটকি ভর্তা খেতে ইচ্ছে করছে,মেসেঞ্জারে নক দিয়েছিলাম ,ভাই আমার কাছে শুটকি ভর্তা খেতে চেয়েছিলেন তাই বানিয়ে নিয়ে এলাম।তারপর বউয়ের হাতে ভর্তার বাটি দিয়ে ভাবি আমাকে একটা বাকাঁ হাসি দিয়ে চলে গেলেন। আর এদিকে আমি মনে মনে দোয়া দরুদ পাঠ করতে শুরু করলাম এবার আমার কি হবে।
তারপর আর কি আজ তিন দিন বউ সকাল সন্ধ্যা শুধু শুটকি ভর্তা দিয়েই ভাত খেতে দিচ্ছে।😶😒

চাদরে_জড়ানো_চিরকুট

 ট্রেনে বসে বসে স্বামীর ছবির দিকে তাকিয়ে চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে গেল। ঠিক সেই মুহূর্তে পাশের সিটের ছেলেটা ঘুমের মধ্যে লতার ঘাড়ে মাথা রাখলো। লতা বেশ বিরক্ত হয়ে গেল, তার মনে হচ্ছে সে ইচ্ছে করে এমনটা করেছে।

তাকে ধাক্কা দিয়ে বললো,

- দয়া করে বসতে দিয়েছি বলে এখন সরাসরি গায়ে পরে শুয়ে যাচ্ছেন কেন?

- স্যরি, আসলে সারারাত ঘুমাতে পারিনি তাই তন্দ্রা লেগে গেছে।

- আপনার নামটা যেন কি?

- রাফসান মাহমুদ।

- তা মাহমুদ সাহেব, আপনি যদি নিজেকে খুব বেশি চালাক মনে করেন তাহলে কিন্তু ভুল। কারণ ছেলেদের এসব অভ্যাস জানি বলেই একাই দুই সিট নিয়েছিলাম। কিন্তু কেন যে তখন দয়া করতে গেলাম, আর এখন আমার মাথা চিবিয়ে খাচ্ছেন।

- ছেলেটা কে?

- কোন ছেলে?

- মোবাইলের গ্যালারিতে যার ছবির দিকে চেয়ে চেয়ে আপনার চোখ ঝাপসা হয়ে গেছে।

- আমার হাসবেন্ড।

- কবে মা/রা গেছে?

- মা/রা যাবে কেন, আশ্চর্য!

- তাহলে এভাবে ম/রা কান্নার দরকার কি?

- আপনি কিন্তু আপনার লিমিট ক্রস করছেন। আর একবার ফালতু কথা বললে আমি আপনাকে সিট থেকে উঠিয়ে দিতে বাধ্য হবো।

- আপনি কি ভুলে যাচ্ছেন যে কিছুক্ষণ আগেই আমি এই সিটের ভাড়া আপনাকে পরিশোধ করে দিয়েছি।

- হা হা হা সমস্যা নেই টাকা ফেরত দিয়ে দেবো।

- আচ্ছা ঠিক আছে আর কোনো কথা বলবো না।

ছেলেটা সত্যি সত্যি চুপ করে রইল। লতা কিছুক্ষণ বাহিরে তাকিয়ে আছে। বিমানবন্দর স্টেশন থেকে সে যখন ট্রেনে উঠে বসে তার কিছুক্ষণ পরেই মাহমুদ এসে তার দিকে তাকিয়ে বলেছিল,

- কেমন আছেন?

লতা অবাক হয়ে বললো,

- কে আপনি?

- আমাকে আপনি চিনবেন না, আসলে আমার খুব জরুরি কাজে চট্টগ্রামে যেতে হবে। তাই আমি ট্রেনে সিট না পেয়েও উঠে গেলাম, যেভাবে হোক আমাকে এই ট্রেনে চট্টগ্রাম যেতে হবে।

- তো এসব আমাকে কেন বলছেন?

- কারণ আমার মনে হচ্ছে আপনার পাশের সিটে কেউ নেই। নিশ্চয়ই আপনি একাই দুটো টিকিট সংগ্রহ করেছেন।

- কীভাবে বুঝলেন?

- খুব স্বাভাবিক, আপনার ব্যাগপত্র এক সিটে রেখেছেন আর নিজে একটাতে বসেছেন। বসার ভঙ্গিতে বোঝা যাচ্ছে দুটো সিটই আপনার কিন্তু মানুষ আপনি একজন।

- আপনার ধারণা সম্পুর্ণ সত্যি এবং আপনার বুদ্ধি বেশ ভালো মনে হচ্ছে। কিন্তু আপনাকে সেই বুদ্ধির পুরষ্কার হিসেবে আমি আমার সিটে বসতে দিতে পারবো না।

- আপনি কীভাবে বুঝলেন আমি আপনার পাশে বসতে চাই?

- গায়ে পরা স্বভাব দেখে।

- দেখুন আমার বোন খুব অসুস্থ তাই আমাকে চট্টগ্রাম যেতেই হবে। আমি আপনার এক সিটের ভাড়া আপনাকে পরিশোধ করে দেবো।

বলাই বাহুল্য, অনেক তর্কের পরে লতা তার পাশের সিটটা তাকে দিল। কারণ এতটুকু কথা বলে তাকে ফাজিল মনে হয়েছে ঠিকই কিন্তু খারাপ বলে মনে হচ্ছে না।

কিন্তু একটু আগে ঘাড়ে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ার কারণ বেশ বিরক্ত হয়ে গেছে লতা। ট্রেনের এক স্টাফ কফি নিয়ে এসেছে। মাহমুদ লতার দিকে তাকিয়ে বললো,

- কফি খাবেন?

অনিচ্ছা সত্ত্বেও লতা মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বললো। তারপর কফি হাতে নিয়ে দুজনেই চুপচাপ কফি খেতে লাগলো। কফি খেতে খেতে লতা বললো,

- আপনার বোন কি চট্টগ্রামে থাকে?

- না ঢাকাতেই।

- তাহলে সে চট্টগ্রামে কি বেড়াতে গিয়ে অসুস্থ হয়েছে নাকি অন্য কিছু।

- আমার বোন ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি আছে এখন।

- তাহলে বললেন যে বোন অসুস্থ তাই আপনাকে চট্টগ্রামে যেতেই হবে।

- হ্যাঁ বোনের জন্যই যাবো। আমার বোনের অবস্থা ভালো না, যেকোনো সময় মা/রা যেতে পারে। কিন্তু তার একটা শেষ ইচ্ছে আছে, আমিও তাকে কথা দিয়েছিলাম।

- কি কথা দিয়েছেন?

- বলেছি আমি যেভাবেই হোক তার ওই ইচ্ছেটা আমি পূরণ করবো। কিন্তু কিছুদিন আগে আমার বোন সু/ই/সা/ই/ড করার চেষ্টা করে। বি𑅃ষা/ক্ত একটা কেমিক্যাল খেয়ে ফেলেছে, কোত্থেকে যোগাড় করেছে জানি না। পেটের মধ্যে পঁচন ধরতে শুরু করেছে, চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার দরকার। তবুও সুস্থ হবার সম্ভাবনা মাত্র ১০%

ছেলেটার সঙ্গে এতক্ষন ফাজলামো জাতীয় কথা হলেও এখন মোটামুটি করুণা হচ্ছে লতার। খুব ভয়ঙ্কর একটা ঘটনা কত স্বাভাবিক ভাবে বর্ননা করছে মাহমুদ নামের এই ছেলে।

- লতা বললো, আপনার বোনের বিয়ে হয়েছে?

- না, বিয়ে হয়নি।

- বোনের শেষ ইচ্ছে রাখার জন্য আরও আগে কেন চট্টগ্রামে গেলেন না? তাছাড়া কি এমন ইচ্ছে যেটা চট্টগ্রামে গিয়ে পূরণ করতে হবে।

- ট্রেন থেকে নামার সময় আপনাকে বলবো। আপাতত ওর প্রসঙ্গটা বাদ দেন।

- বোনের জন্য ক/ষ্ট হচ্ছে তাই না?

- হুম। মা-বাবা কেউ নেই, একমাত্র বোন সেও চলে যাচ্ছে না ফেরার দেশে। ক/ষ্ট তো হবেই।

- আপনি বিয়ে করেননি?

- না।

লতা আর কোনো কথা খুঁজে পাচ্ছে না। চুপচাপ বসে থেকে কিছুক্ষণ পর বললো,

- আপনার বোনের চিকিৎসার জন্য কত টাকার দরকার?

- অনেক টাকা।

- যদি আমি টাকা দিতে চাই তাহলে আপনার কি সেই টাকায় তার চিকিৎসা করাতে পারবেন?

- না, প্রথমত টাকায় কোনো কাজ হবে না তাহলে আমি আগেই টাকা ব্যবস্থা করতাম। তাছাড়া এই স্বল্প পরিচয়ে আপনি কেন টাকার প্রসঙ্গে চলে গেলেন বুঝতে পারছি না।

- দেখুন টাকাটা যদি আমি দেই তাহলে অবশ্যই ভালো করে খোঁজখবর নিয়ে দেবো। আমার বাবা সারাজীবন শুধু টাকা আয় করেছেন আর আমি খরচ করেছি।

- এতো টাকা আপনার তাহলে আমার কাছ থেকে টিকিটের টাকা নিলেন কেন?

- সেটা তো আপনি জোর করে দিলেন।

- ঠাট্টা করলাম। আপনি চট্টগ্রামে কেন যাচ্ছেন?

- খুঁজতে।

- হাসবেন্ডকে খুঁজতে যাচ্ছেন?

- হ্যাঁ।

- যেখানে ভালোবাসা থাকে না সেখানে খুঁজে বের করে কি লাভ বলেন? তারচেয়ে আপনার উচিৎ যে ছেড়ে চলে গেছে তাকে তার মতো থাকতে দেয়া।

- আমি তার সঙ্গে একটা বার মুখোমুখি দাঁড়াতে চাই, চাইলে থানা পুলিশ করতে পারি। সামান্য কিছু টাকা খরচ করলে তাকে দুদিনের মধ্যে আমি চোখের সামনে পাবো৷ কিন্তু আমি সেটা চাই না।

মাহমুদ আর কিছু বললো না। সিট থেকে উঠে বগি থেকে বের হয়ে গেল। লতা ভাবলো হয়তো সে ওয়াশরুমে গেছে। কিন্তু রাফসান মাহমুদের মনের মধ্যে যে খুব নোংরা নি/কৃ/ষ্ট একটা পরিকল্পনা আছে সেটা মাহমুদ ছাড়া কেউ জানে না।

মাহমুদ কি করতে ট্রেনে উঠেছে আর তার মনের মধ্যে কি আছে সেটা যদি লতা জানতো তাহলে সে এতক্ষণে কি করতো সেটা ধারণার বাইরে।

ট্রেনের ওয়াশরুমের সামনে ফাঁকা জায়গায় এসে মাহমুদ তার পরিচিত একটা নাম্বার কল দিল।

সবকিছু ঠিক আছে কিনা আরেকবার নিশ্চিত হয়ে মোবাইল কল কেটে দিয়ে সিটে চলে গেল।

★★

ফেনি স্টেশন পার হয়ে লতা ঘুমিয়ে গেল। লতা ঘুমিয়ে যাবার পরে বেশ সুবিধা হলো মাহমুদের। পকেট থেকে কাগজ-কলম বের করে লতার জন্য একটা চিরকুট লিখে শেষ করলো। আর কিছু সময় পরে সে চট্টগ্রামে পৌঁছে যাবে৷

ট্রেনের মধ্যে যে গুরুত্বপূর্ণ কাজটা রয়েছে সেটা শেষ করে অনেক আগেই নেমে যেতে পারতো। কিন্তু তাকে চট্টগ্রাম যেতে হবে, বাকি কাজটা করতে হবে চট্টগ্রামে। তাই ট্রেন থেকে নামার আগ মুহূর্তে সে ট্রেনের কাজটা শেষ করবে।

চিরকুট লিখে আবারও ওয়াশরুমে গেল মাহমুদ। সিরিঞ্জ ভর্তি কেমিক্যাল বি/ষ ভর্তি করে সেটা সাবধানে পকেটে ভরে নিল। আরেকবার পাশের বগিতে গিয়ে শিকারকে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করে নিল।

সীতানকুন্ড পার হবার পরে মাহমুদ লতাকে ঘুম থেকে জাগ্রত করলো। লতা বললো,

- চলে এসেছে?

- হুম কাছাকাছি তবে আপনি যদি ওয়াশরুমে যেতে চান তাই আগেই ডেকে তুললাম।

- আচ্ছা।

আরও খানিকক্ষণ কাটলো। এরমধ্যে মাহমুদ উঠে গেল, তারপর মিনিট দশেক পরে আবার ফিরে এসে বসলো। একটু পরে পকেট থেকে চিরকুট বের করে লতার হাতে দিয়ে বললো,

- ঘড়ি ধরে পাঁচ মিনিট পরে আপনি এটা পড়া শুরু করবেন।

লতা বিস্মিত চোখে তাকিয়ে রইল। মাহমুদ তার ডান হাত বাড়িয়ে দিয়ে লতার গাল স্পর্শ করে বললো,

- আপনার সঙ্গে আবারও দেখা হবে। আজকের এই দেখা কাকতালীয় নয় এটা পরিকল্পনা। আমি আপনাকে চিনি, নিজের প্রয়োজনে আপনার সঙ্গে আমি যোগাযোগ করবো। সাবধানে থাকবেন।

মাহমুদ চলে গেল। লতা অপেক্ষা না করে তাড়াতাড়ি চিরকুট পড়তে লাগলো।

ম্যাডাম,

আমি একজন কন্ট্রাক্ট কি/লা/র। টাকার বিনিময়ে মানুষ খু// করা হচ্ছে আমার পেশা। আপনি যাকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন, আপনার সেই স্বামীকে খু/ন করার জন্য আমি ট্রেনে উঠেছি। আমি জানি আপনার গর্ভে তার সন্তান, তবুও তাকে খু/ন করা ছাড়া উপায় ছিল না।

আমার যে বোনটা মৃত্যুর মুখে আছে সে আমার আপন বোন নয়। তার মৃত্যুর জন্য আপনার স্বামী দায়ী। আপনি আপনার স্বামীর আসল পরিচয় জানেন না। জানলে হয়তো তার জন্য এভাবে আপনি ছোটাছুটি করতেন না।

সতেরো দিন ধরে আমি আপনাদের দুজনকে ফলো করছি। মাঝখানে সপ্তাহ খানিক ধরে সে আমার চোখের আড়াল হয়ে যায়। তারপর থেকে পুরোপুরি আপনাকে নজরে রাখতাম কারণ আমি জানি আপনার মাধ্যমে তাকে পাবো।

আপনার প্রতি নজরদারি করতে গিয়ে আমি আপনার তিনজন শত্রু সনাক্ত করেছি। প্রতিনিয়ত তারা আপনাকে হ/ত্যা/র ষড়যন্ত্র করে কিন্তু সময় সুযোগের অপেক্ষা। আপনাকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাবার জন্য তো আপনার স্বামী দায়ী তাই না?

সেই তো আপনাকে বলেছে চট্টগ্রামে গেলে তার সঙ্গে দেখা করতে পারবেন তাই না? কিন্তু এটা আপনার জন্য একটা ফাঁদ পাতা হয়েছে। আমি চেষ্টা করবো আপনাকে সাহায্য করতে। কিন্তু আপনার স্বামীকে খু/ন করার পর আপনি আমাকে বিশ্বাস করবেন কিনা সেটাই ভাবনার বিষয়।

আমার গোলাপি চাদরটা রেখে গেলাম। যদি দেখা করতে ইচ্ছে করে তাহলে সন্ধ্যা বেলা নিমতলা বিশ্বরোড অপেক্ষা করবেন। চট্টগ্রাম রেলস্টেশন আপনার জন্য বিপজ্জনক। স্টেশনে নেমে কিন্তু পুলিশের সহোযোগিতা নিবেন।

আপনার স্বামী আমাদের পিছনের বগিতে W 43 নাম্বার সিটে বসে আছে। এতক্ষণে হয়তো ঘুমের মধ্যে মৃ/ত্যু হয়ে গেছে, সেই কৃতিত্ব আমার।

সাবধানে থাকবেন।

আপনার আগত সন্তানের পিতাকে হ/ত্যা করার জন্য ক্ষমা করবেন। আমি বোনের শেষ ইচ্ছার জন্য এটা করতেই হতো। বাকি কিছু জানার যদি ইচ্ছে করে তাহলে দেখা করিয়েন।

রাফসান মাহমুদ।

ট্রেন থেমে গেছে, সেই সঙ্গে থেমে গেছে লতা। তার যেন বিশ্বাস হচ্ছে না এই চিঠি। সবাই ততক্ষণে ট্রেন থেকে নেমে গেছে। লতা তার ব্যাগটা নিয়ে পিছনের বগিতে গেল। মাহমুদের বলা সিটের কাছে গিয়ে হতবাক হয়ে গেল লতা। তার স্বামী চোখ বন্ধ করে সিটে বসে আছে, মাস্ক পরা হলেও চিনতে অসুবিধা হয়নি লতার।

লতা হাত বাড়িয়ে তাকে স্পর্শ করে ধাক্কা দিতেই মৃ/ত শরীরটা একদিকে ঢলে পড়ে গেল।

অভিশপ্ত রজনী

  মৃত মেয়েটিকে ধর্ষণ করার সময় মেয়েটি যে জীবিত হয়ে ওঠে সেটা খেয়াল করেনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় কাব্য।ধবধবে সাদা চামড়ার মেয়েটিকে ভোগ করার...