২০০৯ সালে আমি এক প্রতারকের হাত ধরে বাসা থেকে চলে আসি। আসার সময় বাসা থেকে মায়ের ৫ ভরি গহনা আর বাবার বেতন এর নগদ ২০ হাজার টাকা নিয়ে প্রতারকের সাথে পাড়ি জমায় নতুন জীবনের আশায়।
আমি ভোর ৬ টা বাজে বাসা থেকে বের হয়।।
২০০৯ এর দিকে ও ফোন এতটা সচল না ছিলো ২০২১ এর মতো।
প্রতারক টা আমাদের এলাকার ভাড়াটিয়া ছিলো। চিঠির মাধ্যমে তার সাথে আমার প্রণয় এর সম্পর্ক গড়ে উঠে।
আমি ভয় পাচ্ছিলাম আবার সুখ ও পাচ্ছি কারণ আমার প্রিয় মানুষ টার সাথে আমি নতুন অধ্যায় শুরু করবো তাই।
আমরা রেল এ করে ঢাকায় আসি। ঢাকায় আসার পর সে বললও মুনা তোমার টাকা গুলো দাও তো।
তখন আমি নিজের কাজে ৫ হাজার রেখে বাকি ১৫ হাজার তাকে দিয়ে দি।
আর সে আমাকে বলে কত এনেছো। আমি তাকে বলেছি ১৫ হাজার এনেছি।
আর কিছু গহনা।
সে শুধু আমাকে বললও গহনা গুলো সাবধানে রেখোও।
আমরা একটা খাবার হোটেলে ঢুকি আর নাস্তা করি।
হোটেল থেকে বের হয়ে সে মোবাইল এর দোকানে ঢুকে।
সে আমার টাকায় একটি Android smartphone কিনে ১২ হাজার টাকা দিয়ে।আর তার নকিয়া মোবাইল টা আমাকে দেয়।
তার মোবাইল টার দাম ১ হাজার টাকা এমন হবে।
সে মোবাইল কিনে আমাকে বলে এ শহরে এমন দামী মোবাইল না থাকলে ভালো চাকুরি জুটবে না৷
আমি ও তার কথায় বিশ্বাস করে নিলাম।
এরপর সে আমাকে নিয়ে তার বন্ধুর বাসায় উঠে। বন্ধু টা ১ টা রুমে থাকে।
সেখানে আমরা ২ জন।
রাতে আমি আর ও নিচে থাকি আর বন্ধু টা চকির উপরে থাকে।
রুমে একটা ভাঙা চকি ছিলো আর কয়েকটি হাড়িপাতিল আর বতল।
আর তেমন কিছু ছিলো না।।
সে রাতে আমার কিছুতেই ঘুম আসছিলো না।
পরের দিন সকাল বেলা তার বন্ধু চাকুরিতে যাওয়ার পর সে আমাকে বলে দেখি তোমার কাছে কি কি গহনা আছে।
আমি গহনা গুলো বের করে তাকে দেখায়।
আর টাকা গুলো আমার কাপড়ের মধ্যে লুকিয়ে রাখি।
তারপর তার সাথে আমার দৈহিক সম্পর্ক হয়৷।
এভাবে কয়েকদিন যায়। কিন্তুু সে আমাকে বিয়ে করছিলো না। আমি তাকে বিয়ের জন্য অনেক চাপ দি। তারপরে ও সে আমাকে বিয়ে করছে না৷
সে আমাকে বলে ভালো দিনে বিয়ে করতে হয়। আমি তোমাকে শুক্রবার দিন বিয়ে করবো।
আমি ও তার কথায় বিশ্বাস করি।
ওই বাসা টায় ৪ দিন অতিক্রম করার পর আমার সে একদিন বাহির থেকে এসে আমাকে বলে মুনা আমরা যে অবিবাহিত একসাথে আছি এলাকার কয়েকটি ছেলে পেলে সেটা জেনে যায়।
এখন তারা বাসার দিকে আসছে আমরা কি করবো।
এটা বলার কিছু সময় পর ৩ টা ছেলে আসে। আর আমাদের কে নানা রকমের বাজে কথা বলতে থাকে।
ও ছেলেদের কিছু টাকা দিয়ে ম্যানেজ করতে চাই কিন্তুু তারা রাজি হয়না।
তখন ছেলে গুলো বলে তাদের সাথে আমি শারিরীক সম্পর্ক করলে তারা নাকি আমাদের ছেড়ে দিবে।।
আর তার বন্ধু বাসা টা এমন একজায়গায় ছিলো আশে পাশে মানুষ আছে কিন্তুু বাড়ির দরজা আটকিয়ে দিলে কে কি করে সেটা কেউ খোঁজ রাখে না আর দেখা ও যায় না।
আমার তো শয়তানটার নাম ও বলা হয়নি। শয়তান টার নাম ছিলো রাজিব।
তখন তারা আমাদের বিভিন্ন ভয় দেখায়। এক পর্যায়ে নিরুপায় হয়ে আমরা রাজি হয়ে যায়।
ও দিন ওই ৩ ছেলেই আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে৷
আমি খুব ভেঙে পড়ি। এবং রাজিব কে বিয়ের জন্য বলি৷
রাজিব আমাকে বলে পরশুদিন আমরা বিয়ে করবো।
তারপরে দিন রাজির এর বন্ধু রাজিব বাসা না থাকায় অবস্থায় আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে। রাজিব বাসায় আসার সাথে সাথে তাকে ঘটনা টা বলতেই সে আমাকে বলে এরকম কিছু হয়না এসব করলে।
বন্ধু মানুষ থাকতে দিছে আমাদের তার সাথে না হয় একটু সময় কাটালা তাতে কি হয়েছে।
আমি তার কথায় অবাক হয়ে যায় এটা কি বলে।
সেদিন রাতে রাজিব আমাকে বলে চলো আমাদের বাড়িতে চলে যায়।
তার আগে আমার বড় বোনের বাড়িতে গিয়ে আমরা বিয়ে টা সেড়ে নিবো।
তার বড় বোনের বাড়ি নাকি কুমিল্লা তে।
আমি ও তার কথায় বিশ্বাস করে সেদিন রাতে আমরা কুমিল্লার জন্য রওনা দি।
এবং সে আমার সাথে আনা গহনা গুলো নিয়ে নেয়৷ বলে আমার কাছে রাখি তুমি হারিয়ে ফেলবে।
আমি ১৭ বছরের এক আবাল যুবতি না বুঝে তাকে বিশ্বাস করে ফেলি।
কুমিল্লাতে আসার পর আমরা একটা বাসায় আসি।
সেখানে একটা খুব সুন্দরী মহিলা ছিলো৷
আমি তাকে সালাম দি।
সে নাকি রাজিব এর বোন। তারপর তারা একটা রুমে গিয়ে কি কথা যেন বললও।
তারপর রাজিব আমায় বললও মুনা কিছু খেয়ে ঘুমাও অনেক জার্নি করে এসেছো।
রাতে আমরা বিয়ে করবো। এখন আমি বিয়ের বাজার করতে যাচ্ছি তুমি থাকো।
আমি ও তার কথায় বিলিভ করে থেকে গেলাম সেখানে আমার মত কয়েকটি মেয়েকে দেখলাম৷ আর বাসা টা অনেক বড় ছিলো।
আমাকে ভাত দেওয়া হলো। ভাত খেয়ে আমি ঘুমিয়ে গেলাম৷
রাতের বেলা ঘুম ভাঙলো। তখন রাজিব এর কথা জিজ্ঞেস করাতে আমাকে ওই মহিলা বলে তোরে রাজিব আমার কাছে বেইচচা দিছে।
এখন কথা কম ক।
রাতে রুমে মেহমান যাইবো খুশি করে দিস।
আমি ওই মহিলার কথা বিশ্বাস ই করতে পারছিলাম না কি বলে এসব।
আমি কান্না করি আর চিৎকার করি এখান থেকে বের হওয়ার জন্য।
এজন্য আমাকে অনেক মারে।
১ দিনে ৩ টা পুরুষ পাঠানো হতো আমার কাছে। আর যদি আমি না করতাম তাহলে আমাকে অনেক মারতো।
ওখানে ৯ দিন থাকার পর আমাকে কুমিল্লা বর্ডার দিয়ে ইন্ডিয়াতে পাচার করে দেয়। আমি বর্ডারে এক পুলিশ কে সব বলে দি সাহায্যর জন্য।
তখন পুলিশ টা আমার সাথে আসা পুরুষ টাকে বলে আমার কাছে তোদের নামে বিচার দিছে।
শেয়ানা মাইয়া সাবধানে রাখিন।
ইন্ডিয়াতে আসার পর এক বিশাল পতিতালয়ে আমার জায়গা হয়।
আমার জীবনটা তখন পতিতালয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ
ওখানে ৩ মাস রাখার পর দার্জিলিং এ আমাকে নিয়ে আসা হয়৷
প্রশাসন রা এসব জানতো কিন্তুু তাদের কিছু বলতো না। কারণ মাসে মাসে তারা একটি মোটা অংকের টাকা পেতো।
---------------------------------------------------------------------------------------------------------------
দা/র্জি/লিং এ যাওয়ার পর আমার অবস্থা খুব খারাপ হতে থাকে। আর তারা খুব অ/ত্যা/চা/র করতো বলার মতো না।
আর আমাদের তারা গরু ভাবতো। প্রতিদিন ৪ জন কিংবা ৫ জন পুরুষ আমাদের কাছে পাঠাতো। যদি আমরা করতে না চাইতাম কু/কু/রের মতো মা/রতো।
সত্যি বলতে মা/ই/রকে তো সবাই ভয় পায়। আমি ও ভয় পেতাম মা/ইর খেতে।
আর যে পুরুষ গুলো আসতো শালারা সব হা/রা/মির বাচ্চা ছিলো। আমাদের শরীরটাকে তারা শরীর মনে করতো না। মনে করতো কোন লোহা।
সব পুরুষই হিন্দু ছিলো। গা থেকে সব সময় পাঠা পাঠা গ/ন্ধ আসতো।
আমার সহ্য হতো না। একদিন সিদ্ধান্ত নি এসব
জা/হা/ন্না/ম থেকে মৃ/ত্যু ভালো।
তাই আ/ত্ম/হ/ত্যা করার সিদ্ধান্ত নি।
বাথরুমে গিয়ে ঝর্ণার পাইপ এর সাথে নিজের গলায় দড়ি দি।কিন্তুু মৃ/ত্যুর খুব কাছাকাছি এসে নিজে আবার বাঁচতে চাই।
মৃত্যুর কষ্ট অনেক ভয়ানক। সেদিন গলায় দ/ড়ি দিয়ে ও নিজেকে কোন রকম বাঁচিয়ে নি।।
দা/র্জি/লিং এ ১ মাস থাকার পর আমাদের নেপালে নিয়ে যাওয়া হয়৷
আমি সহ মোট ১৮ টা মেয়েকে নেপালে তারা পাচার করে।
নেপালে আমাদের একটা বাংলো বাড়ির মতো জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখান কার কমলালেবু গুলো এত মিস্টি ছিলো যা আমি জীবনে ও ভুলবো না।
নেপালে আমাদের যে জায়গা টাতে রাখা হয় সেটা বিশাল বড় জায়গা।
হাঁটার অনেক জায়গা ছিলো।। কিন্তুু ওখানে আমাদের ব্যবসা তেমন ভালো হয়না।
নেপালী কিছু কাস্টমার দের মতে আমরা বাঙালি রা নাকি তেমন সুদর্শন আর আকর্ষণীয় না ও দেশের নারীদের মতো।
এজন্য কাস্টমার একটু কম হতো।
এমনও সময় যেতো যে সপ্তাহে ১ টা ও পরতো না। আমরা বেজায় খুশি ছিলাম।
আমার বাড়ির কথা ভীষণ মনে পড়তো। কত সুখের জীবন ছিলো অথচ আমি নিজেই আমার জীবনটা নষ্ট করেছি।
আমরা ৪ বোন ছিলাম। বাবা চাকুরী করতেন। মাসে ৩০ হাজার টাকা বেতন পেতেন সে টাকা দিয়ে আমাদের খুব ভালোই দিন যেতো।
আমি সবার ছোট ছিলাম৷। আমাদের বড় বোনের তখনও বিয়ে হয়নি। আর আমি তো সবার ছোট আমার হতে অনেক দেরি।
আর এখন বিয়ের কথা বললে কখনও মানবে না। কারণ আমার বড়ো আরো ৩ টা আছে। তাই রাজিব এর সাথে পালিয়ে আসি।
আর এটাই আমার জীবনের কা/ল হয়ে দাঁড়ায়। বাবা সবসময় চাইতেন আমরা সব বোনেরা যেন পড়ালেখা করে মানুষ এর মত মানুষ হয়।
কিন্তুু নিজের ভাগ্য নিজের হাতে শেষ করেছি।
কাউকে দোষারোপ করার মতো নেই।।
নেপালে আসার পর এখানে এক ই/ন্ডি/য়ান মেয়ের সাথে আমার বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। নাম হলো পূজা।
ওর নসিব টা ও খারাপ ছিলো। ওর সত মা ওরে বেঁচে দেয়।
ওর বাড়ি ফেরার আর ইচ্ছে নেই। এখান থেকে সে পালিয়ে যেতে যায়।
আমাদের অনেক কথা হয়। আর ও আমার আপনজন হয়ে উঠে।
কারণ আমার এ মূহুর্তে কেউ নেই।
আমরা ফাঁ/দ পাতি পালানোর কিন্তুু কেন রকমে সুযোগ হয়ে উঠে না।
আমার যেখানে থাকতাম সেখান থেকে বের হতে পারতাম না।অনেক চেষ্টা চালায় কিন্তুু কোন রকমে সফল হতে পারি না পালানোর জন্য।।
নেপালে টানা ২ বছর থাকি।
আর এ ২ বছর আমাদের তেমন কোন কাজ করতে হয়নি৷
ধরতে গেলে আমাদের বসে বসে খাইয়েছে।
এরপর দালালগুলো আমাদের আবার বিক্রি করে দেয় আরেক দালালের হাতে।
তারা আমাদের ভুটান নিয়ে যায়।
এখন আপনারা হয়তো বলতে পারেন ভিসা পাসপোর্ট ছাড়া কিভাবে পসিবল।
আসলে তাদের সাথে চুক্তি থাকে প্রশাসনের।
এমনকি ২০২৩ সালে এসে ও কাউকে বাংলাদেশ থেকে বর্ডার দিয়ে কোথাও পাচার করতে গেলে ও কিছু লাগে না।
কারণ ঘাটে ঘাটে কিছু অসাধু দালাল থাকে এদের জন্য।
ভুটান যাওয়ার পর আমাদের অবস্থা একদম খারাপ হয়ে যায়।
এখানে আমাদের চাহিদা অনেক আর কাস্টমার ও আসে অনেক।
যে দালাল টা আমাদের কিনেছে সে ৫ মাসের মধ্যে আমাদের দিয়ে ব্যবসা করিয়ে টাকা উঠিয়ে ফেলেছে।
আমাদের কাছে বেশির ভাগই আসতো বিবাহিত পুরুষ রা।।
তাদের সাথে মাঝে মাঝে কথা হতো।
আমি তাদের বলতাম ঘরে বউ রেখে কেন আমাদের কাছে আসো।
তারা উওর দিতে তাদের নাকি এক জিনিস আর ভালো লাগে না।
আমি তাদের ভ/য়ং/কর রকমের গালি দিতাম আর তারা আসতো।
এত বছর এ পেশায় থাকতে থাকতে আমি ও এ পেশা টাকে মানিয়ে নিয়েছি।
কারণ কিছু করার নেই।
কিছু টাকা জমাতে লাগলাম। কিছু পুরুষ আছে কাজ শেষ হলে কিছু টিপস দিতো। ২০ টাকা ৫০ টাকা।
এভাবে করে জমাতে লাগলাম। কারণ আমার ইচ্ছে ছিলো এখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার।
ভুটানে দীর্ঘ ২ বছর কাটানোর পর একদিন পুলিশ এর রেড পরে।
আমরা যে দালালের কাছে ছিলাম সেই দালালের বউ এর সাথে তাদের কোন একটা ঝামেলার কারণে সেখানে পুলিশ নিয়ে আসে।
দালাল টা পুলিশ দের টাকা পয়সা দিয়ে কোন রকম ভাবেই ম্যানেজ করতে পারে না।
কারণ সেখানে সংবাদিকরা ও চলে আসে। আমরা মোট ৫৬ জন মেয়ে ছিলাম সবাইকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখানে ৩ রাত রাখা হয় আমাদের।এ ৩ টা রাত আমাদের কাছে বিভিন্ন পুলিশ রা আসতো। এবং আমাদের সাথে শা/রী/রিক সম্পর্কতে যেতো।
শালার পুলিশ রা ও মানুষ না।
৩ দিন থাকার পর এক বৌ/দ্ধ ধর্মীয় পুলিশ এর নাকি আমাকে খুব পছন্দ হয়।তাই সে আমাকে তার বাসায় নিয়ে যায়।।
পুলিশ ছিলো আর ব্যাচেলর ছিলো। আমাদের মধ্যে থেকে প্রায় ২১ জন মেয়েকে বিভিন্ন পুলিশ কর্ম কর্তারা তাদের সাথে নিয়ে যায়।
আমাকে নিয়ে আসার পর পূজার খবর আর জানি না।
সে আমার খুব ভালো বন্ধু ছিলো। কিন্তুু কোন ফোন বা যোগাযোগ এর মাধ্যম না থাকায় আমাদের বন্ধুত্ব সেখানে হারিয়ে যায়।
আমি আজও মিস করি পূজাকে। জানি না সে কেমন আছে।
পুলিশ টার নাম ছিলো ইনোল।।
আমাকে তার বাসায় আনার পর আমাকে তার ঘরের কাজ কর্ম করতে বলতো।
এবং সে বাহিরে যাওয়ার সময় আমাকে বাহির থেকে তালা দিয়ে যেতো।
ভূটান ও যাওয়ার পর আমি ভূটান এর ভাষা টা শিখে যায়।
এমনকি আমি নেপালীয় ভাষা টা ও পারতাম। তাই কথা বলতে কোন অসুবিধা হতো না৷
ইনোল খুব রাগী আর বদমেজাজি লোক ছিলো।
সে আমাকে সবসময় বলতো আমি যেন বউয়ের মতো আচরণ করি তার সাথে।
আমি চুপচাপ থাকতাম তার সাথে খুব বেশি কথা বলতাম না৷
ঘরের সব কাজ করতাম আর রাত হলে নিজেকে ভোগের সাম/গ্রী বানাতাম।এভাবেই চলছিলো জীবন।
৬ টা মাস কাটার পর আমি ইনোলকে বললাম এভাবে কত দিন আমাকে ব/ন্ধি করে রাখবে আমি বের হতে চাই৷
বাহিরের দুনিয়াটা ঘুরে দেখতে চাই।
ইনোল এর আমার কথায় মন গলেছে সেদিন সে আমাকে নিয়ে বের হয়।
আমি এ ১ম ভুটান শহর টা দেখি। অথচ ভুটানে আমি আজ আড়াই বছরের মতো।
ইনোল এর পর থেকে আমাকে আর তালা দিয়ে যেতো না৷
আমি নিজেই বাজার করতাম এবং যখন যা লাগতো তা দোকান থেকে নিয়ে আসতাম।
ইনোল আমাকে টাকা দিতো।
কিন্তুু ইনোল এর উপরে আমার কখনও ভালোবাসা জন্মে নি।
আমি আর পালাতে চাই তাম না। কারণ হচ্ছে আমি একা কখনও বর্ডার পার হতে পারবো না।
আর আমাকে একাই যুদ্ধ করতে হবে। তারজন্য মাথার উপরে একটা ছাদ দরকার। একজন সাহায্য কারী দরকার।
আমি মনে করতাম হাজার পুরুষ এর শ/য্যা স/ঙ্গী হওয়ার চেয়ে একজনের অধীনে থাকা অনেক ভালো৷।
এর মধ্যে ইনোল এর বদলি হয়। আর সে আমাকে নিয়ে ভুটানের অন্য শহরে চলে যায়।
একটি বাসা ভাড়া নেয়।আমাকে স্ত্রী পরিচয় দেয় বাড়িওয়ালার কাছে।
ইনোল ছিলো অনাথ একজন মানুষ । সে ছোট বেলায় তার বাবার বন্ধুর কাছে মানুষ হয়।
তার বাবার বন্ধু তাকে লেখাপড়া শিখায়। আর তার বিনিময়ে ইনোল এর বাবার দেওয়া কিছু সম্পদ তিনি রেখে দেন।
ইনোল ও আর এগুলো নিয়ে মাথা ঘামায় না। কারণ সে সরকারি চাকুরি করছে তাতেই তার বেশ চলে যাচ্ছে।
আমি ইনোল কে প্রায় সময়ই বলতাম আমি বাংলাদেশে যেতে চাই মৃ/ত্যুর আগে হলে ও। আমি আবার পরিবার এর কাছে ফিরে যেতে চাই।
ইনোল কোন উওর দিতো না বলতো নসীবে থাকলে যাবে ।
ইনোল মাঝে মাঝে তার মেয়ে কিছু বন্ধুদের বাসায় আনতো।
আর তাদের সামনে আমাকে তার ঘরের কাজের লোক হিসাবে পরিচয় দিতো।আমি ও কিছু বলতাম না চুপচাপ থাকতাম৷
মাঝে মাঝে তার মেয়ে বন্ধুরা একরাত কিংবা ২ রাত বাসায় থাকতো।
আমি তাদের খাবার দাবার সহ সব যত্ন আওি করতাম৷
ইনোল আমাকে যে বাজারের টাকা দিতো আমি সেখান থেকে প্রচুর টাকা মা/রতা/ম৷
ইনোল ছিলো ঘু/ষ খোর পুলিশ তাই তার টাকার অভাব ছিলো না।
আমি ইনোল এর সাথে দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করতে শুরু করেছি৷ আমি পাপী আমার পাপের কোন শেষ নেই৷
আমি জানি আমি কিছু দিন পর মা/রা যাবো।। তখন আমার মনের অবস্থা কেমন হতে পারে আশা করি এটা বুঝাতে হবে না।
আমি আল্লাহর দরবারে নিজের অপক/র্মের জন্য মাফ চাইতে লাগলাম।
এবং ইনোল কে বুঝাচ্ছি তোমার যদি ভালো লাগে আমার ধর্মে আসতে পারো।
তবে আমি তাকে চাপ দিচ্ছি না যে আমার ধর্মে আসতেই হবে৷
আমি ঘরের ভেতর সারাদিন কোরআন তেলওয়াত আর ইসলামি ওয়াজ চালিয়ে রাখতাম।
কারণ এসব শুনলে আমার মন ভালো হয়ে যেতো৷ আর মনে হতে দুনিয়া মি/থ্যা এখানে না থাকায় ভালো৷
ইনোল ও বিষয় টা বুঝতে পারে।
২০১৯ এট সেপ্টেম্বর এ ইনোল নিজ ইচ্ছেতে ইসলাম ধ/র্মে আসে এবং সেদিন ই আমাদের বিয়ে হয়।
তার শারীরিক অসুস্থতার কারণে ইনোল এর মুসলমানি করানো পসিবল হয় না।
আমি আর ইনোল বৈবাহিক জীবনে আবদ্ধ হলাম। আমাদের এ বৈবাহিক জীবনে কোন শা/রী/রিক চাহিদা নেই৷ আছে একজনের উপর আরেকজনের ভালো বাসা আর সম্মান ।
ইনোল আমায় বলেছে সে যেদিন ইসলাম গ্রহণ করে সেদিন এর মতো শান্তি তার এত বছরের জীবনে লাগে নি৷ এমনকি ও দিন তার শান্তিতে ঘুম হয়েছে একটু ও মৃ/ত্যু/র ভয় কাজ করে নি৷
আমি ইনোলকে বললাম তোমাকে আমার দেশ দেখাতে চাই আমাদের মৃ/ত্যুর আগে৷
আমরা ২০১৯ এর ডিসেম্বর এ দেশে যায়৷
বহু কষ্ট আমি আমার বাড়ির ঠিকানা জোগাড় করে বাড়িতে যায়।
বাড়িতে গিয়ে জানতে পারি আমার বাবা মা/রা গেছে।
মা আছে আর বোনেরা।
মাকে এত বছর পর জড়িয়ে ধরার কি যে এক শান্তি বলার মতো না৷।আমাদের আসার খবর পেয়ে সবাই আমাদের দেখতে আসে৷
কিন্তুু যখন শুনলো আমাদের এ/ইচ/আ/ইভি হয়েছে সবাই আর দেখা করে না কথা বলে না।
মা বোনেরা পারে না যা এখনি ঘর থেকে বের করে দিতে।
আজকে নিজের রক্তরা ও এমন করছে।
বাংলাদেশ এ ২ দিন ছিলাম এর পর বাধ্য হয়ে ভুটানে চলে আসি।
এরপর তাদের সাথে আর যোগাযোগ রাখিনি ইচ্ছে করে।
২০২০ সাল আসে।
ইনোল এর নাম হয় মোহাম্মদ ওমর ফারুক।
আমার আর ওমর এর ধ্যান শুধু আল্লাহর দিকে। আমরা কোন নামাজ কাযা করতাম না। উল্টো প্রতিযোগিতা করে নামাজ পড়তাম৷
ওমর খুব দান করতে শুরু করে। আর তাহাজ্জুদ আদায় করতো সবসময়।
২০২০ এ করোনা ভয়াবহ আকার ধারণ করে।
যদি ও আমাদের ভুটানে এতটা ভয়াবহ ছিলো না।
ওমর এর সব সম্পদ আমার নামে দিয়ে দেয়।
আর তার গাড়ি সেল করে দিয়ে সে টাকা গরীব দুঃখীেদর মাঝে দান করে৷
ওমর নিজের টাকায় জমি কিনে ভুটানে একটি মসজিদে নির্মাণ করে যায়। কিন্তুু মসজিদ এর কাজ পুরোটা সম্পুর্ন করতে পারে না৷
২০২০ সালে নভেম্বর এর ৮ তারিখ ওমর আমাকে ছেড়ে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে চলে যায়।
মৃত্যুর কয়েকঘন্টা আগে ও ওমর আমাকে বলেছিলো ইসলাম এতটা শান্তি যে আগে জানলে আগেই আমি ইসলাম এর পথে আসতাম৷
বিধবা হয়ে যায় আমি।
এ ভুটান শহরে কেউ নেই আমার।
ওমর এর মসজিদ এর কাজ টা আজও শেষ করতে পারি নি আমি করোনার কারণে।
জানি না আমার মৃত্যুর আগে আমি শেষ করতে পারবো কিনা।
আমার দিন কাটছে শুধু মৃত্যুর প্রহর গুণে।
আমি ওমর কে ভীষণ ভালোবেসে ফেলেছি৷ তার জন্য জায়নামাজ ছাড়া আমি কান্না করি না। যদি তার
আ/জাব হয়।
আমি শুনেছি মৃত্যু মানুষ এর জন্য কান্না করলে নাকি তার আজব হয়৷
আমার জীবনের এখন একটাই আশা আমি বেঁচে থাকতে থাকতে মসজিদ টা নির্মাণ শেষ করা।
আমার দিন কাটে সারা দিন কোরআন শরীফ পড়ে। আর কিছু ফেসবুক বোনদের সাথে কথা বলে।
আমি জীবিত থাকা কালীন আমি আমার নিজের কাফন এর কাপড় সব সব কিনে রেখেছি৷ এবং আমাকে কবর দেওয়ার জন্য যা যা দরকার সব ব্যবসথা করে রেখেছি।
আমার লায় গোসল করানোর মানুষ ও ঠিক করে রেখেছি।
সব রেডি শুধু উপরওয়ালার ডাক আসার দেরি।
আমার জন্য দোয়া করবেন। সাথে আমার স্বামীর জন্য ও।
আল্লাহ আমাদের সব গুনাহ মাফ করে দেয়।
আপনারা কখনও কাউকে বিশ্বাস করে তার পরিচয় ভালো করে না জেনে আবেগে গলে বাড়ি ছাড়বেন না।
কে জানে আপনার ভাগ্য টা ও হয়তো আমার মতো এত জঘন্য হতে পারে৷
সর্ব পরি আল্লাহর দরবারে সবকিছুর জন্য আলহামদুলিল্লাহ।
ভালো থাকুন।
No comments:
Post a Comment