Wednesday, 6 September 2023

কষ্টের সংসার

 জন্মের পর মেয়ের বাবা মারা যায়,

অন্য দশ জনের মতো মেয়েটা সুন্দর ছিল না ,
কালো , অস্বাভাবিক চেহারা নিয়ে ছোট বেলায় থেকে কথা শুনতে শুনতে বড় হচ্ছে মেয়েটা।
বাবা মারা যাবার পর মা আর মেয়ে কে ছেলেরা আলাদা করে দিল।
অভাবের সংসার এই কালো মেয়ে কে নিয়ে মানুষের বাড়িতে বাড়িতে কাজ করে চলছে মা মেয়ের ছোট সংসার।
.
মেয়ে যখন বুঝতে শুরু করলো তখন তাকে প্রতিনিয়ত কথা শুনতে হতো , কালো বলে কেউ জায়গা দিত না।
ভাইয়ার মেয়ে গুলা কোলে নিতে দিত না, ভাবি গুলা নানান কথা শুনাতো ।
,
অনেক সময় তো মা ও বলতো কেন জন্ম হয়েছে তোর ,মরে যেতে পারছ না।
,
মায়ের এমন কথা মেয়েটা কাঁদে আর বলে কালো হওয়া কি আমার অন্যায়?
কেন সবাই আমাকে পর ভাবে,
কালো তো আল্লাহ সৃষ্টি করেছে নিজেতো সৃষ্টি করি নাই,
,
দিন যাচ্ছে আর বড় হচ্ছে মেয়েটা ,
এই দিকে সবাই মেয়েটা কে ঘৃণা করে এবং দূর করার জন্য ভাবতেছে বড় ভাই এবং তাদের স্ত্রী রা ,
সবাই বিয়ের কথা ভাবতেছে।
বিয়ে দিলে সবাই বাঁচে, মা ও মেয়ের জন্য চিন্তা করে কিভাবে কালো মেয়ে কে বিয়ে দিবে,
কে কালো মেয়ে কে বিয়ে করবে।
,
কালো মেয়ে ও ভাবে
যে অন্য মেয়েদের মতো বুঝি তার বিয়ে হবে না ,
,
যাই হোক অবশেষে একটা
ছেলে কে পাওয়া গেল।
,
,মেয়েটার কাছে খবর আসলো
কিছু দিনের মধ্য তার বিয়ে হবে ,
তখন মেয়েটার আনন্দের সীমা ছিল না ,
কিন্তু মেয়েটার জানতো না কার সাথে তার বিয়ে হবে।
,
মেয়ে আগ্রহের সাথে ভাবি কি জিজ্ঞেস করলো আমার স্বামী দেখতে কি রকম?
,
ভাবি অহংকার করে বললো কালির আবার হবু স্বামী,
তোর স্বামী বিয়ে আরো তিন টা হইছে তোকে বিয়ে করলে তার চার টা বিয়ে পূর্ণ হবে,
,
মেয়েটা শুনে মায়ের কাছেই গেলো
চোখে পানি নিয়ে বললো মা আমি কালো বলে আমাকে কেন এই রকম লোকের সাথে বিয়ে দিতেছ
আমায় বিয়ে দিও না মা,
আমি সারা জীবন তোমার কাছে থাকতে চাই,
মা বললো , দুনিয়াতে অনেক মানুষ আছে কেউ সুন্দর আবার কেউ সুন্দর নয়,
এক সময় সবার বিয়ে হয় ,
হয়তো কারো আগে , আর কারো পরে,
ভালো খারাপ সব মেনে নিতে হয়।
,
যে মা তার মেয়ে কে ভালোবেসে আড়াল করে রাখতো আজ সেই মা মেয়ে কে বিয়ে দেয়ার জন্য ব্যস্থ।
,
বিয়ের আগে মেয়ের সাথে একবারের জন্য ছেলের দেখা হয়নি,
বিয়ের দিন তারিখ ঠিক হয়ে গেলো,
বিয়ের দুই দিন আছে আর!
মেয়ে মা কে বললো মা আমি বিয়ের দিন কি শাড়ি পরবো,
মা বললো ,দেখি তোর ভাবিদের থেকে একটা শাড়ি নিতে পারি কিনা।
,
মেয়ে তার বড় ভাবি কে বললো ভাবি তোমার বিয়ের শাড়িটা দিও,
ভাবি বললো , কালীর সখ কত তুই শাড়ির যোগ্য নাকি!!
,
মেয়েটা কাঁদতে কাঁদতে মায়ের কাছে চলে আসলো।
এইভাবে ছোট ভাবি অনেক জনের কাছে শাড়ি চাইলো কেউ দিল না,
বড় ভাই কে বললো ভাইয়া আমার জন্য বাজার থেকে একটা মেহেদি নিয়ে আছিস,
বড় ভাইয়া ও খুব অপমান করলো,
এইভাবে সবার কাছ থেকে অবহেলায় পেয়ে মেয়েটা
মায়ের কাছে আসে অসয়হায় হয়ে,
মাকে বললো মা আমি বিয়ের দিন তোমার পুরাণ শাড়িটা পরবো।
,
অবশেষে কালো মেয়েটার আজ
বিয়ে।
,
সবার মতো মেয়েটার বিয়ের অনুষ্ঠান না হলে ও এইটা বিয়ে,
হয়তো "বর" গাড়ি করে আসবে না
আর কনে ও দোলনা করে যাবে না।
,
মেয়ে ঘরের মধ্য একটা ছোট্ট কক্ষে মায়ের পুরাতন শাড়ি পরে
অপেক্ষা করছে।
,
ভাবছে আমি কি রকম আমার
স্বামী কি
রকম হবে ,
কাউকে তো বলতে পারছে না,
এইদিকে
ছেলের বাড়ি থেকে ৫ জন লোক আসলো
বর আসে নাই এখনো ,
দীর্ঘ অপেক্ষা পর বর আসলো
বর কে দেখে মা এবং সবাই অবাক হয়ে গেলো!
এবং ভাবতে লাগলো
আমি কার সাথে আমার মেয়ে বিয়ে দিচ্ছি!!
----------------------------------------------------------------------------------------------
ব্যাথা উপেক্ষা করে আবার রান্নার দিকে নজর দিলাম।হঠাৎ করে আমার মনে পড়লো গত বছর রমজানে ও আমার মা আমাকে আর আমার ছোট বোন মিলিকে কোনো কাজে হাত লাগাতে দেয় নি।কিন্তু এই বছর আমাকে ই একা হাতে সব সামলাতে হচ্ছে।
আমরা তিন বোন।কোনো ভাই নেই।বড় আপুর বিয়ে হয়ে গেছে।দুলাভাই প্রবাসী।মাসে আমাদের জন্যে কিছু টাকা দেয়।আর তা দিয়ে কোনো মতে আমাদের সংসার চলে।বাবা আগে একটা বেসরকারী চাকরী করতো।বয়সের কারনে সেই চাকরীটা ও হারালো।কোনো মতে কষ্টে-সৃষ্টে আমার বিয়ে দিলো।এখনো ছোটো বোন মিলি রয়েছে অবিবাহিতা।ইদানীং বাবার শরীরটা ও ভালো যাচ্ছে না।
রান্না প্রায় শেষ পর্যায়ে তখন হঠাৎ করে আমার ননদ এসে বললো ভাবী আমার জন্যে একটু সুপ করে নিও তো।অনেকদিন সুপ খাওয়া হয় না।
আমার ননদের কথা শোনে আমি বেশ অবাক হই।এইটা কী মানুষের কথা।এই রোজার মধ্যে এইসব রান্না করবো।কিন্তু মুখ বুজে সব সহ্য করে নিলাম।আমি বললাম আচ্ছা সব ঠিকমতো হয়ে যাবে।রান্না শেষে অজু করে আসরের নামাজ আদায় করে নিলাম।আসরের নামাজ শেষে গিয়ে একটু আরাম করলাম।হঠাৎ মোবাইলের রিং বেজে উঠলো।আমি মনে মনে ভাবলাম সোহান(আমার স্বামী)কল করেছে।কিন্তু মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখলাম মা কল করেছে।মায়ের কল রিসিভ করলাম।
আমিঃহ্যালো।।আসসালামু আলাইকুম।মা কেমন আছো??
মাঃভালো আছি।কিন্তু তোর বাবা ভালো নেই।।
আমিঃকী হয়েছে বাবার।
মাঃতোর বাবার শ্বাসকষ্ট টা ইদানীং বেড়ে গেছে।
আমিঃডাক্তার দেখাও নি??
মাঃডাক্তার ঔষধ দিয়েছে।কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না।
মায়ের কথা শোনে আমার কলিজাটা ছিঁড়ে বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।দুচোখ থেকে বৃষ্টির মতো অশ্রু ঝরছে।
মাঃশ্রুতি তোকে একটা কথা বলি কী।তুই তোর শ্বাশুড়িকে বলে চলে আয়।
আমিঃমা ওনারা এখন আমাকে কিছুতে ই যেতে দিবেন না।
মাঃআচ্ছা চেষ্টা করিস।বিশ্রাম করবি।আর ঠিকমতো ঔষধ খাবি।
আমিঃআচ্ছা মা।
মাঃভালো থাকিস(কান্না করতে করতে)
আমিঃআচ্ছা মা।তুমিও বাবার খেয়াল রেখো।
আর কিছু না বলে মা কল কেটে দিলো।আমি বুঝতে পারলাম মা বড্ড অভিমান করেছে।মায়েরা সন্তানদের প্রতি এমন ই হয়।
মায়ের সাথে কথা বলা শেষ করে আমি আমার শ্বাশুড়ির কাছে গেলাম।সেখানে গিয়ে দেখলাম আমার শ্বশুর আর ননদ ও উপস্থিত আছে।
আমিঃমা আপনাকে একটা কথা বলার ছিলো।।
মাঃকী বলবে আবার।বলো দেখি।
আমিঃমা আমার বাবা খুব অসুস্থ।মা ফোন করে বলেছে গিয়ে কয়েকটা দিন থাকতে।।
মাঃকী বলছো এইসব।তোমার কান্ডজ্ঞান বলতে
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমাকে সিজার করা হলো।আল্লাহর রহমতে রাজকন্যার মা হলাম।মেয়েকে দেখে সব দুঃখ ভুলে গেলাম।মেয়েটা হাত-পা নাড়িয়ে কান্না করছে।দেখে ই মনটা জুড়িয়ে গেলো।।
কিছুক্ষণ পর হঠাৎ সোহান আর আমার শ্বশুরকে রুমে দেখলাম।সোহান এসে ই মেয়েকে কোলে নিলো।মেয়েকে আদর করলো।তারপর আমার কাছে এলো।আমাকে জিজ্ঞেস করলো কেমন আছো শ্রুতি??
আমি বললাম ভালো আছি।।
আমার শ্বাশুড়ি আর ননদকে কোথায়ও দেখতে পেলাম না।হাসপাতালে চারদিন ছিলাম।চারদিনের মাথায় আমার শ্বাশুড়ি আর ননদ একটি বারের জন্যেও এসে আমার মেয়েকে দেখলো না।কিন্তু আমার শ্বশুর প্রতিদিন আসতেন আমাকে আর নাতনীকে দেখতে।।
আমার শ্বাশুড়ির রাগের কারনটা আমি বুঝতে পারছি।কিন্তু উনি যে এতটা রাগী হবেন তা জানতাম না।আচ্ছা মেনে নিলাম আমি ই বা পর কিন্তু এই মেয়েটা তো ওনাদের বংশধর।বংশের প্রদীপ।।
হাসপাতালের বিল আসলো পঁয়ত্রিশ হাজার টাকা।সোহান পনেরো হাজার টাকা দিয়েছে আর বাকি বিশ হাজার টাকা আমার বড় আপু দিয়েছে।
আমাকে হাসপাতাল থেকে সোজা আমাদের বাড়িতে নিয়ে গেলো।যাইহোক আমি একটু হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম।আমাদের বাড়িতে আমি প্রায় দেড় মাসের মতো ছিলাম।হঠাৎ করে একদিন আমার শ্বশুর এসে আমাকে নিয়ে গেলেন।
আমার মা দশ কেজি মিষ্টি দিলো আর সাথে আট হাজার টাকা দিলো।
আমি সোহানদের বাড়িতে যাওয়ার পর চারদিকের মানুষ আমাকে দেখার জন্যে ভিড় করলো।সবাই তিথিকে(আমার মেয়ে) দেখতে ই ব্যস্ত হয়ে পড়লো।
আমার শ্বাশুড়ি আর ননদ তো প্রথমে তিথিকে ছুঁয়ে ও দেখছে না।পরে বড় চাচী বললো দেখ তিথি তো তোর ই নাতনী।আর তোর বংশের প্রথম বংশধর।তুই যদি তিথিকে আগলে না রাখিস তাহলে কেমনে হবে।।
বড় চাচীর কথা শোনে আমার শ্বাশুড়ি দৌড়ে তিথির কাছে গেলো।আর তিথিকে নিয়ে জড়িয়ে ধরে খুব কাঁদলো।।
সেইদিনের পর থেকে ঘরে মোটামোটি শান্তি ছিলো।ভেবেছিলাম সব ঠিক হয়ে যাবে।কিন্তু আমি কী জানতাম যে সব আবার আগের মতো এলোমেলো হয়ে যাবে।।
চাকরী হারিয়ে সোহান একটা দোকান দিলো।আসলে দোকানটা ওর বাবার কিছু জমি বিক্রি করে দিছে।সোহান দোকানটা দেওয়ার পর সংসারটা আবার ভালোভাবে চলতে লাগলো।
একদিন আমার ননদ আমাকে বললো যে ভাবী আমার কাপড়গুলো কেচে দাও।আমার তখন পিরিয়ড় চলছিলো।আপনারা তো জানেন সময়টা কত যন্ত্রণাদায়ক।তার ওপর আবার সংসারের সব কাজকর্ম নিজ হাতে সামলানো।মিথ্যে বলবো না আমার শ্বাশুড়ি কিন্তু নাতনীকে চোখে হারায় এখন।মেয়েটাকে দেখাশোনা করে।
আমি আমার ননদকে বললাম নিজের কাজটা নিজে করে নিলে ই তো ভালো হয়।সারাদিন তো কোনো কাজে হাত লাগাতে মন চায় না।অন্তত নিজের কাজগুলো নিজে ই করো।অন্যকে আদেশ করা বন্ধ করো।
সেইদিন তিয়াসের সাথে আমার খুব কথা কাটাকাটি হয়।একপর্যায়ে আমার শ্বশুর তিয়াসকে কয়েকটা থাপ্পর মারে।।আমার শ্বাশুড়ি এসে আমাদের দুজনকে খুব বকে।।
সন্ধ্যাবেলায় যখন সোহান বাড়ি আসে তখন তিয়াস সোহানকে আমার বিরুদ্ধে কিছু কথা বললো।যাকে বলে তিলকে তাল করা।
তিয়াসের কথা শোনে সোহান আমাকে কিছু না জিজ্ঞেস করে ই আমাকে বেদম মার মারলো।সোহান আমাকে মেরে চলে যায়।
হঠাৎ সোহানের এমন ব্যবহারে আমি আশ্চর্য হয়ে যাই।সোহানের মার খেয়ে আমি বিছানায় শুয়ে শুয়ে কাঁদতে থাকি।সারা শরীরে প্রচন্ড ব্যাথা।ব্যাথার কারনে জ্বর চলে আসলো।সেইদিন সারা রাত আমি ব্যাথায় আর জ্বরে কুঁকিয়েছি।এমনকি আমার মেয়েটার প্রতি পর্যন্ত খেয়াল ছিলো না।সেই রাতে সোহানকে আর দেখতে পায় নি।
তিয়াসের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার কিছুদিন পর সোহান কেমন জানি হয়ে গেছে।অল্পতে ই রেগে যায়।আগের মতো আমার সাথে আর কথা বলে না।সবসময় আমার থেকে দূরে থাকে।সোহান ইদানীং আবারও আমার গায়ে হাত তুলছে।আমার ও আর সহ্য হচ্ছে না।সহ্যের সীমা পেরিয়ে গেছি আমি।
একদিন সোহান দোকান থেকে এসে বললো শ্রুতি আমার জামা-কাপড়গুলো পরিষ্কার করে দাও।আমি বললাম আচ্ছা।কিন্তু তখন মেয়েটি কান্না করছিলো।মেয়ের খাওয়ার সময় হয়ে গেছে।আমি মেয়েকে খাওয়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম।এদিকে সোহানের বলা কাজের কথা আমার মাথায় ছিলো না।।
কিছুক্ষণ পর সোহান এসে আমাকে জিজ্ঞেস করলো শ্রুতি আমার জামা-কাপড়গুলো পরিষ্কার করেছো তো??
আমি বললাম সোহান আসলে তিথি খুব কাঁদছিলো।বওকে একটু খাওয়াইতে ছিলাম।তুমি চিন্তা করো না আমি সব এক্ষুণি করে দিচ্ছি।
আমার কথা শেষ হতে না হতে সোহান আমার চুলের মুঠি ধরে মারতে মারতে বললো তোর দ্বারায় কিছু ই হবে না।সারাদিন কী করিস তুই??শুধু আমার মা বোনের সাথে ঝগড়া আর তাদের বিরুদ্ধে আমার কাছে নালিশ করতে পারিস।
সোহান আমাকে মেরে ই চলছে।কিছুতেই থামছে না।আমি ও এক পর্যায়ে সোহানকে ধাক্কা দিয়ে ফ্লোরে ফেলে দিই।আর নিজে তাড়াতাড়ি করে বাথরুমে ডুকে যাই।আমি কী করবো ভেবে পাচ্ছি না।হঠাৎ করে চোখ পড়লো বাথরুমে রাখা শ্যাম্পুর ওপর।এইদিকে সোহান অনবরত দরজা ধাক্কা দিচ্ছে।আমি তাড়াতাড়ি করে শ্যাম্পুর বোতলটা হাতে নিলাম।আর অনেক শ্যাম্পু মুখে দিয়ে ফেললাম।কী আর বলবো আমার দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা হয়েছে।।
সোহান দরজা ভেঙ্গে বাথরুমে ডুকে পড়লো।সোহান দেখলো আমি কাতরাচ্ছি।আর অন্যদিকে শ্যাম্পুর বোতলটা পড়ে রয়েছে।সোহান তখন,,,,,,,,,,,,
সোহান দরজা ভে/ঙ্গে বাথরুমে ডুকে পড়লো।সোহান দেখলো আমি কাতরাচ্ছি।আর অন্যদিকে শ্যাম্পুর বোতলটা পড়ে আছে।সোহান তখন আমার গলায় ভেতর হাত দিলো যাতে আমি বমি করি আর শ্যাম্পু কিছুটা হলেও বেরিয়ে যায়।কিন্তু ততক্ষণে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই।
যখন জ্ঞান ফিরে তখন নিজেকে হসপিটালের বেড়ে আবিষ্কার করি।আমার মা,দু বোন আর সোহানকে দেখতে পাই।আমি চোখ খুলতে ই মা আমাকে কষে একটা চড় মারে।আর বলে পরিবারে তো ঝামেলা হয় ই তাই বলে কী তুই এমন করবি।আজ যদি তোর কিছু হয়ে যেত তাহলে তিথির কী হতো??
মায়ের কথা শোনে আমি কিছু ই বললাম না।।শুধু চুপ করে সোহানের দিকে তাকিয়ে আছি।।
মা তো জানে না বিয়ের এতগুলা দিন আমি কী সহ্য করেছি।আমার শেষ ভরসা ছিলো সোহান।আর সোহান ও আমার প্রতি এতটা নিষ্ঠুর আর নির্দয় হয়ে গেলো।আমার সহ্যের সীমা পেরিয়ে গিয়েছিলো তাই আমি এটা করতে বাধ্য হয়েছি।
এক দিন হাসপাতালে থেকে বাড়ি ফিরছি।বাড়ি ফিরতে সবার ব্যবহার পাল্টে গেলো।সবাই আমার সাথে খুব ই ভালো ব্যবহার করতে শুরু করলো।।সোহানও নিজেকে চেন্জ করে ফেললো।
মাস দুয়েক পর তিয়াসের স্বামী বিদেশ থেকে ফিরলো।আর তিয়াসকে নিয়ে গেলো।তিয়াস চলে যাওয়ার পর সব ঠিকঠাক ছিলো।।আমার শ্বাশুড়ি আমাকে তিয়াসের জায়গা দিয়েছেন নিজের মনে।
ছয়মাস পর তিয়াসের স্বামী বিদেশে চলে গেলো।তখন তিয়াস চেয়েছিলো আবার এই বাড়িতে ফিরতে।কিন্তু আমার শ্বাশুড়ি তা দেয় নি।
আমার সংসার এখন খুব ভালোভাবে চলছে।শ্বশুর শ্বাশুড়ি দুজন ই এখন আমায় খুব ভালোবাসে।
এর মধ্যে আমি আবার কনসিভ করলাম।পুরো পরিবারে খুশির বন্যা বয়ে গেলো।আমি সবসময় আল্লাহর কাছে হাত তুলে বলি এইবার যেনো আমার একটা ছেলে সন্তান হয়।আমার শ্বাশুড়ির ইচ্ছা যেনো পূর্ণ হয়।আপনারা সবাই আমার আর আমার_সংসার এর জন্যে দোয়া করবেন।

No comments:

Post a Comment

অভিশপ্ত রজনী

  মৃত মেয়েটিকে ধর্ষণ করার সময় মেয়েটি যে জীবিত হয়ে ওঠে সেটা খেয়াল করেনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় কাব্য।ধবধবে সাদা চামড়ার মেয়েটিকে ভোগ করার...