নদী কথা - পদ্মা নদী
হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেকে উৎপন্ন গঙ্গা নদী রাজশাহী জেলা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে, এখান থেকে নদীটি পদ্মা নাম ধারণ করেছে। গঙ্গার অন্য শাখাটি ভাগীরথী নামে ভারতে হুগলীর দিকে প্রবাহিত হয়। উৎপত্তিস্থল হতে ২২০০ কিলোমিটার দূরে গোয়ালন্দে যমুনা নদীর সাথে মিলিত হয়ে মিলিত প্রবাহ পদ্মা নামে আরো পূর্ব দিকে চাঁদপুর জেলায় মেঘনা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। সবশেষে পদ্মা-মেঘনার মিলিত প্রবাহ মেঘনা নাম ধারণ করে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের সাথে মিলিত হয়।
পদ্মার প্রধান উপনদী মহানন্দা এবং পুনর্ভবা । মহানন্দা উপনদীটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা এবং পুনর্ভবা বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পদ্মার বিভিন্ন শাখানদীর মধ্যে গড়াই, বড়াল আড়িয়াল খাঁ, কুমার, মাথাভাঙ্গা, ভৈরব ইত্যাদি অন্যতম। আবার পদ্মার বিভিন্ন প্রশাখা নদীসমূহ হলো- মধুমতী, পশুর, কপোতাক্ষ ইত্যাদি। এই নদীগুলো কুষ্টিয়া,রাজবাড়ী,যশোর, ঝিনাইদহ, নড়াইল, মাগুরা, বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর বরিশাল, পটুয়াখালি ইত্যাদি জেলার উপর দিয়ে বিস্তৃতি লাভ করেছে।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় এর বিখ্যাত উপন্যাস পদ্মা নদীর মাঝি এই নদীর তীরের মানুষের জীবনকে কেন্দ্র করেই লেখা। পদ্মার নৈসর্গিক ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নানাভাবে প্রভাবিত করেছে কবি কাজী নজরুল ইসলামকে। তার বিখ্যাত কিছু গানে পদ্মার হারানো ঐতিহ্য ও সৌন্দর্য্য ফুটে উঠেছে।প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক আবু ইসহাক রচিত "পদ্মার পলিদ্বীপ" উপন্যাসটির উপজীব্য পদ্মার পাড়ের সাধারন মানুষের জীবনযাত্রা। এই নদীর রূপ দেখে কবি তালহা আজিজ বলেছেন,
"পদ্মার তীরেতে বসবাস আমার,
মুগ্ধ আমি রূপ দেখে তার।
এর তীরেই আছে কত শত স্মৃতি।
রাতে জোনাকিরা দেয় জ্যোতি;
মনে হয়, যেন স্বর্গের ছায়া!
কি অপরূপ তার মায়া! "
No comments:
Post a Comment