Tuesday, 22 August 2023

২য় বউ

 

#পর্বঃ১

 

সত্য ঘটনা অবলম্বনে...

আমার জীবন টার কঠিন সময় শুরু হয় বিয়ের পর থেকে।

আর ৫, ১০ টা মেয়ের মতোই বিয়ে হয় শশুর বাড়ি যায়।

আমি সেই বউ যে আমি নিজের শশুর এর ধারা সেক্সচুয়ালি অপমান হয়েছি।

আমি জানি না নিজের শশুর এর দ্বারা কেউ এমন হয়েছে কিনা। আমি আজ আমার নিজের জীবনি বলছি কারন যাতে অন্যেরা শিক্ষা নিতে পারে৷

আমার চুপ থাকা টায় আমার কাল হয়েছিলো।

বিয়ের পর শশুর বাড়িতে যায়।বর আমার বিয়ের পর থেকেই ভালো। ভালো বলতে সে শহরে কাজের সূত্রে থাকতো আর আমি গ্রামে থাকতাম শশুর শাশুড়ী কে নিয়ে।

আমার ১ টা জা ছিলো সে বিষ খেয়ে মারা গেছে আর সেজন্য আমার ভাসুর এর জেল হয়ছে ১৪ বছর এর জন্য।

আমার বর মাসে আসতো ১ বা ২ দিন থেকে চলে যেতো। তার মধ্যে গ্রামে আসতো অনেক কাজের জামেলা থাকতো। যে ২ দিন থাকতো সারাদিন বিভিন্ন কাজে বিজি।রাতে আসতো ক্লান্ত হয়ে ২ টা খেয়ে কোনো রকম ঘুমাতো আমার ও তাকে বিরক্ত করতে ভালো লাগতো না কারন আমি দেখি সারাদিন সে কত বিজি থেকে। মাঝে মাঝে শারীরিক সম্পক হতো। আবার কোনো মাসে হতেও না।

এই হচ্ছে আমার ভালো থাকা আর আমার ভালো বর আপনারাই বুজে নেন।আমি তেমন গরীবের মেয়ে না হলে ও লোকলজ্জা আর সামাজিকতার ভয়ে কিছু কখনও বলতাম না। কারন আমার পরিবারে শিক্ষা টা ছিলো যা হোক তুমি সবুর করবা আর আল্লাহ কে

ডাকবে সুখ জীবনে অবশ্যই আসবে।

আর মেয়েরা বিয়ের পর এমনিতেই বাবা মায়ের বোজা হয়ে যায়।

বিয়ের পর থেকেই খেয়াল করতাম আমার শশুর আমার দিকে যেন কিভাবে তাকায়। ব্যাপারটা ভালো না লাগলেও বলতাম বাবা হয়ত ওনার তাকানো টাই এমন।

আমার শশুর আমার সাথে কথা বলতো অথচ ওনার চোখ থাকতো আমার বুকের দিকে। আমি ওনার সামনে একদম শালীন ভাবেই থাকতাম।

পুকুরে গোসল করতেছি ওনি দেখা যেতো পুকুর ঘাটে বিভিন্ন কাজের অযুহাতে আসতো।

আমি আমার শাশুড়ি কে কথার ছলে নানা রকম ভাবে বুজিয়ে বললেও ওনি কিছু বলতো না।

আমার শশুর বিভিন্ন অযুহাতে সবসময় আমার গায়ে হাত দিতো ওনি বেশির ভাগ সময়ই আমাকে জড়িয়ে ধরতো।

অনেকেই খারাপ ভাবে নিবেন যে শশুর জড়িয়ে ধরতেই পারে।

আসলে আমরা মেয়ে কোনটা ভালো উদ্দেশ্য জড়িয়ে ধরা আর কোনটা এমনি সেটা আমাদের ভালো জানা আছে।

আমার বর বাড়ি আসলে তাকে বললে সে আমাকে নানা রকম কথা বলতো আর বলতো তোমার মাইন্ড এত খারাপ কেন আমার বাবা সম্পর্ক এগুলো কি বলো।

হেন তেন হাবিজাবি বলতো আমি ও আর কিছু বলতাম না।

একবার বাড়িতে কেউই ছিলো না। আমার শশুর ও না।

ওনি আমার শাশুড়ির সাথে বোনের বাড়িতে গেছে।

ওমা ২ ঘন্টা পর দেখি আমার শশুর চলে আসছে৷

আমি আমার রুমে কি একটা কাজ করতে ছিলাম।

আমার শশুর পিছন থেকে জড়াই ধরে।

ছি বলতে ও লজ্জা করতেছে।

ওদিন আমি ওনাকে বলছি বাবা আমি আপনার ছেলের বউ আপনার মেয়ে।

ওনি তারপর ও মানে নাই। আমাকে মারে অনেক আমি যখন হাতাহাতি করতে ছিলাম। তারপর ওনার চাহিদা মিটিয়ে আমাকে গালি দিয়ে বলে কাউকে বললে তোর খবর আছে..

 

#পর্বঃ২

শশুর যখন চা *হিদা শেষ করে আমার গায়ের উপর থেকে উঠে। আমি তখন দৌড়ে রান্না ঘরে যায় আর ব *টি টা নিয়ে আসি তাকে কো* প দেও য়ার জন্য।কিন্তুু তার শ *ক্তির সাথে পেরে উঠি না।

সে আমার হাত ধরে ফেলে আর আমার চু *ল ধরে বলে কাউকে যদি বলিস আমার চেয়ে খা *রাপ কেউ হবে না। সংসার করতে দিবো না।

আপনারা হয়ত জানেন যে একটা মেয়ে কখনও একটা পু *রুষের শ *ক্তির সাথে পেরে উঠে না।

তারপর আমার শাশুড়ি আসে। আর আমি সারাদিন মন ম *রা হয়ে থাকি আমার বরের অপেক্ষাই বর আসলে সব বলবো।

কিন্তুু ওইদিন এর পর থেকে আমার শশুর সবসময়ই আমাকে শা *সিয়ে যায়। যাতে কাউকে আমি কিছু না বলি আর আমি ও ভয় পা *য়। কাকে বলবো আমি। কেউ বিশ্বাস করবে না আমার কথা।

এর পর থেকে আমার শশুর নানা অযুহাতে আমার শ: *রীরে হাত দিতো। আর আমার শা *শুড়ীর সামনে ও আমার শাশুড়ি কিছুই বলতো না।

২৮ দিন পর আমার বর আসে। বর এসেই বিজি নানান কাজে কথা বলার ও সময় পায় না। ২ দিন থেকেই চলে যায়।

আর যাওয়ার সময় আমায় বলে আমার বাবাকে দেখো সে তোমার বাবার মত। তার আবদার পুরন করো সে আর কয়দিন বাঁচবে।

আমি আমার বরকে ও বলতে পারলাম না আর এদিকে আমার কাছে আমার শশুর বাড়িটা দো *যখ খানা।

আমার বর চলে যাওয়ার পর আমার শশুর রাতে আমার রুমে আসে। আর আমার মুখটা শ *ক্ত করে ধরে। আমি চিৎকার করতে চেয়ে ও পারি নী। কিভাবে পারব বলুন তার সাথে কি পেরে উঠি।

আমি তাকে কোনো রকম খামছিয়ে আমার উপর থেকে উঠায় আর ধাক্কা দি। আসলে ওই আমারই ভুল হয়েছে আমি রুমের দরজা বন্ধ করি নী।

সকাল বেলা অহেতুক আমার শশুর কে ভাত দিতে দেরি হওয়াই উনি আমাকে আমার শাশুড়ির সামনে মা *রে।

বলে মন কোথায় থাকে। আসলে রাতের বেলার ঘটনাটার জন্য তিনি আমায় এই অহেতুক ঘটনা টার জন্য মারে।

রাগ করে এক কাপড়ে শুধু বোরকাটা পরে বাপের বাড়ি যায়।

বাপের বাড়ি গিয়ে দেখি দুপুরে খাবার ভাত টুকু ও নেই। আমার ছোট ছোট ভাই বোনরা কান্না করতেছে।

আমি যাওয়ার পর ভাই বোনরা আমাকে জিজ্ঞেস করতেছে আপু কি আনছো আমাদের জন্য আমরা কাল রাতে ও কিছু খাই নি।

ওদের কথা শুনে নিজের কস্ট গুলো নিমিষে ভুলে গেলাম।

আকাশের দিকে তাকিয়ে আল্লাহ কে বললাম হাই আল্লাহ এটাই কি আমার নিয়তি।

কেন আমাদের উপর এত অবিচার।

বিকেল বেলা মা অন্য বাড়ি থেকে কাছ করে ১ কেজি চাউল আনলো। আমি ভাত রান্না করলাম।

তখন মাগরিব পার হলো। বাড়ির পিছন থেকে আমার ছোট বোন কচু আনলো কচু রান্না করলাম।

 

#৩য়_পর্ব

আমি রাতে দরজা না খোলার কারনে সকালে আমার শশুর আমাকে যাতা বললও বিভিন্ন কাজের অযুহাত দিয়ে।

আমি ও বললাম বাবা আজ রাতে খোলা রাখবো। তারপর আমার শশুর আর কিছু বললও না।

বিকালের দিকে দেখলাম আমার বর আসলো। সাথে বোরকা পড়া একটা মেয়ে।

মেয়েটা খুব সুন্দরি আমার চাইতে ও খুব বেশি সুন্দর।

আমি কিছু বললাম না চুপচাপ আছি।

আমার শশুর শাশুড়ী জিজ্ঞেস করলো মেয়েটা কে?

তখন আমার বর বললও

আব্বা বিয়ে করছি ৩ মাস আগে। এখন বাড়ি আসছি।

আমার শশুর আর শাশুড়ী বললও কোথা কার মেয়ে কে আর আমাদের না বলে এটা কি করলি।

পরে দিয়ে আমার শশুর শাশুড়ী অনেক ঝামেলা করে।

আর আমি অনেক কান্না করি। আসলে যার বর ২য় বিয়ে করে সে জানে কস্ট কতো টা।

তাও নিজের সামনে যখন বউ আরেকটা আনে।

আমার বর আমায় বললও এই শুনো তুমি পাশের ঘরটা একটু গুছিয়ে দিবা।

বিশ্বাস করেন কসম তখন আমার বুকটা কস্টে ফেটে যাচ্ছি লো।

আমি একটা শব্দ ও করিনি।

আমি রুম টা গুছিয়ে দিলাম তাদের খেতে দিলাম। তারা খেলো।

আমার শশুর শাশুড়ীর রুমে গেলো আমার বর তাদের কি বুজালো আমি জানি না তবে তারা আগে থেকে একটু নরম হলো।

রাতের বেলা আমি আমার রুমে একা ঘুমালাম। ঘুম আমার আসে নি সারা রাত কেঁদেছি নামাজে।

আসলে কস্ট টা বুজবে না যার বর বিয়ে আরেকটা করে পাশের রুমে নতুন বউকে নিয়ে ঘুমায় সে বুজবে কস্ট টা।

আমার ইচ্ছে করতে ছিলো ওই রাতেই মরে যায়। কিন্তুু যা হোক না কেন মৃত্যুকে আসলেই ভয় পায়।

সকালে উঠলাম ৫ টা বাজে গ্রাম হওয়াই বাথরুম বাহিরে বাথরুমে যাওয়ার সময় দেখলাম আমার বরের ২য় বউ গোসল করতেছে।

তখন কলিজাটা ছিড়ে যাচ্ছিলো।

আমি আগুন দিলাম চুলায় নাস্তা বানালাম। হাঁস-মুরগিকে ছাড়লাম খাবার দিলাম।

উঠোন ছাড়ু দিলাম এগুলো করতে করতে সকাল ৮ টা বেজে গেলো।

কোনো কাজ করতে ইচ্ছে করছিলো না তাও করলাম।

শাশুড়ী আমায় বললও ছেলেরা এমন করে সমস্যা নাই।

আমি ও বললাম আপনার বর করলে বুজতেন।

আমার বর আর বরের ২য় বউ উঠলো ১০ টা বাজে নাস্তা টেবিলে দিলাম কিন্তুু কোনো কথা বললাম না।

দুপুরের রান্না করলাম।

দুপুরের দিকে আমার বর রান্না ঘরে এসে আমায় বলতেছে

শোনো কখনও তোমায় আমি অবহেলা করবো না। তুমি ও থাকো মাসে ৩ দিন তোমার কাছে যাবো।

আমি বললাম আপনার দরকার আর আমার জীবনে নেই আপনি মারা গেছেন।

আর কিছুই বললাম না।

অনেক কাঁদলাম আর ভাবলাম গরীবের মেয়ে যাওয়ার তো কোনো জায়গা নেই কয় যাবো।

বাপ মায় তো ২ টা খেতে দিতে ও পারবেনা ঘরে ছোট ছোট ২ টা ভাই বোন।

নিজেকে নিজের সাথে যুদ্ধ করে বাঁচতে হবে।

আমার শশুর আমাকে শান্তনা দিলো।

আমি ও বললাম বাবা সমস্যা নাই আপনি আছেন তো।

তারপর বর আমার ৭ দিন থেকে বউ নিয়ে শহরে চলে যায়।

তার সাথে আমার দরকার ছাড়া কথাই হতো না।

এদিকে বিভিন্ন কৌশলে আমি আমার শশুর থেকে টাকা হাতিয়ে নিতাম।

সময় যায় আমার একাকিত্ব বেড়ে যায়।

আমার বরের ২য় বিয়ের ৮ মাস পর আমার শাশুড়ি মারা যায়।

আমার শশুর একা হয়ে যায় তখন আমি তাকে সঙ্গ দিতাম।

বাড়িটা ছিলো আমার শশুর এর নামে।

আসলে কি জানেন আমরা অল্পতে ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলি। এটা ঠিক না আমি মনে করি।

তখন আমার পরিকল্পনা হয় আমার শশুর এর কাছ থেকে বাড়িটা আমার নামে নিয়ে ফেলি।

কিন্তুু আমার শশুর কোনো রকমই বাড়িটা আমাকে দিবে না।

আমি ও বিভিন্ন ছলে বলে কৌশলে বাড়িটা আমার নামে নিয়ে ফেলি।

আর আমার শশুরের কিছু জায়গা জমিন ছিলো। সেগুলো ও বিভিন্ন কৌশলে আমার বরের অজান্তে বিক্রি করাই আমার শশুরকে দিয়ে। আর টাকা গুলো নিজে হাতিয়ে দি

 

#পর্বঃ৪

মোটামুটি প্রায় ২০ লাখ টাকার মতো হাতিয়ে নি৷

একটা কথা বলি নিজের জীবন থেকে বলছি বাঁচতে হলে বাঁচার মতো বাঁচবেন৷

কারো জন্য মরবেন না। তবে যার জন্য নিজের জীবন শেষ করবেন অবহেলা সহ্য করবেন তাকে ছলে বলে কৌশলে শেষ করবেন। তার আগে নিজে শেষ হবে না।

আমার শশুর আমার মৌহে এত বিভোর হয়ছে য সবসময় বলত উনাকে বিয়ে করতে। একটা বাচ্চা নিতে।

কিন্তুুু আমি সবসময় এগুলো এড়িয়ে যাই। ইদের ছুটিতে আমার বর তার বউকে নিয়ে বাড়ি আসে।

বাড়ি আসার পর আমার বর আমায় বলে কি ব্যাপার এত সুন্দর হয়ে যাচ্ছো।

আমি বললাম তাহলে কি আপনার চিন্তায় মরে যাবো। সে রাতে আমার বর আমায় কাছে চাইলো। আমি ধরা দিলাম না। রাতে দরজা ও খুললাম না।

বরের ২য় বউ আমার সাথে কথা বলতে চাইলে আমি তেমন একটা কথা বলতাম না।

রেঁধে বেড়ে তাদের খাওয়াতাম।

তারা ১৫ দিন ছিলো এই ১৫ দিন আমার শশুর এর সাথে কোনো সম্পক হয়নি।

এর মধ্যে তারা আবার চলে যায়। আমি আমার শশুরকে বলি আমার বাবার বাড়ি যেতে ইচ্ছে করতেছে কি করবো।

কয়দিন গিয়ে থেকে আসি।

আমার শশুর বললও আচ্ছা আমি ও যাবো চলো।

তারপর কয়েকদিন আমার শশুর এর সাথে বিছানাই যেতাম না।

রাগ আর মন খারাপ করে রাখতাম।

তিনি জিজ্ঞেস করলে বললাম আমাদের বাপের বাড়ির ঘরটা অনেক ভাঙা বৃষ্টি হলে পানি পড়ে।

ভালো লাগেনা এত কস্ট

তখন আমার শশুর বলে আচ্ছা আমি ঠিক করে দিবো। পরে দিয়ে আমার শশুর সেমি পাক্কা ঘর বেঁধে দেয়। আর আমি ও বাড়িটা নিজের নামে লিখি নি।

আমি যদি তা না করতাম তাহলে আমাকে অকাদনে কাদতে হতো।

তার মধ্যে আমি অনেক স্মার্ট হয়ে গেলাম শশুর এর টাকায় ভালো ভালো জামা কাপড় কিনতাম। অনেক গহনা বানাতাম আর সাজতাম অনেক।

আমার শশুর তো সবসময় আমাকে বউ ডাকতো।

বলে রাখি শশুর আর বলব না তার নাম সবুর।

তাকে আমি নাম ধরে ডাকা শুরু করলাম।

সবুর এর সাথে আমি শহরে গেলাম আমার বর এর বাসায়।

আমরা বিকেলে ডাক্তার দেখানোর নাম করে বেড়াতে যেতাম৷

একবার আমরা আখতারুজ্জামান মার্কেট যাওয়ার সময় এক আপা মাথা ঘুরাই পড়ে যায়।ওখানে মেয়ে বলতে আমি ছিলাম পরে দিয়ে উনাকে পানি দি আর ছায়ায় বসায় আর একটু যত্ন করে সাহায্য করি।

উনি অনেক ভালো মানুষ ছিলো ওনি ওনার নাম্বার আমায় দেয় আর আমাকে বোন ডাকে।

আমি উনার নাম্বার যত্ন করে রেখে দি হয়ত পরে কাজে আসবে মনে করে।

 

#৫ম_পর্ব

বরের বাড়ি ৩ দিন থাকার পর চলে যায় গ্রামে। শশুর এবার উঠে পরে লাগে বিয়ে করার জন্য।

আমি ও বলি করব। বাড়িটা বেচে আমরা অন্য কোথাও বাড়ি করব।

তারপর আমার শশুর বাড়িটা বিক্রি করে ফেলে ২৫ লাখ টাকায়।

যাদের কাছে বাড়ি বিক্রি করি তাদের কাছ থেকে সাত দিন সময় নেওয়া হয় আমরা বলি সাত দিন পর বাড়ি ছেড়ে দিবো।

আমার শশুর বাড়ি বিক্রির টাকা ঘরে এনে রাখে।

আমি দুপুর এর দিকে আমার শশুর কে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রেখে টাকা গুলো সহ গহনা সহ ঘর থেকে অচেনা উদেশ্য বেরিয়ে পরি।

রাতে বা খুব ভোরে বের হতে পারতাম কিন্তুু তখন টাকা নিয়ে বের হওয়াটা রিস্ক এর ব্যাপার ছিলো।

টাকা গুলো ব্যাংকে জমা দিলাম।

আর ব্যাংক এত গুলো টাকা দেখার পর জিজ্ঞেস করে কোথায় পাইছি তখন জায়গা বিক্রির কাগজ দেখায়।

পুরো ২৫ লাখ টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা নিজে রেখপ বাকি গুলো জমা দিয়ে ফেলি।

তারপর শহরে ওই আপাটা বাসায় উঠি।

আর উনাকে টাকা পয়সার ব্যাপারে কিছু বলি না।

উনাকে নিজের দুঃখোর কথা বানিয়ে বানিয়ে বললাম উনি খুব আফসোস করলো।

উনার বাসায় অনেক লোকের যাতায়াত দেখতাম সবসময়। আপাটাকে বললাম আপা আমাকে একটা চাকরির ব্যবসথা করে দিবেন।

উনি বললও একটা কাজ করবি টাকা দিবো।

আমি বললাম কি বলে তোকে একটা প্যাকেট দিবো তুই প্যাকেট টা জায়গা মত দিয়ে আসতে পারলে ৫০০ টাকা।

আমি তো শহরের কিছু চিনি না কিভাবে যাবো।

ঠিক আছে সমস্যা নাই একদিন গিয়ে চিনাই দিয়ে আসবো।

উনি তারপর চিনাই দিয়ে আসলো। আর উনি সবসময় বলতো লোকাল বাসে চড়বি সবসময়। আমি তাইহ করতাম।

প্যাকেট টা একটা ছেলের হাতে দিয়ে আসলাম। ছেলেটা ৪ হাজার টাকা দিলো। আপাকে ৪ হাজার টাকা দিলাম আর উনি ৫০০ দিলো আমায়।

পরে উনি আমায় বললও প্যাকেট টা হিরোইনের।

আর এই কাজ করলে অনেক টাকা পাওয়া যায়

ধীরে ধীরে আমি ও নেশার জগতে ডুকে গেলাম।

এর মধ্যে আমি ইংরেজি পড়তে জানি না।

আপা টা একটা স্কুলে উন্মুক্ত ভর্তি করাই দিলো।

কারন এ লাইনে একটু পড়তে জানতে হয়।

সময় যায় আর আমি ও মাদক ব্যবসায়ী হয়ে উঠে।

আপাটা আমায় সব শিখিয়ে দেয়।আর উনি ও নিজের ইচ্ছেই এইহ লাইনে আসে নি। উনার জীবনের গল্প টা আরো ভয়াবহ।

এর মধ্যে ২০০৮ সালে হিরোইন দিতে গিয়ে আমি পুলিশ এর হাতে ধরা খায় আপা টা ৩ দিন পর ছুটাই আনে।

সময় তার গতিতে চলে।

আমি ও পড়ালেখা ছাড়লাম না।

মোটামুটি অনেক টাকা কামায় আমি।

মাল নিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় যায়।পুলিশ এর চোখ ফাঁকি দিয়ে। কিন্তুু পুলিশ ধরতে পারেনা।

আর এই খানে পুলিশ দের সাথে ও হাত থাকে। পুলিশ দের ও মাসে একটা বড় অংকের টাকা দিতে হয়।  না হলে ব্যবসা করা যাবে না।

এর মধ্যে আমি ও মাঝে মাঝে মদ টদ খায়।

আমার জীবন টা এখন অন্য রকম চলার ফেরা সব অন্য রকম। ২০১২ সালে একটা নিজের গাড়ি কিনি।

 

#পর্বঃ ৬

কোনো রকম অনার্সটা কমপ্লিট করি।

তাও সেটা টাকা আর আমার হ্মমতার জোরে পাশ করি।

জীবনে একা থাকা যায় না। বিয়ের আর কোনো ইচ্ছা নেই। কিন্তুু তার পরেও দিন শেষে একাকিত্ব ভীড় করে।

এই লাইনে অনেক পুরুষ এর সাথে পরিচিত হয়।

আর এই লাইনে বেশির ভাগ মানুষই সমাজের উচ্চ পযার্য়ের মানুষ।

কারন এই লাইনে সহজে গরীবরা আসতে পারে না। আর তাদের তো শুধু ব্যবহার করা হয়।

এই লাইনে যারা আছে তারা উচ্চ পযার্য়ের মুখোশধারী মাফিয়ার।

আর সবাই বিদেশে সেটেল৷ কারন দেশে কিছু হলেই তারা বিদেশে গা ঢাকা দেয়।

কোট কোটি টাকা কামিয়েছি।কিন্তুু পাপের পথের টাকা কোন দিক দিয়ে আসে আর কোন দিক দিয়ে যায় কেউ বলতে পারে না।

২০১৬ তে খবর পেলাম সবুর মানে ওই শশুর কে তার ছেলে মেরে কিছু রাখে নি। তার ছেলে তাকে দেখে না কারন জায়গা সমপওি সব বিক্রি করে ফেলছে তাই।

সে এখন একজনের গোয়াল ঘরে থাকে কথাটা শুনে খুব খারাপ লাগলো আর এটা ভাবলাম জীবনে ছেলে মেয়ে রেখে কি লাভ সামান্য সমপওির জন্য নিজের বাবাকে দুরে ঠেলে দেয়।

অনুশোচনা থেকে সবুর এর খবর নিলাম। তিনি অনেক অসুস্থ ঠিক মতো খেতেও পারেনা৷

তাকে শহরে আমার কাছে নিয়ে আসলাম। সে আমায় দেখে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো।

আমি তাকে ডাক্তার দেখালাম৷ সুস্থ করে তুললাম৷

আর তার গ্রামে একটা জায়গা দেখে আগের চেয়ে বড়ো ৬০ লাখ টাকা দিয়ে একটা বাড়ি কিনে দিলাম। কিন্তুু বাড়িটা আমার নামেই কিনালাম।

২০১৬ তে শেষের দিকে একজন শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা খুন হয়।

আর সেটার সাথে খুব বাজে ভাবে আমার নাম জড়িয়ে যায়।আর আমাকে মার্ডার কেসের ১ম আসামি করে ডিবি আর সেনাবাহিনী আমার নামে মামলা করে।

তখন আমি পালিয়ে আফ্রিকা চলে আসলাম। আর এখানে আসার পর এক বাঙালি কে বিয়ে করি ২০১৭ তে আলহামদুলিল্লাহ খুব সুখে আছি আমি এখন ৭ মাসের গর্ভবতী।

দোয়া করবেন আমার জন্য

পরিশেষে এটাই বলব বাঁচলে বাঁচার মত বাঁচবেন না হলে বিষ খেয়ে মরে যান।

এই পৃথিবী লড়াই হ্মেএর।

এখানে যে লড়াই করে বাঁচতে পারবে সে টিকে থাকবে৷

ভয় পাবেন না এগিয়ে যান আর মনোবল শক্ত রাখবেন৷

কোনো কিছু নিয়ে কস্ট পাবেন না উল্টো কস্ট দিয়ে মারবেন।

আমি পাপী আমি খারাপ আমি সেটা জানি কিন্তুু সময় আমায় খারাপ হতে বাধ্য করেছে।

দোষ আমার না আমার ভাগ্যর।

আর আমার জীবনে ওই ঘটনা না ঘটলে আমি কখনও আজ এত সুখি হতাম না।

আমার সুখ আমি নিজে অর্জন করেছি।

আল্লাহ সহায় ছিলো।

 

Friday, 11 August 2023

রহস্যের রাত







প্রতিদিন গভীর রাতে ধর্ষণের শিকার হন তানিশা। প্রতিদিনই ঘুম ভাঙার পরে সে বুঝতে পারে তাঁর সাথে সেক্স করা হয়েছে। প্রতিদিন ফ্লোরে ঘুম ভাঙার পরে সে দেখতে পায় প্রটেকশন ও প্রটেকশনের প্যাকেট পরে রয়েছে ।


প্রতিদিন তানিশা প্রটেকশন এর প্যাকেট সহ প্রটেকশন ফ্লোর থেকে তুলে ফেলে দেয়।
কিন্তুক তাঁর সাথে জোরপূর্বক কোন ধর্ষণ করা হয়নি এটা শিওর তানিশা। মনে হয় যেন তাঁর ইচ্ছে তেই সে ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। জোরপূবক ধর্ষণ করা হলে শরীরে কোন হাতাহাতির বিষয় লক্ষ্যনীয় থাকতো কিন্তুক তেমনটা হয়নি।

প্রতিদিনই সকালে উলঙ্গ হয়ে বিছানায় পড়ে থাকে তানিশা। তাঁর শরীরের সমস্ত জামা কাপড় মেঝেতে পড়ে থাকে। এলোমেলো চুল বিস্তীর্ণ লুটিয়ে থাকে বিছানার উপর।

কিন্তুক রহস্যের বিষয় এটাই সে যেভাবে রুম আটকিয়ে ঘুমাতে যায় ঠিক সকালে সেভাবেই সে দেখতে পায় রুম আটকানো আছে।

তানিশা বিষয়টা কারো সাথে কখনো শেয়ার করার সাহস করেনি। তবে তাঁদের বাড়িতে এমন কেউ নেই যে এমনটা করবে।

তানিশার সাথে ওর ভাইয়া এমনটা করবে ভাবতেই ওর নিজের ই অপরাধ বোধ জাগ্রত হয়। আমার মায়ের পেটের ভাইয়া সম্পর্কে আমি এসব কি ভাবছি।

তাইলে দাদা। আর দাদা তো বিছানা ছেড়ের উঠতে পারে না তাইলে দাদা...... আবারও মাথা ঘুরায় তানিশার কি সব ভাবছেন।

বাড়িতে আর মাত্র একজন পুরুষ থাকে সেটা হচ্ছে দারোয়ান। কিন্তুক চিন্তার বিষয় এটাই দারোয়ান আঙ্কেলের অনেক বয়স তা ছাড়া বাড়ির মেইন দরজা আটকানো থাকে।

মেইন দরজা না হয় খুলে ভিতরে ঠুকল তাহলে আমার দরজা খুলল কি করে?

আর না হয় আমার দরজা খুলল কিন্তুক কিন্তুক আমার দরজা আটকালো কি করে। অহহহ শিট কিছুই মাথায় আসছে না।।

পরবর্তী দিনে।  তানিশা আবার যথাসময়ে ঘুমিয়ে গেল। আবার ও প্রতিদিনের মতো করে আজও ধর্ষণের শিকার হন তানিশা।

আজও প্রটেকশন ফ্লোরে পাই তানিশা।

তবে কেন জানি তানিশা অন্যরকম হয়ে যাচ্ছে।

- কি হয়েছে তানিশা তোর ( তানিশার ভাবি)

- না ভাবি আমার কিছু হয়নি।

- তাইলে তোকে এমন দেখাচ্ছে কেন?

- কিছু না ভাবি এমনিতেই।

- তোর কি যেন হয়েছে। আমি বলি কি তুই কয়েকদিন গ্রামের বাড়ি থেকে ঘুরে আয়। আম্মু আব্বুর সাথে দেখা করে আয় দেখবি সকল কিছু ঠিকহয়ে যাবে।

- ওকে ভাবি। ভাইকে বল আজকে যেন ট্রেনের টিকিট কেটে রাখে। আমি আজকেই বাড়িতে যাব।

- ওকে।



তানিশা ট্রেনে উঠে বসে আছে আর ওর ভাইয়া ভাবি এগিয়ে দিতে এসেছে।
- দেখে শুনে যাস বোন ( তানিশার ভাইয়া)

- ওকে ভাইয়া।

- বাসায় গিয়ে কিন্তুক ফোন করবি?

- ওকে ভাইয়া।

ট্রেন তাঁর নিজ্বব গতিতে চলছে।

তানিশা ভাবছে আমি আমার আপন ভাইয়ের সম্পর্কে কি নাহ ভেবেছিলাম ছি ছি ছি।

রাতে।
- আম্মু আমি আজকে তোমার সাথে ঘুমাব।

- ওকে মা ঠিক আছে।

- তানিশা মা

- জ্বী বাবা।

- কেমন চলছে তোমার পড়াশোনা?

- ভালো বাবা।

- তোমার ভাইয়ার ব্যাবসা বানিজ্য কেমন চলছে?

- ভালো।

- কি হয়েছে মা তোর সবসময় মন মরা হয়ে থাকছিস তখন দেখে দেখছি।

- কিছুনা বাবা।

- আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কথাটা বল তো?

- আরে বাবা আমার কিছু হয়নি।

- ওকে যাহ ঘুমিয়ে পড়েক।

তানিশা ও তাঁর মা ঘুমিয়ে আছে। হঠাৎই তানিশা দেখতে পেল তাকে একটা ছেলে লিপ কিস করছে। খুব করে যেন ছেলেটা কিস করছে তানিশাকে। ঠোঁট, গালে , গলায় যেন কিস করে ভরিয়ে দিচ্ছে ছেলেটা।

কিছুক্ষণ পরে যেন তানিশার মনে হলো ছেলেটা তাঁর সমস্ত জামা কাপড় খুলে ফেলা দেয়। ওকে যেন সম্পুর্ন উলঙ্গ করে ফেলে। ছেলেটাও যেন উলঙ্গ হয়ে আছে। সারা গায়ে যেন তানিশাকে কিস করছে ছেলেটা।

এভাবে ছেলেটা তাঁর শারিরীক চাহিদা মেটানোর জন্য যখন ক্ষিপ্ত হয়ে পরে ঠিক তখন তানিশা ভয়ংকর চিৎকার করে ।

- কি হয়েছে মা তোর? ( তানিশার আম্মু)

- তানিশা চুপ হয়ে আছে। মাথা ঘোরাচ্ছে ওর

- খারাপ কোন স্বপ্ন দেখেছিস মা?

- তানিশা মাথা ঝাঁকালো।

- স্বপ্ন তো স্বপ্নই। এটা নিয়ে টেনশন করতে হবে না ।

- হুমম।

- তুই দাঁড়া আমি পানি নিয়ে আসি । খেয়ে ঘুমিয়ে যাহ।

- হুম।

এভাবেই কয়েকদিন তানিশা ওর আব্বু আম্মুর সাথে সময় দিল কিন্তুক কোন রাতে খারাপ কিছু হয়নি। তারপর তানিশা আবার ব্যাক করল ওর ভাইয়ার কাছে ঢাকায়। তানিশা ঢাকায়....... কলেজের ইন্টারমিডিয়েট প্রথম বর্ষের স্টুডেন্ট। তবে তাকে দেখলে মনে হবে না যে সে মাত্র ইন্টারমিডিয়েট স্টুডেন্ট। তাঁকে দেখলে মনে হয় সে অনেক আগেই ইন্টারমিডিয়েট চুকিয়েছে।

রাতে তানিশা, ওর ভাবি, ভাইয়া, দাদা ডিনার করছে ।

- তানিশা বাবা মা কেমন আছেন?

- ভালো।

- আচ্ছা তুই এতো মন মরা হয়ে থাকিস কেন বল তো?

- এমনিতেই ভাইয়া৷

- আমার কাছে শেয়ার না করলে তোর ভাবির কাছে তো শেয়ার করতে পারিস।

- কিছু হয়নি ভাইয়া।

আজকে রাতে তানিশার কেন জানি খুব ভয় ভয় করছে। কারণ এই বাড়িতে আসলে তানিশা ধর্ষণের শিকার হয়।

আজও তাঁর বিপরীত কিছু ঘটল না। তবে একটা জিনিস আলাদা ঘটেছে সেটা হচ্ছে আজকে ফ্লোরে কোন প্রকার প্রটেকশনের প্যাকেট বা প্রটেকশন পাওয়া যায়নি।

তানিশা ভাবছে তাঁর মানে আজকে আমাকে প্রটেকশন বিহীন................ আর ভাবতে পারছে না তানিশা।
কে করছে তাঁর এতো বড় সর্বনাশ। কেন করছে? কি অপরাধ করেছে তাঁর কাছে। হাজার ও চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে তানিশার মাথায়।

পরিশেষে আজকে তানিশা ওর বেস্ট ফ্রেন্ড মিমের সাথে বিষয়টা শেয়ার করে।মিম বিষয়টা শুনে হাসতে হাসতে মারা যাওয়ার উপক্রম হয়ে গিয়েছে।

- আমি সিরিয়াস কথা বলছি আর তুই হাসতেছিস তাই না?

- তো কি করব তাইলে? ( কিছুটা হাসি দমিয়ে রাখিয়ে)

- আচ্ছা আমার মনে হয় তোকে প্রতিদিন ভূত ধর্ষণ করছে । হা হা হা

- মজা বাদ দে। আমি যাহ বলি শোন।

- হুমম বল।

- তুই আজকে আমার সাথে থাকতে পারবি?

- পাগল নাকি বাসায় কি বলব?

- বাসায় যাহ বলার আমি বলব।

- ওকে থাকব।

রাতে তানিশা আর মিম শুয়ে আছি।

- তানিশা আজকে আমরা সারারাত জেগে থাকব?

- ক্যান?

- কে আসে আমার ঘরে সেটা দেখব আজকে?

- কে আর আসে ভূত আসে । (রহস্য স্বরে)


- প্লিজ আজকে আমরা জেগে থাকব। (করুন স্বরে)

- ওকে ঠিক আছে।

- আর হ্যাঁ আমি তো আবার ঘুম পাগল। আমি ঘুমিয়ে গেলেও তুই ঘুমিয়ে যাবি না কিন্তুক?

- ওকে ঠিক আছে।

ফরজের আযানে ঘুম ভেঙে যায় তানিশার । ঘুম ভাঙার পরে তানিশা লক্ষ্য করে আজও ................................................................................................................

 

 

 

ঘুম ভাঙার পরে তানিশা লক্ষ্য করে আজও সে ধর্ষণের শিকার। কিন্তুক মিম গেল কোথায়?
পরে তানিশা ফ্লোরে থেকে ওর জামা তুলে গাঁয়ে জড়িয়ে নেয়। কিন্তুক চিন্তার বিষয় মিম হঠাৎই উধাও হয়ে গেল কি করে। মিম তো ওর পাশেই নিদ্রাবিহীন গগনতলে প্রেমের আলাপ করছিল ফোনে আর ও ঘুমিয়ে গিয়েছিল।


মিমকে সারাবাড়ি খোঁজার পরেও চরন মিলল না। তানিশা যেন ভয়ে জমে যাচ্ছে। একসাথে দুজন নিদ্রাহীন ভাবে শুয়ে ছিলাম আমি আগের দিনের মতো করে ধর্ষণের শিকার হলাম কিন্তুক মিম হঠাৎই হাওয়া হয়ে যাওয়ার কারণটা কি?


হঠাৎই ছাদের দিকটায় তানিশা কারো পাঁয়ের আওয়াজ পায় ভীষণ ভাবে। আস্তে আস্তে ধরে গভীর ভয় আগাতে থাকে ছাঁদের দিকে। ছাদে গিয়ে তানিশা হতভম্ব। পুরো ছাদ পুরোদমে ফাঁকা। ছাদের রেলিং ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকে কিছুক্ষন তানিশা। খুব ভয় জাগ্রত হয়েছে তানিশার ভিতরে কিন্তুক ধর্ষণের বিষয়ে সঠিক তথ্য পেতে এসব করতে হচ্ছে তানিশার।


আর তানিশা বুঝতে পারে রাত এখনো অনেক রয়েছে। কারণ এখনো চারিদিকে ঝকঝক করছে জ্যোৎস্না আলোয়। তারমানে তাঁর কানে আসা আযান টা ভুল ছিল। ভুল ছিল মানে হয়তো সে ভুল শুনেছিল।
ততক্ষনে তানিশা দেখতে পাই কেউ একজন তাঁদের বাড়ির গেইট দিয়ে বেড়িয়ে যাচ্ছে চাদর মুরি দিয়ে। তানিশা তখন ভাবতে থাকে এই সেই ব্যাক্তি যে আমাকে ধর্ষণ করে প্রতিটি রাতে। কেন এমন করে? কি করেছি আমি তাঁর কাছে বিষয়টা আমার জানতে হবে।


তানিশা পিছু নিতে থাকে চাদরে মোড়ানো মানুষটার। হঠাৎই পিছু নিতে নিতে তানিশা হারিয়ে ফেলে মানুষটাকে।
তানিশা ততক্ষণে বুঝতে পারে সে একটা নদীর ঘাটে পৌঁছে গিয়েছে। এই ঘাট টায় তানিশার কেমন জানি চেনা চেনা লাগছে। চোখের সামনে ঘাটের ভেসে আসা স্মৃতি মনে পরেও পড়ছে না। তবে তানিশা শিওর যে এর আগে ও এখানে কখনো আসেনি। কিন্তুক চেনা জায়গায়, চেনা স্মৃতি এমনটা মনে হচ্ছে যেন তানিশার কাছে।


জ্যোৎস্না প্লাবিত নিশিরাত। তানিশা তাকিয়ে দেখল নদী গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। নদীর কোন কোলাহল কানে ভেসে আসছে না তানিশার কানে।


তানিশা নিজেকে আবিষ্কার করে সে জনমানবহীন ঘাটে এসে উপস্থিত। কোন প্রকার জিন মানুষ্য নেই। তানিশার খুব ইচ্ছে করছে নৌকা করে এখন ঘুরতে কিন্তুক কোন প্রকার ঘুরতে যাওয়ার ওয়ে না থাকায় নদী ভ্রমণ হলো না তানিশার।


জ্যোৎস্না রাতে নিরব ঘুমন্ত নদীতে ভ্রমণ করার মজা টাই আলাদা।


তানিশা উঠে যায় নৌকার ছইয়ের ভিতরে। তারপর নদীর শীতল হাওয়া গাঁয়ে জড়াতেই ক্লান্ত শরীরে ঘুমিয়ে যায় তানিশা।


।সকালে ঘুম ভাঙাতে তানিশা নিজেকে আবিষ্কার করেন হাসপাতালে। তানিশা এটাও আবিষ্কার করে ফেলে কালকে ও ২ বার ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। একবার নিজ ভবন থেকে আরেকবার খোলা আকাশের নীচে নৌকার ছইয়ের ভিতরে।


কতক্ষণ পরে ওর ভাইয়া ভাবি ওর কাছে এসে।


- কেমন লাগছে বোন তোর এখন?


- ভালো ভাইয়া।


- কি হয়েছিল তোর তুই নদীতে ক্যান গিয়েছিলি?


- ভাইয়া মনটা খারাপ ছিল। তাই মনটা ফুরফুরা করতে নদীতে গিয়েছিলাম।


- তাই বলে এতো রাতে?


- হুমম।


- সেটা না হয় ভালো কথা কিন্তুক তুই মিমের সাথে ঘুমিয়ে ছিলি। তারপর নাকি তুই ওকে গভীর রাতে ঘুম থেকে জাগিয়ে নিজে ড্রাইভ করে এসে ওকে বাড়িতে রেখে এসেছিস। আর তুই ওকে বাড়িতে রেখে ক্যান আসলি আবার সাথে করে বাড়িতে ক্যান নিয়ে এসেছিলি। আর নদীতে একাকী না গিয়ে মিমকে সাথে করে নিয়ে নদীতে যেতে পারতিস।


- কি বল ভাইয়া এসব আমি তো নিতে পারছি না।


- ওকে তুই এখন রেস্ট কর । আমি বরং ডাক্তার সাহেবের সাথে কথা বলে আসি।


- ওকে ভাইয়া।


তানিশা ভাবছে আজব তো আমি আবার কখন মিমকে বাড়িতে দিয়ে আসলাম। ও হয়তো ওর বফ সাথে দেখা করার জন্য বাড়ি থেকে পালিয়েছিল এখন বলছে আমি দিয়ে এসেছি ওকে বাড়িতে। নিজে বয়ফ্রেন্ড এর সাথে দেখা করার একটা সুযোগ ও পেয়ে যায় আবার দোষারোপ ও আমার উপরে চাপিয়ে দেয় যাতে ওর ফ্যামিলি ওকে সন্দেহ না করে।


তানিশা আবার ভাবছে সে কি সব ভাবছে মিম সম্পর্কে? মিম তো তাঁর বেস্টফ্রেন্ড। কলেজ লাইফে পরিচয় হলেও মিম তাঁর বেস্টফ্রেন্ড।

…………………………………………………………………………


।হাসপাতাল থেকে সেদিনই তানিশাকে রিলিজ করে দেওয়া হয়। তারপর মিম দেখতে আসে তানিশাকে।
ছাদে রেলিং ঘেঁষে দুজন দাঁড়িয়ে রয়েছে।


-তুই আমাকে আজকে একা ফেলে বাড়িতে ক্যান চলে গিয়েছিলি ?


- তুই আমাকে নিজে বাড়িতে রেখে এসেছিস জোর করে?


- আমি এই কথাটা কোন ভাবেই বিশ্বাস করিতে পারিবো না?


- দাঁড়া তোকে দেখাচ্ছি তুই নিজে ড্রাইভিং করে আমাকে বাড়ি দিয়ে এসেছিস।
তারপর মিম ওর ফোন বের করে তানিশার ড্রাইভিং করার ভিডিও দেখায় যে ও নিজে ড্রাইভিং করে বাসায়
দিয়ে এসেছে।


ভিডিও টা যেন বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে তানিশার। তারপর ও বিশ্বাস করে নিলো । আর ড্রাইভিং করা অবস্থায় তানিশা খুব ক্ষিপ্ত ছিল মিমের উপর যার কারনে মিম তখন কিছু বলেনি। কারন ওর তখন তানিশার চেহারা দেখে খুব ভয় করছিল।


- রাতে তোর কি হয়েছিল?


- জানিনা তবে আজকেও আমি ধর্ষণের শিকার হয়েছি।


- সত্যিই?


- হুমম রে।


- তাও একবার না দুইবার।


- কিভাবে?


- তারপর তানিশা বর্ননা করল রাতের কাহিনি।


তানিশা তানিশা করে ডাকতে ডাকতে তানিশার ভাবি উপরে চলে আসে।


- কি হয়েছে ভাবি ডাকছো ক্যান?


- তোমার ভাইয়া নিচে ডাকছে।


- ওকে ভাবি আমি আসছি।



আজকে রাতে তানিশা নিজে ওর রুমে গোপনে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছেন। যাতে কে তাঁকে প্রতিদিন রাতে ধর্ষন করে বিষয়টা জানতে।



আজও প্রতিদিনের মতো করে ধর্ষণ হয়েছেন তানিশা। গত কয়েকদিনের মতো করে ফ্লোরে আর প্রটেকশনের প্যাকেট আর পাওয়া যায়নি ।


তবে প্রতিদিনের মতো করে আজকেও ফ্লোরে জামা কাপড় পেয়েছে। তানিশা জামা কাপড় পড়ে সিসিটিভি ফুটেজ চেক করতে ব্যাস্ত হয়ে পরে।


কিন্তুক তানিশা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হতভম্ব। কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে সে। ...................

তানিশা সেটুকু সময় ধরে ধর্ষনের শিকার হয়েছে সেই টাইম টুকু বাদে সকল কিছু সিসিটিভি ক্যামেরায় বন্দী। আর একটা বিষয় সেটা হচ্ছে তানিশা নিজের গিয়ে যে সিসিটিভি ক্যামেরা অফ করেছে সেটাও বোঝা যাচ্ছে। তানিশা ভাবছে ফুটেছে দেখা যাচ্ছে আমি নিজেই ক্যামেরা অফ করে কিছু টা-ইম পরে অন করলাম কিন্তুক আমি এমনটা কখন করলাম???


আর একটা বিষয় লক্ষ্যনীয় যে গভীর রাতে কেউ একজনকে তানিশা নিজেই ফোন করে। সেটা সে তাঁর ডায়েল কল দেখে বুঝতে পেরেছে। সে ঠিক নিদিষ্ট সময়ে ফোন করে ওই নাম্বারে।
কিন্তুক ওই নাম্বারে পরে কন্টাক্ট করতে চাইলে তানিশা করতে পারে না।


- তানিশা তোর এক্সাম কবে থেকে শুরু হচ্ছে?


তানিশার ভাইয়া খাবার টেবিলে প্রশ্নটা ছুড়ে দেয় তামিশালে উদ্দেশ্য করে।


- এইতো ভাইয়া আর কিছু দিন। ( কিছুটা নার্ভাস)


- এক্সামের প্রস্তুতি কেমন?


- ভালো ভাইয়া।


- না ওর প্রস্তুতি ভালো না। কয়েকদিন যাবত ও একটা অক্ষর ও পরে না। জাস্ট গোমড়া মুখি হয়ে থাকে।

( তানিশার ভাবি)


- ক্যান রে বোন তোর কি হয়েছে?


- ভাইয়া শরীরটা কিছুদিন যাবত ভালো যাচ্ছে না।


- ক্যান আবার কি হয়েছে?


- জানিনা ভাইয়া।


- জানিনা মানে না?


- কিছুনা ( করুণ গলায়)


- আজকে চল তোকে ডাক্তার দেখিয়ে তাঁরপর কাজের উদ্দেশ্য রওনা দিব।


- আজ না ভাইয়া। অন্যকোন দিন।


- ভাইয়া আমার প্যাড শেষ হয়ে গিয়েছে?


- ওকে আমি ফেরার পথে নিয়ে আসব।


আসলে আমাদের সমাজে প্যাড, পিরিয়ড, এসকল কথা না মানুষের ব্যাপকই সমালোচনা। আবার অনেকেই দেখি বিষয়টা খারাপ চোখে নিয়ে হাসাহাসি করে। আর হয়তো আপনারও খারাপ দিকে নিয়েছেন যে তানিশা বোন হয়ে ভাইয়ে কাছে প্যাড আনতে বলছে বিষয়টা কেমন হলো কিন্তুক বিষয়টা তেমন কিছুই হয়নি যেমনটা আপনি ভেবে নিয়েছেন। ভাইয়ার থেকে অন্য সকল আবদার যেভাবে মেয়েরা পূরণ করেন আমি মনে করি সেভাবেই এই আবদার টাও পূরণ করে নেওয়া উচিত। কারণ অনেক সময় কোন মেয়ে প্যাড কোন দোকান থেকে কিনতে গেলে সংকোচ বোধ করে আবার লোকলজ্জার ভয়েও কিনতে গিয়েও ফিরে আসে। আবার অনেক ভিড়ে মাঝে লজ্জায় কিনতে পারে না। আবার মানুষ হয়তো কেনার সময় দেখে হাসাহাসি করবে এমনটা ভয় ও হয় মেয়েদের। তাই বলি কি সমাজের মানুষ গুলো কেমন যেন তাই আপনার ভাইয়া বা আব্বুকে কোন সংকোচ বাদেই বিষয়টা আবদার করবেন। এই কথা গুলোর মধ্যে ভুল হয়ে থাকলে বা কেউ খারাপ ভাবে নিলে আমার কিছু করার নেই। তবে খারাপ নিলে বা ভুল ভাবলে ক্ষমার আদর্শে দেখবেন। যাই হোক চলুন গল্পে ফেরা যাক।



রাতে তানিশা জোর করে পড়তে বসেছে। ইচ্ছের বিরুদ্ধে অন্তরালে পড়তে বসেছে। কিন্তুক পড়ায় কোন প্রকার মনোযোগ স্থাপন নেই। শুধু ভাবছে কি করছি আমি যার জন্য ওই মানুষটা আমার সাথে এমনটা হচ্ছে। আমি তো হয়তো বড় কোন প্রকার অপরাধ করিনি। তাইলে ক্যান হচ্ছে আমার সাথে এমনটা।
তানিশা ১০ টার দিকে নিদ্রাহীন ভাবে খাঁটের সাথে হেলান দিয়ে বসে আছে। তানিশা ক্যান জানি ভেঙে পড়েছে। রোজ রোজ একজন অচেনা কেউ এসে ধর্ষণ করে যাচ্ছে। আর আমি তাঁর ধর্ষণে জ্বরজারিত হয়ে মরনের দিকে মর্দনকারী হয়ে যাচ্ছি।


তানিশার এটা বিশ্বাসী যে তাঁকে কোন অচেনা মানুষ ধর্ষণ করছেন। কোন প্রকার ভূত, প্রেত না।
কারন তানিশা জানে যে ভূত প্রেত নামে আসলে কিছুই নেই। অনেকেই বলে মানুষ মারা গেলে ভূত, প্রেত হয়ে যায় কিন্তুক কথাটা পুরোপুরি মিথ্যা। মানুষ মারা গেলে তাঁর আত্তা ঘোরাঘুরি করে কিন্তুক সেটার কোন ক্ষমতা নেই মানুষকে ধর্ষণ করবে। তবে হ্যাঁ পৃথিবীতে জ্বীন আছে। যাহ আল্লাহ পাক এর সৃষ্টি। তাঁরা আমাদের মতোই ই আল্লাহর গোলাম।


তবে আজকে তানিশা গভীর ভয়ে আছন্ন। কারন আজকে থেকে তানিশার পিরিয়ড শুরু হয়েছে। ভয় করছে আজকেও যদি আমি ধর্ষণের শিকার হয় আর এই সাতদিন ই যদি ধর্ষণের শিকার হতে থাকি তাইলে আমি হয়তো চিরতরে মা হবার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলব। তানিশা আজকে ডিসিশন নিয়ে নিয়েছে যেভাবেই হোক সে আজকে ঘুমাবে না আবার ক্যামেরাও অফ করবে না।


তানিশা ঘুম না আসার কারণে তাঁর ডায়েরি টা মেলে ধরল চোখের সামনে। তবে আজকের তানিশা ১ বছর যাবত পরে ডায়েরি টা খুলছে। প্রচুর পরিমানে ধুলাবালি জায়গায় করে নিয়েছিল ডায়েরিটার উপর।
আর ডায়েরি প্রথম পেজে তানিশার নামের সাথে একজনের নাম খেলা যার জন্য হতভম্ব তানিশা।
খুব বড় বড় অক্ষরে করে লেখা তানিশা লাভ রেজন।


তানিশা ভাবতে থাকে আমার ডায়েরি তে রেজনের নাম লেখা কিন্তুক এই রেজনটা আবার কে ??
রেজন নিয়ে ভাবতে ভাবতে তানিশা ঘুমের রাজ্যে পাড়ি জমায়। আসলে তানিশা ঘুম পাগলী। তাঁর ঘুম না হলে পাগল হয়ে যায়।



খুব সকালে খুব ভেঙে যায় তানিশার। আর আজকে ও ধর্ষণের শিকার হয়নি সেটা ও বুঝতে পারছে। কারন ও আজকে স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে। কোন প্রকার ধকল যায়নি ওর শরীরের উপর দিয়ে। আর ওর শরীরের সম্পুর্ন কাপড় খোলা নেই আজকে। আজকে সালোয়া কামিজ পরে ছিল তানিশা।
তবে আজকে তানিশার জাস্ট কামিজ পড়ে আছে ফ্লোরে কিন্তুক শরীরের সাথেই তাঁর সালোয়ার ছিল।
তানিশা কামিজ গাঁয়ে জড়িয়ে নিল। আর ভাবছে ওই ধর্ষণকারী জানলো কি করে যে আমার পিরিয়ড চলছে।
তারপর তানিশা তাঁর বালিশের নিচে একটা চিরকুট পায়। চিরকুটে জাস্ট লেখা আজকে থেকে যে তোমার পিরিয়ড শুরু হয়েছে এটা আমার জানা ছিল। আমার ডায়েরিতে লেখা রয়েছে তোমার যাবতীয় তথ্যাদি ।
তানিশা বার বার চিরকুট টা পড়ছে। তানিশা ভাবল কে সে যে আমার বিষয়ে সকল কিছু জানে।
এভাবেই তানিশা সাতদিন কোন প্রকার ধর্ষণ থেকে মুক্ত। সে এখন আর কলেজে যায় না। সবসময় গোমড়া মুখি হয়ে বসে থাকে। আজকে কয়েকদিন পরে মিম তানিশার সাথে দেখা করতে এসেছে।
- তানিশা জানিস আমার এই কয়েকদিন কি হয়েছিল?


- কি হয়েছিল?? ( হতাশা নিয়ে)


- আমার ফোনে আসা একটা টেক্সটে আমি এই সাতদিন যাবত হাসপাতালে ছিলাম।


- তুই হাসপাতালে ছিলি সেটা আগে বলিস নাই ক্যান ? আর তোর ফ্যামিলির কেউ ও তো আমাকে কিছু জানাই নি।


- আসলে আমি মানা করেছিলাম যেন তোকে বিষয়টা জানানো না হয়।


কথাটা বলে মিম মাথা হেঁট করে দাঁড়িয়ে আছে।


- তোর ফোনে কি এমন টেক্সট এসেছিল যার জন্য তোকে সাতদিন যাবত হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল?
- আসলে তোর ধর্ষণের বিষয়ে আমি মনে করছিলাম হয়তো এটা তোর মনের ভুল নয়তো কোন ভূত, প্রেত এমনটা করছে। কিন্তুক আসলে এমনটা না রে তোকে একজন মানুষ ই ধর্ষণ করেছে।


- সেটা আমিও জানি।


- তা তোর ফোনে কি এমন টেক্সট এসেছিল?


- টেক্সটে ছিল, তুই কিসের কারণে সেদিন তানিশার সাথে ছিলি। আর তুই কিসের জন্য তানিশা ধর্ষণের বিষয় বিশ্বাস করেছিলি না। আর তানিশা আমার বউ। ওর আমার মিলন নিয়ে হাসাহাসি করেছিলি ক্যান । আর তোর জন্য আমি একটা গিফট পাঠিয়ে দিয়েছি পার্সেল করে দেখে নিস। এতোক্ষণে হয়তো তোর রুমের সামনে গিফটটা রাইখা এসেছে।

 

- তারপর?


- তারপর আমি গিফট দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি ?


- কি ছিল গিফট ?


- বিশাল একটা বক্সে মানুষের রক্তমাংসের মাথা?


- কিহহহহ?


- হুম রে


- তবে ওইটা জাস্ট ভয় দেখানোর জন্য পাঠানো হয়েছিল। ওইটা রিয়েল মানুষের মাথা ছিল না।

- আর ওই ভয় পেয়েই আমি সাত দিন হাসপাতালে।



মাঝে মাঝে তানিশার এখন বুমি হওয়া শুরু হয়েছে। ওর পেট মাঝে মাঝে ব্যাথা করছে। আর পেটে কে যেন মাঝে মাঝে লাথি মারে।


মিমের পরামর্শে তানিশা আর মিম দুজন হাসপাতালে চেকাপ করাতে গেল। তানিশা খুব টেনশনের মধ্যে দিয়ে পার করছে কারন যদি রিপোর্ট পজেটিভ হয় তাইলে আমি মুখ দেখাব কি করে সমাজে। কি পরিচয়ে মানুষ হবে ও । ওর তো কোন পিতার পরিচয় নেই। তাহলে কাকে পিতা বলবে। আমার কাছে যখন ওর পিতার কথা জানতে চাইবে তখন আমি কি বলব?


তোর বাবা অচেনা মানব?



তানিশা যেন কথা গুলো ভাবতেই ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।


- টেনশন করিস না তুই যেমনটা ভাবছিস আশাকরি তাঁর বিপরীত দিকটা হবে।


- তাই যেন হয় রে দোস্ত।


- হুম সেটাই হবে।


কতক্ষণ পরে রিপোর্ট টা আসল।


- রিপোর্ট টা দেখে মিম তানিশা দুজন ই হতভম্ব। যেন দুজনের মাথায় ই আকাশ ভেঙে পড়ল। রিপোর্ট positive। টুইন বেবি তানিশার গর্ভে।



যদিও তানিশার খুব বেশি পছন্দ টুইন বেবি। ওর কামনা ছিল ওর একদিন টুইন বেবি হবে। পাশের বাসার এক বড় আপুর টুইন বেবি হওয়াতে তানিশার টুইন বেবির উপর একটা আকর্ষণ বিস্তার করে। সে স্বপ্ন দেখতে থাকে আমার ফুটফুটে বেবির সাথে আমি সারাদিন খেলাধুলা করব। একসঙ্গে করে ঘুরতে নিয়ে যাব। আমার বাবুর আব্বুর কোলে থাকবে একটা বেবি আর আমার কোলে থাকবে একটা বেবি। দুজন পাশাপাশি হেঁটে পাড়ি দিব আমাদের গন্তব্য স্থলে। আবার দুজন সেখান থেকে রিক্সায় পাশাপাশি বসে বাসায় ফিরবো। প্রতিদিন ওর বাবা বার বার অফিস থেকে ফোন করে আমার বেবির খোঁজ খবর নেবে। আবার ছুটির দিনে আমার বেবিদের সাথে করে নিয়ে আমরা পাড়ি দিব উদ্দেশ্য স্থলে।
কিন্তুক আজকের তানিশার টুইন বেবির কথা শুনতেই মুখটা মলিন হয়ে উঠে। বিষাদে রূপান্তরিত হয় চেহারা। মুখের দিকে চাওয়া যাচ্ছে না কোন ভাবে।কারণ এই বেবির বাবা নেই৷ বেবি গুলো অবৈধ সন্তান পরিচয়ে বেড়ে উঠবে সমাজে। সবাই ওদের নিয়ে হাসি তামাশা করবে এটা আমি সহ্য করতে পারব না। এসকল কথা তানিশার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।


- দোস্ত কি করবি এখন? ( মিম)


- জানিনা রে। ( আহত স্বরে)


- আমি একটা কথা বলি শুনবি তো আমার কথা?


- হুম বল।


- আমি বলি কি তুই পিল খেয়ে নে। বাচ্চা গুলো নষ্ট করে ফেল।


- মিম ( উচ্চস্বরে)


- চিল্লাচিল্লি ক্যান করছিস এটা একটা পাবলিক প্লেস।


- তাই বলে আমার সন্তানকে নষ্ট করব ক্যান?


- আহহহ আমার সন্তান!!! কি সুন্দর করে কথাটা বলছে। তুই জানিস এই সন্তানের বাবা কে? আর কার পরিচয়ে ওরা বড় হবে। কিভাবে মুখ দেখাবি সমাজে? তোর কি মুখ থাকবে?


- যদি সমাজ থেকে আমাকে বিতাড়িত ও করা হয় তাঁরপরও আমি এই সন্তান নষ্ট করব না। কারণ ওদের দুনিয়াতে আনার দায়িত্ব আমার। ওরা তো কিছু করেনি যার জন্য ওদের নষ্ট করে দিতে হবে। হয়তো আমি কারো ধর্ষণের শিকার হয়ে আমার গর্ভে সন্তান এসেছে। এতে আমার আর আমার সন্তানের তো কোন প্রকার দোষ নেই। দোষ যদি কেউ করে থাকে তাইলে সেটা ওই ধর্ষক করেছে।


- যাহ পারিস তুই কর গা। আমি গেলাম।



তানিশারা হাসপাতালে যায় সন্ধ্যারাত্রি আর রিপোর্ট পেতে ও সকল কাজে ১১ টা বেজে যায়। মিম একাকী বাড়ি ফিরছে।


তাঁদের বাড়ির রাস্তা একটু নির্জন। মিম বার বার পিছন ফিরে তাকাচ্ছে ওর মন বলছে কেউ একজন ওকে ফলো করছেন। কিন্তুক মিম বার বার পিছন দিকে তাকিয়ে দেখে পিছনে কেউ নেই।


হঠাৎই একজন মুখোশধারী মানুষ মিমের সামনে চলে আসে।


- কে আপনি এভাবে পথ ক্যান আটকালেন? ( ভয়ে ভয়ে)


- আমি টুইন বেবির বাবা। ( মিমের দিকে আগাচ্ছে মুখোশ ধারী মানুষটা)


- মানে আপনি সেই ধর্ষক? ( মিম পিছিয়ে যাচ্ছে)


- না আমি ধর্ষক না। - (মিমের দিকে এগিয়ে)


- তাইলে?


- তানিশা আমার বউ।

 


- বউ হলো কি করে ওর তো বিয়েই হয়নি?


- বিয়ে হয়েছে।


- কার সাথে?


- আমার সাথে।


- আপনি তো ধর্ষক?


- হ্যাঁ আমি ধর্ষক তাতে তোর কি? এখন বল তুই আমার টুইন বেবিকে নষ্ট ক্যান করতে বলেছিস? ( কঠিন গলায়)
- আপনি কি করে জানলেন আমি বেবি নষ্ট করতে বলেছি? ( মিন মিন গলায়)


- আমি জানি তুই কি বলেছিস তানিশাকে। কাজটা ঠিক করিস নাই।


মিম পিছাতে পিছাতে একটা বড় গাছের সাথে বন্দী হয়ে যায় আর মুখোশধারী খুব কাছে মিমের।


- যাহ করার ঠিক ই করেছি। ক্যান করব না এমনটা। কি পরিচয়ে মানুষ হবে ওর অবৈধ বেবি গুলো ? আর ও নিজেই বা কি করে মুখ দেখাবে সমাজে ?


- সেটা আমাদের ব্যাপার তুই ক্যান আমাদের সন্তানকে নষ্ট করতে বলবি বলেই মিমের গলা টিপে ধরে। মিম ছাড়ানোর চেষ্টা করছে কিন্তুক পারছে না।


- বল কোনদিন আর আমার সন্তান নষ্ট করার কথা বলবি?


- মিম হাত দিয়ে ইশারা করে বলতে লাগল হ্যাঁ বলব না আর?


- ভালো থাকিস আর আমার বেবি ও বেবির মায়ের খেয়াল রাখবি?


- হ্যাঁ বলার চেষ্টা করল মিম ।


তাঁরপর মিমকে ছেড়ে দেওয়া হলো। মিম যেন আধা মরা হয়ে যাচ্ছিল। তাঁর দম বন্ধ হয়ে মারা যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল।


তানিশা বাসায় গিয়ে নিশ্চুপে শাওয়ার নিতে চলে যায়। অঝোরে কান্না করতে থাকে তানিশা। তানিশার কান্নার জল আর শাওয়ারের জল মিশে একাকার। আর তাঁর কান্নার আওয়াজ শাওয়ায়ের নেওয়ার শব্দে ভাসিয়ে যায়। তানিশা শাওয়ার নিচ্ছে অধিক টাইম ধরে।



তানিশা শাওয়ার শেষ করে বিছানায় চলে আসল। আর বিছানায় এসেই ভাবতে লাগল যদি এমনটা হতো যে আমাকে প্রতিদিন ধর্ষণ করছে সে যদি আমার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে আমাকে বিয়ে করার জন্য প্রস্তাব দিলো। তাঁরপর আমার টুইন বেবির দায়িত্ব হাতে তুলে নিলো। তখন আমাদের একটা সংসার হবে যেখানে দুজন হাসিখুশি আমার বেবিদের নিয়ে জীবন পাড় করে দিবো।


হঠাৎই বাস্তবতার ঝড় বয়ে গেল তানিশার মাঝে। সে বুঝে গেল এটা বাস্তবতা। বাস্তবতা আর কাল্পনিক সম্পূর্ণ আলাদা। আর আমি কি সব ভাবছি সন্তানের মোহে পড়ে। সেই ধর্ষক জাস্ট ইনজয় করেছে আমার সাথে সে ক্যান বিয়ে করে আমাকে? ক্যান ঘাড়ে তুলে নিবে আর আমার সন্তানের দায়িত্ব নল। আসলে বাস্তবতা বড়ই নির্মম।


আর আমি আমার ফ্যামিলিকে কি করে মুখ দেখাব। যারা আমাকে এতো বিশ্বাস করে টাকা পয়সা দিয়ে পড়াশোনা চালাচ্ছে আমি কিনা তাঁদের মুখে চুন কালি মাখিয়ে বিয়ের আগেই সন্তানের মা হয়ে গেলাম। আমার জন্য আমার ফ্যামিলির নাক কান কাটা যাবে তাঁরচেয়ে বরং আমি নিজেই হারিয়ে যায় আমার নিষ্ঠুর দুনিয়া থেকে। বড্ড বেশি বেইমানি করল আমার ভাগ্য আমার সাথে। ক্যান এমনটা হবার ছিল আমার লাইফে? কি এমন পাপ করেছিলাম যার জন্য আমাকে এমন কষ্টের মাঝে জীবন পরিচালনা করতে হচ্ছে।


এসব ভাবতে ভাবতে তানিশা হারিয়ে যায় গভীর নিদ্রায়। আর প্রতিদিনের মতো করে আজও ধর্ষণের হাত থেকে রক্ষা পেল না। তানিশা ওর রুম গোছাতে গোছাতে বালিশের নিচে একটা চিরকুট পায়।
দেখ তানিশা আমার বেবিগুলো কিন্তুক খুব যত্নে আগলিয়ে রাখবে। আমার বেবিদের যেন কোন প্রকার কষ্ট না হয়। কষ্ট পেলে কিন্তুক তোমায় শেষ করে দিব। আর এখন থেকে তুমি কোন প্রকার কাজ করবে না। আর আমার বেবি গুলো নষ্ট করার চেষ্টা করলে একদম মেরে ফেলা দিব। ভালো মন্দ খাওয়া দাওয়া করবে আর নিজের খেয়াল রাখবে। আর হ্যাঁ তুমি আমাকে টুইন বেবি গিফট করছো আর আমার ও উচিত তোমাকে কিছু একটা গিফট করা তাই তোমাকে সামান্য একটা গিফট করলাম, গিফটটা দেখ তোমার ড্রেসিং টেবিলের উপরে রাখা।


তানিশা এই টুকু মাত্র পড়ে দৌড় দিল ড্রেসিং টেবিলের দিকে আর সেখানে গিয়েই সে হতভম্ব পুরো। সেখানে রাখা একটা ডায়মন্ডের আঙটি আর টুইন বেবি দের নাম সমূহ নিয়ে একটা বই।


তানিশা এবার চিরকুটের বাকিটুকু পড়ছে,


কি পছন্দ হয়েছে আমার গিফট দেখে? আর বই থেকে সুন্দর সুন্দর নাম রাখবে আমার বেবিদের। আচ্ছা ভালো থেক কালকে আবার আসব।


তানিশা চিরকুট টা পড়ে কেমন যেন বিস্ময়কর। কোন কিছু ই মাথায় যাচ্ছে না তানিশার। খুব করে মাথা ঘোরাচ্ছে তানিশার। সব কিছু যেন কেমন ঘোলাটে ঘোলাটে লাগছে। উল্টো পাল্টা হয়ে যাচ্ছে ওর আবিষ্কার পৃথিবীটা।

 

উল্টো পাল্টা হয়ে যাচ্ছে ওর আবিষ্কার পৃথিবীটা। ওর মাথায় কোন কিছু ই প্রবেশ করছে না কি করে এমনটা হলো। কে এই মানুষটা যে আমাকে প্রতিদিন তাঁর চাহিদার দাস বানিয়েছেন আবার আমার গর্ভের অভিশাপ শিশুগুলো কে খুব যত্নে রাখতে বলছেন। আবার আমাকে এতো দামি রিংক গিফট করল। আসলে এই ব্যক্তি কে যে শুধু আমাকে ধর্ষণ করে চলে যায় আবার আমার গর্ভের সন্তানদের আগলিয়ে রাখতে বলে খুব যতন করে। আমার আমাকে মেরে ফেলা দেওয়ার হুমকি দেয়।


- তানিশা আমরা একটা জায়গাতে ঘুরতে যাচ্ছি তুই চল আমাদের সাথে যাবি।


তানিশার ভাইয়া তানিশার দিকে কথাটা ছুঁড়ে দিল খাবার টেবিলে।


- নাহহহ ভাইয়া তোমরা যাও আমি যাব না ( তানিশা)


- ক্যান যাবি না? চল যাই মনটা ভালো হয়ে যাবে ( তানিশার ভাবি)


- না ভাবি তোমরা যাও আমি যাব না।


- চল না আন্টি যায় আমাদের সাথে ( রাইসা।)


রাইসা হলো তানিশার ভাবি ভাইয়ার কোল জুড়ে আসা আদরের সন্তান। খুব বেশি মিষ্টি দেখতে। যেমন দেখতে মিষ্টি তেমন চাল চলন ভারীই মিষ্টি । ওর দাঁত গুলো দেখতে খুব ভালো। ছোট ছোট দাঁত দেখতে যেন পিচ্চি রাজকন্যার মতো। খুব বেশি চঞ্চল চড়ুই পাখির মতো। সবার সাথে মিশতে জানে ও। যে দেখবে তাঁর ই আদর করতে ইচ্ছে করবে খুব।রাইসা খুব ভালো স্টুডেন্ট। ক্লাসের ফাস্ট গার্ল।
- ওকে মামুনি চল যাব।



গাড়িতে উঠে বসেছে সবাই। তানিশার ভাইয়া নিজে ড্রাইভিং করছেন। গাড়ি চলছে তাঁর গতিসীমায়। হঠাৎই মিম ফোন করে বসে তানিশাকে।


তানিশাকে ফোন করে মিম ওর সাথে ঘটে যাওয়া রাতের কাহিনির তুলে ধরে ফোনের মাধ্যমে। তানিশা মিমের কথা শুনে হতভম্ব।


আমাকে মিম বাচ্চা নষ্ট করতে বলছে জন্য মিমকে মেরে ফেলতে গিয়েছিল। তানিশা ভাবছে যে আমাদের কথাগুলো সেই মানুষটা জানলে পেল কি করে? আমরা তো নিরিবিলি হাসপাতালের এক কোনে আলোচনা করছিলাম। বিষয়টা ভাবছে আর মন মরা হয়ে বসে আছে তানিশা।
তানিশা আবার ভাবছে আমার সাথে এমনটা কোন জ্বীন গোষ্ঠী বা পরী গোষ্ঠী করছে না তো? আবার ভাবছে এটা কি করর সম্ভব??


- কি হয়েছে আন্টি তোমার? ( রাইসা)


রাইসা এতোক্ষণে তানিশার কোলের উপরে বসে ওর আম্মুর ফোনে গেমস খেলছিল।


- কিছুনা মামুনি।


- তাইলে তোমার ফোনে একটা ফোন আসাতে ধ্বংসপ্রাপ্ত মুখ হয়ে গেল ক্যান তোমার?


- তেমন কিছু না রে পিচ্চি বুড়ি?


- আচ্ছা আন্টি তোমার আঙ্কে............


রাইসা কথাটা শেষ করতে যাবে তার আগেই তানিশার ভাবি রাইসাকে তানিশার কোল থেকে ছোঁ মেরে নিয়ে নিজের কোলে নিয়ে অন্যদিকে মন আকর্ষণ করে ফেলে দেয়।


- ভাবি ওকে কথাটা শেষ করতে দিতে? তাঁর আগেই ক্যান নিয়ে নিলে আমার কাছে থেকে?
- আরে ইদানীং খুব ভুল বকা ধরেছে ও । খুব সবসময় ভুল ভাল বকে। না জানি তোমাকে কি দিয়ে কি বলে ফেলবে তুমি বিষয়টা খারাপ দিকে নিবে তাঁর আর কি.....


- ভাবি এটা কি ধরনের কথা হলো? আমি ওকে নিজের সন্তানের মতো করে ভাবি। একটা সন্তান যেমন যতবড় অন্যায় ই করুক না ক্যান সে যদি পিতা মাতার সামনে এসে আব্বু আম্মু বলে ডাকে তখন পিতা মাতার সন্তানের উপর সকল রাগ, অভিমান ভেঙে যায়। ঠিক তেমন করে রাইসা যতটা জ্বালায় আমি মাঝে মাঝে বিরক্ত হয় কিন্তুক যখনই ও আন্টি বলে ডাকে তখন আমার চোখ মুখ থেকে সকল বিরক্তিকর ছাপ গুলো কেটে যায়।


- তানিশা বাদ দাও তো বিষয়টা। আমরা এসব এখন না ভাবি।


- তানিশার ক্যান জানি মনের মধ্যে ওর ভাবির আচরণ টা অদ্ভুত ধরনের লাগল। তানিশার ক্যান জানি মনে মনে রহস্যের গন্ধ পাচ্ছে বিষয়টার মাঝে। তানিশা ভাবছে বিষয়টা রাইসার থেকে জানতে হবে।

তানিশারা কতক্ষণ বাদে ওদের উদ্দেশ্য স্থলে পৌছে গেল। আসলে তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল শিশু পার্কে । কিন্তুক শিশু পার্কে কোন প্রকার ফ্যামিলি নিয়ে যাওয়ার মতো পরিবেশ না থাকায় তানিশার ভাইয়া একটা রেস্টুরেন্ট প্লাস কফি হাউসের উদ্দেশ্য রওনা হলো।


আসলে এখন আর শিশু পার্কে শিশুদের কোন প্রকার সমাবেশ ঘটে না। এখন এটা প্রেমিক প্রেমিকাদের রোমাঞ্চ করার জায়গায়। আমি জীবনে একবার বন্ধুদের সাথে ঢাকায় শিশু পার্কে গিয়ে তাড়াতাড়ি বের হতে পারি নাহহ।



- তানিশা কি খাবি ?


- কিছু খেতে ইচ্ছে করছে না ভাইয়া।


- মানে কিছু একটা অর্ডার কর।


- ভাইয়া আমার একটা ঠান্ডা কফি হলেই হবে ।


- ওকে।


তানিশার ক্যান জানি এই রেস্টুরেন্ট টা খুব বেশি পরিচিত পরিচিত মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে কতদিন যাবত যেন ওর আসা যাওয়া এই রেস্টুরেন্টে।

 

রাতে তানিশা আজকে ওর রুমে আরও একটা ক্যামেরা স্থাপন করেন। যাতে যে করেই হোক ওই ধর্ষক কে চিহ্নিত করতে পারে ও।


তানিশা আজকে আবার ওর চোখের সামনে ওই ডায়েরি টা খুলে ধরলো। ডায়েরির একটা জায়গায় ওর চোখ আটকিয়ে গেল।


ডায়েরির একটা জায়গায় লেখা ছিল খুব বেশি ভালোবাসি রেজন আমি তোমাকে। কি করে বোঝায় তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচতে পারব না। একটা মূহুর্ত চলে না তোমাকে কল্পনার জগতে করে না ভাসিয়ে নিয়ে যেতে। খুব বেশি ভালোবাসি রে পাগল তোকে।


তানিশা খুব করে মিলিয়ে দেখল কথাগুলো তাঁর নিজের হাতে লেখা।


তানিশা লেখা পরে যেন নিজের মধ্যে নিজে থাকল না। তানিশার মনে মধ্যে বার বার উঁকি দিয়ে যাচ্ছে এই রেজন টা আবার কে? যাকে আমি ভালোবাসি। তানিশা ভাবছে আসলে ডায়েরি টা হয়তো বা ওর না।
এখন অনেক মানুষ আছে যারা হাতের লেখা কপি করতে পারে। হাজারও কথা ভাবতে ভাবতে হারিয়ে যায় তানিশা গভীর ঘুমে। ডায়েরি টা পড়ে থাকে তাঁর হাতের পাশে।



সকালে ঘুম থেকে উঠে তানিশা অবাক। সে আজকে কোন প্রকার ধর্ষণের শিকার হয়নি। কিন্তুক সে এটা দেখতে পেল যে বালিশের নিচে একটা চিরকুট। চিরকুট হাতে তুলে নিয়ে তানিশা দৌড় দেয় সিসিটিভি ফুটেজ চেক করতে। তানিশা সিসিটিভি ফুটেজে যাহ দেখলো সেটা দেখার প্রস্তুতি সে ছিল না।

 

তানিশা সিসিটিভি ফুটেজে যাহ দেখলো সেটা দেখার প্রস্তুতি সে ছিল না।


ফুটেজে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে তানিশা কেউ একজন চাদর মুড়ি টেবিলের উপর বসে কি যেন লেখতেছে। এখানে অদ্ভুত বিষয় এটাই যে চেয়ারে বসা বাদ দিয়ে মানুষটা টেবিলের উপরে বসে ছিল। আবার মানুষটা হাত দিয়ে লেখা বাদ দিয়ে পা দিয়ে লেখছে। কতক্ষণ পরে লেখা শেষ করে মানুষটা আস্তেধীরে করে ওর দিকে এগিয়ে আসছিল। তাঁরপর ধীরে ধীরে তানিশার দিকে ঝুকতে থাকে। প্রথমে তানিশার মুখের উপরে আসা চুল গুলো হাত দিয়ে সড়িয়ে দেয়। মুখের উপরে আসা চুল গুলো খুব স্বযত্নে কানে গুঁজে রাখে। হাত দিয়ে চুলগুলো আলতো ছুঁয়ে দিতে থাকে। কতক্ষণ পরে তানশার কপালে আলতো করে দেয় আদর বসিয়ে দেয়। এরপর চোখে, মুখে,, থুতনিতে গালে আদর জড়াতে থাকে। এভাবেই কতক্ষণ পরে মানুষটা কোথায় গেল, কি করল, না করল সেটা ক্যামেরা অস্পষ্ট।


তবে চিরকুটটা এগিয়ে ধরল তানিশা নিজের চোখের সামনে। চিরকুটটায় দেখা ছিল ।


তানিশা তোর কিন্তুক খবর আছে। তুই কালকে কিসের জন্য ঠান্ডা কফি খেলা? যদি আমার বাচ্চার কিছু হয় তাইলে খবর আছে। আর কালকে রাতে আমি আসব না তুমি ওই নদীর ঘাটের দিকে আসবে। খোলা আকাশের নীচে নৌকার ছইয়ের ভিতরে আদর করব তোমাকে। আর এখন থেকে খুব আদর করব তোমাকে। কারণ কিছুদিন পরেই তুমি আমাকে টুইন বেবির দর্শন মেলাবে। আর দেখ তোমার জন্য আচার নিয়ে এসেছি তেঁতুলের। তোমার টেবিলের উপরে রাখা আছে। নিয়মিত টক খাবা আর আমার বেবির যত্ন নিবা।


চিরকুট টা হাত থেকে একাকীই পড়ে গেল। তানিশা অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে হাত থেকে পড়ে যাওয়া চিরকুট টার দিকে। চোখ টা ঝাপসা হয়ে আসছে তানিশার। চোখ দিয়ে হালকা করে জল গড়িয়ে পড়ছে। খাঁটের কোণে ধপাস করে বসে পড়ে তানিশা। চোখ লাগিয়ে আসছিল তানিশার। হঠাৎই মিম ফোন করে তানিশাকে।


- হ্যালো রে। ( মিম)


- হুম বল ( ঘুম আসবে এমন কন্ঠে)


- কলেজে আয় আজকে।


- না রে কলিজা ভালো লাগছে না।


- ক্যান ?


- তেমন কিছু টা প্রতিদিনের রুটিন আজও ঘটছে নাকি? ( মিম)


- আজকে ধর্ষণ বাদে সকল কিছু ই ঘটেছে।


- আজকে কিন্তুক কলেজে আসছিস তুই৷ জরুরি কথা আছে তোর সাথে।


- ওকে।



- আন্টি কোথায় যাবে তুমি এখন?


খাবার টেবিলে রাইসা তানিশাকে উদ্দেশ্য করে কথাটা ছুঁড়ে দিল।


- কলেজে যাব মামুনি।


- আমিও তো স্কুলে যাব আমাকে সাথে করে নিয়ে যাবে না?


তানিশা ভাবছে একাকী যাওয়ার চেয়ে রাইসাকে সাথে করে নিয়ে যায় যাতে সারাপথ এনজয় করতে পারি। ওর পাকামো কথা গুলো শুনলেই যে কারো মন ভালো হয়ে যাবে আবার সেইদিন কার রাইসার শেষ না করা কথাটা জানা যাবে.


- কি আন্টি নিবে না আমাকে?


তানিশা কল্পনার জগত ত্যাগ করে।


- ক্যান নিব না আমার বুড়িকে সাথে ?


- তাইলে একসাথে যাব কেমন?


- ওকে পাগলী বুড়ি।



রাইসা আর তানিশা পাশাপাশি বসে আছে।


- পাগলী বুড়ি? ( তানিশা


- জ্বী আন্টি।


- গতকাল তুমি আমাকে কি বলতে চেয়েছিলে সোনা?


- কখন আন্টি?


- ওই যে গতকাল যখন গাড়ি করে আমরা ঘুরতে যাচ্ছিলাম তখন তুমি আমাকে কি সব যেন বলছিলে হঠাৎই তোমার আম্মু তোমাকে আমার থেকে নিয়ে নেয় ওই কথাটা এখন বল তো।


- মনে নেই তো আন্টি......


- ওকে ঠিক আছে।


তারপর তানিশা রাইসাকে স্কুলে নামিয়ে দিয়ে কলেজে চলে যায়।


আর এদিকে তানিশার ভাবি তানিশার ঘর গোছাতে ব্যস্ত হয়ে ওঠে হঠাৎ বিছানার নিচে একটা জিনিসে চোখ আটকিয়ে গেল তানিশার ভাবির। আসলে জিনিসটা ছিল তানিশার টুইন বেবির রিপোর্ট। রিপোর্টটা হাতে জড়িয়ে নিয়ে তানিশার ভাবি তানিশার ভাইয়ের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।


- কি হয়েছে কিছু বলবে? ( তানিশার ভাইয়া)


- না মানে?


- কি হয়েছে বল।


- কিছু খারাপ ভাব্বে না তো আবার?


- আরে পাগলী বল।


- যদি উল্টো পাল্টে কিছু করে বসো।


- বলবে নাকি বলবে না। ( কড়া কন্ঠে)


তখন তানিশার ভাবি তানিশার ভাইয়ের দিকে এগিয়ে দেয় রিপোর্ট টা।


রিপোর্ট টা দেখে তানিশার ভাইয়া বসা থেকে দাঁড়িয়ে গেল।


- এখনই এসবের কি দরকার ছিল? ( তানিশার ভাবি)


- জানিনাতো। কিছুদিন পরে হলে কি এমন হতো?


- কি আর করা যাবে ওর কপাল টায় খারাপ। ক্যানই বা সেদিন বাড়ি থেকে ওরা বের হবে আর ক্যান ই বা..................
কথাটা শেষ না করেই কান্না করতে করতে তানিশার ভাইয়া বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যায়।
তানিশা মিমের সাথে কথা বলে যাচ্ছে কলেজে গিয়ে অবিরাম কিন্তুক হঠাৎই তানিশা মাথা ঘুরে পড়ে যায়। তখন মিম নিজে এসে তানিশাকে বাসায় দিয়ে যায়।


- তানিশা ভাবছে বাচ্চাগুলো নষ্ট করে ফেলবে নয়তো সে নিজে আত্মহত্যা করবে। তাঁর আর এসব ভালো লাগছে না। আজকে ক্যান জানি এসব ভাবছে তানিশা। কেমন জানি পাগল হয়ে যাচ্ছে তানিশা। নিজে কেমন জানি অবুঝ অবুঝ হয়ে উঠছে।



রাতে তানিশা ভাবছে আমি কি যাব আজকে রাতে ঘাটে? একবার ভাবছে যাব আবার ভাবছে যাব না। কিন্তুক সঠিকভাবে সিধান্ত নিতে পারছে না। এসব ভাবতে ভাবতে তানিশা ঘুমের দেশে হারিয়ে যায়।
গভীর রাতে তানিশার ঘুম ভেঙে যায়। ঘুম ভেঙে যাওয়ার পরে তানিশা ওর ফোনের দিকে দৃষ্টি করে দেখল ওর ফোনে একটা এসএমএস এসেছে। এসএমএস টা ছিল এইরকম।


আমি কিন্তুক বসে আছি ঘাটে তোমার অপেক্ষায়। আমার বিশ্বাস তুমি এখানে আসবে।
তানিশা কি করবে না করবে ভাবতে ভাবতে বেরিয়ে গেল বাড়ি থেকে। আজও রাস্তায় জনশূন্যতায় পরিপূর্ণ। তানিশা আস্তে আস্তে করে রাস্তার একপাশ দিয়ে হাঁটতে থাকে ঘাটকে উদ্দেশ্য করে।
আজও জ্যোৎস্নাময় রাত। চারিদিকে জ্যোৎস্নার আলোয় আলোকিত রাস্তাঘাট। তানিশা ঘাটে গিয়ে হতভম্ব। সবচেয়ে বড় সারপ্রাইজ হল আজকে তানিশা। জীবনে ও এমন সারপ্রাইজ কোনদিন হয়নি।

 

সবচেয়ে বড় সারপ্রাইজ হল আজকে তানিশা। জীবনে ও এমন সারপ্রাইজ কোনদিন হয়নি।
বালু কণা উপরে জ্বলন্ত মোমবাতি দিয়ে সজ্জাকরণ করা হয়েছে। মোমবাতি গুলো দিয়ে অনেক সুন্দর করে লেখা রয়েছে হ্যাপি বার্থডে তানিশা। এতোটা সৌন্দর্য তুলে ধরা সম্ভব না। আলোক সজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে। তানিশা পা পা করে হেঁটে আগাচ্ছে এতোটা সৌন্দর্য কাছ থেকে দেখার জন্য। তানিশা নিস্তব্ধতায় হেঁটে চলছে। ওর চোখকে ও নিজে বিশ্বাস করতে পারছে না এতো সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারছে ।


ভাবনার জগতের মধ্যে ও যেতে পারছে না তানিশা।


এতোক্ষণে তানিশা মোমবাতি দিয়ে সাজানো সারপ্রাইজ এর স্থানে পৌঁছে গেল। সেখানে গিয়ে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে তানিশা। হাত দিয়ে স্পর্শ করতে ইচ্ছে করছে তানিশার মোমবাতি গুলো। জ্বলন্ত মোমবাতির আগুন কেমন হাত দিয়ে দেখতে ইচ্ছে করছে। ইচ্ছে করছে মোমবাতি যেমন করে জ্বলছে তেমন করে জ্বালিয়ে দেই নিজেকে। কতই না আনন্দ পাচ্ছে মোমবাতি গুলো পুড়ো আমি হয়তো পুড়লে এমন মজা পাব। কত সুন্দর ই না দেখাচ্ছে মোমবাতি গুলারে হয়তো আমাকেও দেখাবে এমন সুন্দর। হয়তো তাঁর চেয়েও বেশি সুন্দর। না হয় তাঁর চেয়ে বেশি অসুন্দর। হঠাৎই বাস্তবতার বাতাসে তানিশাকে উড়িয়ে নিয়ে গিয়ে বাস্তবতা কি সেটার সামনে তুলে ধরে। তানিশা আবার কল্পনার জগতে গিয়ে ভাবতে থাকে আমি কি পাগল হয়ে গিয়েছিলাম কি সব ভাবছিলাম।



তানিশা কতক্ষণ মোমবাতির চারপাশ টায় ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখছিল হঠাৎই একটা বাক্সের দিকে নজর টানে। তানিশা বক্সটা হাতে তুলে নিয়ে দেখল বক্সের মধ্যে একটা চিরকুট।


চিরকুটটায় লেখা ছিল।


কি জান কেমন সারপ্রাইজ দিলাম? এখন সামনের দিকে আগাতে থাকো। সামনে মানে দেখ একটা ঘর রয়েছে। আগাতে থাকো ঘরটার দিকে।


তানিশা চিরকুটটা ফেলে দিয়ে আগাতে থাকে সামনের দিকে। কিছুটা ভয় কাজ করছে তানিশার ভিতরে আগাতে ইচ্ছে করছে না মাঝ পথে কিন্তুক কিছুটা সাহস কোথায় থেকে যেন পেয়ে গেল তানিশা। আগাতে থাকে সামনের দিকটায়।



তানিশা ঘরটার সামনে গিয়ে আবারও হতভম্ব। ঘরটা কেমন জানি অদ্ভুত। মনে হচ্ছে ঘরটা রুপার প্রলেপ দিয়ে সাজানো। সমস্ত ঘরটা যেন রুপার প্রলেপ দিয়ে বিস্তৃত। ঘরটা আলোক সজ্জায় আলোক বাতি দিয়ে সাজানো। ঘরটায় চারপাশ যেন বিচলিত সুন্দর ফুটে আসতেছে। ঘরটার গেইটে একটা চিরকুট লাগানো ।


চিরকুটটায় লেখা ছিল।


আমি জানতাম আমার কলিজা এখানে আসবে। চিরকুট টা গেইটের দেয়াল থেকে তুলে নাও। এর নিচে একটা চাবি দেখতে পাবে।


তানিশা চিরকুটটা দেয়াল থেকে তুলে নিয়ে দেখল একটা চাবি। কিন্তুক চাবিটাও ক্যান জানি রুপার প্রলেপ দেওয়া। চাবির সাথে আবার চিরকুট তাতে আবার লেখা চাবিটা নিয়ে গেইটের তালাটা খুলে ভিতরে প্রবেশ করো।
তারপর তানিশা আস্তেধীরে করে করে তালা টা খুলে নিল। কিন্তুক অদ্ভুতের বিষয় এটাই যে গেইটের তালা টাও রুপার প্রলেপ দেওয়া।


গেইট খুলে তানিশা আস্তেধীরে পায়ে এগিয়ে চলছে ভিতরে। কিছুদূর যেতেই তানিশা লক্ষ্য করল দরজায় একটা চিরকুট লেখা। এই চিরকুটটায় লেখা।


দেখ ডান দিকে একটা টিউবওয়েল আছে। ওখানে যাও।


ওখানে গিয়ে তানিশা দেখল টিউবওয়েল এর হাতার সাথে ছোট করে আবার চিরকুট।


তাতে লেখা। আগে ওযু করবে তারপর রুমের মধ্যে যাবে।


তানিশা তাঁরপর ওযু করে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করল। ভিতরে গিয়েই সামনে তাকাতেই আবার দেখতে পেল একটা বড় চিরকুট তাতে লেখা, দেখ ডান দিকটায় একটা বোরকা রয়েছে।
তানিশা এবার বোরকার কাছে গিয়ে আবার চিরকুট পেল, তুমি আজকে এশার নামাজ পড়ো নাই যাও গিয়ে এশার নামাজ আদায় করে নাও। আর জায়নামাজ বিছিয়ে রাখা আছে পশ্চিমের দিকটায়। তানিশা তারপর বোরকা পরে জায়নামাজ গিয়ে এশার ১১ রাকাআত নামাজ আদায় করে নেয়।
তানিশা নামাজ শেষ করে জায়নামাজ তুলতে গিয়ে দেখল জায়নামাজের নিচে একটা চিরকুট। তাতে আবার লেখা, এবার বারান্দার দিকে একটু এগিয়ে গিয়ে দেখ একটা বক্স আছে ওইটা খুলো।
তানিশা তাঁরপর বাক্সটা খুলে দেখল সেটায় একটা বার্থডে কেক। তাঁরউপরে সুন্দর করে লেখা হ্যাপি বার্থডে টুইন বেবির আম্মু।


কেকের পাশে আবার ছোট কাগজে কিছু একটা লেখা। তাতে আবার লেখা, এবার দেখ কেকে পাশেই ছুড়ি রয়েছে। ওইটা হাতে নিয়ে কেকটা কেটে নাও।


তানিশা এবার ছুড়িটা হাতে তুলে নিয়ে কিছুটা ভয় করছে। কারণ ছুড়ি খুব ধারালো আবার ছুড়িটা সম্পুর্ন রুপার।
কিছুটা ভয় নিয়ে কেকটা কেটে ফেলে তানিশা। আর সাথে সাথেই ঘরে কোণের দিকটায় থেকে একটা কথা ভেসে আসে। হ্যাপি বার্থডে টুইন বেবির আম্মু।


তানিশা কেকটা কেটে হালকা করে হাতে নিয়ে আগাতে থাকে ঘরে কোণের দিকটায়।
কিন্তুক সেখানে কেউ ছিল না। তানিশা তখন ভাবছেন তাইলে কথাটা কোথায় থেকে আসল? পরে খেয়াল করল পাশে একটা সাউন্ড বক্স থেকে কথাটা ভেসে আসছিল। তানিশা তখন সাউন্ড বক্সের দিকে আগাতে থাকে। আর সেখানে গিয়ে দেখে সাউন্ড বক্সের সাথে আবার একটা চিরকুট। এইটায় আবার লেখা,
এবার বোরকাটা খুলে নাইটি পড়ে নাও। আর শোন বাথরুম গিয়ে চেন্স করবে না ছাড়া কিন্তুক আমি সব কিছু দেখে নিব। আর দেখলেই বা কি আমরা তো আপনজন। তাই তুমি রুমে নাইটি পড়ে নাও। বাথরুমে যেতে হবে না। আর দেখ বিছানার উপরে নাইটি রাখা আছে।


তানিশা চিরকুটটা ফেলে রেখে হাঁটা দেয় বিছানার দিকে। তানিশা বিছানার পাশে গিয়ে আবার অবাক-খুশি কারণ নাইট ড্রেসটা ছিল ওর প্রিয় রঙের। তানিশার প্রিয় রঙ কালো। কালো রঙের নাইট ড্রেস ভাবতে পারছেন তো একবার কেমন না-ইট ড্রেস টা? আরও অবাক হয় কারণ পালঙ্ক টা ছিল রুপার। খুব বেশি সুন্দর পালঙ্ক টা। পালঙ্কে উপরে কালো চাদর বিছানো। কালো বালিশের কাভার। মোট কথায় বিছানাটা কালো রঙে বিস্তৃত ।


তানিশা নাইট ড্রেসটা হাতে তুলে নিয়ে ভাবতে লাগল কি করবে এখন? ঘরে চেন্স করে নিব নাকি বাথরুমে যাব। কিছুটা সময় সিধান্ত নিয়ে আগাতে থাকে বাথরুমের দিকে।


তানিশার কি যেন হয়েছে কিসের জন্যই বা একটা এসএমএস এর কবলে পড়ে এখানে আসতে হবে আর এসব করতে হবে। তবে তানিশা আজকে খুব বেশি খুশি। কারণ সবচেয়ে বড় সাইপ্রাইজ হয়েছে সে আজকে। সে তাঁর ভালোবাসার কেউ না হলেও, ধর্ষক হলেও ক্যান জানি তানিশার আজকে খুব বেশি ভালো লাগা কাজ করছে ওর উপর। অত্যন্ত মৃদু হাসি, চুড়ির আওয়াজ, পায়ে হাঁটার স্টাইল বিরাজ করছে তানিশার মাঝে।


তানিশা বাথরুমে ঢুকে গেল সহিষ্ণুতা ভাবে। তাঁর কেন জানি খুব বেশি ভালোলাগা বিরাজ করছে।
সেখানে গিয়ে আবার আরেকটা চিরকুট পেয়ে যায়। সেখানে লেখা, আমি জানতাম তুমি এখানে আসবে কারণ তোমার মাঝে ভয় ছিল যদি আমি তোমার ড্রেস চ্রেন্স করা দেখে ফেলা দেয়। যায়হোক এখন তুমি বিছানায় উঠে যাবে ঘুমাতে। আর ঘুমাতে যাওয়ার আগে বালিশের নিচে তোমার জন্য একটা উপহার আছে ওইটা দেখে নিবে।



তানিশা চেন্স করে বিছানায় উঠে গেল। আর বালিশের নিচে হাত দিয়ে উপহারটা বের করে নিল। উপহারটা চোখের সামনে ধরতেই তানিশার বাকরুদ্ধ হয়ে গেল। কারণ উপহারটা ছিল হিরের নেকলেস। নেকলেসের পাশে আবার একটা চিরকুট তাতে লেখা, কি অবাক হয়েছো? অবাক হবার কিছু নেই। ঘুমিয়ে যাও নেকলেস টা গলায় জড়িয়ে। তানিশা তখন চিরকুট টার কথামতো নেকলেসটা গলায় জড়িয়ে নেয় ও ঘুমিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে থাকে। চাদর জড়িয়ে নেয় গাঁয়ে ঘুমানোর জন্য।
তানিশা ভাবছে কিসব ঘটছে আমার সাথে। এমনটা হবার তো কথা না আমার সাথে। আমার সাথে ক্যান এমনটা হচ্ছে। আর আজকে যে এতোটা কিছু আয়োজন করেছে তাঁকে অসংখ্য ভাবে ধন্যবাদ। কি সব আবোল তাবোল ভাবছে তানিশা। নিজের মাথায় নিজেই হাত দিয়ে সামান্য আঘাত করে বসে। হঠাৎই কি সব ঘটছে ওর সাথে এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেল তানিশা।



ফরজের আযানের আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায় তানিশার। তানিশা চারদিকে তাকিয়ে দেখে সে একটা বালিকনার মাঝে উলঙ্গ হয়ে অবস্থায় পড়ে আছে। আর তাঁর কাপড় পড়ে আছে পাশে। আর তাঁরপাশে পড়ে আছে একটা বিশেষ প্রটেকশনের প্যাকেট। কিন্তুক তাঁর গলায় রাতের সেই নেকলেসটা এখনও জড়িয়ে আছে। কিন্তুক সেই ঘরটা আর নেই। সম্পুর্ন উধাও। আর তানিশার এটা বুঝতে বাকি রইল না যে তাঁর সাথে মাত্রই সঙ্গম শেষ হয়েছে। তাঁর মানে সেক্স কার্য শেষ হবার কিছুক্ষণ পড়েই সে জাগ্রত হয়ে ওঠে..............

 

 


তাঁর মানে সেক্স কার্য শেষ হবার কিছুক্ষণ পড়েই সে জাগ্রত হয়ে ওঠে। তানিশা তখন তাড়াতাড়ি করে জামাকাপড় গুলো পড়ে নেয়। আর তানিশা তখন কিছু দূরত্বে একটা বাড়ি দেখিতে পায়। তানিশা ভাবছে একটু আগে না কোন বাড়ি ঘর দেখতে পেলাম না কিন্তুক এখন বাড়িটা কোথায় থেকে এলো। তাহলে কি আমার চোখে প্রবলেম হয়েছে কোনপ্রকার?আমি কি অন্ধ হতে চললাম? আমার কি তাহলে সবসময় এখন থেকে অন্ধ হয়ে কাটাতে হবে? আমার নামের পাশে কি একটা পদবি যোগ হচ্ছে না তো আবার? পদবিটা হবে এমন ওই দেখ তানিশা কানা যাচ্ছে। ওই দেখ তামিশা কানার টুইন বেবি। এসব কথা ঘুরপাক খাচ্ছে তানিশার মনের মাঝে।


তানিশা এবার উঠে দাঁড়াল। হাঁটতে থাকে আমার বাড়িটার দিকে। বাড়িটার সামনে গিয়ে তানিশা দেখল রাতের দেখা বাড়িটার মাঝে এই বাড়ির কোন প্রকার অমিল নেই। যেখানে সে দাঁড়িয়ে ওযু করেছিল সেই জায়গায় ও সেই টিউবওয়েল টা সেখানেই উপস্থিত। তানিশা যেন কোন কিছু আবিষ্কার করতে পারছেন না। বাড়ির সকল কিছু ঠিক থাকলেও বাড়ির রুপার প্রলেপ টা আর নেই। আর নেই সে আলোক সজ্জায় সজ্জিত করা বাড়ির রুপ।


তানিশা আবার ভাবছে আমার সারাজীবনের ইচ্ছে ছিল আমার একটা রুপার প্রলেপ দেওয়া বাড়ি হবে। যে বাড়িতে সকল কিছু ই রুপার প্রলেপ দেওয়া থাকবে। আর এমনটাও হতে পারে সেটা হচ্ছে কেউ খুব বেশি কষ্ট থেকে আবেগ খুশি হয়ে চোখটা পানিতে ঝাপসা হয়ে উঠলেই তাঁর মনের মাঝে সবসময় থাকা স্বপ্ন চোখে ধরা পড়ে। আসলে মানুষটা তখন তাঁর স্বপ্নটা আসলেই বাস্তব মনে করে।
তানিশা আবার ভাবছে আমিও হয়তো আমার মাঝে থাকা রুপার প্রলেপ দেওয়া বাড়ির স্বপ্ন টা বাস্তবে না দেখেই বাস্তব ভেবে নিয়েছিলাম। কিন্তুক এখানে কথা হচ্ছে এটাই যে আমি রাতে খাটে ঘুমালাম কিন্তুক বালি কণার উপরে কেমন করে চলে আসলাম। রহস্য খুঁজে পাচ্ছে না তানিশা।



তানিশা সূর্য উদয় হবার আগেই বাড়িতে গমন করে। ওর ভাবি ভাইয়া ঘুম থেকে ওঠার আগেই তানিশা বাড়িতে ঢুকে যায়। সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে বাহিরে চলে যায় আবার সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে বাসায় প্রবেশ করে কিন্তুক সবার চোখ ফাঁকি দিতে পারলেও তানিশা বাড়ি ফেরার সময় রাইসার চোখ ফাঁকি দিতে পারেনি। রাইসা পানি খেতে বাহিরে আসাতে চোখ বন্দী হয়ে যায় যে তাঁর আন্টি বাহির থেকে ফিরছে। রাইসার ছোট্ট মনে প্রশ্ন জাগে আন্টি কোথায় গিয়েছিল? জানতে হবে আন্টির থেকে বিষয়টা।

তানিশা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। রাইসা গিয়ে ডাকাডাকি করছে তানিশাকে। সবাই খাবার টেবিলে ওয়েট করছে তানিশার জন্য। সবাই টেবিলে বসে তানিশার কোন প্রকার সাড়াশব্দ না পেয়ে রাইসাকে পাঠিয়ে দেয় ডেকে আনতে।


- এই আন্টি, আন্টি।


- কি রে মামুনি ( ঘুমের ঘোরে)


- সবাই তোমার জন্য ওয়েট করছে খাবার টেবিলে।


- তুমি যাও আমি আসছি মামুনি।


- না তোমার আমার সাথে করেই আম্মু নিয়ে যেতে বলছে।


- আমার তো লেট হবে মামুনি।


- কেন লেট হবে?


- আমাকে ফ্রেশ হতে হবে মামুনি।


- ওকে যাও গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও।


- ওকে সোনা ময়না।


তানিশা কতক্ষণ বাদে বাথরুম থেকে গোসল সেরে বেড়িয়ে আসে।


- আচ্ছা মামুনি একটা কথা জিজ্ঞেস করতে পারি?


- অনুমতি নিচ্ছো ক্যান মামুনি? বল বলবে?


- তুমি রাতে কোথায় বেড়িয়ে ছিলে?


- মানে কি সব বল বলছো মামুনি?


- না তুমি যখন বাসায় ফিরছিলে তখন আমি জাগনা ছিলাম।


- তুমি তখন কোথায় ছিলে মামুনি? ( আতংকের ছাপ)


- আমি পানি খেতে উঠেছিলাম।


- আমি তখন একটু বাহিরে গেছিলাম মামুনি হাঁটাহাঁটি করতে।


- মিথ্যা ক্যান বল মামুনি? আমি জানি তুমি কারো সাথে দেখা করতে গেছিলে?


- না মামুনি আমি কোথায় যায়নি। ভালো লাগছিল না তাই হেঁটে আসলাম। ( আহত চোরের মতো ধরা

খাওয়া মানুষের গলা)


- আমি জানি তুমি আঙ্কেলের সাথে দেখা করতে গেছিলে।


- না মামুনি তেমন কিছু না।


- আচ্ছা আন্টি আঙ্কেল বাড়িতে আসলে তো কেউ কিছু বলে না বা মনে করে না তাইলে তুমি বাহিরে ক্যান গিয়েছিলে দেখা করতে?


- কি বল মামুনি তুমি কি তোমার আঙ্কেলকে দেখছো? ( তানিশা)


- তানিশা, রাইসা কোথায় তোমরা তোমার ভাইয়া বসে আছে তো। ( তানিশার ভাবি)


- রাইসা দৌড়ে ওর আম্মুর কাছে চলে যায়। আর বলতে থাকে।


- আচ্ছা আম্মু আন্টি সবসময় ক্যান মনমরা হয়ে থাকে?


- সেটা তোমার আন্টিকে গিয়ে জিজ্ঞাসা করে নাও?


- আন্টিকে জিজ্ঞাসা করলে আন্টি তো কিছু বলে না।


- ভাবি বাদ দাও তো এসব। চল যায় ভাইয়া ওয়েট করছে।



- এতো টাইম লেট ক্যান হলো? ( তানিশার ভাইয়া)


- ভাইয়া ঘুম ভাঙতে ভাঙতে লেট হয়ে গেছিল আর ফ্রেশ হতেই আরো লেট।


- নামাজ পড়েছিস?


- না ভাইয়া।


- কেন?


- জাগনা পায়নি সকালে ভাইয়া।


- রাতে কি এমন করেছিলে যার জন্য সকালে ঘুম ভাঙ্গে নি?


- আব্বু রাতে আন্টি আঙ্কেলের সাথে দেখা করতে গেছিল তার জন্য ঘুমাতেও লেট করেছে আবার উঠতেও লেট করেছে। ( রাইসা)


- তানিশা রাইসা কি কথাটা ঠিক বলছে?


- না ভাইয়া পিচ্চিটা কি দিয়ে কি বলছে। ( ভয়ে জজর্ জারিত)


- তানিশা বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে কিন্তুক। বিষয়টা মোটেও ভালো না। কথাটা বলে ভাত রেখে উঠে চলে যায় তানিশার ভাইয়া।


রাইসা আর তানিশা পাশাপাশি বসে রিক্সায় যাচ্ছে। তানিশা কলেজে যাচ্ছে ও রাইসা স্কুলে যাচ্ছে।


- রাইসা তুমি ক্যান বলে দিলে কথাটা?


- না বলার কি আছে আন্টি।


- ভাইয়া যদি কোন ভাবে আমাকে খারাপ ভাবে?


- খারাপ ক্যান ভাব্বে?


- আর আন্টি আমার খেলার সাথী কবে আসবে?


- খেলার সাথী মানে?


- মানে তোমার টুইন বেবি।


- টুইন বেবি মানে কি সব বলছো মামুনি।


- আসলে আন্টি আম্মু আব্বু আলোচনা করছিলো তোমার নাকি টুইন বেবি গর্ভে। সেই আলোচনায় সাপেক্ষে আমি কিছু কথা জেনে যাই। চুরি করে শুনতে পাই তোমার বিষয়ে।


- কি বলছো এসব? ভাইয়া ভাবি জানলো কি করে ?


- তোমার ওই সব রিপোর্ট নাকি দেখে নিয়েছে আম্মু আব্বু।


- দেখলো কি করে আমি তো রিপোর্ট পুড়িয়ে ফেলেছিলাম সেদিন বাসায় এসেই। তাইলে ভাইয়া ভাবি রিপোর্ট কি করে পেল?


- ঠিক করে মনে করে দেখ রিপোর্ট টা কি করেছিলে?


- আমি নিজে পুড়িয়ে ফেলেছিলাম আবার সেটার ছবিও তুলে রেখেছিলাম।


তখন তানিশা ফোন বের করে রিপোর্ট এর পুড়িয়ে ফেলার ছবি দেখাল রাইসাকে।


- আন্টি আমি আজকেও দেখলাম তোমার ওই রিপোর্ট ঘাটাঘাটি করছে আব্বু আম্মু।


- তানিশার মাথায় কোন কিছু ই যাচ্ছে না।



রাতে তানিশার ফোনে আবার একটা টেক্সট আসল। তাতে লেখা, আজকে আমি তোমার সাথে কথা বলব ছাদে। দুজন পাশাপাশি বসে গল্প করব। আড্ডা দিব। আসবে কিন্তুক রাতে ছাদে।

রাতে তানিশার ফোনে আবার একটা টেক্সট আসল। তাতে লেখা, আজকে আমি তোমার সাথে কথা বলব ছাদে। দুজন পাশাপাশি বসে গল্প করব। আড্ডা দিব। আসবে কিন্তুক রাতে ছাদে।
তানিশা ক্যান জানি খুব টান অনুভব জাগ্রত হয়েছে মানুষটার উপর। এতোটা সারপ্রাইজ পাওয়ার পরে তানিশার একটা টান জেগেছে তাঁর উপর।


গভীর রাতে আবার একটা টেক্সট আসে তানিশার কাছে । তানিশা টেক্সটের আওয়াজে নিদ্রা ভঙ্গ হয়। লঘুচিত্তে চোখে তাকিয়ে আছে ফোনের ডিসপ্লেতে। টেক্সট টা ছিল এইরকম।
বেবি আমি ছাদে নিদ্রাভঙ্গকরণ করিয়া টলমল চোখে তাকিয়ে পৃথিবীর সৌন্দর্য উপভোগ করছি। রাতের আকাশটা খুব বেশি সুন্দর। বসে আছি তোমারই অপেক্ষায়। দুজন পাশাপাশি বসে চাঁদ দেখিব আর তোমার কোলে মাথা রেখে তাঁরা গুনব। দোলনায় দুলব। হাতে হাত রেখে হাঁটব। একটু আদর করব আমার টুইন বেবি গুলোকে। আসো না প্লিজ বেবি আমার।
তানিশা টেক্সট টা পড়ে ভেবে নিলো সে আজকে ছাদে যাবে না। কিন্তুক ওর মন বলছে যাহ মানুষটার সাথে গল্প করে আয়। ও যেহেতু চাচ্ছে দেখা করতে তুইও যাহ গিয়ে দেখা করে আয়। দুজন পাশাপাশি বসে চাঁদ দেখে আয় আর ওর মাথাটা কোলে রেখে তাঁরা গুনে আয় । দোলনায় দুলে আয় দুজন । হাতে হাত রেখে হেঁটে আয় দুজন।


তানিশা একবার ভাবছে যাব আবার ভাবছে যাব না।


একটা কথা আছে মনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলে না।ঠিক তেমন তানিশা ও মনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে না পেরে পাড়ি দিতে থাকে ওর শয়নগৃহ। আস্তেধীরে করে শয়নগৃহ পাড়ি দিচ্ছে তানিশা। দ্বার উন্মোচিত করে বাহির মুখী অগ্রসরমান তানিশা। পা দুটো খুব বেশি ছোট ছোট করে চোরের ন্যায় আগাচ্ছে তানিশা। তানিশার ইচ্ছে সে যে করেই হোক মুখোশধারী মানুষ টাকে আমার সামান্য উপবিষ্ট ন্যায়ের মূল্যও দিতে হবে। যৎকিঞ্চিত ভাবে অগ্রসর হতে থাকল তানিশা। যৎসামান্য ভয় কাজ করছে তানিশার মাঝে। তবে কিছু করার নেই মুখোশধারীর আসল রুপ সামনে তুলে ধরতে হলে তো ভয়কে জয় করতেই হবে।


তানিশা ছাদে গিয়ে অবাক চোখে তাকিয়ে রয়েছে। একটা মানুষ ছাদে একটা কোণে দাঁড়িয়ে বাহিরের পরিবেশ টা দেখছে। তানিশা ভাবছে মানুষটা একবার পিছন ফিরে তাকালে তো আমি তাঁকে দর্শন করিতে পারিতাম।


মানুষটা তো পিছন ফিরেই তাকাচ্ছে না। তানিশা আবার ভাবছে এটা মানুষ হবে আমি এতোটা শিওর হলাম কি করে? সে তো মানুষ নাও হতে পারে? সে যদি মানুষ না হয় তাইলে সে আসলে কি ?
অজানা ভয় বিরাজমান তানিশার বাস্তববাদ মনোভাবে। কোন কিছু স্থির করতে পারছে না আসলে এমনটা হবার কারণ কিছুটা অন্ধকারে অস্পষ্টতা আছে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটার মাঝে। তারউপরে আবার উল্টোদিকে তাকিয়ে রয়েছে আবার গাঁয়ে চাদর জড়ানো।


তানিশা পা লেগে আসতেছে এতটাক্ষন দাঁড়িয়ে থাকার কারণে। পিছন ফিরে একবারও তাকাচ্ছে না ক্যান? আমি কি গিয়ে তাঁর কাঁধের উপর হাত রাখব?যদি গিয়ে হাত রাখি তৎক্ষনাৎ যদি আমাকে ছাদের প্রাচীর লঙ্ঘন করে ৫ তালা থেকে ফেলে দেয়, তাহলে তো আমার নিশ্চিত মৃত্যু। না থাক এখান থেকেই কথা বলা যেতে পারে। তানিশা কথা বলতে যাবে তাঁর আগেই একটা কথা ভেসে আসল।
- কি জান পাখি বিরক্তবোধ জাগ্রত হয়েছে তোমার মাঝে বুঝি ?


তানিশা এমন একটা কথা শোনার প্রস্তুত ছিল না।


- ক্যান বিরক্তবোধ জাগ্রত হবে ?


- না এতোক্ষণ দাঁড়িয়ে কি যেন ভাবছিলে আমার সম্পর্কে, তাই ভাবলাম হয়তো বিরক্ত হয়েছো।
- না তেমন কিছু না, কিন্তুক আপনি জানলেন কি করে যে আমি আপনার কথায় ভাবছিলাম?
- সাধারণ লজিক, আমি এখানে তোমাকে ডেকেছি, আমি আবার এখানে দাঁড়িয়ে আছি কিন্তুক কোন প্রকার কথা বলছি না। তাই এখানে আমাকে না ভাবার তো কোন কারণ নেই।


- সেটা অবশ্যই ঠিকই বলছেন। আমার একটা প্রশ্ন ছিল?


- একটা ক্যান হাজার টা কর প্রবলেম নেই তো। আর তুমি দূরত্ব বজায় রেখে ক্যান দাঁড়িয়ে আছো? কাছে ক্যান আসছো না। কাছে আসো প্লিজ কলিজা ?


- না আমি আপনার কাছে যাব না। কারণ আমার ভয় করে আপনাকে।


- ভয় করার তো কিছুই দেখিতেছি না আমি?


- আপনি না দেখিতে পারিলেও আমি ঠিকই ভয় পাবার কারণ দেখছি। বিষয়টা আমার কাছে কেমন

 জানি লাগছে।


- কেমন লাগছে? আর কি কারণ?


- কারণ যেটাই হোক আপনি বলুন আগে আপনি কে? ক্যান আমাকে এখানে ডেকে নিয়েছেন? ক্যান আমার সাথে এমনটা করছেন আপনি?


- আমি তোমার হাজবেন্ড। আর এখানে ডেকে নিয়েছি আমার জানের সাথে দেখা করব বলে।
- কে আপনার জান?


- তুমি।


- কি করে হলাম?


- এসব এখন বাদ দাও প্লিজ।


- ক্যান বাদ দিব?


- আমি বলছি তাই? ( হুংকার দেবার সুরে)


- ওকে। ( আতংক সৃষ্টি হলো তানিশার মাঝে কিছুটা)


- আচ্ছা তানিশা তোমার মনে আছে আমাদের প্রথম কবে দেখা হয়েছে?


- না তো।


আমাদের প্রথম দেখা হয় রাস্তায়। আমি গাড়ি নিয়ে আর তুমি হেঁটে। মনে পড়ছে না তোমার ?

 রাস্তার মাঝ দিয়ে হাঁটছিলে।


সেদিনের সেই প্রথম দেখার কাহিনি।


তানিশা মাঝ রাস্তা দিয়ে হাঁটছে কানে হেট ফোন লাগিয়ে। চারপাশে কি হচ্ছে, কোথায় দিয়ে হাঁটছে এসবে খেয়াল নেই তানিশার। তানিশা রাস্তার মাঝ দিয়ে হাঁটায় গাড়ি চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে আসছে। তানিশার পিছন থেকে হর্ণ বাজছে কিন্তুক তানিশা বুঝতেই পারছে না।


হঠাৎ একজন গাড়ি ব্রেক করে তানিশার সামনে চলে আসল।

- এই যে আপনি কি কালা বা কানা? কানের শুনতে পান না ও চোখে দেখতে পান না? ।মাঝ রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন কেন? চারদিকে তাকিয়ে দেখেন তো আপনার জন্যে কত জ্যাম বেঁধে গেছে?
তানিশা তখন ছেলেটার কলার ধরে বলল, ওই আপনার কি দেখে মনে হলো যে আমি কানা বা কালা ?
- ছেলেটা বলল এতো হর্ণ দিচ্ছি কানে যায়? মাঝ রাস্তা বরাবর হাঁটছেন। আর দেখেন তো আপনার জন্যে কতটা পরিমাণে জ্যাম বেঁধে গেছে? হাবলু মিয়া।


তানিশা চারদিকে তাকিয়ে দেখল আসলেই প্রচুর জ্যাম বেঁধে গেছে। সাধারণত এখানে কোন প্রকার জ্যাম বাঁধে না কিন্তুক আজকে জ্যাম বেঁধে গেছে। তানিশার কিছুটা লজ্জা লজ্জিত মুখ হল কিন্তুক ছেলেটাকে বুঝতে দিলো না। ছেলেটার শার্টের কলার ছেড়ে দিলো তানিশা। সব কিছু স্বাভাবিক মনে করে ছেলেটাকে তানিশা বলল।


- জ্যাম বেঁধে গেছে তো আমি কি করব? আমি কি রাস্তা দিয়ে যেতে পারব না? সবারই অধিকার আছে রাস্তা দিয়ে চলাচল করার তাই আমিও চলাচল করব তাতে জ্যাম বেঁধে গেলে এখানে আমার তো কিছু করার নেই।


ছেলেটা বলল, তাই বলে মাঝ রাস্তা দিয়ে হাঁটবেন? সবারই রাস্তা দিয়ে চলাচল করার অনুমতি আছে কিন্তুক মাঝ রাস্তা দিয়ে এভাবে ডান্ডা নাচ দেওয়ার অনুমতি নেই। (দুষ্টু হাসি দিয়ে)


তানিশা রাগে গরগর করে বলল, কিহহহ আমি ডান্ডা নাচ দিচ্ছিলাম?


ছেলেটা বলল, হুমম রাস্তার মানুষজন কড়া বিনেদন পাচ্ছিল আপনার এই ডান্ডা নাচ দেখে।( মুচকি হাসি রেখে স্পষ্ট)


- আপনি কিন্তুক যাহ ইচ্ছা তাই বলছেন আমি কিন্তুক পুলিশে নালিশ করব আপনার নামে।
- নালিশ তো এখন পুলিশে আমি করব কারণ আপনি মাঝ রাস্তা দিয়ে ডান্ডা নাচ দিচ্ছিলেন যার ফলে রাস্তায় জ্যাম বেঁধে গেছে।


তানিশা কিছুটা ভয় পেয়ে গেল কারণ ভুল তো তাঁর ই কারণ ওর জন্যই এতোটা জ্যাম বেঁধে গেল। তানিশা নিজেই নিজের মাথায় হাতের আঙ্গুল দিয়ে টুকা দিলো। তানিশা ভাবল এখান থেকে মানে মানে কেটে পড়া হাজার গুন ভালো হবে। পড়ে দেখে নেব যাবে রাক্ষসকে।


- আচ্ছা ভাইয়া স্যরি আসলে কি জানেন আমি আসলে বুঝতে পারিনি যে আমি মাঝ রাস্তা দিয়ে হাঁটছি!!! ( ন্যাকামি করে)


- স্যরি বললে হবে না পুলিশকে আমি নালিশ করবই। আচ্ছা সুন্দর করে তাকান তো আমার দিকে আপনার একটা ছবি উঠাব ( মিষ্টি হাসি দিয়ে)


- না না । প্লিজ আমার ছবি ওঠাবেন না ।


তানিশা কথাটা বলতে বলতে ততক্ষণে ছেলেটার ছবি উঠানো শেষ হয়ে গিয়েছে। ছেলেটা তানিশার দিকে তাঁর মোবাইল টা তাক করে ধরে দেখালো যে তাঁর ছবি উঠানো শেষ হয়ে গিয়েছে। ছেলেটা যখন ছবিটি উঠায় তখন তানিশা ঝগড়া করার মুডে থাকে যার জন্যে ছবিটি খুব বেশি সুন্দর হয়েছে।
তানিশা ছেলেটার হাত থেকে ফোন টা কেড়ে নিতে চাই কিন্তুক ব্যার্থ হয়। কিন্তুক দুজনের হাতে হাতে ছোঁয়া পাই। ছেলেটা তানিশার হাতের ছোয়া পেয়ে কিছুটা কেঁপে উঠল অবশ্য তানিশা যথেষ্ট মাত্রায় স্বাভাবিক।


- আপনি প্লিজ আমার ছবিটি ডিলেট করেন? ( আহত সুরে)


- আপনি যদি ছবি ডিলেট করতে বলেন তাহলে পুলিশে নালিশ করব আর যদি ছবিটা আমার কাছে থাকে, আপনি যদি ডিলেট করতে না বলেন তাহলে আমি পুলিশে নালিশ করব না।
- আপনি আমার ছবি দিয়ে কি করবেন তাঁর চেয়ে বরং ডিলেট করে দেন।( করুণার সুরে)
- কি করব সেটা জানিনা তবে আমি ডিলেট করতে পারব না।


- আপনি কিন্তুক বেশি বেশি করে ফেলছেন এমনিতেই মন মেজাজ বড্ড খারাপ। ( একটু রাগী চেহারার)
- ক্যান আপনার কি হয়েছে?


- সেটা ক্যান আমি আপনাকে বলব। হুমম হাবলা ছেলে কোথাকার ।


- আমি হাবলা?


- ইয়েজ।


- আমি হাবলা না তুই হাবলা।


দুজনের মাঝে প্রচুর পরিমানে ঝগড়া হতে থাকল।


একপর্যায়ে থানার লোকাল পুলিশ চলে আসল ।


একজন অফিসার বলতে লাগল, কি হয়েছে এখানে আপনারা ঝগড়া করছেন ক্যান?
তানিশা যেন ভয়ে কাঁপছে হয়তো এখন এই ছেলেটা সব বলে দিবে আর আমাকে হয়তো পুলিশ জেলে নিয়ে যাবে।


আমাদের গোষ্ঠীর কেউ কোন দিন জেলে যায়নি আমিই হয়তো প্রথম। চোখে পানি চলে আসে তানিশার।
- আসলে স্যার আমরা স্বামী স্ত্রী।


- কিহহহ আমরা স্বামী স্ত্রী। ( তানিশা)


ছেলেটা বলল, হুমম স্যারকে বলো না যে আমরা স্বামী স্ত্রী। ( চোখ দিয়ে ইশারা করে)


- হুম স্যার আমরা স্বামী স্ত্রী । ( বাঁচার তাগিদে মিথ্যা)


পুলিশ অফিসার বলল স্বামী স্ত্রী ভালো কথা কিন্তুক রাস্তার মাঝ খানে দাঁড়িয়ে ঝগড়া করছেন ক্যান? দেখেন তো আপনাদের জন্য কতটা জ্যাম বেঁধে গিয়েছে। আপনাদের জন্য অনেকেই সঠিক সময় সঠিক স্থানে যেতে পারছেনা। এটার ক্ষতিপূরণ কে দিবে। আপনাদের কে থানায় নিয়ে যাব। জানেন এটা কত বড় একটা অপরাধ করছেন আপনারা।


ছেলেটা ভাবছেন একটা বুদ্ধি বের করতে হবে এই ঘুসখোর পুলিশদের থেকে।


- স্যার একবার আমার কথা শুনুন তাঁরপর যদি আপনারা আমাদের শাস্তি দেন তাহলে মাথা পেতে নিবো।
পুলিশ অফিসার বলল, বলেন দেখি আপনার কথাটা শুনি।


- আসলে স্যার আমরা গাড়ি করে ওর বাবার বাড়ি মানে শ্বশুর বাড়ি যাচ্ছিলাম হঠাৎই ও আমাকে বলে গাড়ি দাঁড় করাতে আর আমি গাড়ি দাঁড় করায় আর ও গাড়ি থেকে নেমে দেখলাম একটা বাচ্চা রাস্তা পাড় হতে পাড়ছিল না আর ও গিয়ে বাচ্চাটাকে রাস্তা পাড় করিয়েদেয়।
পুলিশ অফিসার বলে, এটা তো খুব ভালো কথা কিন্তুক ঝগড়া ক্যান করছিলেন?

- প্রবলেম টা তো এখানেই স্যার।


- কিভাবে?


- আসলে স্যার বাচ্চাটাকে রাস্তা পাড় করিয়ে দেওয়ার পরে যখন রাস্তার ওপাশ থেকে এপাশে আসতেছিল তখন একটা ট্রাক চাপা দিচ্ছিল প্রায় আমার লক্ষী বউ টাকে। হঠাৎই আমি এসে হাত ধরে টান দিয়ে বাঁচিয়ে নেই। আর স্যার সেটা নিয়েই ঝগড়া হচ্ছিল। ক্যান গিয়েছিল বাচ্চা বাঁচাতে? যদি নিজের কিছু হতো তাইলে কি হতো। আর তোমার গর্ভে দুই মাসের বাচ্চার কি হতো। এসব নিয়ে ঝগড়া হচ্ছিল স্যার।


- কিহহহ আমি দুই মাসের গর্ভবতী? ( রেগে গিয়ে ঠান্ডা হবার চেষ্টায়)


- হুম তোমার মনে নেই কিছুদিন আগে চেকাপ করিয়ে আসলাম ডাক্তার সাহেবের কাছে থেকে।
- হুম আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম।


তানিশা মনে মনে বলতে থাকল, না জানি আর কতটা মিথ্যা বলতে হবে এই হাবলার জন্য আল্লাহ পাক ই ভালো জানেন ।

- তাই বলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ঝগড়া করবেন?

- স্যরি স্যার আর কখনও এমনটা হবে না।

- ওকে ঠিক আছে যান গাড়ি নিয়ে তাড়াতাড়ি রাস্তা ক্লিয়ার করুন।

পুলিশ অফিসারের কথা বলা শেষ হতেই তানিশা সামনের দিকে হাঁটতে থাকে তখনই ছেলেটা হাত ধরিয়া ফেলে।

- ওই স্যরি কোথায় যাও এখনও রাগ করে থাকবে? হেঁটে কোথায় যাচ্ছো? আমাদের তো গাড়ি আছে তাই না? কথাটা বলেই একপ্রকার প্রায় টানতে টানতে তানিশাকে গাড়িতে উঠায় ছেলেটা।
গাড়ি স্টার্ট দেয় ছেলেটা । আর তানিশার দিকে তাকিয়ে দেখে তানিশা রেগে ফুলে আছে।
গাড়ি তাঁর নিজ্বব গতিতে চলছে।

- ওই আপনার আমি কোন জনমের বউ? সবার সামনে আমাকে বউ ক্যান বললেন?

- জনম জনমের বউ তুমি আমার। (মিষ্টি হাসি)

তানিশা প্রচন্ড আকারে রেগে বলল, মাইন্ড ইয়োর ল্যাংগুয়েজ।


- আচ্ছা স্যরি স্যরি আপনাকে কোথায় নামিয়ে দিতে হবে তাই বলুন?


- আমাকে এই সামনে নামিয়ে দিলেই হবে।


- তাঁর চেয়ে বরং আপনার বাসা কোন দিকে বলুন আমি গিয়ে নামিয়ে দিয়ে আসি।
- বাসার ঠিকানা জানার জন্য তো বহুত কায়দা জুড়িয়ে বসেছেন। ( বাঁকা সুরে)


- আপনি যেমনটা ভাবছেন তেমনটা না। আসলে আমি মনে হয় কোন বিষয়ে চিন্তিত যার ফলে রাস্তা দিয়ে এভাবে হাঁটছিলেন তাই চাচ্ছিলাম বাড়ি পর্যন্ত নামিয়ে দিয়ে আসি।


- ওকে ঠিক আছে।


তাঁরপর তানিশা তাঁদের বাসায় ঠিকানা দেয়। এবং ছেলেটা গিয়ে তাঁদের বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে আসে। যার গাড়ি থেকে তানিশা নেমে যাওয়ার পরে একবার এর জন্য হলেও বাই বলব না । না একবার থ্যাংকস দিলো।



এটা হলো প্রথম দিনের কাহিনি ।


কাহিনিটা এতোক্ষণ উপস্থাপন করল বাহির মুখী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটা। আর তানিশা কথা গুলো বিভোরে শুনছিল।


- কি হলো জান মনে পড়েছে কথাগুলো?


- না৷


কথাটা শেষ করতেই তানিশা নিচের দিকে চেয়ে দেখল আসলে সে যার সাথে এতোক্ষণ কথা বলছে , এতোটা গল্প শুনছে সে আসলে মানুষ না। কারণ মানুষের পা মাটিতে থাকে কিন্তুক এর পা মাটি থেকে উপরে । তানিশা ভয়ে কাঁপতে থাকে। পিছন ফিরে আবার সামনে তাকাতেই তানিশা দেখল সে এতোক্ষণ যেটার সাথে কথা বলছিল সেটা মূহুর্তের মধ্যে উধাও।

------------------------------------------------------------------------------------

পিছন ফিরে আবার সামনে তাকাতেই তানিশা দেখল সে এতোক্ষণ যেটার সাথে কথা বলছিল সেটা মূহুর্তের মধ্যে উধাও। তানিশা এদিক ওদিক তাকাতে লাগলো কোথাও খুজে পাচ্ছেনা,এদিকে রাত অনেক হয়ে গেলো তানিশা ভয়ে কাপতেছে, চোখের কোনে পানি বিন্দু বিন্দু সে অবস্থাতে পেছনে না তাকিয়ে এক পা দু পা করে পিছে যাচ্ছে। কান্না আটকাতে পারছেনা নিজের নিজের দুই হাত দিয়ে মুখচেপে কাদছে,( মেয়েরা কস্ট পেলে যেমন করে হাত চেপে কান্না করে) তানিশা পিছন যেতে যতে ছাদের ভিম গুলো মানে আরেক তলা করার জন্য যেগুলা স্থাপন করা হয় সেখানে পিঠ ঠেকে গেলো বসে পরলো তানিশা। এবার আর থামাতে পারছেনা কাননা

উচ্চস্বরে বলতে লাগলো কোথায় আপনি? আমি আপনার কথা মত ছাদে এসেছি আপনি কোথায়? একসাথে রাতের আকাশ দেখবেন? বলছেন।আর কে আপনি আমাকে কেন দেখা দিচ্ছেন না 😭😭

হটাৎ তানিশা অনুভব করতে পারলো পিছন থেকে কেউ তাকে দেখছে, তানিশার কানে ভেসে আসলো আবেগি কন্ঠে বলসে জানু তুমি কাদছো কেন? আমি আছি চলে যাইনি।তানিশা পেছন ফিরিয়ে সে লোক টি কে দেখতে পাচ্ছেনা, আবার চোখের পলক ফেলতে না ফেলতে উধাও।

এদিকে ছাদের দরজা ধপাস ধপাশ আওয়াজ করছে। তানিশা কে আবার কে যেন বলছে,,,

ভয় পেওনা আমি তোমার পাশেই আছি।এটা বলেই আর কোন শব্দ শুনতে পেলোনা তানিশা,। পুরো ছাদ খোজা খুজি করলো,

যেহেতু রহস্য বের করতেই হবে ভয় কে জয় করে বের করতে হবে।

তানিশা পুনোরায় ছাদের সেখানে যায়।

গিয়ে ডাকতে লাগলো

কোন সাড়া শব্দ নেই সেখান থেকে তানিশা দৌড়ে এসে ছাদ থেকে নেমে যাবে এই ভাবে দৌড় দিলো, ছাদে আসার দরজা টা চাপানো আস্তে করে খুলে দৌড়ে নিচে নামতে লাগলো নেমে গিয়ে ফ্লাটে ঢুকার দরজা খুলে তানিশা ভেতরে ঢুকবে,,,,

ঢুকতে গিয়ে দেখে

কিছুতে মেইন দরজাটা খুলছেনা,

তানিশা,র বুঝতে বাকি নেই

ভেতর থেকে লক করা।কেউ লক করে দিয়েছে।এবার তানিশা,র ভয় লাগতে শুরু করছে,

তানিশা আরো ভয়ে কাপতে লাগলো।ভাবছে কি হচ্ছে এসব ওর সাথে।হটাৎ জোরে ধাক্কা দিতেই দরজা আপনা আপনি খুলে যায়।ভেতরে গিয়ে দেখলো কেউ দরজা টা খুলে দেয়নি।

কে খুলে দিল তবে।

তানিশা দেখলো ভাতিজি রাইসা,র রুমে আলো জলছে, অথচ রাইসা নেই। এদিকে বাথরুমে কল থেকে পানি টপ টপ করে পড়ছে।

এবং ভেতরে লাইট জলছে,,

মনে মনে ভাবতে লাগলো রাইসা ওর রুমের টয়লেট রেখে এখানে হয়তো আসছে।

একটু বাথরুমের কাছে গিয়ে রাইসা রাইসা বলে ডাকছে।

তানিশা ভয়ে ভয়ে।

কিন্তুক কোন সাড়া শব্দ নেই,

তানিশা দরজা আস্তে করে খুলতেই দেখলো। রাইসা ভেতরে নেই।,

,

,

প্রিয় পাঠক পাঠিকা গন কিছু কথা বলে নেই।

তার পর গল্পে ফিরি,,

(আপনারা হয়তো অনেকে জানেন আমি এই গলপের আসল লেখক,তবুও কিছু কপিবাজ ভাইরা আমার গল্পটা নিয়া কত কিছু করছে।

তারা দাবী করেছে এটা নাকি তাদের লিখা।আমি গত ৬ দিন গল্পটা দেইনি এই পর্বটা। কারন আমি দেখতে চাইসি তারা কি ভাবে পর্ব টা পায়?। অথচ পায়নি, এজন্য তাদের রিডার দের অনেক কথা শুনতে হয়েছে।অতঃপর গল্প না পেয়ে আমাকে আমার আইডি তে রিপোট দিতে বলসে এবং দিয়েছে। এবং অনেকে আমাকে বাবা মা তুলে গালি দিয়েছে।

আমি দুনিয়াতে এতিম। বাবা মারা যায় তিন বছর আগে।মা মারা গিয়েছে ৭ বছর হলো। ফ্যামিলি গত আমার অনেক কস্ট পাইছি।যাক সেগুলো বলে লাভ নাই,কিন্তক ওরা আমার বাবা মা তুলে গালি দিয়েছে।অনেক কস্ট পাইছি

টুক টাক লিখা লিখি করি।২০১২ সালে আইডিটা খুলা। এর মাঝে অনেক লিখা লিখি করি।বিশেষ করে মেয়েদের সম্মান করতে হয় কি ভাবে সেসব বিষয়ে লিখতাম অনেক আগে।এখন লিখিনা।কারন আমাকে শুনতে হয়েছে মেয়েদের দালাল। মেয়দের পা চাটা কুত্তা।আরো নোংরা কথা।

আমি মেয়েদের সম্মান করি এটা আমার জ্ঞান হবার পর থেকে।এবং আমার গ্রুপে আমি মেয়েদের ফুল সাপোর্ট দেই।

কোন ছেলেদের থেকে বাজে কমেন্ট বা বাজে পিক কমেন্ট পেয়ে মেয়েরা কসট পাবে বলে।লজ্জা পাবে।এজন্য অনেক প্রতিবাদ করি।

না মানলে সোজা আইডি টা বৃন্দাবন মানে গ্রুপের বক্ল লিস্টে ফালাই।

অনেকে এজন্য আমার উপরে রেগে থাকে। কত ট্রাই করেছে গ্রুপ খেয়ে দিবে।পারেনি

আইডি স্ট্রং এবং গ্রুপের সিকিউরিটি স্ট্রং। শুধু আমর গ্রুপে না অনেক গ্রুপে আমি এডমিন, সেগুলাও পারেনি।কেননা আমি ফেসবুকে বলতে গেলে পাকা।

গেল বছরে কত রকমের ট্রিকক্স আমার গ্রুপে ছেলে মেয়ে সবাই শিখেছে,

যেমন কালার পোসট,কালার লিখা,অটো আনব্লক। ফেসবুকে মেসেঞ্জার আনবল্ক, সিংগেল নেম আইডি, কালার নেম আইডি, অটো লাইক কমেন্ট,ডিসিবল আইডি ব্যাক করা সব ইত্যাদি পারি,তাই কেউ কিছু করতে পারেনি আমার আইডি। বলতে ছিলাম কপিবাজ দের কথা

গল্প পায়নি বলে আমার নামে ফেক আইডি খুলে আমার ইমেজ খারাপ করার জন্য আমার রিডার দের অনেক বার রিপোট করেছে তাতেও লাভ হয়নি।

অনেক কস্ট পাইছি এতদিনে আমার লিখার ভালোবাসা যে বলসেন এটা ভুল কারন অনেকে আমাকে কপিবাজ বলসেন।

গত কাল কপিবাজ আরো পোসট করছে আমি লিখতে পারিনা এই সেই বানান ভুল আমার লিখার মুরিদ নাই।

আপনারা অনেকেই জানেন আমি মেয়েদের কেমন সাপোট করি।সম্মান করি।এতে আমাকে অনেকে বন্ধু হিসেবে ভালোবাসে অনেকে ভাইয়া হিসেবে।অথচ ঐ কপিবাজ ভাই বলসে আমি নাকি কপি করে ফেমাস হতে চাই।

আমি নাকি দিন শেষে শুন্য। মেয়েরা নাকি আমার গল্প পড়ে প্রেমে পড়বে।আমি জিরো। দিন শেষে শুন্য।

ভাইয়াকে বলি ভাইয়া মেয়েদের কে সম্মান করতে শিখো।

ভুলে যেওনা যে মেয়দের নিয়ে করো বাজে ফিস ফাস

সেই মেয়দের গর্ভে তুমি আমি ছিলাম যত্ন সহ ১০দিন ১০ মাস,,

মেয়দের কে উদ্যেশ করে তুমি গোটা মেয়ে জাতি কে অসম্মান করেছো।

আমি ভাইটির শেষ পোস্ট দেখসি সেটা ছিলো আজ ৮ টার আগে আমি পর্ব দিতে পারলে আমি আসল লেখক এই গল্পএর আমি জানি আমি আসল লেখক। গত ৬ দিন আগে আমি আমার রিডার দের ১১ পর্ব আগেই দিয়েছি প্রমান হয়েছে। সেটা কিছু অংশ ছিলো। তোমাকে আর প্রমান করতে হবেনা তারাই বুঝবে কে আসল। তুমি এই পোসট দেখে হয়তো ভিন্ন ভাবে গলপ্টা এন্ডিং করবে। আমি আমার মত করে করবো।

যাই হোক এসব নিয়ে আমার আইডি তে অনেক পোস্ট আছে।

আপ্নাদের কস্ট দিয়েছি এতক্ষন ও এই ৬ দিন।

এজন্য অনেক অপেক্ষা করেছেন।কথা দিয়েছিলাম অপেক্ষার ফল পাবেন।)

চলুন গল্পে ফিরি।

👇

তানিশা আস্তে করে দরজা খুলতেই দেখলো রাইসা ভেতরে নেই।পানির কল থেকে টপ টপ করে পানি পড়ছে।

এবার তানিশা নিজের ঘড়ে গেল পানির কল বন্ধন করে,।

গিয়ে দেখে রাইসা বসে আছে তার রুমে।জিজ্ঞেস করবে রাইসাকে মামুনি কথা টা বলতেই

- রাইসা বল্লো আন্টি তুমি কোথায় গিয়েছিলে আংকেল এর সাথে দেখা করতে? আংকেল তোমার জন্য এখানে আসছিলো।

-- তানিশা কোথায়?

-- তুমি তো আংকেল এর সাথে বাহিরে বের হলে,

আমি এত করে ডাকলাম শুনলেইনা।

-তানিশা কখন?

এইত একটু আগেই

আমি পানি খেতে উঠেছিলাম

তখন দেখেছি।

তানিশা রাইসার কথা শুনে বললো আচ্ছা মামুনি আমি এতক্ষন দরজা খুলতে ট্রাই করসিলাম তুমি শুনেছো কিছু?

-রাইসা :- কই আন্টি আমি শুনি নিতো,,,😱

রাইসা- কখন?

- একটু আগে। (তানিশা)

রাইসা বল্লো না (মাথা নেরে)

তানিশা ভাবতে লাগছে কি হচ্ছে ওর সাথে।

কে এই লোকটি?আমাকে দিনের পর দিন এমন টা করছে।

যে আমাকে আগে দেখেছে ছবি তুলেছে,পুলিশ স্টেশনে সেদিন বাচতে মিথ্যা বলসিলাম!

সে এখন আমাকে বউ বলে দাবী করে।আমার সাথে যত সব ঘটমা ঘটলো অনেক কিছুই।

আমি মা হতে চলেছি, কে আমার এই টুইন বেবির বাবা? এই লোকটি আমার সাথে এমন কেন করছে?

আমি কি অপরাধ করেছি? রাইসা দেখতে পাচ্ছে অতচ আমি দেখতে পারছিনা।মিম আমি আলাদা কথা বললাম সে শুনতে পেলো কি ভাবে?

মিম বেবি গুলো নস্ট করাতে আমার রাগ উঠে

এর পর ওকে হুমকি দিলো,

আমাকে যত্ন নিতে বলল বেবির।

আমাকে চিরুকুটে দিয়ে জানিয়ে যায় কখন কোথায় যেতে বলে,

বার্থডে উইস,

হিরের নেকলেস গিফট, আজ ছাদে যেতে বলল,, আমাকে

মনে করতে বলল অতিত,যা আমি কিছু মনে করতে পারছিনা, কি সব অদ্ভুদ ঘটনা আমার সাথে হতে যাচ্ছে।

কে উনি ??অন্যদিকে

চেয়ে ভাবতে

হটাৎ ঘোড় কাটলো তানিশার

রাইসার কন্ঠে।

- রাইসা আন্টি আংকেল কি চলে গেছে?

আমার খেলার সাথি কবে আসেবে?

তানিশা কিছু না বলে বললো মামুনি চলো আমি তোমাকে তোমার রুমে ঘুম পারিয়ে দিয়ে আসি।

-রাইসা না আন্টি আমি তোমার সাথে ঘুমাবো।

আমাকে ঘুম পারিয়ে দাও

তানিশা আচ্ছা ঠিক আছে বলে

ওয়াশ রুমে দিকে যেতে সিসি ক্যামেরার সুইচ অন করে চলে গেলো চোখে মুখে পানি দিয়ে ফ্রেশ হবার জন্য।

ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে রাইসা ঘড়ে নেই?

তানিশা হটাৎ চমকে উঠলো একি রাইসা কই কোথায় গেলো?

তানিশা নিজের রুম থেকে বের হয়ে রাইসার রুমে দেখে রাইসা নেই। এখন ভাই ভাবিদের রুমে দিকে গিয়ে দেখে রুম লক ভেতর থেকে।

ডাকতে লাগলো ভাবী! ভাবী,, ভাইয়া,,, ভাইয়া,

রাইসা মামুনি,, এভাবে ডেকে দরজা ঠুকছে। তিন বার ঠুকতে না ঠুকতে দরজা বারি দিতে না দিতেই দরজা খুলে যায় অটোমেটিক।

তানিশা রুমের লাইট অন করতে দেখলো ভাইয়া ভাবী গভির ঘুমে আছে, ডাক দিলোনা।দেখেতে পেল

রাইসা সেখানে নেই

তানিশা আন্দাজ করলো রাইসা কি ওর রুমের ওয়াস রুমে গেলো,,,?

এত ডাকছি মেয়েটা সাড়া দিলোনা এটা ভেবেই রাইসার রুমে গেলো।

দেখে রাইসা সেখানে নেই।

এবার তানিশা বুঝতে পারছেনা ঠিক রাইসা কোথায় গেলো।

রাইসার রুমে থেকে বেড়িয়ে এসে দেখে কিচেনে গেলো সেখানেও নেই। সেখান থেকে কানে ভেসে আসলো

মেইন দরজা একটু আওয়াজ হলো(সাধারনত দরজার কেউ খুলে খোলার পর টান দিলে যেমন আওয়াজ হয় ঠিক সেভাবেই ) তানিশা দরজা সামনে যেতে রাইসা কি বাহিরে গিয়েছিলো?ভাবছে রাইসা এত রাতে বাহিরে কেন গেলো।

দরজা খোলার পর ও রাইসা আসলোনা,,,

তানিশা দরজা ক্রস করে বাহির হলো

নিচের দিকে সিড়ির আলোতে দেখা গেলো সেখানের গেট অফ তালা লাগানো,কেচিগেট।

তানিশা এবার ছাদের উদ্যশে উঠতে লাগলো ছাদে যেয়ে দেখতে পেলো রাইসা ছাদের এক কোন দাঁড়িয়ে সামনের দিকে মুখো হয়ে কথা বলছে কে যেন আছে রেলিং এ বসে রাইসা দাঁড়িয়ে অথচ রাইসার সামনে কেউ নাই।রাইসা কে ডেকে রাইসা বলাতে

নিচে বুঝতে পারল তানিশার দের ফ্লাটে ঢোকার মেইন দরজাটা কে যেন লাগিয়ে দিলো।

তানিশা সেদিকে না ভেবে রাইসার সামনে গিয়ে রাইসার কাধে হাত দিয়ে বলল মামুনি তুমি এখানে কেন?

রাইসা চুপ চাপ তানিশার দিকে তাকিয়ে মুখে কোন শব্দ নেই আংগুল দিয়ে ইশারা করল

ঐ দিকে রাইসা যার সাথে কথা বলছিলো। তানিশা তাকিয়ে দেখে কেউ নেই। নিচে তাকিয়ে দেখলো সেখানেও কেউ নেই পাচ তলা থেকে স্পস্ট দেখতে পেলো বাড়ির মেইন গেইট এর বাহির দিয়ে কেউ চাদর পেচানো যেতে ঠিক লেম্প পোস্টের আলোর প্রতিফলনে মুখটা দেখা যাচ্ছেনা চাঁদর দিয়ে মোড়ানো (যেমন টা শীত কালে চাঁদর মুড়িয়ে থাকে)

তানিশা এবার ও ভাবছে এই লোকটা তাহলে টুইন বেবির বাবা।

রাইসার মুখো মুখি হতেই দেখলো রাইসা হেটে যাচ্চে ছাদ থেকে নেমে যাওয়ার জন্য।

রাইসা একটু হাটার গতি বাড়লো তানিশাও রাইসার পিছু পিছু গেলো,

তানিশা মা হতে চলছে এই সময়ে ঠিক বুঝে শুনে চলতে হবে।

তাই তানিশা আস্তে আস্তে এক টা সিড়ি পার হয় ওদিকে রাইসা দুটা সিড়ি নেমে যায় একটু তারাতারি করে।নিচে নামতে নামতে

নিজ ফ্লাটে রাইসা নিজে হেটে হেটে নিজের রুমে দিকে যাচ্ছে এদিকে তানিশা ডাকছে কোন সাড়া দিচ্ছেনা রাইসা ওর নিজের রুমে ঢোকে গেলো তানিশা মেইন দরজা ক্রস করে লাগাতে হটাৎ খেয়াল করলো দরজা আমি লাগানো শব্দ পেলাম খুলে দিলো কে?

এর পর রাইসার রুমে যেতে খেয়াল করল ভাই ভাবীর রুম ও ঠিক আগের মত চাপানো।কনো পপরিবর্তন নেই মানে তারা গভির ঘুমেই যেমন টা দেখে তানিশা দরজা চাপিয়ে রেখে গিয়েছিলো।

রাইসার রুমে রাইসার দরজার পাশেই রাইসা দাঁড়ানো ছিলো তানিশার দিকে একটু রাগী চোখে। তানিশা রাইসা কে বলছে রাইসা মামুনি এত রাতে কে যেতে বলসে তোমাকে?একটু রাগানিত্ব ভাবে। (তানিশা)

রাইসা মাথা নিচু করে কিছুই বলেনা।তানিশা দুই বার তিনবার প্রশ্ন করে আর প্রশ্ন করলোনা।,,,, সকালে করা যাবে এই ভেবে তানিশা রাইসাকে বল্লো👇

চলো মামুনি ঘুম পাড়িয়ে দেই

এসো।

রাইসা চুপ চাপ কথা না বলে মাথা নাড়িয়ে না বলে দিয়ে আলতো করে তানিশাকে ধাক্কা দিয়ে ওর রুমের দরজাটা আটকিয়ে দিলো।

- তানিশা,,,,,রাইসা দরজা খুলো মামুনি খুলো বসলি।

এভাবে বলতে বলতে তানিশার কেমন যেন ভেতর থেকে খারাপ লাগছে বমি হবে এমন মনে হচ্ছে।দৌড়ে গেলো বেসিনে,,,,

,

,,

,,

,

,

,

তেমন কিছুই হলোনা

তানিশাও এবার ওর রুমে গেল টাওয়াল নিয়ে ভেজা মুখ মুছতে মুছতে লক্ষ করল আবার ও একটা চিরুকুট,

সেখানে লিখা আছে।

ফ্রেশ হয়ে এসেছো জানু

এবার টাওয়াল নিয়ে মুখ হাত মুখ মুছে ঘুম দাও অজু করে না থাকলে অজু করে ফজরের নামায পড়ে নিও।

নিচে আরো লিখা ছিলো

ছাদ থেকে দৌরে এসে পড়লে কেন যদি সিড়ি থেকে পড়ে গিয়ে কিছু হত? আমার বেবি গুলা কি হতো? এমন করলে কেন আমি আছি তোমার পাশেই, সব সময় থাকবো

সোনা মনি।

আর হ্যা রাইসা যখন জিজ্ঞেস করলো ওর খেলার সাথী দের খবর জানতে চাইলো কবে আসবে সেটা শুনে তুমি কি সব কথা ভাবছো নানান টেনশন নিচ্ছো তুমি রাইসাকে জিজ্ঞেস করছো কেন?

আমি কোথায়?

তুমি জানোনা এখন তোমার রেস্ট দরকার। আমি তোমার সাথেই আছি,, ভয় নেই জান্টুস

এতটুকু লিখা পড়ে তানিশা বুঝতে পারলো রাইসা ছাদের যাবার আগে চিরুকুট টা টুইন বেবির আব্বু এটা লিখেছে। এখন আর তানিশার মুখে ধর্ষক কথাটা আসেনা,,,

কিন্তক তানিশা সেইটা লক্ষ করেনি।

তানিশা খেয়াল করলো তানিশা তো সিসি ক্যামেরা সুইচ অন করে ওয়াশ রুমে গিয়েছে!

এটা মনে করার পর চিরুকুটে বাকি অংশ না পড়েই সিসিটিভি ফুটেজ চেক করতে গিয়ে তানিশা যাহ দেখলো তা দেখে মোটেও,,,, প্রসতুত ছিলোনা।

,

,,

সে দেখলো তানিশা র জানালা পাশে রাইসা কি যেন দেখছে।

রাইসা কে ভেদ করে সাদা কি যেন একটা আসলো, রাইসার সাথে কথা বলল এবং টেবিলে এসে লিখছে। লিখা শেষে রাইসাকে নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেল। তানিশা সিসি টিভি ফুটেজ দেখে ফিরে এসে চিরকুটে লিখা গুলো পড়লো আজ চলে যাচ্ছি রাইসাকে নিয়ে ঘুমিও।ও ভুলে যাবে ওর টুইন খেলার সাথী কে। আজকের পরথেকে আর জিজ্ঞেস করবেনা তোমাকে।।

কাল আবার ছাদে এসো

------------------------------------------------------------------------------------------------

তানিশা ছাদের চারদিকে খোজে কিন্তু সেই মানুষ টি কে আর সে দেখতে পায় না,,,

তানিশা ভয়ে কাপছে আর তার মন খারাপ করে রুমের দিকে হাটতে শুরু করছে। অবশেষে তানিশা তার রুমে আসলো।

.

তানিশা রুমে এসে তার ফোনে আবার ও একটি text আসলো। text এ লিখা ছিলো, তোমার বালিশের নিচে দেখো জান,,

,, তানিশা বালিশের নিচে দেখলো একটা চিরকুট আর তাতে লিখা,, আমারর কথা গুলো ভেবে দেখো জান, তোমার মনে পরে কি না।

তানিশা কিছুই বুঝতে পারছে না,, কি হচ্ছে তানিশার সাথে এইটা। তারপর তানিশা বিছানা গুছিয়ে শুয়ে পরলো আর সেই অদ্ভুত লোকটির কথা গুলো ভাবতে লাগলো। হঠাৎ তার মনে পরে তানিশার একটা বড় দুরঘটনা ঘটেছিলো।রিকশা করে তানিসা কলেজ যাচ্ছিলো। আর হঠাৎ করে তানিশার রিকশায় পিছন থেকে একটা বাস ধাক্কা মারে এতে তানিশা ছিটকে গিয়ে রাস্তার বা দিকে পরে যায়। মাথায় অনেক আঘাত পাওয়ার কারনে তানিশা সাথে সাথে তখন ই জ্ঞান হারিয়ে ফেলে তারপর তাকে দ্রুত পার্শবর্তী হসপিটাল এ ভর্তি করানো হয় আর তানিশার প্রচুর পরিমান রক্ত ক্ষরন হয়। তারপর তানিশা আল্লাহর অশেষ দোয়ায় বেচে যায় কিন্তু তানিসা আগের সব সৃতি হারিয়ে ফেলে। আর এই দুর ঘটনা ঘটে , ছেলেটির সাথে যেদিন রাস্তায় প্রথম দেখা হয়েছিলো। ঠিক তার পরের দিন।

তানিশা সৃতি শক্তি চলে যাওয়ায় সে আগের ঘটনা গুলো ভুলে যায়। আর সেইদিন আরো একটি ঘটনা ঘটেছিলো তানিশা কে ছেলেটি বাড়িতে নামিয়ে দেওয়ার পর সে নিজের বাড়ির দিকে যাচ্ছিলো গাড়ির গতি ইক্টু বেশিই ছিলো। কিছু টা পথ যাওয়ার পর ছেলেটি একটা ট্রাক এর সাথে দুরঘটনা ঘটে। সরাসরি ধাক্কা লাগার কারনে ছেলেটি আর বাচতে পারে নাই। ছেলেটি সেদিন ই মারা যায়। কিন্তু তানিশা এই খবর পায় না আর পরের দিন আবার তানিশার দুরঘটনা ঘটে এতে তানিশা কিছুই জানতে পারে না।

তারপর তানিশা ধীরে ধীরে সুস্থ হতে থাকে। তানিশা পুরোপুরি সুস্থ তাকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয় ডাক্তার। তানিশা কে বাড়ি নিয়ে আশার পর কিছু দিন ভালোই ছিলো তানিশা। এভাবে চলতে চলতে তানিশা দেখলো হঠাৎ করে একদিন রাতে তার সাথে কেউ sex করেছে খুব ভালো করে বুঝাতে পারে তানিশা আর প্রডাকশন এর প্যাকেট আর প্রডাকশন সহ ফ্লোরে পরে আছে তানিশার জামা কাপর ও পরে আছে একেক টা একেক দিকে। তারপর তানিশা খুব ভয় পেয়ে যায় আর এভাবে প্রতিদিন তারসাথে sex করা হয়। কিন্তু মুল কাহিনি সেটা নয় আসলে মানুষের সাথে একটা আত্তা কখনোও sex করতে পারে না তবে মানুষের মনের ভাব পরিবর্তন করতে পারে। তানিশার সাথেও এমন টাই ঘটে ছিলো তানিশা নিজেই তার জামা কাপর শরীর থেকে আলাদা করে প্রডাকশন ও নিজেই নিয়ে আসে মানে যত কিছু ঘটে সব তানিশার দারায় ঘটে কিন্তু তখন তানিশা বোঝো না সে কি করতেছে। আবার sex কার্যক্রম শেষ হলে তানিশা আবার নিজের অবস্থায় ফিরে যায়। আর তানিশা বাস্তবতার সাথে যুদ্ধ করতে থাকে। আসলে এইসব কিছুর পিছনে সেই ছেলেটির আত্না ই প্রধান কারন। তানিশা যে গর্ভবতী তার এই ধারনা ও ছিলো ভুল আর এর ফলাফল যে পজেটিভ এটাও ভুল। কারন এইসব এর পেছন ছেলেটির আত্না রয়েছে। আপনারা ভাবতেছেন তাহলে মেসেজ গুলা কই থেকে আসে আসলে তানিশা দেখতে পারে মেসেজ কিন্তু বাস্তবে কোনো মেসেজ ই নেই। অবশেষে ছেলেটি র আত্না তানিশা কে সব কিছু থেকে মুক্তি দিয়ে চলে যায় সেদিন রাতেই আর তানিশা বাস্তব এর দিকে অগ্রসর হয়।


 

 

 

 

অভিশপ্ত রজনী

  মৃত মেয়েটিকে ধর্ষণ করার সময় মেয়েটি যে জীবিত হয়ে ওঠে সেটা খেয়াল করেনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় কাব্য।ধবধবে সাদা চামড়ার মেয়েটিকে ভোগ করার...