Sunday, 27 August 2017

এলোমেলো রক্তছোপ ২





ইদানিং এসফল্টের রাস্তায় ছোপছোপ রক্ত দেখতে পাই। কুয়াশা মাখা সোডিয়াম সোনালী আলোয় হাঁটতে হাঁটতে যতবারই এগিয়ে যাই, রক্তের ছোপ গুলো দূরে সরতে থাকে। আর সেখান থেকে জন্ম নেয় ঘিনঘিনে পোকারা।

কি খবর হে? দিনকাল কেমন যায়।

কে যেনো পাশ থেকে জিজ্ঞেস করলো। এদিক ওদিক তাকিয়ে কাউকে খুঁজে পাইনা। এমনকি ঘিনঘিনে পোকাগুলোও নেই পায়ের আশে পাশে। শুধু দুটো চালক ছাড়া ভ্যানগাড়ি সাঁতার কেটে যায় কুয়াশার সরোবরে। তাদের পিঠে হাতির শুড় আর গন্ডারের শিং দিয়ে বোঝাই করা ঝুড়ি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই সোনালী অন্ধকারে হারিয়ে যায় ভ্যানগুলো। এসফল্টের নদীতে ডুবসাঁতার দিতে থাকা একটা ছিপছিপে কিশোরী হঠাৎ মাথা তোলে। তার চোখে লাল রঙের কাজল, ঠোঁটে গাঢ় নীল লিপস্টিক। যে কেউই সেটাকে কালো বলে ভুল করবে। কিন্তু আমি ভুল করি না। আমি লাল কে লাল, আর গাঢ় নীল কে গাঢ় নীল হিসেবেই সনাক্ত করতে পারি। শাঁই শাঁই করে চাবুকের শব্দে মাথা তুলে দেখি শেরাটনের সামনের ঘোড়ার গাড়িটা নেমে এসেছে পথে। লাল কাজল আর গাঢ় নীল লিপস্টিক দেয়া কিশোরীটা চেপে বসে সেই ঘোড়ার গাড়িতে। তাকে নিয়ে গাড়িটা প্রবল গতিতে ছুটে যায় মিন্টো রোডের সবুজ অন্ধকারের দিকে। আমি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকিবারডেমের কাছে পৌছুতেই ওভারব্রীজটা আড়মোড়া ভাঙ্গতে থাকে আর ব্যাথাতুর শব্দ করতে থাকে।

এবার আমিই ব্রীজটাকে জিজ্ঞেস করি

-
কি খবর হে? দিনকাল কেমন যায়?

ব্রীজটা তিন-ছয় ফোঁটা লুব্রিকেটিং অয়েল (পরে বুঝেছি ওটা ছিলো ব্রীজের অশ্রু) ঝরিয়ে বলে
=
না হে, পেটে বড় যন্ত্রনা

আমি উৎসাহী প্রশ্ন ছুঁড়ে দেই

-
কেনো কেনো?

ব্রীজটা উত্তর দেয়

-
বালের ছোটোলোকদের জ্বালায় কি আর সুখ থাকে? সারারাত ধরে আমার পেটের ভিতর শুয়ে শীতে কাঁপাকাপি করে।

আমার মেজাজটা কেনো জানি খারাপ হয়ে যায়।
 একটা হাড়ের ছুরি

চিৎকার করতে করতে ছুটে যাই সামনের দিকে।

বামে মোড় নিতেই দেখি আরেকটা ওভারব্রীজ আমার পথ আটকাবার পাঁয়তারা করছে। আমি কান্নি মেরে বেরিয়ে যাই, পিছনে ওভারব্রীজটার হাউমাউ করে কেঁদে ওঠার শব্দ শুনি। আমার এখন মেজাজ খারাপ। কারো কান্না শুনার সময় হাতে নাই। সামনে এগিয়ে হাঁফাতে থাকি। এই সব দৌড়ঝাঁপের বয়স কি আর আছে? তারপর আবার হাঁটা শুরু করি।

শিশুপার্কের ফেরিস হুইলটা দেখলাম খুব ভাব নিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে আছে।
থাক না বেটা ভাব নিয়ে, তোর ভাবে আমার বয়েই গেছে

ভাবতে না ভাবতেই দেখি ঢাকা ক্লাবের গেটে দাঁড়িয়ে আছে সেই ঘোড়ার গাড়িটা।
ঐ যে যেই গাড়িটা দিনের বেলা দাঁড়িয়ে থাকে শেরাটনের সামনে, রাতের বেলা লাল কাজল আর গাঢ় নীল লিপস্টিক মাখা কিশোরীদের নিয়ে ছুটে যায় মিন্টো রোডের সবুজ অন্ধকারে। গাড়িটা সুস্থ্যই আছে, কিন্তু ঘোড়া দুটোকে দেখলাম টলতে টলতে বেরিয়ে আসছে ক্লাবের গেট দিয়ে। বেশ স্যুট টাই পড়ে নিয়েছে কখন জানি। তাদের সাথে আছে এসফল্টের নদীতে সাঁটার কাটা লাল কাজল আর গাঢ় নীল লিপস্টিক মাখা সেই কিশোরীটা। দুটো ঘোড়াই তাদের চারটে পা কিংবা চারটে হাত দিয়ে কিশোরীটাকে ধরতে চাইছে। এ যদি কিশোরীর উঠতি স্তন ধরছে, তো ও ধরছে নিতম্ব। এরকম হেঁচড়াহেঁচড়িতে একজন হ্যান্ডসাম ঘোড়ার সম্পত্তি হলো কিশোরীর স্তন, আরেক জনের কাছে জমা হলো কিশোরীর নিতম্ব। ঘোড়া দুটো, সব পাওয়া হয়ে গিয়েছে মনোভাব নিয়ে সেই লাল কাজল আর গাঢ় নীল লিপস্টিকের কিশোরীটাকে ছুঁড়ে দিলো লেজের ঝাপ্টায়। সে মুখ থুবড়ে পড়লো আমারই পায়ের কাছে। আমার ভেজা চোখের দিকে তাকিয়ে গাঢ় নীল হাসি হাসতে হাসতে কিশোরী আমাকে বলল

সব লইয়া গ্যাছে দেইখা মন খারাপ কইরোনা। রাইতে আইসো সোনা, সব নয়া পাইবা...
বলেই খিল খিল শব্দের সাথে সে একটা ঘিনঘিনে পোকা হয়ে গেলো।
তারপর সব শুনশান।

শুধু রমনার লেকটা আমাকে ঘুমিয়ে পড়ার জন্য পরম মমতায় ডাকতে থাকলো। কেনো জানি না আমারো মনে হচ্ছিলো, রমনার লেকটাই আমার মা। আর আমার এখন মায়ের কোলেই ঘুমুতে যাওয়া দরকার।

 

ফেরার গল্প





এখানে একটা সত্যিকারের পুকুর ছিলো। আর কেউ না মনে রাখলেও আমি সেটা মনে রেখেছি। সেই পুকুর পাড়ে কত শত উদাসী দুপুর যে কাটিয়েছি ভাবলেই এই খড়খড়ে রোদের দুপুরটাও বেশ মায়াময় হয়ে ওঠে। আমি অনেকদিন পরে এই রাস্তায় ফিরছি। ঐ যে ওখানে একটা বিষণ্ণ আতাগাছ দেখছেন, ওটার পাশের গলিটা দিয়ে পঞ্চাশ গজ মত গেলেই আমার বাড়ী। কিংবা বলতে পারেন আমার বাড়ী ছিলো। এখন কেউ আছে কি না, সেটা জানা নেই।
একবিন্দুও বাড়িয়ে বলছিনা, আমি আসলেই ফিরে এসেছি। যদিও চেনা রাস্তাটা আর আগের মতো চেনা নেই। কালাম মামার চা সিগারেটের দোকানটা যেখানে ছিলো, সেখানে একটা কিম্ভুত আকৃতির হাইরাইজ দেখছি। কে জানে, কালাম মামাই এটার মালিক কি না।
এই যে লাল ইটের নোনাধরা বাড়িটা দেখা যাচ্ছে, এখানে থাকতো রচনা'রা। তবে এই বাড়িটা এরকম ভাঙ্গাচোরা ছিলোনা তখন। এই পাড়ার সবচে' আধুনিক বাড়িটার এমন হতশ্রী দশা দেখে বুক হু হু করে উঠছে। একসময় রচনার সাথে একটু কথা বলতে পারলে তাদের বাসার লনে খানিকক্ষণ খেলাধুলা করতে পারলে পাড়ার কিশোরদের কাছে নিজেকে অনেক বড় লাগতো। কামরুল কিংবা নওশাদের সাথে যদি রচনা বেশী সময় কথা বলতো, তাহলে কিশোর বুকে চিনচিনে ব্যাথা হ'তো। সেই দিনগুলোও কতদুরে ফেলে এসেছি...
একদিন রচনার বিয়েও হয়ে গিয়েছিলো তার বাবার মতই এক ব্যবসায়ীর সাথে। তরুন আমি, কামরুল, নওশাদের জন্য সেদিনটা ছিলো অনেক কষ্টের। গাড়ি চেপে বরের বাড়িতে রচনা চলে যাবার পর আমরা তিন বন্ধু মিলে সারারাত একসাথে হেঁটেছিলাম। কেউ কোনো কথা বলিনি, শুধু একের পর এক সিগারেট পুড়েছিলো আমাদের হাতে।
কামরুলরা এই পাড়া ছেড়েছিলো তার কিছুদিন পরেই। আর কোনো খোঁজ পাইনি ওদের। নওশাদ এখানেই ছিলো। ঐ যে বাঁ পাশে টিনের চাল ওয়ালা ঘরগুলো উঠেছে, ওটা ছিলো নওশাদদের উঠোন। একটা বিশাল আমগাছ ছিলো উঠানে। নওশাদের মা এই আমগাছের আম দিয়েই প্রতি বছর আমসত্ত্ব বানাতেন। আমরা ছিলাম তার রাক্ষস কুল।
সময় অনেকদূর এগিয়ে গিয়েছিলো, সাথে নওশাদটাও অনেক যাযাবর হয়ে গিয়েছিলো। আমি চাকরী পাবার অল্প কিছুদিন আগে নওশাদ একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করলো। কোন মেয়ে নাকি ওকে প্রত্যাখান করেছে তাই। সেই যাত্রা বেঁচে ওঠার পর, নওশাদের মা ওকে ধরে বিয়ে করিয়ে দিলো। কেয়া ভাবী দারুণ একজন মানুষ ছিলেন। নওশাদকে একটানে যাযাবর থেকে গৃহস্থ বানিয়ে ফেলেছিলেন। সব পাগলামি ঝেড়ে ফেলে নওশাদ নিজের ব্যবসা শুরু করলো, আর বছর না ঘুরতেই মিষ্টি একটা ছেলের বাবাও হয়ে গেলো।
আহ! আমার ফিরে আসার গল্প বলতে গিয়ে দেখি বিশাল কাহিনী ফেঁদে বসলাম। যাক্‌, আমিও মোটামুটি দু'-তিন বছর চাকরী করে মা-বাবার চাপে পড়ে লোপাকে বিয়ে করে ফেলি। নিজের স্ত্রী বলে বলছি না, লোপার মত মেয়েকে পাওয়া আমার সাত জনমের ভাগ্য ছিলো। অন্যের বাবা-মা কে কেউ এভাবে আপন করে নিতে পারে, আমার জানা ছিলোনা। আর আমার বাবা-মা? তারাও লোপাকে পেয়ে যেনো নিজের হারানো মেয়েকে খুঁজে পেলো। বলতে বোধহয় ভুলে গেছিলাম, আমার একটা বড় বোন ছিলো। আমার জন্মের পরপরই, মাত্র তিন দিনের জ্বরে ভুগে মারা যায়। যা হোক, লোপার কথা বলছিলাম
লোপার সাথে আমার বিয়ের মাত্র সপ্তা দুই আগে পরিচয়। মুরুব্বীদের প্রাক বিবাহ কথা বার্তা শেষ হবার পরেই আমি মেয়েটাকে দেখি। দুই সপ্তাহে একটা মানুষকে আর কতটুকু চেনা যায়? সবকিছু ঠিকঠাক বুঝে ওঠার আগেই দেখি সাজগোজ করা একটা শ্যামলা মেয়ে আমার ঘরে বসে আছে। নিতান্ত ছাপোষা আমি আরো বেশী গৃহী হয়ে গেলাম। এরপরের সাতটা বছর কিভাবে চলে গেলো বুঝতেই পারিনি। লোপার সাথে কখনো কথা কাটাকাটি, মন কষাকষি হয়নি সেটা বলবোনা। কিন্তু প্রতিবারই কিভাবে কিভাবে জানি সব কিছু মিটে যেতো।
এই সাত বছরে লোপা আর আমার একটা মেয়ে হয়েছিলো। দুজন মিলে অনেক আলোচনা-ঝগড়াঝাটি করে নাম রেখেছিলাম শ্যামা। মেয়েটার মায়াময় মুখের কথা ভাবতেই চোখে পানি চলে আসলো। আমার শ্যামা যদি বেঁচে থাকে, কেমন দেখতে হয়েছে? কি করছে? কিছুই জানিনা। আর জানবোও বা কিভাবে? কতদিন পর ফিরছি এই রাস্তায়, আমার বাড়ীর রাস্তায়।
এইযে, সুশীল কাকুর সেলুন পার হচ্ছি। আরে! এখানেতো সেলুনই নেই এখন। একসময় বাবার হাত ধরে আসতাম চুল কাটাতে, বড় হয়ে ওঠার পর একা একাই। আবার শ্যামার প্রথম চুল কাটানোর জন্য সুশীল কাকুকেই ধরে নিয়ে গিয়েছিলাম। আমি ভয় পেতাম, এত নরম চামড়া, যদি কেটে ছড়ে যায়? সুশীল কাকু থাকতেন আরেকটু সামনে গিয়ে ডানের বাড়িটায়। বাবার সাথে উনার ছিলো বন্ধুর মত সম্পর্ক, পুজো পার্বণে উনাদের বাসায় কত নাড়ু সন্দেশ খেয়েছি তার ইয়ত্তা নেই।
আমাদের বিয়ের চার বছরের মাথায় বাবা মারা গেলেন হঠাৎ করেই। মা ও শয্যাশায়ী হয়ে পড়লেন। সাজানো পৃথিবী অনেকটাই এলোমেলো হয়ে পড়লো। এর ভেতরেই বাবার মৃত্যুর পাঁচ মাসের মাথায় মা ও চলে গেলেন বাবার সান্নিধ্যে। নিজের নাতনীর মুখ দেখে যেতে পেরেছিলেন এটাই স্বান্তনা। আমি মনে হয় একটু বদলেও গিয়েছিলাম তখন। অনেক দিনের ছায়া মাথার উপর থেকে সরে যাওয়ায় অনেকটা অবিন্যস্ত। তবুও সামলে নিচ্ছিলাম নিজেকে আস্তে আস্তে।
এইতো বিষণ্ণ আতা গাছটার কাছে চলে এসেছি। এবার বাঁয়ে মোড়, তিনটা বাড়ী পার 'লেই আমার বাড়ী। আহা কতদিন আমার মেয়েটাকে দেখিনা, লোপাকেও। মেয়েটা মনেহয় অনেক বড় হয়ে গিয়েছে। এতদিন পর আমাকে দেখে কি চিনতে পারবে? যে হারে মুখ ভর্তি সাদা সাদা দাঁড়ি-গোঁফ হয়েছে! লোপার চুলেও মনেহয় পাক ধরেছে। কিন্তু আমি ঠিকই চিনতে পারবো ওদেরকে। নিশ্চই চিনতে পারবো আমার হৃদপিণ্ডের ধুক ধুক শব্দগুলোকে।
সেবার, শ্যামার তিন বছরের জন্মদিন সামনে চলে এসেছে। আমি আর লোপা ঠিক করলাম মেয়েটাকে সাগর পাহাড় এগুলোর সাথে পরিচয় করিয়ে দেবো। লোপা আর শ্যামা' সে কি উচ্ছাস। মহা উৎসাহে শ্যামাকে নিয়ে লোপা বেড়ানোর প্রস্তুতি নিতে থাকলো, আর আমি ব্যাস্ত থাকলাম ছুটির আগে শেষ মূহুর্তের কাজ গুলো নিয়ে। রওনা দেবার আগের দিন দুপুরে, অফিস থেকে বেরোবো বেরোবো করছি, এমন সময় আমার ফোনটা বেজে উঠেছিলো। জরুরী কোনো একটা খবর ছিলো, যেটা এখন আর মনে নেই, শুনে হন্তদন্ত হয়ে বেরিয়ে পড়েছিলাম অফিস থেকে।
এইতো আমার বাড়ীতে পৌছে গিয়েছি।
কিন্তু... এরকম ময়লা জমে আছে কেন গেটের সামনে? ঘরের দরজা জানালাগুলো একটাও আস্ত নেই কেন? লোপা শ্যামা ওরা কি আমার উপর রাগ করেছে গত আঠারো বছর ধরে যোগাযোগ নেই বলে?
আহ! সব কথা মনে পড়ায় এত এত কষ্ট লাগে কেনো। সারাবছরই তো ভুলে থাকি, মেয়েটার জন্মদিন কাছিয়ে আসলেই মনে পড়ে কেন সব কিছু...
আমার শ্যামা... আমার লোপা... বাসায় ফিরছিলো টুকিটাকি কিছু জিনিস কিনে। পথে ওদের রিকশাটাকে ধাক্কা দিয়েছিলো একটা কার। মেয়ে কোলে লোপা ছিটকে পড়েছিলো রাস্তায়, আর একটা বাস চলে গিয়েছিলো ওদের কোমল শরীর দু'টোকে পিষে দিয়ে।
সারা বছর পথে পথে ঘুরি আমি। সেই বাসটা আর কারটাকে খুঁজি। অন্য কিছু মনে থাকে না। শুধু শ্যামার জন্মদিনের আগে আগে মনে পড়ে ওদের সাগর আর পাহাড়ে নিয়ে যাবো বলেছিলাম। ফিরে আসি এই রাস্তায়...

ফেরে না কেউ





অলস দুপুর হেঁটে চলে গেছে নিরুদ্দেশ। সন্ধ্যে হলেও ফেরেনি ঘরে। দুপুরের মতো বেড়াল পায়ে বিকেলগুলোও চলে গেছে শহর ছেড়ে। কোনদিন কি দেখা হবে মুখোমুখি আর ? কী ভীষণ নস্টালজিক এই রাত্রির গহন অরণ্য! ফসলের তে থেকে কত যে উঠে আসে সকরুণ দীর্ঘশ্বাস। ঘাসের উপর খোলস বদলানো একটি গোখরো কী বীভৎস সুন্দর! ধোঁয়ার মতো ধূসর শূন্যতায় ভরা নির্জনা এই রাত্রির কালোমাটির ভূ-খণ্ড। অদূর অদৃশ্য থেকে ভেসে আসে মরে ভূত হয়ে যাওয়া শেয়ালের অতৃপ্তি- তুমুল কোরাস। অপঘাতে যারা মারা পড়ে তারা কেন ফিরে আসে রাত নামলে পৃথিবীর অন্ধকার-অভ্যন্তরে ?

স্মৃতি ভুলে যাওয়া অলস দুপুর, নীলাকাশ বিকেল- ফেরে না কেউ আমি শুধু অমাবস্যার রাত জেগে ডায়রির পাতায় লিখে রাখি হলুদ হরফে প্রাপ্তবয়স্ক মস্তিষ্ক বিকৃতি।

অভিশপ্ত রজনী

  মৃত মেয়েটিকে ধর্ষণ করার সময় মেয়েটি যে জীবিত হয়ে ওঠে সেটা খেয়াল করেনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় কাব্য।ধবধবে সাদা চামড়ার মেয়েটিকে ভোগ করার...