এখানে প্রস্রাব করিলে গণপিটুনিতে আপনার মৃত্যু অবধারিত
নিশান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে
সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে। রাত জেগে আবোল তাবোল পড়াশুনা করে দুপুর রাতে পলাশি গিয়ে চা
খায়। সাথে কেউ জুটলে ভালো, কাউকে না পেলে একাই যায়। আজকে
একটু বেশিই দেরি হয়েছে। রাত তিনটা বাজে, তবু পলাশি সরগরম।
মাঝে মাঝে এরকম হয়। আাশেপাশে বুয়েট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি হল থাকায়
জায়গাটা সারারাত সরগরম থাকে। তবে আজকে একটু বেশি। নিশান একটি সিগারে জ্বালিয়ে
বৃত্তাকারে এদিক সেদিক হেঁটে আবার ঐ চায়ের দোকানটার সামনে ফিরে আসছে। একটু দূরে
ইডেন কলেজ। পলাশি থেকে আজিমপুর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ইডেন কলেজের পাঁচিল ঘেষা
ফুটপাত দিয়ে হাঁটা যায় না। হাগুমুতু দিয়ে সয়লাব হয়ে থাকে জায়গাটা। কিছুদিন আগে
যেখানে সেখানে হাগুমুতু প্রতিরোধ করার জন্য সরকার আরবি ভাষায় ‘এখানে প্রস্রাব করিবেন না’লেখা ঘোষণা দিয়েছে। অনেক জায়গাতেই লেখা হয়েছে। ইডেন কলেজের পাঁচিল ঘেষে আররবিতে লিখে দিয়েছে।
নিশান লেখাটুকু পড়ার চেষ্টা করে চায়ের দোকানে এসে
সবে চায়ে চুমুক দিয়েছে। তাকিয়ে দেখে একটু দূরে হুড়োহুড়ি। ছেঁড়া কাঁথা জড়ানো একটি
লোককে মাটিতে ফেলে রাতের রিক্সা চালকেরা সমানে চড় থাপ্পড় লাথি মারছে। মারতে মারতে
ওরা চিৎকার করছে- ’এই হালায় আয়াতের উপর প্রস্রাব করেছে।’ওরা আরবি ভাষাটাকে শুধু আয়াতের ভাষা হিসেবেই চেনে। চিৎকার
করতে করতে ওরা আরো বিক্ষুব্ধ হয়। মারতে মারতে পাগলটাকে মেরে ফেলে।
নিশান একটি ইটের টুকরো দিয়ে দেয়ালের আরবি লেখার নিচে
বাংলায় একটি লাইন লিখে দেয়- ’এখানে প্রস্রাব করিলে
গণপিটুনিতে আপনার মৃত্যু অবধারিত। উপরের আরবি লেখা খেয়াল করুন।”
No comments:
Post a Comment