Sunday 27 June 2021

গড়াই নদী।

 


গড়াই নদী গঙ্গা তথা পদ্মার একটি প্রধান শাখানদী হিসেবে পরিচিত এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক মধুমতি নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ২৪

গড়াই নদীটি কুষ্টিয়া জেলার হাটশহরিপুর ইউনিয়নে প্রবহমান পদ্মা নদী হতে উৎপত্তি লাভ করে মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার নাকোল ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রবাহিত হয়ে মধুমতি নদীতে পতিত হয়েছে একসময় গড়াই নদী দিয়ে গঙ্গার প্রধান ধারা প্রবাহিত হতো, যদিও হুগলি-ভাগীরথী ছিল গঙ্গার আদি ধারা কুষ্টিয়া জেলার উত্তরে হার্ডিঞ্জ সেতুর ১৯ কিলোমিটার ভাটিতে তালবাড়িয়া নামক স্থানে গড়াই নদী পদ্মা থেকে উৎপন্ন হয়েছে নদীটি কুষ্টিয়া জেলার ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে গণেশপুর নামক স্থানে ঝিনাইদহ জেলায় প্রবেশ করেছে অতঃপর ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া সীমানা বরাবর প্রবাহিত হয়ে চাদর নামক গ্রাম দিয়ে রাজবাড়ী জেলায় প্রবেশ করেছে এরপর ঝিনাইদহ-রাজবাড়ী জেলা, মাগুরা জেলা-রাজবাড়ী জেলা এবং মাগুরা জেলা-ফরিদপুর জেলার সীমানা বরাবর প্রবাহিত হয়ে মধুমতি নদী নামে নড়াইল বাগেরহাট জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে

গড়াই নদী-মধুমতী নদীর গতিপথ আঁকাবাঁকা দীর্ঘ গড়াই নামে ৮৯ কিমি, মধুমতী নামে ১৩৭ কিমি এবং বলেশ্বর নামে ১৪৬ কিমি অর্থাৎ মোট দৈর্ঘ্য ৩৭২ কিমি গড়াইয়ের বহু শাখা-প্রশাখা রয়েছে- কুমার নদী, কালীগঙ্গা, ডাকুয়া, বুড়ি গড়াই, বুড়িশাল ইত্যাদি গড়াইয়ের শাখা তাছাড়া নবগঙ্গা নদী, চিত্রা, কপোতাক্ষ, সাতক্ষীরার যমুনা, গোলঘেসিয়া, এলেংখালী, আঠারোবাঁকি প্রভৃতি নদী এর সংস্পর্শে এসেছে এছাড়াও বারাশিয়া, কুমার নদী, চন্দনা প্রভৃতি এই নদীর উপনদী উৎপত্তিস্থল থেকে কামারখালী পর্যন্ত বর্ষা মৌসুমে নৌকা অন্যান্য ছোট নৌযান চলাচল করে, কিন্তু শুকনো মৌসুমে অংশ অনাব্য হয়ে পড়ে কামারখালী থেকে ভাটির অংশ মোটামুটি নাব্য, সারা বছর এখানে নৌযান চলাচল করতে পারে নদীটির উৎসমুখ থেকে নড়াইলের গড় প্রস্থ ৪৫০ মিটার নদীটির মোহনা থেকে উজানে কামারখালী পর্যন্ত অংশ জোয়ার-ভাটা দ্বারা প্রভাবিত হয় পদ্মার সাথে সংযুক্ত হওয়ায় নৌপথে পণ্য আদান প্রদানে বিশেষ সহযোগী হিসাবে কাজ করে নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে অনেক জনপদ নদীতে প্রচুর পরিমাণ মত্ রয়েছে যা অঞ্চলের মানুষ আহরণের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে মধুমতি নদী তীরবর্তী অঞ্চল খুব উর্বর তাই ফসল উত্পাদনের জন্য অনুকূল


কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার জীবনের অনেকগুলো দিন কাটিয়েছেন গড়াই-পদ্মা নদীর তীরে তার লেখায় বহুবার নদী দুটির প্রসঙ্গ এসেছে গড়াই নদীকে কবি লিখতেন গৌরী নামে আবার কখনো কখনো গোড়াই নামেও লিখেছেন তার কবিতায় গড়াইয়ের নদীতীরের নৈসর্গিক সৌন্দর্যের কথা তার কবিতায় ফুটে উঠেছে অত্যন্ত নান্দনিকভাবে:

গোড়াই নদীর চর

নূতন ধানের আঁচল জড়ায়ে ভাসিছে জলের পর

একখানা যেন সবুজ স্বপন একখানা যেন মেঘ

আকাশ হইতে ধরায় নামিয়া ভুলিয়াছে গতিবেগ

দুপুরের রোদে আগুন জ্বালিয়া খেলায় নদীর চর

দমকা বাতাসে বালুর ধূম্র উড়িছে নিরন্তর

রাতের বেলায় আঁধারের কোলে ঘুমায় নদীর চর

জোনাকি মেয়েরা স্বপনের দীপ দোলায় বুকের পর 

No comments:

Post a Comment

অভিশপ্ত রজনী

  মৃত মেয়েটিকে ধর্ষণ করার সময় মেয়েটি যে জীবিত হয়ে ওঠে সেটা খেয়াল করেনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় কাব্য।ধবধবে সাদা চামড়ার মেয়েটিকে ভোগ করার...