Monday 31 July 2017

মিডিয়ার খবরে রমেল চাকমা নেই কেন?



রমেল পড়ে আছে মর্গে
রমেল চাকমার মৃত্যুর সঠিক তদন্ত হোক। বিচার হোক। সর্বত্র হোক তীব্র প্রতিবাদ। কিন্তু এ ঘটনায় আবেগ বর্জিতভাবে আমাদের বোধহয় কয়েকটি পয়েন্ট মনে রাখা দরকার।
অভিযোগে প্রকাশ, নিরাপত্তা বাহিনীর নির্যাতনে নান্যাচর কলেজ ছাত্র রমেল চাকমা গত ১৯ এপ্রিল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। এর আগে ৫ এপ্রিল রমেল চাকমাকে নিজ হেফাজতে নিয়েছিল নিরাপত্তা বাহিনী।
এই দীর্ঘ সময়েও রমেল চাকমা নির্যাতনের অভিযোগ ও পরে তার মৃত্যুর কারণ মূল ধারার মিডিয়াতে প্রকাশ পায়নি। তবে দু-একটি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক অনলাইন ও ফেসবুকে বিষয়টি সীমিত পরিসরে আলোচনা তুলেছে।
সাথীর সঙ্গে দ্বিমত
মিডিয়ার খবরে রমেল চাকমা নেই কেন, এর সম্ভাব্য কারণ হিসেবে সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী, স্নেহাশীষ মুক্তাশ্রী চাকমা সাথী ফেসবুক নোটে দুটি পয়েন্ট উল্লেখ করেছেন, এক. পাহাড়ের সাংবাদিকরা হয়তো নিরাপত্তা জনিত কারণে খবরটি করেননি, দুই. অথবা তারা সংবাদটি ঢাকা অফিসে পাঠিয়েছিলেন, কিন্তু অফিস এটিকে সংবাদ হিসেবে গুরুত্ব দেয়নি।
সাথী বেশ কিছুদিন মূল ধারার মিডিয়াতে পার্বত্য সংবাদসহ আদিবাসী বিষয়ক সংবাদ করেছেন।এখনো আদিবাসী বিষয়ক সাংবাদিকতা ও লেখালেখির সঙ্গে জড়িত। তার সঙ্গে বিনীতভাবে দ্বিমত করেই বলছি, ওই দুটি ঘটনার কোনটিই হয়তো সঠিক নয়।
পর্যবেক্ষণ থেকে বলছি, পাহাড়ের সাংবাদিকরা সব সময়েই ঝুঁকি নিয়ে সাংবাদিকতা করেন।
তাহলে রমেলের প্রশ্নে তারা পিছু হটবেন কেন? আর মিডিয়ায় “যথাযথভাবে উপস্থাপিত” হলে, একজন কলেজ ছাত্রের নির্যাতন ও মৃত্যুর খবর প্রকাশ না হওয়ার কারণ নেই।
বরং রমেল সংবাদ মূল ধারার মিডিয়ায় না আসার সম্ভাব্য জোরালো কারণ এই যে, এ সব ক্ষেত্রে সাধারণত অভিযুক্ত নিরাপত্তা বাহিনীর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায় না। ঘটনার সঙ্গে পুলিশ জড়িত থাকলেও প্রায়শই তারা এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে চান না। অর্থাৎ “যথাযথভাবে উপস্থাপিত” না হওয়ায় রমেল সংবাদ মূল ধারার মিডিয়ায় একপেশে অভিযোগের ভিত্তিতে খবরটি হয়তো আসেনি।
নিজে টিভির সাংবাদিক বলে জানি, টেলিভিশনে এ ধরণের সংবাদ করা আরো কঠিন। অভিযোগকারী (নিহতর পরিবার), পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনী, সম্ভব হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অন দা রেকর্ড বক্তব্য ছাড়া টিভিতে এমন সংবাদ করা যায় না। আর সব মিডিয়ার মধ্যে টিভিই সবচেয়ে শক্তিশালী মিডিয়া।
একটি উদাহরণ দেওয়া যাক, বছর ছয়েক আগে বেগমগঞ্জে পুলিশ গণপিটুনি দিয়ে এক কিশোরকে মেরে ফেলতে উৎসাহিত করেছিল।বাজারের ভেতর শত শত উন্মত্ত জনতা কিশোরটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলে। পুরো ঘটনাটি মোবাইলে ভিডিও করে রেখেছিলেন এক ব্যক্তি।
পরে এই ভিডিও ক্লিপিং এর সূত্রে পুলিশের বক্তব্যসহ বিস্তারিত খবর প্রচার করে সময় টিভি। সেখান থেকে আবার প্রথম আলোসহ শীর্ষ সংবাদপত্রগুলো এই খবরটি পরদিন প্রচার করে। অর্থাৎ লাইভ ভিডিও ক্লিপিংই এ ক্ষেত্রে ঘটনার প্রমান। …
কল্পনা চাকমা থেকে সোহাগী জাহান
সাথীর নোটে কল্পনা চাকমার কথা এসেছে। সোহাগী জাহান তনুর কথা আসেনি। কল্পনা অপহরণ ও তনু হত্যার নেপথ্যে নিরাপত্তা বাহিনী জড়িত বলে জোর অভিযোগ।
রাঙামাটিতে হিল উইমেন্স ফেডারেশন নেত্রী কল্পনা চাকমাকে নিরাপত্তা বাহিনী ১৯৯৬ সালের ১২ জুন অপহরণ করার পর পরই কিন্তু সংবাদটি সেভাবে মিডিয়ায় প্রকাশ হয়নি। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন, পাহাড়ি গণপরিষদ পাহাড়ে হরতাল, অবরোধসহ টানা আন্দোলন করলে, সেষব রাজপথের সংবাদ প্রকাশের সূত্রে কল্পনা চাকমা অপহরণের খবর প্রকাশ পায়। পরে ঢাকা থেকে আমি, প্রিসিলা রাজ, মূর্শেদ আলী খান, শাহিন আখতার, সাগর সারোয়ার, মনির হোসেন লিটনসহ আরো কয়েকজন সরেজমিন অনুসন্ধান করার পর মিডিয়ায় খুব বড় করে কল্পনা চাকমা অপহরণের খবর প্রকাশ পায়।
এরপর কল্পনা চাকমা পরিনত হন আন্তর্জাতিক সংবাদে। বলা ভাল, কল্পনা চাকমাই এখন পার্বত্য মানবাধিকার পরিস্থিতির অপর নাম। কিন্তু এতো বছরেও এ অপহরণের বিচার হয়নি।
আর গত বছর ২০ এপ্রিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর মৃতদেহ ময়নামতি সেনা নিবাসের ভেতর রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তনুর সহপাঠিরা লাগাতার আন্দোলন গড়ে তুললে সে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে ঢাকাসহ সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। অভিভাবক, শিক্ষক, জনতাও যোগ দেন এই আন্দোলনে। এমন আন্দোলন কখনো দেখেনি বাংলাদেশ।
এরপরের ঘটনা কমবেশী সকলেরই জানা, আন্দোলনের সূত্রেই পুলিশ নড়েচড়ে বসে। দুইবার ময়না তদন্ত হয় তনুর মরদেহের। মানবাধিকার কমিশন তদন্ত করে জানায়, সেনা নিবাসের ভেতর হত্যাকাণ্ড ঘটলেও হত্যার বেশকিছু আলামত নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। তারপর পুলিশ জেরার মুখোমুখি করা হয় নিরাপত্তা বাহিনীর দুজন সদস্যসহ বেশকিছু বেসামরিক ব্যক্তিকে। এরপর যখারীতি “জোর পুলিশী তদন্ত চলিতেছে”, তনু হত্যারও বিচার হয়নি।
কল্পনা ও তনুর ঘটনাই প্রমান করে, হত্যা-অপহরণের মতো গুরুতর অপরাধের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনী জড়িত বলে অভিযোগ উঠলে তার সুবিচার প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। সারা বাংলাদেশের চিৎকারেও শাসকগোষ্ঠীর টনক নড়ে না।
হোক কলরব
রমেল হত্যার বিচারের দাবিতে পিসিপি খাগড়াছড়িতে মিছিল করেছে বলে অনলাইন মিডিয়ায় দেখেছি। আসলে আরো জোর প্রতিবাদ ছাড়া মিডিয়ার তথা পুরো বাংলাদেশের নজর কাড়া মুশকিল। আমরা এমন একটি দেশে বাস করছি, এখনে সুবিচার চাইতে গেলে অনুনয় করতে হয়, ধর্ণা দিতে হয়। এটিই নির্মম বাস্তবতা। এর বিকল্প পথই হচ্ছে প্রতিবাদ। আন্দোলনের চাপে সরকার বাহাদুর যদি নড়েচড়ে বসেন!
আর কে না জানে, মিডিয়া কিছু “হোলি কাউ” বা ধর্মের ষাঁড় তৈরি করেছে। এর মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনী ও আদালত হচ্ছে শীর্ষে।
রমেল চাকমার মৃত্যুর খবর প্রধান সারির মিডিয়ায় এলো না কেন, সে বিষয়ে পাহাড়ের সাংবাদিকরা কি বলেন, তা-ও জানতে চাই, বিতর্ক হোক। হোক কলরব।
বটম পয়েন্টে:
ধরা যাবে না, ছোঁয়া যাবে না, বলা যাবে না কথা/ রক্ত দিয়ে পেলাম শালার এমন স্বাধীনতা!

Saturday 29 July 2017

ফোনালাপ




 

অনেক রাত। প্রায় আড়াইটা তিনটা হবে। পরিশ্রান্ত নায়ক গভীর ঘুমের রাজ্যে। উনি শুধু এই গল্পেরই নায়ক নন, উনি টিভি বা চলচ্চিত্রেরও নামকরা একজন অভিনেতা। তার বেড সাইড টেবিলে রাখা ফোন গুলোর একটা বেশ সুরেলা ভাবে গেয়ে উঠলো। রাতের শীতল নীরবতায় সুরেলা শব্দটাকে কর্কশ শোনালো। ঘুম ঘুম চোখে নায়ক ফোনটা হাতে নিলেন। কলারের নামটা দেখে নিমেষেই চোখ থেকে ঘুম ঘুম ভাবটা দূর হয়ে গেলো। শরীর ঢেকে রাখা কম্বলটা সরিয়ে তিনি সন্তর্পনে নেমে আসলেন বিছানা থেকে। পায়ের কাছে পড়ে থাকা গাউনটাকে জড়িয়ে চলে আসলেন পাশের ঘরে। আবছা আলোতে ঢেকে থাকা সোফাটাকে এড়িয়ে গেলেন বেড়ালের মত।
রিসিভ বাটনে চাপ দিতেই অপর পাশ থেকে ভেসে আসলো নায়লার অস্থির কণ্ঠ-
- হ্যালো। হ্যালো। কি হলো, কথা বলছো না কেনো? হ্যালো?
= কি হয়েছে জান? এখন কয়টা বাজে খেয়াল করেছো?
- কিজানি কয়টা বাজে, তুমি কি করছিলে? ঘুমাচ্ছিলে?
= অন্য কি করবো? তুমি কি পাশে আছো?
- যাও। সবসময় ফাজলামি
= কি হয়েছে বলতো? তোমার গলা কেমন অন্য রকম লাগছে।
নায়ক নিজের অভিনেতাসুলভ আচরণ এবং শব্দচয়নে মন দিলেন।
- কি হয়নি তাই বলো? ফারুক এসে উপস্থিত হয়েছে।
= ফারুক?
গলায় পর্যাপ্ত পরিমাণ বিস্ময় ঢেলে নায়কের প্রশ্ন।
= ও কিভাবে তোমার ঠিকানা পেলো?
এবার বিস্ময়ের সাথে উৎকণ্ঠা যোগ করা হলো।
- কিভাবে পেলো সেটা আমি কোত্থেকে জানবো? শুধু জানি রাত একটার সময় কলবেলের শব্দ শুনে, তুমি আমাকে সারপ্রাইজ দিতে এসেছো ভেবে দরজা খুলে দিয়ে দেখি ফারুক দাঁড়িয়ে। দাঁড়িয়ে বলা ভুল হবে, ও আসলে টলছিলো। মুখ থেকে ভুরভুর করে বেরোনো মদের গন্ধ নিয়ে টলছিলো।
= বলো কি?
- প্রথমেই আমাকে ধাক্কা দিয়ে ঘরের ভিতরে ঢুঁকে গেলো। তারপর ইনিয়ে বিনিয়ে কান্না। আমাকে ছাড়া নাকি বাঁচবে না। আবোল তাবোল। আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে এসেছে, আরো কত কি বলছিলো।
= তারপর?
- তারপর আর কি? যখন আমি বললাম যে ওকে ডিভোর্স দিয়ে দেবো। শুনে খেপে উঠলো। তারপর শুরু করলো আমাকে মারা।
= কি বলো? তোমার গায়ে হাত তুলেছে? এতবড় সাহস ওর?
কিছুটা উষ্মা যোগ হলো নায়কের কণ্ঠে।
- হু। মেরে কালশিটে ফেলে দিয়েছে।
= এখন? এখন কি করছে সে?
- হাতের সুখ মিটিয়ে এখন জ্ঞান হারিয়ে শুয়ে আছে মেঝেতে। আমি এখন কি করবো? যার ভয়ে শহরের এই মাথা থেকে ঐ মাথায় চলে আসলাম, তাই হলো।
নায়কের মাথার ভেতরের কলকব্জা গুলো পুরোদমে চালু হয়ে গেলো। সে যখন পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করতো তখন নায়লার সাথে পরিচয়। নায়লার ক্যারিয়ার তখন একেবারে মাঝ আকাশে। এই মেয়েটাকে জড়িয়েই তার নায়ক হিসেবে উত্থান। এই মেয়েটার সাহায্য না পেলে হয়তো তাকে এখনও পার্শ্বচরিত্রাভিনেতা হিসেবেই থেকে যেতে ত। মেয়েটা যেমন তাকে সাহায্য করেছে উপরে উঠে আসতে তেমনই দেহমন উজাড় করে ভালওবেসেছে। কিন্তু তাকে সাহায্য করতে গিয়ে মেয়েটার নিজের ক্যারিয়ারে লেগেছে ভাটার টান, সংসারে জ্বলেছে আগুন। তারপরও সে নায়কের পাশে থেকেছে। এখন মেয়েটার ভয়াবহতম দুঃসময়ে তারে পাশে থাকা তো নৈতিক কর্তব্য।
- এই কি হ? কিছু বলছো না যে?
= নাহ। আমি আসলে ভাবছিলাম কি করা যায়। আসলে কি করা উচিত।
- কিছু পেলে?
= পেয়েছি। কিন্তু তোমাকে বলতে ভয় হচ্ছে। তুমি মনেহয় আমার কথামত কাজ করতে পারবে না।
- বলেই দেখোনা। তোমার জন্য আমি সব করতে পারি স-অ-ব।
= তুমি কি পারবে ফারুকের মুখের উপর একটা বালিশ চেপে ধরতে? তাহলে সারা জীবনের জন্য আমাদের পথের কাঁটা দূর হয়ে যাবে।
- কি বলছো এসব?
= আগেই বলেছিলাম পারবে না, আমাদের মনেহয় এভাবেই দূরে দূরে থাকতে হবে।
এবার নায়কের গলার স্বর থেকে বেদনা গলে গলে পড়লো।
- না। এভাবে বলোনা। তোমাকে না পেলে আমি মরেই যাবো।
= কিন্তু ফারুক বেঁচে থাকতে সেটা কি সম্ভব? কখনই সম্ভব না।
নায়কের গলা প্রায় কাঁদো কাঁদো।
- কিন্তু...
= এই দেখো, এখনও তুমি নিজের মনকে স্থির করতে পারছো না।
- আমার হাত কাঁপছে তোমার কথা শুনেই।
= থাক তাহলে।
নায়কের গলায় হতাশার সুর বাজলো।
- না...না... তুমি বলো কিভাবে কি করতে হবে।
= তোমার বিছানা থেকে বালিশটা তুলে নিয়ে গিয়ে ফারুকের মুখের উপর চেপে ধরো। মাত্র পাঁচ মিনিট। ব্যাস।
- কিন্তু... তুমি কি এরপর আমাকে আগের মত ভালবাসবে?
= কেন বাসবো না? আমি তো তোমার সাথেই আছি। আগেও ছিলাম, এখন এই কাজের সময়েও আছি।
নায়কের গলায় এবার ভালোবাসার বন্যা।
- এরপর ফারুকের লাশটা নিয়ে কি করবো বললে না যে?
= কম্বল দিয়ে লাশটা মুড়িয়ে তোমার গাড়িটায় তুলবে। তারপর গাড়িটা চালিয়ে নিয়ে যাবে পূর্বাচলের দিকে। ওখানকার ব্রিজটার উপর থেকে লাশটাকে নদীতে ফেলে দেবে। তারপর বাসায় চলে এসে সব কিছু ভুলে যাবে।
- আমি পারবো না। আমার হাত পা সব কাঁপছে।
= ঠিক আছে তাহলে, আমার কথা ভুলে যাও।
- না, না। আমি পারবো। আমাকে পারতেই হবে।
= এইতো লক্ষী মেয়ে। যাও আমি ফোন ধরে আছি।
এক দুই তিন চার এভাবে পাঁচ মিনিট পার হয়ে গেলো। এই সময়ে নায়কের চেহারায় নানা রকম অনুভূতি তাদের ছাপ রেখে গেলো।
- হয়ে গেছে জান।
= তুমি আমার ঐ ফোনটাতে একটা রিং দাও। এটার চার্জ প্রায় শেষ।
নায়কের দ্বিতীয় ফোন এবার বেজে উঠলো। এবার নায়ক আগেই সেটার রিংগার অফ করে রেখেছিলেন।
- আমি... আমি ফারুককে মেরে ফেলেছি।
= এবার কি করবে?
- এবার লাশটাকে কম্বলে মুড়িয়ে গাড়িতে করে পুর্বাচলের ব্রিজের কাছে ফেলে আসবো।
= ভোর কিন্তু হয়ে আসছে।
- হ্যাঁ হ্যাঁ আমি যাচ্ছি।
= আমি ফার্স্ট ফ্লাইটেই চলে আসবো।
নায়ক এবার আরেকটা নাম্বারে ডায়াল করলেন।
= হ্যালো। গুলশান থানা? ওসি সাহেব বলছেন?
_ জ্বি বলছি।
= দেখুন আমি অভিনেতা মাহির হুসাম বলছি। কিছুক্ষণ আগে আমাকে আমার বন্ধু ফারুক এর স্ত্রী ফোন করেছিলেন। উনি বলছিলেন উনি নাকি আমার বন্ধু ফারুক কে খুন করেছেন। এখন নাকি নিজের গাড়িতে করে তার লাশ ফেলতে যাচ্ছেন পুর্বাচল ব্রিজের ওখানে। একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আমি ব্যাপারটা আপনাকে জানানো কর্তব্য মনে করছি।
_ ঠিকাছে স্যার, আমি ব্যাপারটা দেখছি। আপনি আমাকে শুধু বাসার ঠিকানাটা বলুন।
অনেক দিনতো নায়লার সাথে কাটলো। এবার তার এগিয়ে যাবার পালা, কে পুরোনো গ্ল্যামারলেস নায়িকার সাথে বাকি জীবন কাটাবে?
নায়ক কথা শেষ করে আগের সেট থেকে সিম বের করে ভেঙ্গে ফেলে বাথরুমে গিয়ে ফ্ল্যাশ করে দিলেন। তারপরে শোবার ঘরে ফিরে গাউন খুলে আবার কম্বলের তলে ঢুকে পরলেন।
পাশ থেকে মেয়েটা জিজ্ঞাসা করলো কে ছিলো মেয়েটা?”
নায়ক বললেন মেয়ে না তো, এক প্রযোজক। উনার সাথে একটা সিনেমার ডিল পাকা করলাম
মেয়েটা মৃদু হাসির সাথে বললো এই না, না। ওখানে না। যাহ।
ধীরে ধীরে দুজনের নিঃশ্বাস ঘন হয়ে আসলো।

ভ্রমন সঙ্গী ছারপোকা









নীর কিছু সময় ধরে একটা বিষয় লক্ষ্য করছে যে দুটি মেয়ে একটু পর পর তাকে দেখছে আর হাসতাছে ব্যাপারটা নীরের কাছে কেমন যেন খটকা লাগছিল  অনেক চিন্তা-ভাবনা আর খোঁজাখুঁজি করার পরেও কারনটা বুঝতে পারলোনা নীর কেমর একটা অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্যে পরেছে সে বলে বোঝানো যাবে না ছেলে মানুষ হাঁসলে সমস্যা হতো না, তাকে দেখে মেয়েরা কেন হাসছেবাস চলে আসাতে সে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলো এমন ভাব অনেক দিন পরে ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাচ্ছে সে বাসের সিটে বসে বাড়ির কথা মনে করে বেশ ভালোই লাগছিলো নীরের হঠাৎ করে মেয়ে দুটোর দিকে দৃষ্টি পরতেই মনটা আবার খারাপ হয়ে গেল মেয়ে দুটোও যাবে একই বাসে সে কথা ভাবতেইবাসের সিটটাকে তার কাছে উনানের মতো মনে হচ্ছে মেয়ে দুটো তাকে যেন উপহাস করছে বার বার তার সার্টের দিকে তাকাচ্ছে আর হাসছে ওরা  নীরের মনে হলো তার পুরনোময়লা কাপর দেখেই মনে হয় হাসছে মেয়েরা  নীর নিজেকে মানিয়ে নিল, গরীব বলে আরো কতবার অপমানিত হয়েছে সেগুলোর সাথে   নীর অসহায় ভাবে তাকালো মেয়ে দুটোর দিকে তার চোখের চাহনি যেন বলছে আমাকে আরও উপহাস করা! মেয়ে দুটোও এবার থেমে গেল ওরাও যে নীরের চোখের ভাষা পড়তে পেরেছে বিষাদ মন নিয়ে বসে থাকতে থাকতে কখন যেন ঘুমিয়ে পরেছে বুঝতেই পারেনি   মেয়ে গুলোও তখন থেকে চুপ করে বসে আছে তারা বুঝতে পেরেছে যেতাদের মজা করা নিয়ে ছেলেটা বেশ কষ্ট পেয়েছে কিন্তু তাদেরও তো এতে কোন দোষ নেই! দোষ তে সব পুচকে ছারপোকার সেই তো বার বার উকি দিচ্ছিলো নীরের সার্টের কলার থেকে, যেন মেয়ে দুটোর সাথে লুকোচুরি খেলছিলো মেয়ে দুটো তাকালেই লুকিয়ে পরছিলো সার্টের কলারে মেয়েরা সিদ্ধান্ত নিলো নীরের সাথে তাদের ভুল বোঝাবুঝি দুর করা দরকার   বাস যখন মাঝ রাস্তায় যাত্রা বিরতি দিলো একটা কোমল হাতের স্পর্শে নীরের ঘুম ভাঙ্গলো সে অবাক হয়ে দেখলো একটা মেয়ে তার পাশ্বে আর আরেক জন দুই হাতে ঢেকে কিছু একটা নিয়ে দাড়িয়ে আছে হাত খুলে হঠাৎ করে মেয়েটা চিৎকার করে বলে উঠলো আমাদের হাসার কারন তুমি না, এই পুচকে ছারপোকা! মেয়ে দুটো কৌতুহলেরর সাথে জিঙ্গাসা করলো এটা কোথা থেকে এলো? নীর লজ্জিত ভাবে বললো আর আমি এক সাথেই থাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের গন রুমে আমাদের পরিচয় সম্পর্কের শুরু সম্পর্ক রাগ, অভিমান বা ভালোবাসার নয়, সম্পর্ক রক্তের! রক্তের টানের কারনেই হয়তোবা আমাকে একা ঈদ ভ্রমন করতে দিতে চায়নি, সেও সঙ্গী হয়েছে আমার বাড়ি ফেরার

অভিশপ্ত রজনী

  মৃত মেয়েটিকে ধর্ষণ করার সময় মেয়েটি যে জীবিত হয়ে ওঠে সেটা খেয়াল করেনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় কাব্য।ধবধবে সাদা চামড়ার মেয়েটিকে ভোগ করার...