Monday, 16 September 2019

রাস্তায় অচেনা কোন মানুষের সাথে পরিচয় হলে আমরা কি করি?

রাস্তায় অচেনা কোন মানুষের সাথে পরিচয় হলে আমরা জিজ্ঞাসা করে জানতে চাই, মানুষটা কী করেন, কোথায় থাকেন, বিবাহিত নাকি অবিবাহিত, পরিবারে কে কে আছেন ইত্যাদি। আপনি কী হিন্দু , বৌদ্ধ, নাকি মুসলমান এই সব প্রশ্ন সচারচর আমরা করিনা কেননা মানুষটা যে ধর্মেই বিশ্বাস করুক না কেন এ নিয়ে আমাদের কিছুই আসে যায় না। আমরা সব ধর্মের মানুষেরা একসাথে একই শহরে একই এলাকায় একই বিল্ডিং এ থাকি।
আমাদের অনেক সমস্যা থাকতে পারে তবে ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে আদৌ কোন সমস্যা নেই।এই সমস্যা গুলো সব চাইতে বেশি আছে বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্র গুলোর ভেতরেই। কিছুদিন আগে ইসরাইল আইন করে সেখানকার মসজিদ গুলোতে আযান দেয়া নিষিদ্ধ করেছে। কেন এরকমটা করেছেন , তাদের যখন প্রশ্ন করা হল; তাদের উত্তর শুনে আমার মনে হল আমি হয়ত ভুলে টিভিতে মিরাক্কেলের কোন জোকস্ শুনছি ! তারা বলেছে, তারা ইসলাম ধর্মের পাশা পাশি সব ধর্মের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু যেহেতু আযানের শব্দে তাদের ঘুমের অসুবিধা হয় তাই আযান নিষিদ্ধ করা হয়েছে- অন্য কিছু না !!
ফ্রান্সে আইন করে বোরকা পড়াকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেখানে কেউ বোরখা পড়লে ৩২ হাজার মার্কিন ডলার জরিমানার বিধান আছে আইনে। প্রথমে ফ্রান্স শুরু করলেও পরবর্তীতে বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ড , স্পেনেও ' বোরখা ' নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই নিষিদ্ধ তালিকায় স্পেনের নাম দেখে আমি সব চাইতে বেশি অবাক হয়েছি কেননা স্পেন এমন একটা দেশ যেখানের মানুষ আইন করে রাষ্ট্রীয় ভাবে প্রকাশ্যে উলঙ্গ থাকাকে বৈধতা করেছে ; এই জাতি যেসময়ে ন্যুডিস্ট আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিল তখন তাদের যুক্তি ছিল - নগ্ন থাকাটা তাদের ব্যাক্তিগত অধিকার ! তারাই কিনা আবার বোরখা নিষিদ্ধ করে !
ক্ষমতায় এসেই বিশ্বের সাতটি মুসলিমপ্রধান দেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সাথে ট্রাম্পের পুত্র সিরীয় শরণার্থীদের 'ক্যান্ডি'র সাথে তুলনা করে বুঝিয়ে দিয়েছেন সে তার অপদার্থ বাবার যোগ্য সন্তান। আমরা কিন্তু নাইন ইলেভেনে পশ্চিমাদের লাশের ছবি দেখে কেঁদেছিলাম।
জঙ্গি কিংবা সন্ত্রাসবাস সমস্যা সারা পৃথিবীতেই ছড়িয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত পৃথিবীর একটাও মুসলিম রাষ্ট্র এই জঙ্গিবাদকে স্বীকৃতি দেয় নি। কিন্তু কোথাও একটা জঙ্গি হামলা হলেই পশ্চিমা বিশ্বের ইমিগ্রেশন গুলোতে সাধারণ মুলসমানদের হয়রানী করা হচ্ছে। দাড়ি কিংবা টুপি পরিহিত কাউকে দেখা মাত্রই এমন আচরণ করছে- যেন মাফিয়ার কোন ছদ্মবেশী ডন তাদের সামনে দাড়িয়ে আছে !
গত কয়েকদিনে যখন আমাদের দেশের সিলেটে কিংবা ব্রিটিশ পার্লামেন্টে জঙ্গি হামলা হয়েছে তখন আরও কয়েকটি বড় বড় সন্ত্রাসী হামলাও হয়েছে। যেমন আজই যুক্তরাষ্ট্রের সিনসিনাটির একটি নৈশক্লাবে আততায়ী বন্দুকধারীদের গুলিতে একজন নিহত ও অন্তত ১৪ জন আহত হয়েছে। গতকালের প্রথম আলোতে দেখলাম, আততায়ী বন্দুকধারীদের গুলিতে সুইজারল্যান্ডের একটি ক্যাফেতে দুইজন নিহত হয়েছে।
এখন সেই সব বন্দুকধারীরা কিন্তু মুসলমান না।
তারা যে অপকর্ম করেছে এজন্য যদি তারা যে ধর্মে বিশ্বাসী সে ধর্মের সমস্ত মানুষ কিংবা দেশের উপর জঙ্গিবাদের ট্যাগ লাগিয়ে দেয়া হয় সেটা যেমন একটা হাস্যকর সিদ্ধান্ত হবে; একবিংশ শতাব্দীতে আমাদের সাথে ঠিক সেটাই করা হচ্ছে !! সন্ত্রাসের কোন ধর্ম নেই কেননা কোন ধর্মেই মানুষকে হত্যা করার ফতোয়া দেয়া হয়নি।
পবিত্র কোরআনের একটি আয়াত দিয়ে শেষ করছি।
'আমি বনী ইসরাঈলের ওপর এই হুকুম দিলাম যে, যে ব্যক্তি কাউকে হত্যা করা কিংবা যমীনে ফাসাদ সৃষ্টি করা ছাড়া যে কাউকে হত্যা করল, সে যেন সব মানুষকে হত্যা করল। ’ [সূরা মায়েদা, আয়াত : ৩২]

সুখী মানুষেরা কখনো রাত জাগে না..

সুখী মানুষেরা কখনো রাত জাগে না..
রাত জাগে 'ভালো আছি'
মুখোশপড়া মানুষজন...
যাদের মন খারাপের গল্পগুলো কেউ
শুনতে চায় না..
জানতে ও চায় না.....

তুমি একটা মানুষকে ততক্ষণ পর্যন্ত ভালোবাসার অধিকার রাখো যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি তাকে একশো ভাগ বিশ্বাস কর

তুমি একটা মানুষকে ততক্ষণ পর্যন্ত ভালোবাসার অধিকার রাখো যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি তাকে একশো ভাগ বিশ্বাস কর। একশো ভাগ বিশ্বাসের ভেতরে যদি এক ভাগ অবিশ্বাস ঢুকে পড়ে তাহলে সেটা একশো ভাগ অবিশ্বাস হয়ে যায়। এক গ্লাস বিশুদ্ধ পানির ভেতরে এক ফোঁটা নোংরা পানি মেশালে যেরকম গ্লাসের সব পানি নোংরা হয়ে যায়; অনেকটা সেরকম।

সব চাইতে আপন মানুষের মৃত্যুতে মানুষ কখনো কাঁদতে পারে না; কেননা সেটা সে নিজে !

সব চাইতে আপন মানুষের মৃত্যুতে মানুষ কখনো কাঁদতে পারে না; কেননা সেটা সে নিজে !

কখনো হীনমন্যতায় ভুগবে না।

কখনো হীনমন্যতায় ভুগবে না। এই পৃথিবীর কাছে তোমার গুরুত্ব অনেক। তুমি শুধু একজনই; সেটা তুমি। কোটি কোটি মানুষ থাকতে পারে তবে তোমার মত একটা মানুষও নেই।
তোমার আঙুলের ছাপ আর কারো সাথে মিলবে না।তুমি যেভাবে নিচের ঠোঁট উল্টো করে কাদো; ঠিক এভাবে আর কেউ কাঁদে না। তুমি যেভাবে দুঃখ পাও, যেভাবে ভালোবাসো; তোমার মত করে আর কেউ এভাবে ভালোবাসে না। তুমি শুধু একজনই; সেটা তুমি।
তিলে তিলে কষ্ট পেয়ে মরে যাবার জন্য তোমার জন্ম হয়নি। তুমি তোমার কষ্ট গুলোকে মেরে ফেলতে পারবে না তবে তুমি চাইলেই নিজেকে তিলে তিলে মেরে ফেলার হাত থেকে বাঁচাতে পারো। তোমাকে পাথরের মত শক্ত হতে হবে যেখানে তলোয়ার দিয়ে আঘাত করলে তলোয়ার মচকে যাবে; পাথরে দাগ হবে; ভাঙ্গবে না /

ধুলাবালির মত মুছে যাব আমি!!

তারাবাতি আর জ্বলবে না!!
তামাক পাতা কেও ধরাবে না!!
পাখি উড়বে না!!
সে আমারে আমার হতে দিবে না!!
দুশো ছ রাত ঘুম হবে না!!
ধুলাবালির মত মুছে যাব আমি!!
আমার আকাশে একাই থেকে যাব আমি!!!!!

মদের বোতল কখনও পিঁপড়ায় ধরে না

"মদের বোতল কখনও পিঁপড়ায় ধরে নাহ!!"
আমার এই কথার মানে বুঝি নিও।
এই কথার গভীরতা অনেক বেশি; দেখিও বুঝতে যেয়ে যেন
তলিয়ে না যাও...

আমি মরে গেলে সে কান্না করবে না।

আমি মরে গেলে সে কান্না করবে না।
শুনলাম আমার জীবনের চাইতে তার কাজলের দাম বেশি।।।

একটা ডেথ সার্টিফিকেট

হঠাৎ দরজায় ঠকঠক শব্দ। দরজা খুলতেই দেখি ত্রিশ পয়ত্রিশ বছরের এক যুবক হাঁপাতে হাঁপাতে বলছে, ভাই আপনার আম্মুর কাছে এসেছি। তার মুখে ভাবলেশহীন চাহনি, টিনের চালে পানি জমে গেলে বৃষ্টি থেমে যাবার পরেও যেভাবে থেমে থেমে বৃষ্টির ফোঁটা পড়ে অনেকটা সেভাবে কপাল থেকে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে জমে কিছুটা বিরতি নিয়ে টপ করে ফ্লোরের উপর পড়ছে।
সে এসেছে একটা ডেথ সার্টিফিকেট জন্য। ঘণ্টা তিনেক আগে তার বাবা মারা গেছে। কথাটা শোনার পর আমার চোখে একটা দৃশ্য ভেসে উঠল, সেটা হল আম্মু যখন আসছিল তখন সে একটা চাপা হাসি দিয়ে বসা থেকে উঠে দাড়িয়েছিল। তার এই সৌজন্যমূলক আচরণ এবং ঘণ্টা তিনেক আগে বাবা মরে যাবার শেষ বাক্য, এ দুটোকে আমি একসাথে করে কোনভাবেই মেলাতে পারছিলাম না। বাস্তবতা এতই কঠিন যে, কখনো কখনো আপনাকে বাবা মারা যাবার একশো আশি মিনিটের মাথায় আসমান জমিন এক করা শোকের চিৎকার থামিয়ে মানুষের বাড়ি গিয়ে বিরতি দিয়ে তিনবার দরজায় কড়া নেড়ে সোফায় বসে অপেক্ষা করে মেপে মেপে সৌজন্যমূলক আচরণ করতে হবে।
আমি ভেবেছিলাম বাইরে থেকে দেখে তাকে শক্ত মনে হলেও ভেতরে ভেতরে নিশ্চয়ই সে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে। আশ্চর্য হয়ে লক্ষ করলাম তার ব্রেইন অত্যন্ত সচল। ডেথ সার্টিফিকেটে গ্রামের নাম, ডাক ঘরের নাম লিখতে হয়। জিজ্ঞাসা করা মাত্রই নিখুঁতভাবে জবাব দিয়ে যাচ্ছে। কখনো কখনো নিজ থেকে কিছু সাজেশনও দিচ্ছে, এই যেমন বর্তমান ঠিকানায় বাড়ি ওয়ালার নাম সংযোজন করতে বলল যাতে করে সহজেই ইনভেস্টিগেশন করা যায়।
জানাজা থেকে কবর দেবার খরচাপাতির বিষয় নিয়ে দুবার তাকে ফোনে কথা বলতে দেখলাম। খরচাপাতি যোগাড় করার বাক্যলাপ,বাড়ি ওয়ালার নাম সংযোজন অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত হওয়া স্বত্বেও কোথায় যেন আমাকে বেশ পীড়া দিল। আমি বরং এভাবে চিন্তা করি যে, জীবনের এত গুলো বছর কাটানো দিন গুলোর কথা ভেবে প্রবল শোকে সে হামাগুড়ি দেবে। দু হাত দিয়ে বুক ধাপড়াতে ধাপড়েতে চিৎকার করে বলবে ' আমার বাপ আসলে মরেনি' !!
প্রচণ্ড মায়া এবং কৌতূহলের কারণে আমি তাকে খুব মন দিয়ে বোঝার চেষ্টা করলাম। তার চুপ করে বসে থাকা, তার কথা বলা, কথার ব্যাখ্যা কিংবা অন্যসব কিছুর চাইতে আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে তার চোখ দুটো। যেন আমি ভলিউম মিউট করে কোন একটা মুভি দেখছি। শব্দহীন সেই আলোকচিত্রে অদ্ভুদ এক রহস্য উদঘাটন করলাম।
সে কথা বলতে বলতে হঠাৎ করেই ন্যানো সেকেন্ডের জন্য কোথায় যেন হারিয়ে যায়। চোখ দুটা কেমন ঝাপসা হয়ে ওঠে। একটা আঙুল মুখের কাছে এনে দুটা চোখের মনি এক করে তাকালে যেরকম দুটা আঙুল দেখা যায়; আচংকা কথা বলতে বলতেই চোখের সেই অন্যমনস্ক রূপটা বের হয়ে আসে।
কথা বলতে বলতে হঠাৎ করেই কথার খেই হারিয়ে ফেলে। কিছুক্ষণ চুপ থেকে যেন হঠাৎ জ্ঞান ফিরে পেয়েছে এমন একটা ভাব করে তার সামনের মানুষটাকে জিজ্ঞাসা করে - '' কী যেন বলছিলাম ? ''
বাস্তবতা এতই নির্মম যে সে কখনো কখনো আপনাকে ঠিকভাবে কান্না করার সুযোগও দেবে না। এই যে চারপাশে এত এত মানুষ আপন মানুষদের হারিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, বাইরে থেকে দেখে মনে হবে মানুষটা হয়ত এই শোক কাটিয়ে উঠেছে। এই তো সব কাজ নিজেই করছে। শুধু সেই জানে রাস্তা পার হতে গিয়ে, জগ থেকে গ্লাসে পানি ঢালতে গিয়ে কিংবা কথা প্রসঙ্গে হাসতে হাসতেই হঠাৎ করেই ন্যানো সেকেন্ডের জন্য কোথায় যেন হারিয়ে যায় সে। এক একটা মানুষ যেন রক্ষণাবেক্ষণহীন প্রাচীন দেয়ালের মত; বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই সামান্য ধাক্কা দিলেই সেটা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে।
 

স্বেচ্ছায় জীবন দান আর স্বেচ্ছায় হেরে যাবার ভেতরে পার্থক্যটা হল এখানে গলায় ফাঁস হবে কিন্তু খুন হবে না কেউ.

আলোকসজ্জা রাতে তোমার হাতে যে ফুল শোভা পেয়েছিল, বাগানের মালি গাছ থেকে ফুলটি ছেঁড়ার সময় আরও কিছু ফুল নষ্ট করেছিল।
পাপড়ি গুলো উপর থেকে বাতাসে নামতে নামতে এদিকে সেদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বাগানের মালির পদধূলিতে পিষে গিয়েছিল। একই গাছে পিঠাপিঠি বড় হওয়া ফুল- তবু পরিণতি কত ভিন্ন !! অবিকল মানুষের মত !!
এই যে এত তলোয়ার- খঞ্জর, দর কষাকষি; সবাই কী কেবল জিততে চায় ? কেউ কী নেই- যে ক্লান্ত হয়ে খেলা ছেড়ে দিয়েছে ??
ম্যারাথন রেসে প্রত্যেকেই জিততে চায়। যে সবার চাইতে এগিয়ে সে জিততে চায়; বিজয়ী হবার জন্য। সবার চাইতে পিছিয়ে যে দৌড়াচ্ছে - সে জিততে চায় টিকে থাকার জন্য। প্রত্যেকটি প্রতিযোগীর গন্তব্য এক তবে উদ্দেশ্য আলাদা আলাদা।
সবাই কী কেবল জিততে চায় ? কেউ কী নেই যে হাঁপিয়ে উঠেছে ?? মাঝ রাস্তায় খেলা ছেড়ে গ্যালারীতে বসে তাকিয়ে আছে স্কোর বোর্ডের দিকে !! প্রত্যেকের জীবনেই হয়ত এরকম কিছু সময় আসে যখন কেবলই তাকিয়ে তাকিয়ে দেখা ছাড়া করার কিছু থাকে না।
অনেক দিন পর জীবনানন্দ দাশকে স্মরণ করছি...
''আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ বসে অপেক্ষা করবার অবসর আছে।
জীবনের বিবিধ অত্যাশ্চর্য সফলতার উত্তেজনা
অন্য সবাই বহন করে করুক; আমি প্রয়োজন বোধ করি না !! ''
সবাই জেতার জন্য লড়ে না; নিশ্চিত পরাজয় জেনেও যে সৈন্য তলোওয়ার উঁচিয়ে রাখে; সে কিন্তু মুকুটের জন্য লড়ে না। সে লড়ে নিজের মাথাটাকে বাঁচাবার জন্য। পৃথিবীটা খুব অদ্ভুদ একটা জায়গা। এখানে খেলতে খেলতে কেউ খেলার বাইরে চলে যায় আবার কেউ অন্যের খেলা হয়ে যায়। অবিকল ফুলের মত !! ম্যারাথন রেসের এক একটা প্রতিযোগীর মত - যাদের গন্তব্য এক তবে উদ্দেশ্য আলাদা আলাদা।
এই তলোয়ার- খঞ্জর, দর কষাকষি'র শহরে সবাই জিততে চায় না। স্বেচ্ছায় জীবন দান আর স্বেচ্ছায় হেরে যাবার ভেতরে পার্থক্যটা হল এখানে গলায় ফাঁস হবে কিন্তু খুন হবে না কেউ... !!

আমার স্ত্রী'' অর্থাৎ ''ও আমারই''

মানুষটা যখন তোমার চোখের সামনে দাড়িয়ে থাকবে এবং তখন যদি তুমি তার দিকে তাকিয়ে থাকো সেটা হল বিশ্বাস। মানুষটা যখন চোখের আড়ালে থাকবে এবং তখনো যদি তুমি তার দিকে তাকিয়ে থাকো সেটা হল ভালোবাসা।
লেখক হুমায়ূন আজাদ 'আমার অবিশ্বাস' গ্রন্থে বিশ্বাসের সংজ্ঞা দিয়ে গিয়ে লিখেছেন - বিশ্বাসের উৎপত্তি সংশয় থেকে। যেটা প্রমাণিত সেটা আলাদা করে বিশ্বাস করার কিছু নেই।
জীবনের সব ডাইমেনশনকেই আমরা যুক্তির প্যারামিটারে ফেলে বিচার করি। সত্য আর রিয়্যালিটি কিন্তু এক জিনিস না। কবি জয় গোস্বামী এর সুন্দর একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
রিয়্যালিটি হচ্ছে বাইরে ঝকঝক করছে সূর্য। আপনি যদি বলেন সূর্যের চেয়েও হাজার গুণ শক্তিশালী জ্যোতিষ্ক আছে,কিন্তু তাদের তো দেখা যাচ্ছে না। তার মানে তারা নেই। এটাই রিয়্যালিটি। সত্য কি ? সত্য হল তারা আছে। সূর্যের জন্য দেখা যাচ্ছে না।
মানুষ যে অফিসে যায়, নোংরা রাজনীতি করে, এর ওর পেছনে কথা চালাচালি করে- ওটা সত্য না, ওটা আসলে রিয়্যালিটি। সত্য হল দিন শেষে এরা প্রত্যেকে হাহাকার করে।
রবীন্দ্রনাথের '' ঘরে বাইরে'' পড়ে থাকলে যে সত্যটা চিরদিন বিশ্বাস করে এসেছিলেন সেই বিশ্বাসেই ফাটল ধরবে।
এই যে আমরা বলি '' আমার স্ত্রী' এই 'আমার স্ত্রী' শব্দটাই কিন্তু তাকে কোনদিন আমার হতে দেবে না।
'' আমার স্ত্রী'' অর্থাৎ ''ও আমারই'' !! ও যদি বলে '' না, আমিই আমার'' তখন আমি বলব সে কেমন করে হয় '' তুমি যে আমার স্ত্রী''
এই কথাটার মধ্য দিয়ে আস্ত একটা মানুষকে তালা বন্ধ করে রাখা যায় !!

বিয়েতে প্লাস্টিকের ফুল

সেদিন এক বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে গেটে মোড়ানো একটা ফুল ছিড়তে গিয়ে বেকুব বনে গেলাম। বিয়েতে প্লাস্টিকের ফুল কেন ! ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের একজনের কাছ থেকে জানতে চাইলাম। সে জবাব দিল, বাসর রাতের ফুলও আজকাল বাহারি রকমের প্লাস্টিক দিয়ে সাজানো !!
খাবারের টেবিল গুলোতে দেখলাম ভদ্র লোকেরা স্যুট টাই গায়ে লাগিয়ে চেয়ারের পিঠ ধরে দাড়িয়ে আছেন। একজন চেয়ারে বসে খাবার খাচ্ছেন আরেকজন চেয়ারের পিঠ ধরে মনে মনে আশা করছেন , এই লোকটা যেন বেশি খাবার না খায়। তার খাবার শেষ হলেই তার সিরিয়াল আসবে... !!
সব শেষে কনের সামনে গিয়ে বসলাম। লম্বা ঘোমটা দিয়ে মাথা নিচু করে বসে থাকা চিরাচারিত লজ্জাবতী কনেও যেন বদলে গেছে ! ফোন কানে নিয়ে দাঁত বের করে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছেন। সেলফী তুলছেন। একটু পর নাকি লাইভে আসবেন; দেখো তো কান্ড !!

স্মৃতি খুব খারাপ জিনিস।

আমরা সাধারণত কাউকে বিশ্বাস এবং অবিশ্বাস কোনটাই করিনা। অর্ধেক বিশ্বাস এবং অর্ধেক অবিশ্বাস নিয়ে এগোতে থাকি। একসময় যাকে সম্পূর্ণ বিশ্বাস করা হয় দেখা যায় সে মানুষটাই সম্পূর্ণ অবিশ্বাসের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।
তুমি এমন একটা মানুষকে ভালোবাসো যে মানুষটাকে তুমি বিশ্বাস কর না। মানুষটা যখন চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলে তখনও মিথ্যা বলে। কসম কেটে কেটে বুক চাপড়িয়ে তোমাকে ফেলে চলে যেতে তার বুক কাঁপে নি।
মানুষটা খারাপ। প্রতারক। মিথ্যাবাদী। তবু মানুষটার চোখের দিকে তাকালে কেমন মরে যেতে ইচ্ছে করে। মনে হয় এর জন্মের সময় তুমি পাশেই বসে ছিলে। শীতে যখন কাঁপুনি আসত তুমি কোলে নিয়ে উঠানের রোদে গা শুকিয়ে দিয়েছিলে।
তুমি নিজেই তোমাকে প্রতারকের সাথে থাকতে দেবে না। তুমি প্রতারক ঘৃণা করো কিন্তু মানুষটাকে ভালোবাসো। শেষমেশ কী হবে বল ?
তুমি হয়ত মানুষটার সাথে থাকছো না আর। যোগাযোগ নেই অনেক দিন। শুধু রাতে সবাই ঘুমিয়ে গেলে লাইট বন্ধ রুমে একা একা তোমার কান্না আসবে। আসবেই। এটা তুমি থামাতে পারবে না। সম্পর্কের কোন শেষ নেই; শেষের পর একটা রেশ থাকে।
এই রেশটা যখন মুছতে শুরু করবে , তুমি একটু আকটু সুস্থতা বোধ করবে ঠিক তখনই হঠাৎ একদিন পুরনো স্মৃতি এসে তোমাকে আবার জ্বালিয়ে দিবে। অনেকটা ঘা এর মত। শরীরের ঘা যখন শোকাতে শুরু করে ঠিক তখন ফু দিলে দেখবে ব্যাথায় আবার ঘা এর অংশটা জ্বলে উঠছে।
স্মৃতি খুব খারাপ জিনিস।
সবাই তোমার সাথে বেইমানী করলেও স্মৃতি কখনো বেঈমানি করবে না। মানুষ আসবে। মানুষ যাবে। মানুষটা বেঈমানি করে চলে গেলেও তার স্মৃতি গুলো তার সাথে যাবে না। থেকে যাবে। এইখানেই... জ্বালা... এইখানেই ঘা... এইখানেই সম্পর্কের রেশ।

প্রশ্নপত্র ফাঁস

মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী বলেছেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস হলে যারা এ চক্রের সাথে জড়িত এবং যারা জড়িত না সবাইকেই আবার পরীক্ষা দিতে হবে !!
স্কুল লাইফের একটা মজার কথা মনে পড়ল। আমাদের ক্লাসের দুজন মারামারি করে ক্লাসরুমের জানালার কাচ ভেঙ্গে ফেলেছিল। স্যার এসে জিজ্ঞাসা করলেন, কে কে মারামারি করেছে !
মার খাবার ভয়ে তারা চুপ করে বসেছিল এবং বন্ধুপ্রীতির কারণে আমরাও কেউ যখন তাদের দুজনের নাম বলছিলাম না তখন এক পর্যায় আমাদের সেই মানদাত্তা আমলের স্যার জালিবেত দিয়ে ক্লাসের সবাইকে কষিয়ে পেটালেন !! তারপর ঘামাতে ঘামাতে পকেট থেকে রুমাল বের করে বললেন '' যারা বিনা অপরাধে মার খেয়েছিস, কিছু মনে করিস না !!

এই পৃথিবীতে কোন কিছুই আসলে চিরস্থায়ী না- পৃথিবী নিজেও না।


সব চাইতে বড় কারাগার বোধহয় আকাশ। যেখানেই পালাও না কেন , মাথার উপরে একটা আকাশ লেগেই থাকবে। আর সব চাইতে ছোট কারাগার হল মানুষের মন। এত ছোট যে প্রবেশ করা যায় না।
সব চাইতে বড় ব্যাথা বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হওয়া না; সব চাইতে বড় ব্যাথা হল নিঃসঙ্গতার ব্যাথা। সে কিংবা তারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বলেই তুমি নিঃসঙ্গ।
Cast Away মুভিতে একটা দৃশ্য ছিল এরকম , নির্জন দ্বীপে প্রাণশূন্য এতটাই নিঃসঙ্গ এক মানুষ ছিল যে, জোয়ারের পানিতে একটা ফুটবলকে ভাসতে দেখে সে সেটা কুড়িয়ে নিল। তারপর পাথর দিয়ে বলের গায়ে চোখ মুখ নাক এঁকে কাল্পনিক এক মানুষ বানিয়ে সেটার সাথে কথা বলতে শুরু করল। সব কষ্টের মূলে এই নিঃসঙ্গতা। যদিও ইংরেজিতে একটা কথা আছে , Winners always stand alone ! বিজয়ীরা সব সময় একা থাকে।
আর সব চাইতে ছোট ব্যাথা ? সেটা তুমি এই মুহূর্তে পাচ্ছো। সময়ের স্রোতে সবই একদিন নিছক হয়ে ওঠে।  এই পৃথিবীতে কোন কিছুই আসলে চিরস্থায়ী না- পৃথিবী নিজেও না।

ক্রোধের আগুনে না পুড়লে সেটা কখনো ঘৃণা হত না।


একটা পছন্দের বস্তু অনেকদিন নাড়াচাড়া না করলে যেরকম ধুলো জমে যায়, অভিমান হল সেই ধুলোকনা। ঠিকমত যত্ন না নিলে সেখানে ধুলো তো জমবেই। যখনই জমতে শুরু করবে সাথে সাথে মুছে ফেলতে হয়।
এই ধুলো গুলো বাড়তে শুরু করলে তখন সেটা অভিমান থেকে অভিযোগ হয়ে যায়। অভিযোগের ভেতরে এক ধরনের জবাবদিহিতা থাকে, সূক্ষ্ম একটা প্রতিরোধ থাকে।
অভিযোগ যখন ন্যায়বিচার পায় না তখনই জন্ম হয় রাগের। যে রাগের বহিঃপ্রকাশ আছে সেই রাগ কমে যায় আর যে রাগের কোন বহিঃপ্রকাশ নেই; ভেতরে ভেতরে জমতে শুরু করে- সেই রাগ থেকে জন্ম হয় ক্রোধের ।
ক্রোধ খুব সাংঘাতিক জিনিস। একজন রাগান্বিত মানুষ যদি আপনাকে খুন করে ফেলে তখন সেটা সে রাগের মাথাতেই করে কিন্তু একজন ক্রোধে আক্রান্ত কেউ যদি আপনাকে খুন করে - তখন সেটা সে ঠাণ্ডা মাথায় করে।
আপনার উপর কারো একবার ক্রোধ জন্ম নিয়ে ফেললে সেটা কেবল ঘৃণাই জন্ম দেবে; অন্য কিছু না। সব কিছুরই দুটো দিক থাকে; সুন্দর এবং অসুন্দর। অভিমান থেকে জন্ম নেয়া ঘৃণা হচ্ছে সুন্দর ঘৃণা ! এই যে রাগ, অভিযোগ এসবই তো ভালোবাসার উপাদান।  ক্রোধের আগুনে না পুড়লে সেটা কখনো ঘৃণা হত না।

কেবলই সৃতিতে


স্কুল জীবনের দিন গুলো আজও সৃতির পাতায় দূরবর্তী অতীত হয়ে উঠে নি; কেবলই মনে হয় এই তো সেদিন...!!
আমাদের সময় প্রায় সব ক্লাসেই এরকম একজন থাকত যার নিকট আত্মীয়ের কেউ প্রায়ই বিদেশ থেকে এটা সেটা পাঠাত, এবং সেটা সে ক্লাসে নিয়ে এসে সবাইকে দেখাত। সবাই মুগ্ধ হয়ে দেখত, অতি উৎসাহী কেউ হাতে নিয়ে দেখত। সব ক্লাসেই আবার একজন চোর থাকত। যে অবশ্যই বিদেশীর জিনিস চুরি করে নিয়ে যেত।
এমন কেউ কী আছে যে জীবনে মুগ্ধ বিস্ময় ভালোলাগা নিয়ে কোন মেডামের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে নি ? সিলিং ফ্যানের দিকে তাকিয়ে ভাবেনি, ফ্যানটা খুলে পড়লে কার মাথায় গিয়ে পড়বে ? এমন কেউ কী আছে যে স্কুলের অলস দুপুরে বেঞ্চের উপরে কলম দিয়ে নিজের নামখানা লিখে রাখেনি ?? এই পৃথিবীতে মানুষ আসলে নিজের একটা অস্তিত্ব চায়। সে চায় কোথাও না কোথাও তার একটা অস্তিত্ব জিইইয়ে থাকুক... !!
প্রেমের মানদণ্ডে আমরা ভীরু কাপুরুষ ছিলাম, সাহস করে বলতে পারতাম না; যদি অপমানিত হই !! জীবনে কত সুড়ঙ্গ পথ পাড়ি দিয়ে ফেলেছি, কত ঝড় জলোচ্ছ্বাস কত ভুল মানুষের সাথে কাটিয়ে দিয়েছি- তবু সদ্য গজানো গোঁফ উঠা বালকের কাউকে দেখা মাত্র হার্টবিট কাঁপতে থাকা দিন গুলোই জীবনে শ্রেষ্ঠ রোমাঞ্চকর হয়ে থাকে !
এমন কেউ কী আছে যে স্কুলের দরখাস্তে বাবার সিগনেচার নকল করেনি ? পরীক্ষার রিপোর্ট কার্ডে কলম দিয়ে আঁকা আঁকি করে নাম্বার বাড়ানোর চেষ্টা করেনি ? নাম্বার কম পেলে আম্মুকে গিয়ে ' সবাই কম পেয়েছে' এই কথা বলেনি এমন কেউ কী নেই ?
আমাদের প্রত্যেকের স্যারের মার হজম করার নিজস্ব নিজস্ব পদ্ধতি ছিল। শরীর টাইট করে বেত্রাঘাতের অপেক্ষায় সিরিয়াল ধরে দাড়াতাম। কেউ হাতের তালু শক্ত করে রাখত, কেউ দুখী দুখী মুখ করে চেষ্টা করত স্যারের সিম্পেথি পাবার । কেউ আবার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যেত, বেত্রাঘাত তো দূরের কথা, একে এখনি ডাক্তারের কাছে নিতে হবে
আমাদের সময় 'পরীক্ষায় বন্ধু চেনা যায়' জাতীয় একটা প্রবাদ ছিল। কিছু হারামি থাকবেই যারা সারা বছর টিফিনে ভাগ বসিয়ে পরীক্ষার সময় চোখ রাঙিয়ে ফেলত। সব ক্লাসেই একজন থাকত যে সব সময় স্যান্ডেল পায়ে দিয়ে আসত এবং নিয়ম মাফিক পিটি স্যারের উত্তম-মধ্যম খেতে খেতে শপথ করত - কালকে থেকে জুতা পায়ে দিয়ে আসবে।
এখন মাঝে মাঝে সকালে বের হলে, ব্যাগ কাঁধে নিয়ে হাফ প্যান্টে ইন করা শার্টে ছেলেদের দেখতে পাই। দেখলে মনে পড়ে- একসময় আমিও এরকম কাক ডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠতাম। চুল আঁচড়িয়ে আগের দিন রাতে গুছিয়ে রাখা বই নিয়ে বের হতাম। রোল কলের সময় চিৎকার করে ' প্রেসেন্ট স্যার ' বলা অন্যরকম এক জীবন ছিল। যে জীবন স্কুল পালিয়ে খাঁ খাঁ রোদে রাস্তায় চষে বেড়িয়েছে।  যে জীবন শফি চাচার এক টাকার চানাচুর পয়সা না দিয়ে খেয়ে এসেছে ...! আচমকা প্রেমে পড়েছিল, যে জীবন।  
এখন তাদের সাথে দেখা হলে আমি পালিয়ে যাই। কিছু মানুষ কেবলই সৃতিতে সুন্দর  কেবলই সৃতিতে !!

Sunday, 15 September 2019

বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ




প্রায়ই পত্রিকায় "বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ' নাম দিয়ে এক ধরণের নিউজ দেখা যায়।
এই নিউজগুলো দেখে আমি একটু বিরক্তই হই। কারণ কথাটা আমার কাছে পরস্পরবিরোধী মনে হয়। কেন? বলছি। প্রথমে দেখা যাক ধর্ষণ এর সংজ্ঞা কি:
অধিকাংশ বিচারব্যবস্থায় ধর্ষণ বলতে, "কোনো ব্যক্তি কর্তৃক অন্য কোনো ব্যক্তির অনুমতি ব্যতিরেকে তার সঙ্গে যৌনসঙ্গমে লিপ্ত হওয়া কিংবা অন্য কোনোভাবে তার দেহে যৌন অনুপ্রবেশ ঘটানোকে বুঝায়।"
এখন এই ঘটনা ভাবুন,

কোন পুরুষ একজন নারীর সাথে রিলেশনশিপ এ আছেন। প্রেমিক পুরুষটি যথাযথ সময় পর তার প্রেয়সীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে চাইলেন। প্রেয়সী রাজি হলেন। তবে একটা শর্ত দিয়ে যে, তাকে গ্যারান্টি দিতে হবে বিয়ে করার। প্রেমিক মহাশয় রাজি হলেন। এবং তারা করলেন শারীরিক সম্পর্ক। এবং তাদের সম্পর্কও চালিয়ে যেতে থাকল। সম্পর্ক ভালই চলছিল এবং কিছুদিন পর কোন এক কারণে তাদের ব্রেকাপও হয়ে গেল। ধরুন ব্রেকাপটা পুরুষটিই করল কোন কারণে।

আমাকে এবার বলুন। এটা কি ধর্ষণ??
এখানে তো সম্মতি দেয়াই হয়েছে। আর এই ধরণের শর্ত দিয়ে যৌনসঙ্গমকে আমি ধর্ষণ বলতে রাজি না। বড়জোর এটাকে হয়ত প্রতারণা বলা যেতে পারে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আমার নারী ও পুরুষ উভয়ের কাছেই কিছু বলার আছে।
বিয়ের আগে আপনার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে হলে যদি বিয়ের প্রতিশ্রুতি লাগে তাহলে আমার মনে হয় না আপনার বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্কে জড়ানো উচিত হবে। কারণ রিলেশনশিপ যে টিকেই থাকবে এটা কেউ গ্যারান্টি দিতে পারে না। অনেক সময় পাঁচ ছয় বছর রিলেশনশিপ এ থেকেও কেউ কাউকে সত্যিকার অর্থে বুঝতে পারে না। তাই সম্পর্ক হলেই যে এটা বিয়ে পর্যন্ত গড়াবে সেটা ধরে নেয়া হবে বোকামি। আমাকে বলুন, শুধুমাত্র শারীরিক সম্পর্কের কারণেই কি কাউকে বিয়ে করে ফেলা উচিত??
যদি সেই লোকটা আপনার সাথে কম্পাইটেবল না হয় তবে? এমন কাউকে আপনি বিয়ে করতে চান যাকে আপনি "বাধ্য" হয়ে বিয়ে করছেন বা সদিচ্ছায় করছেন না??
শুধুমাত্র "ওকে আমার সব দিয়ে দিয়েছি। তাই ও চোর বাটপার, চিট যাইই হোক ওকে বিয়ে করতে হবে।" এই ধরণের মেন্টালিটিতে আমার গা গুলিয়ে আসে।
কারণ,You are not a thing. You are a human being. কারো সাথে যৌনসঙ্গম করা মানেই তাকে "সব দিয়ে দেয়া" নয়। তাই এই ধরণের মেন্টালিটি ত্যাগ করুন।
যদি শারীরিক সম্পর্ক করতে চান তাহলে এই কথাটি মাথায় নিয়েই করুন যে এই সম্পর্ক হয়ত নাও ঠিকতে পারে। আর যৌনসম্পর্ককে যদি খুবই Sacred কিছু ভাবেন তাহলে আপনি বিয়ে পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। You can't have it both ways.... It's just a fact.
যদি এইরকম শর্তের মুখোমুখি হন তাহলে, প্রথমত আপনার দেখতে হবে,
১) এই রিলেশিনশীপে দুজনের লক্ষ্য ও প্রত্যাশা কি একই রকম?
২) শারীরিক সম্পর্ক আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ?
৩) এবং, এই শর্ত মেনে নিয়ে কাজটি করতে পারবেন কিনা?
যদি প্রত্যেকটি প্রশ্নের উত্তর হ্যাঁ হয়। তাহলে বলব, Go ahead. আর যদি একটা প্রশ্নের উত্তরও না হয়।  তাহলে আমি বলব ভাই, "Run. Run as fast as you can." এই রিলেশনশিপ আপনার জন্য নয়।  

 ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি শর্ত দিয়ে ভালোবাসা হয় না। ভালোবাসা হয় নিঃশর্ত ভাবে। ভালোবাসায় Trust জিনিসটা থাকতে হয়। আর যদি Trust না থাকে তাহলে সেটা ভালবাসা হতে পারে না। এরকম শর্ত মেনে যদি রাখতে না পারেন এবং সেই মেয়েটি আইনানুযায়ী প্রতারণা কিংবা ধর্ষণ মামলা দিয়ে দেয় তাহলে কিন্তু সারাজীবনের জন্য ফেঁসে যাবেন।
আদালতের কাছে আপনি "Innocent untill proven guilty" হলেও মানুষের কাছে আপনি "Guilty no matter what" বলেই বিবেচিত হতে পারেন। এটাই বাস্তব।
তাই এই ধরণের শর্ত একসেপ্ট করার আগে ভেবে চিন্তে নিন যে এই রিস্ক আপনি নিতে চান কিনা। কারণ রিলেশনশিপের প্রথম দিকে নিজের প্রেমিক বা প্রেমিকাকে সকল খুঁতবিহীনই মনে হয়। এসব খুঁত এবং আপনার সাথে অপর পক্ষের সামঞ্জস্যতা, অসামঞ্জস্যতা ধীরে ধীরে প্রকাশ পায়। তাই হয়ত আরো কয়েকবছর বাদ Honeymoon Phase কেটে যাওয়ার পর যদি দেখেন যে, সে আপনার জন্য নয় তাহলে কি করবেন??
আমার এই কথাগুলো হয়ত আপনাদের শুনতে ভাল লাগছে না। কিন্তু এগুলো বাস্তব সত্য। আবেগ দিয়ে চিন্তা না করে মস্তিষ্ক দিয়ে চিন্তা করুন।
আমার এক বন্ধু সবসময় বলে, 'দোস্ত, সব সময় উপরের মাথা দিয়ে চিন্তা করবি। নিচের মাথা দিয়ে না। কারণ নিচের মাথার কোন ব্রেইনই নাই।'
আরেকটা ঘটনা দেখতে পারেন।
ধরুন আমি আপনাকে চা খাওয়ার আমন্ত্রণ জানালাম। আপনি রাজিও হলেন। তারপর আপনাকে চা দেয়ার পর আপনি দুই চুমুক দিয়ে চা ফেলে দিলেন। এর পর পরই আপনি দাবি করলেন আমি আপনাকে জোর করে চা খাইয়েছি। এটা কি যৌক্তিক দাবি হল??
আপনি চা খেতে না চাইলে আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করতে পারতেন। আবার চুমুক দিয়েও ফেলে দিতে পারতেন। এটা আপনার অধিকার।
কিন্তু চা খেতে চেয়ে জোর করে চা খাইয়েছি বলতে পারেন না।
কি? এই ঘটনা শুনে রাগে গা কিলবিল করছে??
তাহলে আপনাকে আমি একটা কথাই বলব,
Facts don't care about your feelings..
ধর্ষণ তখনই বলা যেতে পারে যখন যৌনসঙ্গম এ সম্মতি থাকবে না। 'ও আমার অমুক শর্ত ভেঙেছে, তাই এটা ধর্ষণ' কোন ন্যায়বিচারপূর্ন আদালতেই ধর্ষণ বলে বিবেচিত হবে না।
আপনাকে consensual sex একজন বোধবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের মতোই নিতে হবে। আর যদি আপনি সেটা নিতে না পারেন তাহলে ওটা আপনার জন্য নয়। আমি দুজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সম্মতিপূর্বক শারীরিক সম্পর্কে আপত্তি করছি না। আপত্তি করছি এর অসচ্ছতায়। দুজনকেই সেম পেজে থেকে এই কাজটা করা উচিত। আপনাদের পার্সোনাল লাইফে আপনারা যা ইচ্ছা করতে পারেন। তবে অন্ততপক্ষে সব কিছু পরিষ্কার করে নিয়ে যাতে করেন এটাই চাওয়া। না হলে অযথাই ঝামেলা বাড়ানো হবে। আপনার জন্য ও আপনার পরিবারের জন্যও। একটাই লাইফ আপনার। Make good decisions.





পরকীয়া.. কঠিন একটা শব্দ।


কাজটা কি কঠিন.. নাকি সোজা?
সে যাই হোক না কেন, দুঃসাহসিক বটে.. সেই সাথে ভয়ংকর, বিপজ্জনক এবং লজ্জাজনকএটা একটা বিবেকবর্জিত, অনৈতিক কাজ। খুব সাধারণভাবে বলা যায়, এটা অন্যের স্ত্রী বা স্বামীর সাথে শারীরিক ও মানসিক দখলদারিত্ব বা অংশীদারিত্বের সম্পর্ক। স্বার্থপরের মত কেবল নিজে আনন্দ লাভের জন্য নিজের পরিবার, সন্তান, স্বামী বা স্ত্রীকে প্রতারিত করা বা ঠকানো ছাড়া আর কিছুই না। এটা স্রেফ ঠকানোর একটা কৌশল।
প্রতিটা সম্পর্কেই এক একটা দায়বদ্ধতার (commitment) জায়গা থাকে.. বিশেষ করে স্বামী বা স্ত্রীর ভেতর তা আরও বেশী। কেননা, এই যুগলের মাধ্যমেই সৃষ্টি, তৈরী কিংবা সূচনা হয় একটা ঘরের, একটা সংসারের। যেখানে আবেগের ওঠানামা থাকে, মান অভিমান, বিশ্বাস (trust, loyalty, sincerity) এবং ভালোবাসার বিচরণ ঘটে সর্বত্র। প্রতিটা দায়বদ্ধতার পেছনে ভালোবাসা, ভালো লাগা কাজ করে.. এখানে বিবেকও বিশাল একটা ভূমিকা পালন করে থাকে।
স্বামী বা স্ত্রীর সম্পর্কের ভেতর আবেগ আর দায়িত্ব যেন একসাথে সামন্তরাল পথে চলে।  মাঝে মাঝে আবেগে ভাটা পড়ে.. দায়িত্ব, দায়বদ্ধতা এসে আবেগকে দূরে সরিয়ে দেয় নিজের অজান্তে। যারা শুধুমাত্র অতি আবেগে ভেসে বেড়াতে চান, সব সময় নিজের এবং সংসারের দায়িত্বটাকে পাশ কাটাতে চান, রংবেরং এর মাংসাশী প্রাণীদের মত কেবল স্বাদ নিতে চান এবং নিজে সুখ রচনা করতে না পেরে অন্যের তৈরী করা সুখের রাজত্বে বিচরণ করতে চান, তারাই পরকীয়ার দিকে ধাবিত হন বেশী।  এটা চরিত্রের একটা অন্ধকার দিকও বটে।
আমরা সবসময় নিজের জীবনসঙ্গী ছাড়া অন্য কাউকে যখন বাইরে থেকে দেখি, তখন তার পরিপাটি বেশভূষাটাই চোখে পড়ে। তখন থাকে না একে অপরের প্রতি কোন দায়দায়িত্ব বা চিন্তাভাবনা। থাকে না কোন শাসন বারণ। সবসময় নিজেকে ভালোভাবে অন্যের কাছে উপস্থাপনে মত্ত থাকা। এখানে নেই কোন চাল, ডাল, তেল, নুনের হিসাব নিকাশ। নেই কোন সন্তানের ভবিষ্যৎ কিংবা বেড়ে ওঠা, পেশা কিংবা অর্থনৈতিক গল্প কথা। নেই কোন সাংসারিক দায়িত্ব বা দায়বদ্ধতার চাপ। অথচ, নিজের সঙ্গীকে আমরা বেশীরভাগই দেখি বেশভুষা আর চেহারায় কৃত্রিমতার বাইরের এক মানুষ, অনেক সময় সাংসারিক খুঁটিনাটি চিন্তায় নিমজ্জিত দায়িত্ব পালনের এক রোবাট হিসাবে। আর বাইরের মানুষটি যে কেবল চমৎকার শব্দচয়নে আবেগের গানই শোনায় না, নতুন করে স্বপ্নে বিভোর রাখে বা বিভোর করে রাখতে চায়। নানা রকম মিথ্যা এসে ভর করে। দুজন মানুষ রঙ্গিন ফানুসের মতই উড়তে থাকে। পরিণাম পরকীয়া নামক এক মরিচীকার পেছনে ছোটা! ভেঙ্গে যায় ঘরের মানুষের বিশ্বাস, ভেঙ্গে যায় নিজেদের এবং সন্তানদের স্বপ্ন, ছিন্ন হয় ভালোবাসার। মৃত্যু ঘটে একটা সংসারের, একটা ঘরের।
অথচ কোন এক সময়ে যে সংসারটার পথচলায় বন্ধু ছিলেন দুজন মানব মানবী। এ সেই একই মানুষ, যিনি জীবনের শুরুতে বিপত্তিগুলো নিজের করে নিয়েছিলেন, সঙ্গীকে আগলে রেখেছিলেন সবকিছু থেকে শত কষ্টের বিনিময়েও। হয়ত বা কখনও নিজের দিকে তাকাবারও সময় বা বিশ্রাম পাননি... একাই সামলেছেন শত ঝড় ঝাপ্টা। অথচ, আরেকজনের জন্য, কোন এক বিবেকবর্জিত, অমানুষ, ঠক, প্রতারকের জন্য একটা সংসারের সবাই কষ্ট ভোগ করেন। ভোগ করেন নানা সামাজিক চাপ, অর্থনৈতিক চাপ। সন্তানরা হারায় তাদের এক সময়ের প্রিয় বাবা অথবা মাকে। অথচ এটা তাদের প্রাপ্য ছিল না, তাদের কোন দোষও ছিল না...কারণ প্রতিটা শিশুই নিষ্পাপ। তাদেরও রয়েছে সুস্থ সুন্দরভাবে ভালোবাসায় বেড়ে ওঠার অধিকার। প্রতিটা মানুষেরই কম বেশী কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে। একজনের একটা জিনিসের ঘাটতি হলেই আরেকজনের কাছ থেকে প্রত্যাশার প্রাপ্তি খোঁজা অপরিপক্কতারই নামান্তর। বরংচ, স্বামী বা স্ত্রীর যার যা নেই, সেটার জায়গায় যার যা গুণাবলী সেটার মূল্যায়ন করলে আর তৃতীয় পক্ষের আবির্ভাব ঘটে না।

দেখুন, জীবনের এই পথচলায় আমাদের কখনো না কখনো কাউকে ভাল লাগতেই পারে। এটা দোষের কিছু না। দোষের হল আপনার সঙ্গীটিকে ঠকানো, তার জায়গাটিতে অন্যকে স্থান করে দেয়া। তাকে এবং তার ভালোবাসা, বিশ্বাসটাকে অসম্মান করা। নিজের সন্তানদের সুন্দর, চমৎকার ভবিষ্যৎটাকে অন্ধকারে ঠেলে দেয়া.. সেই সাথে প্রিয় বর্তমানকে অস্বীকার করা। মনে রাখবেন, নিজের সুখের জন্য, নিজের কামনা বাসনা চরিতার্থ করার জন্য আরেকজনকে সরিয়ে দিলে আপনিও একদিন ঠিক একইভাবে নিক্ষিপ্ত হবেন। প্রকৃতির এটাই নিয়ম।
তাই সব সময় স্বামী স্ত্রী একজন অরেকজনকে পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় দিন। নিজেদের ভালো লাগা, ভালোবাসার জায়গাগুলি ধরে রাখুন। কোন বিষয়ে খটকা লাগলে বিস্তারিত আলোচনা করুন। কথায়, কাজে সঙ্গীকে সম্মান দিন। মনে রাখবেন আপনারা কেউ কাউকে কিনে আনেননি বা আগেকার দিনের কৃতদাস নন যে, সঙ্গী আপনার বশ্যতা স্বীকার করবেন। মনে রাখবেন, প্রথমে বন্ধু হোন তারপর স্বামী বা স্ত্রী। একজন ভালো বন্ধুই পারে আরেকজনের হাতটি শক্তভাবে ধরে রাখতে।
ও হ্যা.. সেই সাথে একে অপরকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করুন, অনুভব করুন আপনার সঙ্গীটি কি চাচ্ছেন? কেন তিনি এত ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত? কেন তার বেগের মৃত্যু ঘটেছে...?! অন্যের কাছে কেবল মিথ্যা সুখ না খুঁজে বরং নিজেই নিজের ঘরকে সুখে দুঃখে সমৃদ্ধিশালী করুন, আর তাহলে তৃতীয় কোন পক্ষ বা শক্তি চাইলেও জায়গা করে নিতে পারবে না। আর যে কোন পরিস্থিতি দুজনই হাসতে হাসতেই একসাথে মোকাবেলা করতে পারবেন অনায়াসে। 

অভিশপ্ত রজনী

  মৃত মেয়েটিকে ধর্ষণ করার সময় মেয়েটি যে জীবিত হয়ে ওঠে সেটা খেয়াল করেনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় কাব্য।ধবধবে সাদা চামড়ার মেয়েটিকে ভোগ করার...