যে বিদ্যা জ্ঞানচক্ষু উম্মীলিত করে না
-----------------------------------------------
ভারতের একসময়ের প্রধান নির্বাচন কমিশনার টি এন শেষন এক ছুটির দিনে উত্তর প্রদেশের কোন এক এলাকায় পিকনিকে যোগ দেওয়ার জন্য সস্ত্রীক রওনা হয়েছেন । একটি আমবাগান অতিক্রম করার সময় চোখে পড়ল আমগাছে অজস্র বাবুইপাখির বাসা ঝুলছে। এ ধরণের দৃশ্য তিনি আগে কখনো দেখেন নি। তার স্ত্রী আগ্রহ প্রকাশ করলেন, দুটি বাসা তিনি বাড়িতে নিয়ে যাবেন।
এসকর্টের লোকেরা ওখানে দাঁড়িয়ে থাকা এক রাখাল তরুন কে দুটি পাখির বাসা পেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করল । সে রাজি হল না।
শেষন কত বড় অফিসার, কি তার ক্ষমতা, সব কথা বলা সত্ত্বেও তরুনটির কোন ভাবান্তর নেই। শেষ পর্যন্ত শেষন নিজে এগিয়ে গিয়ে তাকে ১০ টাকা বকশিস দিয়ে প্রলুব্ধ করতে চাইলেন কিন্তু কাজ হলো না ৷ এর পর ৫০ টাকা পর্যন্ত দিতে চাইলেন তবুও সে অনড়।
সে বলল, সাহেব জি এই বাসা গুলোতে একটি করে পাখির বাচ্চা রয়েছে। মা পাখিটা যখন বিকেলে খাবার নিয়ে এসে তার বাচ্চাটিকে পাবে না তখন তার কান্না আমি সহ্য করতে পারব না। আপনি যত কিছুই আমাকে দিতে চান কোন কিছুর বিনিময়েই আমি এ কাজ করতে পারব না।
টি এন শেষন তার আত্মজীবনী তে লিখেছেন, মুহূর্তে মনে হল আমার সমস্ত বিদ্যাবুদ্ধি আই এস এস পদমর্যাদা সবকিছুই এই রাখাল তরুনটির কাছে একদানা শস্যেরও সমতুল্য নয়। শেষন বলেছেন, এই অভিজ্ঞতা তিনি সারা জীবন বয়ে বেড়িয়েছেন ।
যে বিদ্যা জ্ঞানচক্ষু উন্মীলিত করে না, বিবেক জাগ্রত করে না তা অসার-অন্তঃসারশূন্য বোঝামাত্র।
No comments:
Post a Comment