একটা রেললাইনে যেরকম দুটো লাইন
থাকে, গন্তব্যে যাবার জন্য দুটো লাইনকেই যেরকম আকড়ে ধরে এগোতে হয় ; আমাদের জীবনেও এরকম দুটো রেল লাইন আছে। একটা ইমোশন আরেকটি রিয়্যালিটি !
বেশিরভাগ মানুষ যেকোন একটাতে
আটকে যায়। হয় খুব বাস্তববাদী হয়; কর্পোরেট ভালোবাসায় নিয়ম করে ঘড়ি ধরে চুমো খেয়ে ঘুমিয়ে
পড়ে ! আর নাহয় চোখের দিকে তাকানোই যায় না- আবেগে থরথর করে কাঁপতে থাকে।
যে কবিতা পড়ার পর প্রবল আবেগে
আপনার মরে যেতে ইচ্ছে করে,
কর্পোরেট লাইফের এই দুনিয়াটাকে অনর্থক নিরর্থক মনে হয় সেই কবিতারও
একটা মজবুত রিয়্যালিটি আছে। কবি কিন্তু তার পংক্তিমালা
ব্যাগে করে নিয়ে প্রকাশকের সাথে আলাপ করেছেন। যে পংক্তিমালা পাঠ করে আপনি ফ্লোরে
চিত হয়ে পড়েছিলেন, সেই
পংক্তিমালার আবেগের দামে টেবিলের উপরে রাখা ক্যালকুলেটর দিয়ে কবি তার প্রাপ্য
কমিশনের হিসেব কষেছেন ! বেঁচে থাকার জন্য দুটোরই দরকার আছে। তানাহলে বোকাচোদা
সংবিধান আপনাকে বাঁচতে দেবে না।
খুব সামাজিক কিংবা খুব
অসামাজিক কোনটাই আসলে ভালো না। কারো চিন্তা চেতনা আমার সাথে মেলে না তাই আমার
চিন্তার অংশে আমি কাউকে রাখব না - এসব অনেক মান্ধাতা আমলের ফিলোসফি। কিছু সয়ে যেতে
হয়, কিছু আপনাতেই সয়ে যায়। সব কিছু নিয়েই জীবন।
অফিস পাড়ায় রোদে দর কষাকষি আর
শ্রাবণের বৃষ্টিতে কাউকে লং রোডে নিয়ে সব বিলিয়ে দেয়া - দুটোই জীবনের সুন্দর অংশ। বৃষ্টির
রাতে লং রোডে ঘুরতে বের হবার পয়সাটা অফিস পাড়ায় রোদে দর কষাকষি থেকেই আসে। দুটোই সুন্দর।
দুটোকে আলাদা করে দেখতে গেলেই যত দ্বন্দ্ব।
কোনদিনও নিজের ইমোশনের কাছে
হেরে যাবেন না। যখন এই পৃথিবীটাকে একটা স্বার্থপর গ্রহ মনে হবে; সব কিছু ছেড়ে
ছুড়ে হেরে যেতে ইচ্ছে করবে তখন সেই রেললাইনের কথা মনে করে পা ফেলতে হবে
রিয়্যালিটিতে। শেষমেশ কিন্তু আবেগেরই জয় হয়।
নিৎসে দারুণ বলেছেন, ' হৃদয় জানে
যুক্তির মূল্য কিন্তু যুক্তি হৃদয় সম্পর্কে কিছুই জানে না'