Saturday 21 April 2018

নুপুরের মানচিত্র -----------


১৯৭১,তুমুল উৎকন্ঠা আর আক্রমন পাল্টা আক্রমন এ দেশ অস্হির। নুপুর এর বিয়ে ঠিক হয়েও আটকে আছে।বড় দুই ভাই আর নুপুরের হবু স্বামী এক সাথে যুদ্ধে গেছে, বাড়িতে মা আর বাবার সাথে নুপুর।
সোহরাব মেম্বার নুপুর এর প্রতি ভিন্ন দৃষ্টি আওড়াতে থাকে,তাই নুপুর সতর্ক থাকে চলা ফেরায়। সোহরাব এখন পাক বাহীনির ডান হাত,গ্রামের সব তথ্য পাচার করা,স্বশরীরে সাহায্য করা তার ধর্ম,কারন হিসেবে বলে,"আমি একজন খাটি মুসলমান। "
গ্রাম- জ্বালাও পোড়াও,লুটপাট এ দুঃসহ দিন কাটাচ্ছে। সোহরাব আসলো নুপুরদের বাড়ি,নুপুরের বাবার কাছে প্রস্তাব দিল বিয়ের জন্য।নুপুরের বাবা অকথ্য ভাষায় গালাগাল দিল,সোহরাবের গুমকির মুখে,পায়ের জুতা ছুড়ে মারলো।
সেই রাতেই পাকবাহিনীর তল্লাশি,নুপুরের দুই ভাই মুক্তি যোদ্ধা এই অপরাধে সমানে মারধর করতে লাগলো।নুপুরের মা অবশ শরীরে চেয়েই রইলো,নুপুরকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে, বাবা প্রাণ থাকতে তা হতে দেবে না। ঘরের চালায় ঝুলানো কুড়াল দিয়ে কোপ মারলো একটার মাথায়,সাথে সাথেই মারা গেল সেই পাকিস্তানি। সমানে স্টেনগ্যান ছুটলো,নুপুরের বাবার পুরো দেহ ঝাঁঝরা হয়ে গেল।
নুপুর এখন সেনাক্যাম্প এ,পাক সেনাদের কুমারীভোজ। ফাকে ফাকে সোহরাবও তৃষ্ণা মিটায়,
যুদ্ধ শেষ দিকে,
পাক বাহীনি চলে গেল,সোহরাব লুকিয়ে পড়লো-হ্যা,লাল সবুজ পতাকা উড়ছে বাংলার আকাশে বাতাসে।নুপুর মুক্তি পেল,কিন্তু বহন করছে আরেকটি দেহকে। প্রায় শেষ পর্যায়ে সেই দেহ আগমনের- নুপুরের একভাই আর হবু স্বামী ফিরে এলো, অন্য ভাই শহীদ হয়েছে।
দেশ স্বাধীন,বিশুদ্ধ বাতাসে মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকার নিধন করছে। কিন্তু নুপুরের শান্তি নেই,বিয়ের দিন ঠিক হলো,তার হবু স্বামীর নুপুরের ুই অবস্থায় কোন আপত্তি নেই।নুপুরের মনে এখন যুদ্ধ তুঙ্গে,
পাক বাহীনি বিদায় হলো,রাজাকার নিধন চলছে কিন্তু দেশ তো পরিষ্কার হচ্ছে না,শত্রু তো বিনাশ হচ্ছে না। আমার মাঝেই লুকিয়ে আছে পাকিস্তানি আর সোহরাব'রা। সাপের বির্যে সাপই পয়দা হয়,দুধ কলায় পুষলেও সাপ ছোবল মারা ভুলে না।
বিবেকের সাথে যুদ্ধ করছে নুপুর----
বিয়ের আগের দিন,নুপুর লুটিয়ে পড়লো মৃত্যুকোলে। চিঠি ছেড়ে গেল,মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য
"তোমরা লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে যে পতাকা আর মানচিত্র এনেছো,তার জন্য বহু মায়ের কোল শূণ্য হয়েছে,বহু সিদূর মুছে গেছে,বহু এতিম এর সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু আমার সোনার বাংলা এখনো শত্রু মুক্ত নয়,বীজ গুলো সব মাটি ভেদ করে মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। আমি ধর্ষিতা,এতে আমার লজ্জা নেই কিন্তু আমিই আরেক জানোয়ারের জন্ম দিবো এতে আমার অশেষ ঘৃণা এবং অপরাধ বোধ। পারলাম না,দেশের স্বার্থের চেয়ে মায়ের স্বার্থকে বড় করে দেখতে। আমি যুদ্ধে যাইনি কিন্ত একটা পাকি,একটা রাজাকার এ বাংলার একটা শত্রুকে হত্যা করলাম। আমাকে ঘৃনা করো,পাশণ্ড ভাবো-তাতেই আমার গর্ব।
স্বচ্ছ থাকুক আমার পতাকা,আমার মানচিত্র। "
নুপুর,,,,,,,,,,,,,,,,


 Tania Ishrat

No comments:

Post a Comment

অভিশপ্ত রজনী

  মৃত মেয়েটিকে ধর্ষণ করার সময় মেয়েটি যে জীবিত হয়ে ওঠে সেটা খেয়াল করেনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় কাব্য।ধবধবে সাদা চামড়ার মেয়েটিকে ভোগ করার...