প্রতিটি কষ্টের
একটা নিজস্ব টাইম ডিউরেশন আছে। দশ বছর আগে যারা বুয়েটে ভর্তি
পরীক্ষায় না টিকে উম্মাদ হয়েছিল; সেই কষ্ট টা আজ তাদের নেই।
শৈশবে যাকে না পেয়ে
রোজ রাতে অঞ্জনের গান শুনে কেঁদেছিলেন ; সেই কান্নাটাও আজ নেই...
কষ্টরা এক জায়গায়
বেশিদিন থাকে না...
এক মানুষের কাছে এসে কিছুদিন থেকে অন্য মানুষের কাছে চলে যায়...
বুয়েট - মেডিক্যালে না টেকার কষ্ট প্রতি
বছরই এক দল পায় আর এক দল ভুলে...
.......একবার
ভাবুন তো... গত বছর যে কারণে আপনার মন খারাপ ছিল ,
সেই মন খারাপটা কী আজ আছে ? গত আঠার বছর
আগের কথা ভাবুন...
আমার মনে আছে
সাতানব্বইতে এইচ এস সি পরীক্ষায় এক বিষয়ে ফেল করার পর আমার দম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল...
পরের বছরই আবার
পরীক্ষা দিয়ে পাশ করি এবং
......এক সময়
এই নিয়ে লিখার মত একটা টপিক পেয়েছি ভেবে আমি ‘ ফেল করার
ইতিহাস’ নিয়ে বেশ বড়
একটি আর্টিকেল লিখেছি... লিখে আনন্দ পেয়েছি...
সুসান পিভারের - The wisdom of a broken
heart" বইটি পড়ে দেখতে পারেন... এই
বইতে তিনি আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবার বেশ কিছু পদ্ধতি লিখেছেন।
বিষণ্ণতা রোগে
আক্রান্ত মানুষের আনকন্সাস মাইন্ড সব সময়ই সহানুভূতি চায়।
এরা মানুষের মনোযোগ
চায় এবং না পেয়ে রাত হলে একা একা কথা বলে।
......তবে
আমার মনে হয় মানুষ সত্যিকার অর্থেই একা! দুজনে মিলে একা...
দশজনে মিলে একা..
.হল ভর্তি
মানুষের ভেতরে একা... পিকনিকের বাসে চিল্লাপাল্লা গানের
ভেতরেও এক সময় মানুষ চুপচাপ একা হয়ে বসে থাকে...
প্রত্যেকেই একা ! কাজেই একা’ রা কিন্তু
একা না !
......এই
রোগের আরেকটি বিশেষত্ব হল - এরা সাধারণত চিন্তা করার কোন
বিষয় না এমন বিষয় নিয়েও অনেক বেশি চিন্তা করে।
কে কি মনে করছে... সে এই
কথা এইভাবে কেন বলল... সে কী তাকে অনগ্রহ করছে?
একটা উদাহারণ দিলে
ব্যাপারটা পরিষ্কার হবে।
অফিসের বস তাকে
কাজে আরো মনোযোগী হতে বললে সে চিন্তা করবে – সে কী কাজ ঠিক ভাবে করছে না? সে কী আসলে এই কাজের যোগ্য না?
তাহলে কী নতুন
কাউকে নিয়োগ করা হবে যে অনেক যোগ্য? তার মানে তার চাকরী চলে যাচ্ছে?
চাকরী চলে গেলে
উমুকের ঋণের টাকা শোধ করবে কীভাবে? বাড়ি ভাড়া দিবে কিভাবে? তাছাড়া তার স্ত্রীকে এই ব্যাপারটা জানাবে কীভাবে?
তার স্ত্রীর
নিশ্চয়ই অনেক কষ্ট হবে।
বসের সামান্য কথায়
এই পর্যায় এসে সে খুব হতাশায় ভুগতে থাকবে। আগেই বলেছিলাম - এরা যতটা
না কষ্ট পায় তার থেকে অনেক বেশি কষ্ট তৈরি করে।
মেজর ডিসেসিভ ডিসঅর্ডার
এ আক্রান্ত ব্যক্তিদের ১৫ শতাংশই আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
......আমি সব
থেকে বেশি ইনবক্সে যে ম্যাসেজ পাই তা হল ' বিষণ্ণতা
সমস্যা' এখন কী করা যায়? ইত্যাদি
ইত্যাদি...
এদের অনেকেই
রিএকটিভ ডিপ্রেশনে ভুগছে...ফার্মেসিতে গিয়ে ঘুমের ট্যাবলেট কিনে সাহসের অভাবে খেতে পারছে না.....
অনেকেই মরে যেতে
চায় কারণ কেউ তার সাথে প্রতারণা করেছে... চিটার প্রেমিক ! আমি তাদের বলি... তোমার কাজ রেগুলার দু রাকাত
নফল নামায পড়ে শুকরিয়া আদায় করবা।
প্রতারক তোমাকে
ছেড়ে চলে গেছে ! এটা একটা আনন্দের বিষয় !
সারাজীবন অমানুষটা
সাথে থাকলে কী ভয়াবহ ব্যাপার ঘটত চিন্তা করা যায় !!!
অযথা কষ্ট নিয়ে
আজকের সময়টা নষ্ট করবেন না...
মনোবিজ্ঞানীরা একটা কথা সব সময় বলে ‘ টাইম ইজ দা
মেইন হিলার'’ – সময় সব ক্ষত
মুছে দেয়।
No comments:
Post a Comment