Tuesday 5 November 2019

বাইক বা গাড়ির নাম্বার প্লেটের ক, খ, হ, ল ইত্যাদি অক্ষরগুলো কি অর্থে ব্যবহৃত হয়

আমরা হয়তো অনেকেই জানি না যে, বাইক বা গাড়ির নাম্বার প্লেটের ক, খ, হ, ল ইত্যাদি অক্ষরগুলো কি অর্থে ব্যবহৃত হয়।
BRTA-এর অনুমোদিত সকল যানবাহনে নাম্বারপ্লেট ব্যবহারের নিয়ম চালু হয় ১৯৭৩ সালে। আসলে এই নাম্বার প্লেট কি অর্থ বহন করে? নাম্বারপ্লেট অনেক মজার তথ্য বহন করে, যা আমাদের অনেকেরই ধারনা নেই।
বাংলাদেশের যানবাহনগুলোর নাম্বারপ্লেটের ফরম্যাট হচ্ছে- ‘শহরের নাম-গাড়ির ক্যাটাগরি ক্রম এবং গাড়ির নাম্বার’।
যেমন, ‘ঢাকা মেট্রো য-১১২৫৯৯। এখানে, ‘ঢাকা মেট্রো’ দ্বারা বোঝানো হয়েছে গাড়িটি ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার আওতাধীন।
‘য’ হচ্ছে শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গাড়ির চিহ্নকারী বর্ণ। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আওতাধীন সব গাড়ি ‘য’ বর্ণ দ্বারা চিহ্নিত করা হবে। পরবর্তী ‘১১’ হচ্ছে গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন নাম্বার এবং ‘২৫৯৯’ হচ্ছে গাড়ির সিরিয়াল নাম্বার।
সাধারণত বাংলা বর্নমালার ‘অ, ই, উ, এ, ক, খ, গ, ঘ, ঙ, চ, ছ, জ, ঝ, ত, থ, ঢ, ড, ট, ঠ, দ, ধ, ন, প, ফ, ব, ভ, ম, য, র, ল, শ, স, হ অক্ষরগুলো ব্যবহার করা হয়। উপরের প্রতিটি বর্ণ আলাদা আলাদা গাড়ির পরিচয় বহন করে।
চলুন জেনে নিই এগুলো দ্বারা কী বুঝায় –
ক – ৮০০ সিসি প্রাইভেটকার
খ – ১০০০-১৩০০ সিসি প্রাইভেটকার
গ – ১৫০০-১৮০০ সিসি প্রাইভেটকার
ঘ – জীপগাড়ি
চ – মাইক্রোবাস
ছ – মাইক্রোবাস / লেগুনা (ভাড়ায় চালিত)
জ – বাস (মিনি)
ঝ – বাস (কোস্টার)
ট – ট্রাক (বড়)
ঠ – ডাবল কেবিন পিকআপ
ড – ট্রাক (মাঝারী)
ন – পিকআপ (ছোট)
প – ট্যাক্যি ক্যাব
ভ – ২০০০+ সিসি প্রাইভেটকার
ম – পিকআপ (ডেলিভারী)
দ – সি এন জি (প্রাইভেট)
থ – সি এন জি (ভাড়ায় চালিত)
হ – ৮০-১২৫ সিসি মোটরবাইক
ল – ১৩৫-২০০ সিসি মোটরবাইক
ই – ট্রাক (ভটভটি)

আমার আকাশে একাই থেকে যাব আমি!

তারাবাতি আর জ্বলবে না!!
তামাক পাতা কেও ধরাবে না!!
পাখি উড়বে না!!
সে আমারে আমার হতে দিবে না!!
দুশো ছ রাত ঘুম হবে না!!
ধুলাবালির মত মুছে যাব আমি!!
আমার আকাশে একাই থেকে যাব আমি!

আমি অকৃপন ভেসে যাই তোমার গভীরে !

এসেছো?
দাঁড়াও দুহাতে আকাশকে ধরে
আমি অকৃপন ভেসে যাই তোমার গভীরে !
চলে যাবে?
যাও তবে বিছানা মাড়িয়ে
বালিশের মৃতদেহ,
পড়ে থাক কাভার ষ্টোরিতে l

কাশেম চাচার মোমবাতি

পূর্ব রাজাবাজারে একাটা মুদি দোকানের মালিক কাশেম চাচা, গত ৩০ বছরের দোকানি তার। কেউ কোন দিন তাকে তার দোকান ছাড়া অন্য কোথাও দেখেনি। বয়স ৭০ ছুঁইছুঁই । আজ ও ভোর হতেই সবার আগে দোকান খুলে বসেছেন তিনি। কিন্তু অবাক ব্যপার হল সাত সকালেই পাশের বাসার ছোট ৯/১০ বছরের অর্চি আজ তার প্রথম খরিদ্দার। এসেই বলল নানা মোমবাতি দেও, না না একটা না এক প্যকেট। কাশেম চাচা বুঝে পান না যে এত সকালে এই মেয়ে মোমবাতি দিয়ে কি করবে? তাছাড়া গত মাসেই তো তার জন্মদিন গেল।
এত মোমবাতি দিয়ে কি করবে?
ও তুমি বুঝবেনা।
কিছুক্ষণ পরেই এলেন রাহেলা বেগম, মহিলা অঙ্গন নামে তার একটা ছোট দর্জি দোকান আছে রাজাবাজারে। সেও এসেছে মোমবাতি নিতে। চাচা ভাবলেন রাত জেগে হয়তো সেলাই এর কাজ করতে হবে, কারেন্ট চলে গেলে যেন বসে থাকতে না হয় হয়তো তার পূর্ব প্রস্তুতি।
কিন্তু তার ঘণ্টা খানেক পরে যখন অপর্ণা বউদি গেলেন মোমবাতি আনতে তখন কাশেম চাচার অবাক হবার ই কথা। সবাই কেন মোমবাতি কিনছে আজ? আজ তো হিন্দুদের দীপাবলি ও না । এবার কিন্তু সে বুদ্ধি খাটিয়ে বেশ চড়া দামেই বিক্রি করলেন। কারনটা না বুঝলেও সহজেই বুঝে ফেললেন আজ মোমবাতির ব্যপক চাহিদা আছে ।
সকাল ১০ টায় সেখানে লাঠিতে ভর দিয়ে ঠুকঠুক করে হাতড়ে হাতড়ে পৌঁছালেন জন্মান্ধ আজিজ সাহেব। মেইন রোডেই তার ৬ তলা বিল্ডিং। সবার খুব শ্রদ্ধেয় তিনি। তিনিও যখন মোমবাতি চাইলেন তখন দোকানি কাশেমের মুখ থেকে বেফাঁস কথা বেরিয়ে যায়-
আপনি তো চোখে দেখেন না, মোমবাতি জ্বালিয়ে কি করবেন?
মুহূর্তেই বুঝে গেলেন কি ভুল তিনি করেছেন। কারন ততক্ষণ এ আজিজ সাহেবের অন্ধ দু চোখে থেকে জল গড়িয়ে পরেছে।
তিনি বলতে লাগলেন অন্ধ বলে আজ তুমিও আমাকে অবহেলা করলে? আমি যে তোমাদের ই একজন। আমারোতো ইচ্ছে হয় সবার মত আজ আমিও মোমবাতি জ্বালি। আমি জানি এ শুধু মোমবাতি নয় এ আমাদের চেতনার প্রজ্জলন। আর চেতনা মানেই ৫২, চেতনা মানেই ৬৯, চেতনা মানেই ৭১। নব প্রজন্ম আজ নব চেতনার ডাক দিয়েছে। আজ বাংলার মাটিতে নতুন চেতনার উন্মেষ ঘটেছে। এ চেতনার একবিংশের ,২০১৩ আজ তেমনই ইতিহাস হতে চলেছে কাশেম। আমি আমার বড় ছেলে কে হারিয়েছি ৭১ এ।
কাল যেন ও আমার সুপ্নে এসে ও বলে গেল-- আমার সোনার বাংলা আজ খাঁটি সোনা হতে চলেছে বাবা। বল কাশেম শহীদের পিতা হয়ে আমি কিভাবে চুপ থাকি? তাই তো শাহাবাগের ডাকে প্রতিটি শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আজ আমিও মোমবাতি জ্বালাবো সন্ধ্যা ৭ টায়।
কাশেম চাচার চোখ দুটিও ভিজে এলো, সহসাই মনে পরে গেল গ্রামের বাড়ির বন্ধু কমলেশের কথা । সেও যুদ্ধে যাবার আগে কাশেমকে বলেছিল স্বাধীনতা না নিয়ে সে আর ফিরবেনা। কিন্তু কথা রাখেনি কমলেশ, সে আর ফিরে আসেনি। স্বাধীনতা পেলেও প্রিয় বন্ধুকে ফিরে পাওয়া হয়নি তার।
এবার কিন্তু মোমবাতির বাড়তি দাম আর তিনি রাখলেন না।
প্রতিদিনের মত ভিক্ষুক রমিজের মা দোকানের সামনে দাড়াতেই তিনি ১ টাকার একটি কয়েন বের করে দিলেন। কিন্তু রমিজের মা আজ তার কয়েন না নিয়ে বরং হাতে ২ টাকার ৩ টা নোট দিয়ে বললেন-
আইজ ভিক্ষা চাইতে আহিনাই ভাইজান, সকাল থেক্কা ফার্মগেট এর মোড়ে দাঁড়াইয়া এই কডা টাহা পাইছি। ক্ষিদায় টিকবার না পাইরা ৫ টাহার অ্যাটটা রুডি কিনা খাইছি। দেহেন তো এই টাহায় মোমবাতি হইব কিনা। আমিও মোমবাতি জালামু।
কাশেম চাচার কমলেশের স্মৃতি আর চোখের জল তখনো মুছে যায়নি। তিনি এবার রমিজের মায়ের কাছ থেকে কোন টাকাই আর নিলেন না। দুটো মোমবাতি এমনিতেই দিয়ে বললেন-
এর জন্য তোমায় টাকা দিতে হবেনা । টাকা ফিরিয়ে দিয়ে তিনি রমিজের মাকে আজ আদর করে দোকানের কলা রুটি খাওয়ালেন। বললেন সন্ধ্যায় মোমবাতি জ্বালানোর সময় শহিদদের কথামনে করো॥॥

সন্দেহ

সন্দেহের ভাইরাস একটা মানুষকে কতোটা কাবু করতে পারে চোখের সামনে দেখি৷ পরিচিত এক দম্পতির জীবন পুরাই ছারখার সন্দেহের ভাইরাসে৷ স্ত্রীটি মনে করেন পতিধন চাকরি বাকরি বাদ দিয়ে সারাক্ষণ পরনারীদের নিয়ে বিজি থাকে৷ পতিধনটির ধারনা তিনি যখন অফিসে থাকেন স্ত্রীটি পরপুরুষের সন্ধানে বেড়িয়ে পড়েন৷ ফলে পাড়ার মুদির দোকান থেকে শুরু করে পান বিড়িওলার কাছে মিনিটে কল দিয়ে তাকে আপডেট থাকতে হয় বউ কোথায় যায় না যায় সে বিষয়ে৷
একবার বসুন্ধরার কাছে কলেজ লাইফের এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সাথে দেখা ৷ আমরা একসময় বিড়ির শেষাংশ শেয়ার করেছি, একসাথে পর্বত সিনেমা হলে এক টিকেটে দুই ছবি দেখতে গেছি৷ দেখা হবার পর বন্ধুটি 'আরিশ্লা কি খব্বর' বলে করমর্দন করল, তারপর ওয়ালেট থেকে ভিজিটিং কার্ড বের করে হাতে ধরিয়ে দিল৷ পিছনে ছিল তার সুন্দরী স্ত্রী ও বাচ্চা ৷ আমি বাচ্চাকে হাই বলে যেই না 'ভাবি কেমন আছেন' বলে দাঁত বাইর করতে গেছি সে বাচ্চাকে ছোঁ মেরে কোলে উঠিয়ে, বউকে প্রায় ঠেলতে ঠেলতে প্রস্থান করল ৷ ঐটুকু সময়ের মধ্যে তার বউয়ের সাথে চোখ টেপাটেপি, প্রেম অতঃপর পালিয়ে যাওয়ার মতো কোনো সুযোগ সেখানে ছিল না তাও সে কেনো এমন করলো আজো ব্যাখ্যা পাই না৷
সন্দেহ মানুষকে ছাগল বানিয়ে দেয়৷ যে অমুলক সন্দেহের শিকার সেও হতাশায় ছাগলে বিবর্তিতে হতে শুরু করে৷ সম্প্রতি হুমায়ুন আহমেদের নাম বসিয়ে দেয়া একটি বাণী নিউজফিজে ঘুরে বেড়াচ্ছে তা হলো, 'পৃথিবীতে যে তোমাকে বেশি সন্দেহ করবে বুঝে নাও সে তোমাকে তার জীবনের চাইতে বেশি ভালবাসে।' খুবই লেইম কথা সন্দেহ নেই, কিন্তু সন্দেহের ঠেলায় যাদের লাইফ তামা তামা তারা এই কথা স্মরণ করে কিছুটা হলেও সান্ত্বনা পেতে পারে৷

বিস্মৃতির অতলে একদিন সব হারিয়ে যাবে, যতোটা হারালে আর খুঁজে পাওয়া যায় না!

অবহেলা / বিশেষ্য / অবহেলন; অবজ্ঞা, উপেক্ষা; অনায়াস, অযত্ন; অবলীলা, অনাদর৷ /অব + হেড্ + অন /৷ বিশেষন/ অবহেলিত ৷
অভিধান খুলে 'অবহেলা' শব্দের এইসব অর্থ পাই৷ অবহেলিতের কাছে এই শব্দগুলো বিশেষ কোন অর্থ বহন করে না৷ অবহেলা অনুধাবন করার জিনিষ, বর্ণনার না৷ দেরিদা দেখিয়েছেন মুখের ভাষা এবং হাতের লেখা দুই বাইনারি অপজিট, যেখানে মুখের ভাষা সেন্ট্রাল ও প্রাকৃতিক, এবং হাতের লেখা মার্জিনাল এবং কৃত্রিম। লেখা ও মুখের ভাষার বাইরে আরেকটি ভাষা আছে, হৃদয়ের৷ সেখানে বলা হচ্ছে অবহেলা মানে জিঘাংসা৷ বি. বধ করার বা হত্যার ইচ্ছা।
ধীরে ধীরে হলেও বুঝতে শিখেছি, এইভাবে আমাদের সবকিছু অতীত হয়ে যাবে ৷ বিস্মৃতির অতলে একদিন সব হারিয়ে যাবে, যতোটা হারালে আর খুঁজে পাওয়া যায় না!

বুঝলে বুঝ পাতা,না বুঝলে তেজপাতা



একবার সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলি একটি স্টেশনারী দোকানে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, 'ডায়মন্ড বল পেন আছে?'
সেলসম্যান মুখের উপর বলে দিলো, 'নেই!'
চলে যাচ্ছিলেন। একটু পর নিজেই ফিরলেন। সৈয়দ মুজতবা আলি তাদের বোঝালেন, সেলসম্যানশিপ কি? যখন তিনি জিজ্ঞেস করেছিলেন, ডায়মন্ড বলপেন আছে কি, তাদের বলা উচিত ছিল ডায়মন্ড বলপেন নেই তবে পাওয়ার, সুলেখা, ব্রাইট ইত্যাদি আছে। ক্রেতাকে বিকল্প না দেখিয়ে বিদেয় করা ঠিক নয়। সেলসম্যান লজ্জিত হলো এবং কিছু শিখলো।
কিছুক্ষন পর সাহিত্যিক অন্নদাশংকর রায় এসেছেন। জিজ্ঞাসা করলেন, 'টয়লেট পেপার আছে?'
সৈয়দ মুজতবা আলির দীক্ষিত সেলসম্যান উত্তর দিলেন, 'টয়লেট পেপার একটু আগে শেষ হয়েছে।
তবে শিরীষ কাগজ আছে, দেবো?'
______©
কিছু বুঝলেন?
বুঝলে বুঝ পাতা,না বুঝলে তেজপাতা😊

কৌতুকময় জীবন


গতকাল এক বন্ধুকে বলছিলাম, হাসির কথা আর হাস্যকর কথা এক নয়। তারপর এল কৌতুক আর কৌতুকাভিনেতাদের কথা। তবে বন্ধুর সাথে কথা বলে অবাক হয়েছিলাম এমনটা জেনে, কৌতুকাভিনেতাদের দিকপাল ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়কে ও চিনে না।
আজ আপনাদেরকে আমার পছন্দের কৌতুকাভিনেতা সম্পর্কে একটু বলব।
বাংলা ভাষাভাষী কৌতুক অভিনেতাদের মধ্যে আমার প্রথম পছন্দ ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর জহর রায়, তুলশি চক্রবর্তী, টেলি সামাদ, দিলদার, কাঞ্চন মল্লিকসহ আরো অনেকে। অবশ্য কিছু জাত অভিনেতার অনিয়মিত কৌতুক অভিনয়ও আমার বেশ ভালো লেগেছে। তাদের মধ্যে উৎপল দত্ত, হুমায়ুন ফরীদি, এটিএম শামসুজ্জামান, শঙ্কর চক্রবর্তী, রুদ্রনীল ঘোষ অন্যতম।
এখনকার চিত্র অবশ্য পাল্টে গেছে। আফজাল শরীফ, কাবিলা, এজাজুল, হারুন কিসিঞ্জার, চিকন আলীদের কৌতুকাভিনয়ে আমার মধ্যে কোনো চমক জাগে না। সত্যি বলতে এপার বাংলার বর্তমান কৌতুক অভিনেতাদের অভিনয় দেখলে রীতিমতো রাগ হয়। একি অভিনয়, নাকি অ-বিনয়? ওদের অশিক্ষা, অপেশাদার আচরণ আর ভাঁড়ামি দেখে হাসির বদলে ভেতরে ভেতরে বিরক্তি কাজ করে।
ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে একটু বলি—
ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় [২৭ আগস্ট, ১৯২০-৪ মার্চ, ১৯৮৩] ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের বাংলা চলচ্চিত্রের অত্যন্ত জনপ্রিয় অভিনেতা। বিশেষ করে বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে হাস্যকৌতুকময় অভিনয়ের ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অগ্রগণ্য। চলচ্চিত্রে আসার আগে ছিলেন সাম্যময় বন্দ্যোপাধ্যায় নামে পরিচিত। ঢাকা, পূর্ববঙ্গ অর্থাৎ বর্তমান বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাই উনাকে ‘ঢাকার ভানু’ বলা হতো।
ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুইটা কথোপকথনময় কৌতুক শেয়ার করছি আপনাদের সাথে।
ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় চাকরির জন্য তার গুরুদেবের কাছে যায়—
কৌতুক- ১
ভানু : গুরুদেব পেন্নাম।
গুরুদেব : পেন্নাম নয়, কথাটা প্রণাম। একটা র-ফলা দাও।
ভানু : ভেম হইয়া গেছে।
গুরুদেব : ভেম নয়, ভ্রম। এটাতেও র-ফলা লাগবে।
ভানু : বাহ বাহ। পেত্তেক কথায় র-ফলা লাগবে?
গুরুদেব : পেত্তেক নয়, প্রত্যেক। এটাতেও র-ফলা দাও।
ভানু : ব্রেশ ব্রেশ।
গুরুদেব : এটাতে আর র-ফলা দিও না।
ভানু : না, দ্রিমু য্রখন ত্রখন স্রবট্রাটেই দ্রিমু।
গুরুদেব : বেশ তাই দিও। এখন বলো তোমার দিদি কেমন আছে?
ভানু : আপনার আশীর্বাদে সকলেই ভালো আছে।
গুরুদেব : তোমার হাতে ওটা কী?
ভানু : এটা, এটা এক জোড়া স্যান্ডেল। আসনের সময় দিদি কিনা দিছিল।
গুরুদেব : বাহ্‌, বাহ্‌ চমৎকার পাদুকা তো। বেশ দেখতে কিন্তু।
ভানু : গুরুদেব আপনি নিবেন? যখন আপনার পছন্দ হইছে। নেন না।
গুরুদেব : না না, সে কী, তোমার পাদুকা আমি নেব কেন? লোকে বলবে কী?
ভানু : আরে না, কেউ জানতেই পারব না। আপনারে দিয়া আমি ধন্য হই।
গুরুদেব : না না। কেউ যদি জিজ্ঞাসা করে তোমার পাদুকা কোথায়? তখন কী বলবে?
ভানু : না না। কেউ জিজ্ঞাসা করব না। আর একান্তই যদি কেউ জিজ্ঞাসা করে, তখন কমু, কুত্তায় লইয়া গেছে।
গুরুদেব : অ্যা?................ সে হোক, শোনো তোমার দিদি আমাকে তোমার চাকরির কথা লিখেছিলেন। যাও ওই উল্টো দিকের ঘরে কর্নেল চ্যাটার্জি আছেন। গিয়ে দেখা করো।
ভানু : ইংরেজিতে কথা কইবো না তো?
গুরুদেব : না না। বাঙালি। ইংরেজি কথা বলবেন কেন?
ভানু : মাইরদর করব না তো?
গুরুদেব : না না। তুমি নির্ভয়ে যাও।
কৌতুক- ২
কর্নেল চ্যাটার্জি : কে? হুজ দেয়ার?
ভানু : কাম সারছে। আইজ্ঞা আমি ঢাকার ভানু।
কর্নেল চ্যাটার্জি : ও হা, গুরুদেব তোমার কথা বলেছিলেন বটে। তা তুমি যুদ্ধে যেতে রাজি আছো তো?
ভানু : আইজ্ঞা হ।
কর্নেল চ্যাটার্জি : বাংলাদেশের বাইরে পাঠালে যেতে রাজি আছো তো?
ভানু : আইজ্ঞা হ।
কর্নেল চ্যাটার্জি : ভারতবর্ষের বাইরে পাঠালে যেতে রাজি আছো তো?
ভানু : চাকরির লাইগা দেখেন, আমি সৌরজগতের যেকোনো জায়গায় যাইতে রাজি আছি।
কর্নেল চ্যাটার্জি : বেশ বেশ বেশ। তাহলে তোমাকে মিলিটারিতে ভর্তির ব্যবস্থাই করে দেবো।
ভানু : তবে যুদ্ধে যাইতে হলে আমার দুইখান কথা আছে।
কর্নেল চ্যাটার্জি : কী কথা?
ভানু : যুদ্ধে যদি আমি মরি। বিদেশে মরলে কোনো কথা নাই। কিন্তু যদি নিজের দেশে মরি তবে দুইখান কথা আছে।
কর্নেল চ্যাটার্জি : নিজের দেশেই মরবে।
ভানু : আইজ্ঞা নিজের দেশে যদি মরি, আমার দেহ থাকব কই? মাটির উপরে নাকি মাটির তলে? মাটির উপরে থাকলে কোনো কথা নাই। যদি তলে থাকে তবে দুইখান কথা আছে।
কর্নেল চ্যাটার্জি : মাটির তলাতেই থাকবে।
ভানু : সেই মাটি যে চাষ হইব, লাঙল দিয়া হইব নাকি ট্রাক্টর দিয়া হইব? যদি লাঙল দিয়া হয় তবে কোনো কথা নাই, ট্রাক্টর দিয়া হইলে দুইখান কথা আছে।
কর্নেল চ্যাটার্জি : ট্রাক্টর দিয়াই হবে।
ভানু : আইচ্ছা। ট্রাক্টর দিয়া হইলে আমার দেহ, অর্থাৎ কঙ্কাল তো ওইঠা আইব। সেই কঙ্কাল পাঠান হইব কই? ফার্টিলাইজারে নাকি কাগজের কলে? যদি ফার্টিলাইজারে পাঠান হয় তবে কোনো কথা নাই, আর যদি কাগজের কলে পাঠানো হয় তবে দুইখান কথা আছে।
কর্নেল চ্যাটার্জি : কাজগের কলেই পাঠান হবে।
ভানু : বেশ। সেই কাগজ দিয়া, অর্থাৎ আমার হাড়ের গুড়া দিয়া কী কাগজ তৈরি হইব? রাইটিং পেপার নাকি টিস্যু পেপার। যদি রাইটিং পেপার হয়, কোনো কথা নাই। আর যদি টিস্যু পেপাপ হয় তবে দুইখান কথা আছে।
কর্নেল চ্যাটার্জি : টিস্যু পেপারই হবে।
ভানু : বেশ কথা। সেই টিস্যু পেপার পুরুষে ব্যবহার করব নাকি স্ত্রীলোক ব্যবহার করব? যদি পুরুষে ব্যবহার করে কোনো কথা নাই আর যদি স্ত্রীলোক ব্যবহার করে তবে দুইখান কথা আছে।
কর্নেল চ্যাটার্জি : স্ত্রীলোকই ব্যবহার করবে।
ভানু : তেইলে হালায় যুদ্ধেই যামু না।
* ছবিতে ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় ও জহর রায়

এই দুনিয়াতে প্রকৃত জ্ঞান ছাড়া তুমি যা কিছু দেখছো...যা কিছু ভাবছো সবটাই নকল ও মিথ্যে

এক স্বর্ণকারের মৃত্যুর পর তার পরিবারটা বেশ সংকটে পড়ে গেল। খাদ্য-বস্ত্রে দেখা দিল চরম অভাব।
স্বর্ণকারের বিধবা স্ত্রী তার বড় ছেলেকে একটা হীরের হার দিয়ে বললো--এটা তোর কাকুর দোকানে নিয়ে যা, বলবি যে এটা বেচে কিছু টাকা দিতে।
ছেলেটা হারটি নিয়ে কাকুর কাছে গেল।
কাকু হারটা ভালো করে পরীক্ষা করে বললো- বেটা, তোমার মাকে গিয়ে বলবে যে এখন বাজার খুবই মন্দা, কয়েকদিন পর বিক্রি করলে ভাল দাম পাওয়া যাবে। কাকু কিছু টাকা ছেলেটিকে দিয়ে বললেন--আপাতত এটা নিয়ে যাও আর কাল থেকে তুমি প্রতিদিন দোকানে আসবে আমি কোন ১দিন ভাল খদ্দোর পেলেই যেন তুমি দৌড়ে হার নিয়ে আসতে পার তাই সারাদিন থাকবে।
পরের দিন থেকে ছেলেটা রোজ দোকানে যেতে লাগলো।সময়ের সাথে সাথে সেখানে সোনা-রুপা-হীরে কাজ শিখতে আরম্ভ করলো।
ভাল শিক্ষার ফলে অল্প দিনেই খুব নামি জহুরত বনে গেল। দূর দূরান্ত থেকে লোক তার কাছে সোনাদানা বানাতে ও পরীক্ষা করাতে আসত। খুবই প্রসংশীত হচ্ছিল তার কাজ।
একদিন ছেলেটির কাকু বললো-- তোমার মাকে গিয়ে বলবে যে এখন বাজারের অবস্থা বেশ ভালো, তাই সেই হারটা যেন তোমার হাতে দিয়ে দেন। এখন এটা বিক্রি করলে ভালো দাম পাওয়া যাবে।
ছেলেটি ঘরে গিয়ে মায়ের কাছ থেকে হারটি নিয়ে পরীক্ষা করে দেখলো যে এটা একটা নকল হীরের হার। তাই সে হারটা আর কাকুর কাছে নিয়ে যায় নি।
কাকু জিজ্ঞেস করলো-- হারটি আনো নি ?
ছেলেটি বললো-- না কাকু, পরীক্ষা করে দেখলাম এটা একটা নকল হার।
তখন কাকু বললো- তুমি যেদিন আমার কাছে হারটি প্রথম নিয়ে এসেছিলে সেদিন আমি দেখেই বুঝে নিয়েছিলাম যে এটা নকল, কিন্তু তখন যদি আমি তোমাকে এই কথাটা বলে দিতাম, তাহলে তোমরা হয়তো ভাবতে যে আজ আমাদের মন্দ সময় বলেই কাকু আমাদের আসল জিনিষকে নকল বলছে। আজ যখন এ ব্যাপারে তোমার পুরো জ্ঞান হয়ে গেছে, তখন তুমি নিজেই বলছো এটা নকল হার।
এই দুনিয়াতে প্রকৃত জ্ঞান ছাড়া তুমি যা কিছু দেখছো...যা কিছু ভাবছো সবটাই এই হারের মতই নকল, মিথ্যে।
জ্ঞান ছাড়া কোন জিনিসের বিচার সম্ভব নয়। আর এই ভ্রমের শিকার হয়েই অনেক সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়। আমি সেই সম্পর্কটা নষ্ট হোক তা চাইনা।

মধুর শৈশব

যে ছেলে কোনোদিন
ন্যাংটা হয়ে স্রোতের নদীতে লাফালাফি করে নাই,
ঠ্যালা জাল দিয়ে মাছ ধরে নাই,
বরশি, ফাঁশি জাল দিয়ে মাছ ধরে নাই,
স্কুল পালিয়ে ফুটবল খেলে নাই,
মারবেল খেলে বাবার মার খায় নাই,
অন্ধকার রাতে চুরি করে সিনেমা দেখতে যায় নাই,
চাল চুরি কইরা সেই চাল ব্রিক্রি করে সিডি ভাড়া করে রাতভর সেচের ঘরে সিনেমা দেখে নাই,
সেলো মেশিনে ডিজেল ভরে জমিতে জল দেয় নাই,
বাবার সাথে জমিতে মই দিতে গিয়া মইয়ে উইঠা উষ্টা খেয়ে পরে নাই,
জীবনেও ডাংগুলি, দাঁড়িয়াবান্ধা, বউ ছি, গোল্লাছুট খেলে নাই,
কলাপাতার ঘর বানিয়ে চড়ুইভাতি করে নাই,
কলাগাছের ভেলা বানিয়ে সেই ভেলায় ইচ্ছামত ভাসে নাই,
সাঁতার শিখতে গিয়া অল্পের জন্য জলে ডুবেও ডুবে নাই,
কলাগাছের ওপর ভর করে নদীতে ভাসে নাই,,
যে ছেলে কখনো তিন চাকার বেয়ারিং এর গাড়ি চালায় নাই,
যে ছেলে কখনো নারকেল এর পাতায় বানানো হাতঘড়ি পরে নাই, পাতা দিয়া সাপ বানায় নাই,
যে ছেলে হাতে বাটুল নিয়া সারাদিন কড়া রৌদ্রে পাখির পিছে ছুটে নাই,
যে ছেলে পড়ন্ত বিকেলে গরুরে খাওয়ানোর জন্য সবুজ সতেজ ঘাস কেটে অানে নাই,
যে ছেলে দুই টাকার চানাচুর কিংবা চকলেটের বিনিময়ে বড় ভাই/বোনের প্রেমের চিঠি অাদান প্রদান করে নাই...
.
তার আবার কীসের শৈশব?

দেড়লাখ কিলোই গোরস্থান

ওহে রাজ্য ওহে রাজা
সেলাই করো আমার ঠোট,
বালু চাপা দিয়ে মগজ
আমায় বানাও পক্ষী উট।
কেমনে করি বন্ধ দুচোখ
কেমনে করি রুদ্ধ কান,
অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখি
দেড়লাখ কিলোই গোরস্থান।
আমার নীরব পদশব্দে
কেমনে নড়ে রাজার ভীত,
ঘর হতে আজ পা বাড়ালেই
চোখে ভাসে বিশ্বজিৎ ।
ন্যায্য কথায় ত্যাজ্য করো
জানো কথায় মানলে হার,
হারিয়ে দিয়ে বাংলাদেশকে
ওপার গেলো এক আবরার
কোথায় গিয়ে বাঁচবো বলো
কোথায় পাবে রক্ষে প্রাণ,
অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখি
দেড়লাখ কিলোই গোরস্থান।
ওহে রাজ্য ওহে রাজা
আমরা প্রজা ক্ষুদ্র কীট,
পাওনা দাবী চাইতে গেলেই
ঝাঁঝরা কেন আমার পীঠ।
রক্তে যদি দেশটা ভাসে
একটু হলেই ভিন্ন মত,
কিসের দায়ে দাঁড়িয়ে আছে
রাজ্য ভরা আদালত।
স্তব্ধ আমার কলম খাতা
যায়না লিখা পদ্য গান,
অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখি
দেড়লাখ কিলোই গোরস্থান।

আসিয়া বিবি এবং এক বালতি পানি


লেখার শিরোনামটি বেশ অদ্ভুত শোনাচ্ছে, তাই না? কিন্তু আজকের এই দিনটিতে এটাই পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় খবর। যা নিয়ে পাকিস্তান কার্যত দু'ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে।
আসিয়া বিবি ৪৭ বছর বয়সী একজন খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী মহিলা। যার ২০১০ সালে ধর্ম অবমাননার দায়ে পাকিস্তান লোয়ার কোর্টে ফাঁসির রায় হয়ে যায়। অভিযোগ ছিল যে, তিনি গ্রামের একজন প্রতিবেশীর সাথে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়ে এক বালতি পানি নিয়ে। জানা যায়, অমুসলিম হয়ে সে কেনও মুসলমানদের বালতির পানি পান করে তা নোংরা করল, এমন একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই গ্রামের মহিলাদের মধ্যে ঝগড়া বেঁধে যায়। পরবর্তীতে আসিয়াকে দল বেঁধে মেরে গ্রামের মহিলারা জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত মুসলমান হতে বলে; কিন্তু তাকে রাজি করাতে না পেরে ধর্মের অবমাননা এবং নবী মোহাম্মদকে কটুক্তি করার অভিযোগ এনে আসিয়া বিবির বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে দেয়। লক্ষ্য করবেন, সময়কাল কিন্তু ২০০৯, অর্থাৎ মাত্রই ৯ বছর আগের ঘটনা, ৯০ বছর আগের নয়।
আসিয়া বিবি প্রথম থেকেই নিজেকে নির্দোষ দাবি করে এসেছে। গত ৮ বছর ধরে তাকে কারাগারে অন্তরীণ করে রাখা হয়। যার ধারাবাহিকতায় আজ আসিয়া বিবি নির্দোষ প্রমাণিত হলে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সাকিব নিসার্ম তাকে মুক্তির নির্দেশ দেন। তবে এই রায়ের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের কট্টরপন্থীরা এরই মধ্যে তীব্র বিক্ষোভ শুরু করেছে। পাকিস্তানের কট্টরপন্থী ইসলামী গোষ্ঠীগুলো ব্লাসফেমি বা ধর্ম অবমাননার অভিযোগের জন্য কঠোর সাজার পক্ষে। তারা কোনও অবস্থাতেই আসিয়ার মুক্তি মেনে নিতে পারছে না।
এই রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জন্য পাকিস্তানের করাচী, লাহোর এবং পেশাওয়ার শহরে কট্টরপন্থীদের জড়ো হতে দেখা যাচ্ছে। যার একটি খণ্ডিত ভিডিও চিত্র এই লেখার সাথে সংযুক্ত করলাম।
বিগত ৯ বছরে আসিয়া বিবির এই ঘটানটিকে কেন্দ্র করে অনেকগুলো ঘটনা ঘটে যায়, যেকারণে পাঞ্জাব রাজ্যের গভর্নর সালমান তাসিরকেও প্রাণ দিতে হয়। তিনি ব্লাসফেমি আইনের বিরুদ্ধে কথা বলায় তাকে গুলি করে হত্যা করে তারই দেহরক্ষী মুমতাজ কাদরি। হত্যাকারী দেহরক্ষী মুমতাজ কাদিরকে এই হত্যার দায়ে ফাঁসি দেয়া হলেও তিনি পরবর্তীতে কট্টরপন্থীদের নেতাতে পরিণত হন। এমনকি মুমতাজ কাদরির সমর্থকরা একটি রাজনৈতিক দল পর্যন্ত গঠন করে ফেলে। যারা গত নির্বাচনে প্রায় বিশ লাখ ভোট পেয়েছে।
আসিয়ার বিষয়টি নিয়ে ইমরান খানের সরকার অন্তর্জাতিক চাপে রয়েছে। তাই ধারণা করা হচ্ছে যে, আসিয়াকে হয়তো রাষ্ট্রীয় সহায়তায় অন্যকোনো দেশে পাঠিয়ে দেয়া হবে। ইতিমধ্যে অনেক দেশই তাকে আশ্রয় দেয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
বিধর্মী আসিয়ার এক বালতি পানি ছুঁয়ে নোংরা করে দেয়ার 'অপরাধে' এই ২০১৮ সালে এসেও ফাঁসির আদেশ হয়ে যায়, ভাগ্যক্রমে তা বাতিল হলেও মৌলবাদীদের তাণ্ডবে হয়তো এবার তাকে চার সন্তান সহ পরিবার সমেত দেশত্যাগ করতে হবে।
৪৭ বছর হল আমাদের দেশের নাম পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ হয়েছে। এই প্রায় অর্ধশত বছরে আমরা পাকিস্তান থেকে কতটা বাংলাদেশ হতে পেরেছি? কতটা আলাদা হতে পেরেছি পাকিস্তান থেকে? কতটা মানবিক হতে পেরেছি? অনেকে বলবেন, হয়তো অনেকটাই পেরেছি। তাহলে তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, আমাদের দেশেও কি ধর্ম অবমাননার অভিযোগে নির্বিচারে মানুষ কোপানো হয় না? এখানেও কি নারীদের ধর্মের নামে অপয়া কুলটা বলে ফতোয়া জারি করে গাছে ঝুলিয়ে পেটানো হয় না? এখানেও কি ব্লাসফেমি বা শরিয়া আইন প্রতিষ্ঠার জন্য লক্ষ লক্ষ মুসলমান রাস্তায় নেমে আসে না? শুধুমাত্র লেখালেখির জন্য এদেশেও কি ফাঁসি বা মাথার দাম ধার্য করা হয় না? দেশত্যাগ করতে বাধ্য করা হয় না? -- সবই হয়, আমাদের দেশেও হয়।
আসিয়া বালতির পানি ছুঁয়ে দিয়ে পাকিস্তানের মুসলমানদের যেমন বালতি ভরা ঈমান নষ্ট করে দেয়। তেমনি আমাদের দেশের মুসলমানদেরও ধর্মের মন্দ দিকগুলোর সমালোচনা করে দু'এক লাইন লিখলেই ঈমানের কলকব্জা উড়ে যায়, ধসে পড়ে সব। কোথায় কোথায় আর আলাদা হলাম আমরা? আমি তো দেখি না!

Monday 16 September 2019

রাস্তায় অচেনা কোন মানুষের সাথে পরিচয় হলে আমরা কি করি?

রাস্তায় অচেনা কোন মানুষের সাথে পরিচয় হলে আমরা জিজ্ঞাসা করে জানতে চাই, মানুষটা কী করেন, কোথায় থাকেন, বিবাহিত নাকি অবিবাহিত, পরিবারে কে কে আছেন ইত্যাদি। আপনি কী হিন্দু , বৌদ্ধ, নাকি মুসলমান এই সব প্রশ্ন সচারচর আমরা করিনা কেননা মানুষটা যে ধর্মেই বিশ্বাস করুক না কেন এ নিয়ে আমাদের কিছুই আসে যায় না। আমরা সব ধর্মের মানুষেরা একসাথে একই শহরে একই এলাকায় একই বিল্ডিং এ থাকি।
আমাদের অনেক সমস্যা থাকতে পারে তবে ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে আদৌ কোন সমস্যা নেই।এই সমস্যা গুলো সব চাইতে বেশি আছে বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্র গুলোর ভেতরেই। কিছুদিন আগে ইসরাইল আইন করে সেখানকার মসজিদ গুলোতে আযান দেয়া নিষিদ্ধ করেছে। কেন এরকমটা করেছেন , তাদের যখন প্রশ্ন করা হল; তাদের উত্তর শুনে আমার মনে হল আমি হয়ত ভুলে টিভিতে মিরাক্কেলের কোন জোকস্ শুনছি ! তারা বলেছে, তারা ইসলাম ধর্মের পাশা পাশি সব ধর্মের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু যেহেতু আযানের শব্দে তাদের ঘুমের অসুবিধা হয় তাই আযান নিষিদ্ধ করা হয়েছে- অন্য কিছু না !!
ফ্রান্সে আইন করে বোরকা পড়াকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেখানে কেউ বোরখা পড়লে ৩২ হাজার মার্কিন ডলার জরিমানার বিধান আছে আইনে। প্রথমে ফ্রান্স শুরু করলেও পরবর্তীতে বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ড , স্পেনেও ' বোরখা ' নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই নিষিদ্ধ তালিকায় স্পেনের নাম দেখে আমি সব চাইতে বেশি অবাক হয়েছি কেননা স্পেন এমন একটা দেশ যেখানের মানুষ আইন করে রাষ্ট্রীয় ভাবে প্রকাশ্যে উলঙ্গ থাকাকে বৈধতা করেছে ; এই জাতি যেসময়ে ন্যুডিস্ট আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিল তখন তাদের যুক্তি ছিল - নগ্ন থাকাটা তাদের ব্যাক্তিগত অধিকার ! তারাই কিনা আবার বোরখা নিষিদ্ধ করে !
ক্ষমতায় এসেই বিশ্বের সাতটি মুসলিমপ্রধান দেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সাথে ট্রাম্পের পুত্র সিরীয় শরণার্থীদের 'ক্যান্ডি'র সাথে তুলনা করে বুঝিয়ে দিয়েছেন সে তার অপদার্থ বাবার যোগ্য সন্তান। আমরা কিন্তু নাইন ইলেভেনে পশ্চিমাদের লাশের ছবি দেখে কেঁদেছিলাম।
জঙ্গি কিংবা সন্ত্রাসবাস সমস্যা সারা পৃথিবীতেই ছড়িয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত পৃথিবীর একটাও মুসলিম রাষ্ট্র এই জঙ্গিবাদকে স্বীকৃতি দেয় নি। কিন্তু কোথাও একটা জঙ্গি হামলা হলেই পশ্চিমা বিশ্বের ইমিগ্রেশন গুলোতে সাধারণ মুলসমানদের হয়রানী করা হচ্ছে। দাড়ি কিংবা টুপি পরিহিত কাউকে দেখা মাত্রই এমন আচরণ করছে- যেন মাফিয়ার কোন ছদ্মবেশী ডন তাদের সামনে দাড়িয়ে আছে !
গত কয়েকদিনে যখন আমাদের দেশের সিলেটে কিংবা ব্রিটিশ পার্লামেন্টে জঙ্গি হামলা হয়েছে তখন আরও কয়েকটি বড় বড় সন্ত্রাসী হামলাও হয়েছে। যেমন আজই যুক্তরাষ্ট্রের সিনসিনাটির একটি নৈশক্লাবে আততায়ী বন্দুকধারীদের গুলিতে একজন নিহত ও অন্তত ১৪ জন আহত হয়েছে। গতকালের প্রথম আলোতে দেখলাম, আততায়ী বন্দুকধারীদের গুলিতে সুইজারল্যান্ডের একটি ক্যাফেতে দুইজন নিহত হয়েছে।
এখন সেই সব বন্দুকধারীরা কিন্তু মুসলমান না।
তারা যে অপকর্ম করেছে এজন্য যদি তারা যে ধর্মে বিশ্বাসী সে ধর্মের সমস্ত মানুষ কিংবা দেশের উপর জঙ্গিবাদের ট্যাগ লাগিয়ে দেয়া হয় সেটা যেমন একটা হাস্যকর সিদ্ধান্ত হবে; একবিংশ শতাব্দীতে আমাদের সাথে ঠিক সেটাই করা হচ্ছে !! সন্ত্রাসের কোন ধর্ম নেই কেননা কোন ধর্মেই মানুষকে হত্যা করার ফতোয়া দেয়া হয়নি।
পবিত্র কোরআনের একটি আয়াত দিয়ে শেষ করছি।
'আমি বনী ইসরাঈলের ওপর এই হুকুম দিলাম যে, যে ব্যক্তি কাউকে হত্যা করা কিংবা যমীনে ফাসাদ সৃষ্টি করা ছাড়া যে কাউকে হত্যা করল, সে যেন সব মানুষকে হত্যা করল। ’ [সূরা মায়েদা, আয়াত : ৩২]

সুখী মানুষেরা কখনো রাত জাগে না..

সুখী মানুষেরা কখনো রাত জাগে না..
রাত জাগে 'ভালো আছি'
মুখোশপড়া মানুষজন...
যাদের মন খারাপের গল্পগুলো কেউ
শুনতে চায় না..
জানতে ও চায় না.....

তুমি একটা মানুষকে ততক্ষণ পর্যন্ত ভালোবাসার অধিকার রাখো যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি তাকে একশো ভাগ বিশ্বাস কর

তুমি একটা মানুষকে ততক্ষণ পর্যন্ত ভালোবাসার অধিকার রাখো যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি তাকে একশো ভাগ বিশ্বাস কর। একশো ভাগ বিশ্বাসের ভেতরে যদি এক ভাগ অবিশ্বাস ঢুকে পড়ে তাহলে সেটা একশো ভাগ অবিশ্বাস হয়ে যায়। এক গ্লাস বিশুদ্ধ পানির ভেতরে এক ফোঁটা নোংরা পানি মেশালে যেরকম গ্লাসের সব পানি নোংরা হয়ে যায়; অনেকটা সেরকম।

সব চাইতে আপন মানুষের মৃত্যুতে মানুষ কখনো কাঁদতে পারে না; কেননা সেটা সে নিজে !

সব চাইতে আপন মানুষের মৃত্যুতে মানুষ কখনো কাঁদতে পারে না; কেননা সেটা সে নিজে !

কখনো হীনমন্যতায় ভুগবে না।

কখনো হীনমন্যতায় ভুগবে না। এই পৃথিবীর কাছে তোমার গুরুত্ব অনেক। তুমি শুধু একজনই; সেটা তুমি। কোটি কোটি মানুষ থাকতে পারে তবে তোমার মত একটা মানুষও নেই।
তোমার আঙুলের ছাপ আর কারো সাথে মিলবে না।তুমি যেভাবে নিচের ঠোঁট উল্টো করে কাদো; ঠিক এভাবে আর কেউ কাঁদে না। তুমি যেভাবে দুঃখ পাও, যেভাবে ভালোবাসো; তোমার মত করে আর কেউ এভাবে ভালোবাসে না। তুমি শুধু একজনই; সেটা তুমি।
তিলে তিলে কষ্ট পেয়ে মরে যাবার জন্য তোমার জন্ম হয়নি। তুমি তোমার কষ্ট গুলোকে মেরে ফেলতে পারবে না তবে তুমি চাইলেই নিজেকে তিলে তিলে মেরে ফেলার হাত থেকে বাঁচাতে পারো। তোমাকে পাথরের মত শক্ত হতে হবে যেখানে তলোয়ার দিয়ে আঘাত করলে তলোয়ার মচকে যাবে; পাথরে দাগ হবে; ভাঙ্গবে না /

ধুলাবালির মত মুছে যাব আমি!!

তারাবাতি আর জ্বলবে না!!
তামাক পাতা কেও ধরাবে না!!
পাখি উড়বে না!!
সে আমারে আমার হতে দিবে না!!
দুশো ছ রাত ঘুম হবে না!!
ধুলাবালির মত মুছে যাব আমি!!
আমার আকাশে একাই থেকে যাব আমি!!!!!

মদের বোতল কখনও পিঁপড়ায় ধরে না

"মদের বোতল কখনও পিঁপড়ায় ধরে নাহ!!"
আমার এই কথার মানে বুঝি নিও।
এই কথার গভীরতা অনেক বেশি; দেখিও বুঝতে যেয়ে যেন
তলিয়ে না যাও...

আমি মরে গেলে সে কান্না করবে না।

আমি মরে গেলে সে কান্না করবে না।
শুনলাম আমার জীবনের চাইতে তার কাজলের দাম বেশি।।।

একটা ডেথ সার্টিফিকেট

হঠাৎ দরজায় ঠকঠক শব্দ। দরজা খুলতেই দেখি ত্রিশ পয়ত্রিশ বছরের এক যুবক হাঁপাতে হাঁপাতে বলছে, ভাই আপনার আম্মুর কাছে এসেছি। তার মুখে ভাবলেশহীন চাহনি, টিনের চালে পানি জমে গেলে বৃষ্টি থেমে যাবার পরেও যেভাবে থেমে থেমে বৃষ্টির ফোঁটা পড়ে অনেকটা সেভাবে কপাল থেকে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে জমে কিছুটা বিরতি নিয়ে টপ করে ফ্লোরের উপর পড়ছে।
সে এসেছে একটা ডেথ সার্টিফিকেট জন্য। ঘণ্টা তিনেক আগে তার বাবা মারা গেছে। কথাটা শোনার পর আমার চোখে একটা দৃশ্য ভেসে উঠল, সেটা হল আম্মু যখন আসছিল তখন সে একটা চাপা হাসি দিয়ে বসা থেকে উঠে দাড়িয়েছিল। তার এই সৌজন্যমূলক আচরণ এবং ঘণ্টা তিনেক আগে বাবা মরে যাবার শেষ বাক্য, এ দুটোকে আমি একসাথে করে কোনভাবেই মেলাতে পারছিলাম না। বাস্তবতা এতই কঠিন যে, কখনো কখনো আপনাকে বাবা মারা যাবার একশো আশি মিনিটের মাথায় আসমান জমিন এক করা শোকের চিৎকার থামিয়ে মানুষের বাড়ি গিয়ে বিরতি দিয়ে তিনবার দরজায় কড়া নেড়ে সোফায় বসে অপেক্ষা করে মেপে মেপে সৌজন্যমূলক আচরণ করতে হবে।
আমি ভেবেছিলাম বাইরে থেকে দেখে তাকে শক্ত মনে হলেও ভেতরে ভেতরে নিশ্চয়ই সে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে। আশ্চর্য হয়ে লক্ষ করলাম তার ব্রেইন অত্যন্ত সচল। ডেথ সার্টিফিকেটে গ্রামের নাম, ডাক ঘরের নাম লিখতে হয়। জিজ্ঞাসা করা মাত্রই নিখুঁতভাবে জবাব দিয়ে যাচ্ছে। কখনো কখনো নিজ থেকে কিছু সাজেশনও দিচ্ছে, এই যেমন বর্তমান ঠিকানায় বাড়ি ওয়ালার নাম সংযোজন করতে বলল যাতে করে সহজেই ইনভেস্টিগেশন করা যায়।
জানাজা থেকে কবর দেবার খরচাপাতির বিষয় নিয়ে দুবার তাকে ফোনে কথা বলতে দেখলাম। খরচাপাতি যোগাড় করার বাক্যলাপ,বাড়ি ওয়ালার নাম সংযোজন অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত হওয়া স্বত্বেও কোথায় যেন আমাকে বেশ পীড়া দিল। আমি বরং এভাবে চিন্তা করি যে, জীবনের এত গুলো বছর কাটানো দিন গুলোর কথা ভেবে প্রবল শোকে সে হামাগুড়ি দেবে। দু হাত দিয়ে বুক ধাপড়াতে ধাপড়েতে চিৎকার করে বলবে ' আমার বাপ আসলে মরেনি' !!
প্রচণ্ড মায়া এবং কৌতূহলের কারণে আমি তাকে খুব মন দিয়ে বোঝার চেষ্টা করলাম। তার চুপ করে বসে থাকা, তার কথা বলা, কথার ব্যাখ্যা কিংবা অন্যসব কিছুর চাইতে আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে তার চোখ দুটো। যেন আমি ভলিউম মিউট করে কোন একটা মুভি দেখছি। শব্দহীন সেই আলোকচিত্রে অদ্ভুদ এক রহস্য উদঘাটন করলাম।
সে কথা বলতে বলতে হঠাৎ করেই ন্যানো সেকেন্ডের জন্য কোথায় যেন হারিয়ে যায়। চোখ দুটা কেমন ঝাপসা হয়ে ওঠে। একটা আঙুল মুখের কাছে এনে দুটা চোখের মনি এক করে তাকালে যেরকম দুটা আঙুল দেখা যায়; আচংকা কথা বলতে বলতেই চোখের সেই অন্যমনস্ক রূপটা বের হয়ে আসে।
কথা বলতে বলতে হঠাৎ করেই কথার খেই হারিয়ে ফেলে। কিছুক্ষণ চুপ থেকে যেন হঠাৎ জ্ঞান ফিরে পেয়েছে এমন একটা ভাব করে তার সামনের মানুষটাকে জিজ্ঞাসা করে - '' কী যেন বলছিলাম ? ''
বাস্তবতা এতই নির্মম যে সে কখনো কখনো আপনাকে ঠিকভাবে কান্না করার সুযোগও দেবে না। এই যে চারপাশে এত এত মানুষ আপন মানুষদের হারিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, বাইরে থেকে দেখে মনে হবে মানুষটা হয়ত এই শোক কাটিয়ে উঠেছে। এই তো সব কাজ নিজেই করছে। শুধু সেই জানে রাস্তা পার হতে গিয়ে, জগ থেকে গ্লাসে পানি ঢালতে গিয়ে কিংবা কথা প্রসঙ্গে হাসতে হাসতেই হঠাৎ করেই ন্যানো সেকেন্ডের জন্য কোথায় যেন হারিয়ে যায় সে। এক একটা মানুষ যেন রক্ষণাবেক্ষণহীন প্রাচীন দেয়ালের মত; বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই সামান্য ধাক্কা দিলেই সেটা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে।
 

স্বেচ্ছায় জীবন দান আর স্বেচ্ছায় হেরে যাবার ভেতরে পার্থক্যটা হল এখানে গলায় ফাঁস হবে কিন্তু খুন হবে না কেউ.

আলোকসজ্জা রাতে তোমার হাতে যে ফুল শোভা পেয়েছিল, বাগানের মালি গাছ থেকে ফুলটি ছেঁড়ার সময় আরও কিছু ফুল নষ্ট করেছিল।
পাপড়ি গুলো উপর থেকে বাতাসে নামতে নামতে এদিকে সেদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বাগানের মালির পদধূলিতে পিষে গিয়েছিল। একই গাছে পিঠাপিঠি বড় হওয়া ফুল- তবু পরিণতি কত ভিন্ন !! অবিকল মানুষের মত !!
এই যে এত তলোয়ার- খঞ্জর, দর কষাকষি; সবাই কী কেবল জিততে চায় ? কেউ কী নেই- যে ক্লান্ত হয়ে খেলা ছেড়ে দিয়েছে ??
ম্যারাথন রেসে প্রত্যেকেই জিততে চায়। যে সবার চাইতে এগিয়ে সে জিততে চায়; বিজয়ী হবার জন্য। সবার চাইতে পিছিয়ে যে দৌড়াচ্ছে - সে জিততে চায় টিকে থাকার জন্য। প্রত্যেকটি প্রতিযোগীর গন্তব্য এক তবে উদ্দেশ্য আলাদা আলাদা।
সবাই কী কেবল জিততে চায় ? কেউ কী নেই যে হাঁপিয়ে উঠেছে ?? মাঝ রাস্তায় খেলা ছেড়ে গ্যালারীতে বসে তাকিয়ে আছে স্কোর বোর্ডের দিকে !! প্রত্যেকের জীবনেই হয়ত এরকম কিছু সময় আসে যখন কেবলই তাকিয়ে তাকিয়ে দেখা ছাড়া করার কিছু থাকে না।
অনেক দিন পর জীবনানন্দ দাশকে স্মরণ করছি...
''আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ বসে অপেক্ষা করবার অবসর আছে।
জীবনের বিবিধ অত্যাশ্চর্য সফলতার উত্তেজনা
অন্য সবাই বহন করে করুক; আমি প্রয়োজন বোধ করি না !! ''
সবাই জেতার জন্য লড়ে না; নিশ্চিত পরাজয় জেনেও যে সৈন্য তলোওয়ার উঁচিয়ে রাখে; সে কিন্তু মুকুটের জন্য লড়ে না। সে লড়ে নিজের মাথাটাকে বাঁচাবার জন্য। পৃথিবীটা খুব অদ্ভুদ একটা জায়গা। এখানে খেলতে খেলতে কেউ খেলার বাইরে চলে যায় আবার কেউ অন্যের খেলা হয়ে যায়। অবিকল ফুলের মত !! ম্যারাথন রেসের এক একটা প্রতিযোগীর মত - যাদের গন্তব্য এক তবে উদ্দেশ্য আলাদা আলাদা।
এই তলোয়ার- খঞ্জর, দর কষাকষি'র শহরে সবাই জিততে চায় না। স্বেচ্ছায় জীবন দান আর স্বেচ্ছায় হেরে যাবার ভেতরে পার্থক্যটা হল এখানে গলায় ফাঁস হবে কিন্তু খুন হবে না কেউ... !!

আমার স্ত্রী'' অর্থাৎ ''ও আমারই''

মানুষটা যখন তোমার চোখের সামনে দাড়িয়ে থাকবে এবং তখন যদি তুমি তার দিকে তাকিয়ে থাকো সেটা হল বিশ্বাস। মানুষটা যখন চোখের আড়ালে থাকবে এবং তখনো যদি তুমি তার দিকে তাকিয়ে থাকো সেটা হল ভালোবাসা।
লেখক হুমায়ূন আজাদ 'আমার অবিশ্বাস' গ্রন্থে বিশ্বাসের সংজ্ঞা দিয়ে গিয়ে লিখেছেন - বিশ্বাসের উৎপত্তি সংশয় থেকে। যেটা প্রমাণিত সেটা আলাদা করে বিশ্বাস করার কিছু নেই।
জীবনের সব ডাইমেনশনকেই আমরা যুক্তির প্যারামিটারে ফেলে বিচার করি। সত্য আর রিয়্যালিটি কিন্তু এক জিনিস না। কবি জয় গোস্বামী এর সুন্দর একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
রিয়্যালিটি হচ্ছে বাইরে ঝকঝক করছে সূর্য। আপনি যদি বলেন সূর্যের চেয়েও হাজার গুণ শক্তিশালী জ্যোতিষ্ক আছে,কিন্তু তাদের তো দেখা যাচ্ছে না। তার মানে তারা নেই। এটাই রিয়্যালিটি। সত্য কি ? সত্য হল তারা আছে। সূর্যের জন্য দেখা যাচ্ছে না।
মানুষ যে অফিসে যায়, নোংরা রাজনীতি করে, এর ওর পেছনে কথা চালাচালি করে- ওটা সত্য না, ওটা আসলে রিয়্যালিটি। সত্য হল দিন শেষে এরা প্রত্যেকে হাহাকার করে।
রবীন্দ্রনাথের '' ঘরে বাইরে'' পড়ে থাকলে যে সত্যটা চিরদিন বিশ্বাস করে এসেছিলেন সেই বিশ্বাসেই ফাটল ধরবে।
এই যে আমরা বলি '' আমার স্ত্রী' এই 'আমার স্ত্রী' শব্দটাই কিন্তু তাকে কোনদিন আমার হতে দেবে না।
'' আমার স্ত্রী'' অর্থাৎ ''ও আমারই'' !! ও যদি বলে '' না, আমিই আমার'' তখন আমি বলব সে কেমন করে হয় '' তুমি যে আমার স্ত্রী''
এই কথাটার মধ্য দিয়ে আস্ত একটা মানুষকে তালা বন্ধ করে রাখা যায় !!

বিয়েতে প্লাস্টিকের ফুল

সেদিন এক বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে গেটে মোড়ানো একটা ফুল ছিড়তে গিয়ে বেকুব বনে গেলাম। বিয়েতে প্লাস্টিকের ফুল কেন ! ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের একজনের কাছ থেকে জানতে চাইলাম। সে জবাব দিল, বাসর রাতের ফুলও আজকাল বাহারি রকমের প্লাস্টিক দিয়ে সাজানো !!
খাবারের টেবিল গুলোতে দেখলাম ভদ্র লোকেরা স্যুট টাই গায়ে লাগিয়ে চেয়ারের পিঠ ধরে দাড়িয়ে আছেন। একজন চেয়ারে বসে খাবার খাচ্ছেন আরেকজন চেয়ারের পিঠ ধরে মনে মনে আশা করছেন , এই লোকটা যেন বেশি খাবার না খায়। তার খাবার শেষ হলেই তার সিরিয়াল আসবে... !!
সব শেষে কনের সামনে গিয়ে বসলাম। লম্বা ঘোমটা দিয়ে মাথা নিচু করে বসে থাকা চিরাচারিত লজ্জাবতী কনেও যেন বদলে গেছে ! ফোন কানে নিয়ে দাঁত বের করে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছেন। সেলফী তুলছেন। একটু পর নাকি লাইভে আসবেন; দেখো তো কান্ড !!

স্মৃতি খুব খারাপ জিনিস।

আমরা সাধারণত কাউকে বিশ্বাস এবং অবিশ্বাস কোনটাই করিনা। অর্ধেক বিশ্বাস এবং অর্ধেক অবিশ্বাস নিয়ে এগোতে থাকি। একসময় যাকে সম্পূর্ণ বিশ্বাস করা হয় দেখা যায় সে মানুষটাই সম্পূর্ণ অবিশ্বাসের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।
তুমি এমন একটা মানুষকে ভালোবাসো যে মানুষটাকে তুমি বিশ্বাস কর না। মানুষটা যখন চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলে তখনও মিথ্যা বলে। কসম কেটে কেটে বুক চাপড়িয়ে তোমাকে ফেলে চলে যেতে তার বুক কাঁপে নি।
মানুষটা খারাপ। প্রতারক। মিথ্যাবাদী। তবু মানুষটার চোখের দিকে তাকালে কেমন মরে যেতে ইচ্ছে করে। মনে হয় এর জন্মের সময় তুমি পাশেই বসে ছিলে। শীতে যখন কাঁপুনি আসত তুমি কোলে নিয়ে উঠানের রোদে গা শুকিয়ে দিয়েছিলে।
তুমি নিজেই তোমাকে প্রতারকের সাথে থাকতে দেবে না। তুমি প্রতারক ঘৃণা করো কিন্তু মানুষটাকে ভালোবাসো। শেষমেশ কী হবে বল ?
তুমি হয়ত মানুষটার সাথে থাকছো না আর। যোগাযোগ নেই অনেক দিন। শুধু রাতে সবাই ঘুমিয়ে গেলে লাইট বন্ধ রুমে একা একা তোমার কান্না আসবে। আসবেই। এটা তুমি থামাতে পারবে না। সম্পর্কের কোন শেষ নেই; শেষের পর একটা রেশ থাকে।
এই রেশটা যখন মুছতে শুরু করবে , তুমি একটু আকটু সুস্থতা বোধ করবে ঠিক তখনই হঠাৎ একদিন পুরনো স্মৃতি এসে তোমাকে আবার জ্বালিয়ে দিবে। অনেকটা ঘা এর মত। শরীরের ঘা যখন শোকাতে শুরু করে ঠিক তখন ফু দিলে দেখবে ব্যাথায় আবার ঘা এর অংশটা জ্বলে উঠছে।
স্মৃতি খুব খারাপ জিনিস।
সবাই তোমার সাথে বেইমানী করলেও স্মৃতি কখনো বেঈমানি করবে না। মানুষ আসবে। মানুষ যাবে। মানুষটা বেঈমানি করে চলে গেলেও তার স্মৃতি গুলো তার সাথে যাবে না। থেকে যাবে। এইখানেই... জ্বালা... এইখানেই ঘা... এইখানেই সম্পর্কের রেশ।

প্রশ্নপত্র ফাঁস

মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী বলেছেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস হলে যারা এ চক্রের সাথে জড়িত এবং যারা জড়িত না সবাইকেই আবার পরীক্ষা দিতে হবে !!
স্কুল লাইফের একটা মজার কথা মনে পড়ল। আমাদের ক্লাসের দুজন মারামারি করে ক্লাসরুমের জানালার কাচ ভেঙ্গে ফেলেছিল। স্যার এসে জিজ্ঞাসা করলেন, কে কে মারামারি করেছে !
মার খাবার ভয়ে তারা চুপ করে বসেছিল এবং বন্ধুপ্রীতির কারণে আমরাও কেউ যখন তাদের দুজনের নাম বলছিলাম না তখন এক পর্যায় আমাদের সেই মানদাত্তা আমলের স্যার জালিবেত দিয়ে ক্লাসের সবাইকে কষিয়ে পেটালেন !! তারপর ঘামাতে ঘামাতে পকেট থেকে রুমাল বের করে বললেন '' যারা বিনা অপরাধে মার খেয়েছিস, কিছু মনে করিস না !!

এই পৃথিবীতে কোন কিছুই আসলে চিরস্থায়ী না- পৃথিবী নিজেও না।


সব চাইতে বড় কারাগার বোধহয় আকাশ। যেখানেই পালাও না কেন , মাথার উপরে একটা আকাশ লেগেই থাকবে। আর সব চাইতে ছোট কারাগার হল মানুষের মন। এত ছোট যে প্রবেশ করা যায় না।
সব চাইতে বড় ব্যাথা বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হওয়া না; সব চাইতে বড় ব্যাথা হল নিঃসঙ্গতার ব্যাথা। সে কিংবা তারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বলেই তুমি নিঃসঙ্গ।
Cast Away মুভিতে একটা দৃশ্য ছিল এরকম , নির্জন দ্বীপে প্রাণশূন্য এতটাই নিঃসঙ্গ এক মানুষ ছিল যে, জোয়ারের পানিতে একটা ফুটবলকে ভাসতে দেখে সে সেটা কুড়িয়ে নিল। তারপর পাথর দিয়ে বলের গায়ে চোখ মুখ নাক এঁকে কাল্পনিক এক মানুষ বানিয়ে সেটার সাথে কথা বলতে শুরু করল। সব কষ্টের মূলে এই নিঃসঙ্গতা। যদিও ইংরেজিতে একটা কথা আছে , Winners always stand alone ! বিজয়ীরা সব সময় একা থাকে।
আর সব চাইতে ছোট ব্যাথা ? সেটা তুমি এই মুহূর্তে পাচ্ছো। সময়ের স্রোতে সবই একদিন নিছক হয়ে ওঠে।  এই পৃথিবীতে কোন কিছুই আসলে চিরস্থায়ী না- পৃথিবী নিজেও না।

ক্রোধের আগুনে না পুড়লে সেটা কখনো ঘৃণা হত না।


একটা পছন্দের বস্তু অনেকদিন নাড়াচাড়া না করলে যেরকম ধুলো জমে যায়, অভিমান হল সেই ধুলোকনা। ঠিকমত যত্ন না নিলে সেখানে ধুলো তো জমবেই। যখনই জমতে শুরু করবে সাথে সাথে মুছে ফেলতে হয়।
এই ধুলো গুলো বাড়তে শুরু করলে তখন সেটা অভিমান থেকে অভিযোগ হয়ে যায়। অভিযোগের ভেতরে এক ধরনের জবাবদিহিতা থাকে, সূক্ষ্ম একটা প্রতিরোধ থাকে।
অভিযোগ যখন ন্যায়বিচার পায় না তখনই জন্ম হয় রাগের। যে রাগের বহিঃপ্রকাশ আছে সেই রাগ কমে যায় আর যে রাগের কোন বহিঃপ্রকাশ নেই; ভেতরে ভেতরে জমতে শুরু করে- সেই রাগ থেকে জন্ম হয় ক্রোধের ।
ক্রোধ খুব সাংঘাতিক জিনিস। একজন রাগান্বিত মানুষ যদি আপনাকে খুন করে ফেলে তখন সেটা সে রাগের মাথাতেই করে কিন্তু একজন ক্রোধে আক্রান্ত কেউ যদি আপনাকে খুন করে - তখন সেটা সে ঠাণ্ডা মাথায় করে।
আপনার উপর কারো একবার ক্রোধ জন্ম নিয়ে ফেললে সেটা কেবল ঘৃণাই জন্ম দেবে; অন্য কিছু না। সব কিছুরই দুটো দিক থাকে; সুন্দর এবং অসুন্দর। অভিমান থেকে জন্ম নেয়া ঘৃণা হচ্ছে সুন্দর ঘৃণা ! এই যে রাগ, অভিযোগ এসবই তো ভালোবাসার উপাদান।  ক্রোধের আগুনে না পুড়লে সেটা কখনো ঘৃণা হত না।

কেবলই সৃতিতে


স্কুল জীবনের দিন গুলো আজও সৃতির পাতায় দূরবর্তী অতীত হয়ে উঠে নি; কেবলই মনে হয় এই তো সেদিন...!!
আমাদের সময় প্রায় সব ক্লাসেই এরকম একজন থাকত যার নিকট আত্মীয়ের কেউ প্রায়ই বিদেশ থেকে এটা সেটা পাঠাত, এবং সেটা সে ক্লাসে নিয়ে এসে সবাইকে দেখাত। সবাই মুগ্ধ হয়ে দেখত, অতি উৎসাহী কেউ হাতে নিয়ে দেখত। সব ক্লাসেই আবার একজন চোর থাকত। যে অবশ্যই বিদেশীর জিনিস চুরি করে নিয়ে যেত।
এমন কেউ কী আছে যে জীবনে মুগ্ধ বিস্ময় ভালোলাগা নিয়ে কোন মেডামের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে নি ? সিলিং ফ্যানের দিকে তাকিয়ে ভাবেনি, ফ্যানটা খুলে পড়লে কার মাথায় গিয়ে পড়বে ? এমন কেউ কী আছে যে স্কুলের অলস দুপুরে বেঞ্চের উপরে কলম দিয়ে নিজের নামখানা লিখে রাখেনি ?? এই পৃথিবীতে মানুষ আসলে নিজের একটা অস্তিত্ব চায়। সে চায় কোথাও না কোথাও তার একটা অস্তিত্ব জিইইয়ে থাকুক... !!
প্রেমের মানদণ্ডে আমরা ভীরু কাপুরুষ ছিলাম, সাহস করে বলতে পারতাম না; যদি অপমানিত হই !! জীবনে কত সুড়ঙ্গ পথ পাড়ি দিয়ে ফেলেছি, কত ঝড় জলোচ্ছ্বাস কত ভুল মানুষের সাথে কাটিয়ে দিয়েছি- তবু সদ্য গজানো গোঁফ উঠা বালকের কাউকে দেখা মাত্র হার্টবিট কাঁপতে থাকা দিন গুলোই জীবনে শ্রেষ্ঠ রোমাঞ্চকর হয়ে থাকে !
এমন কেউ কী আছে যে স্কুলের দরখাস্তে বাবার সিগনেচার নকল করেনি ? পরীক্ষার রিপোর্ট কার্ডে কলম দিয়ে আঁকা আঁকি করে নাম্বার বাড়ানোর চেষ্টা করেনি ? নাম্বার কম পেলে আম্মুকে গিয়ে ' সবাই কম পেয়েছে' এই কথা বলেনি এমন কেউ কী নেই ?
আমাদের প্রত্যেকের স্যারের মার হজম করার নিজস্ব নিজস্ব পদ্ধতি ছিল। শরীর টাইট করে বেত্রাঘাতের অপেক্ষায় সিরিয়াল ধরে দাড়াতাম। কেউ হাতের তালু শক্ত করে রাখত, কেউ দুখী দুখী মুখ করে চেষ্টা করত স্যারের সিম্পেথি পাবার । কেউ আবার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যেত, বেত্রাঘাত তো দূরের কথা, একে এখনি ডাক্তারের কাছে নিতে হবে
আমাদের সময় 'পরীক্ষায় বন্ধু চেনা যায়' জাতীয় একটা প্রবাদ ছিল। কিছু হারামি থাকবেই যারা সারা বছর টিফিনে ভাগ বসিয়ে পরীক্ষার সময় চোখ রাঙিয়ে ফেলত। সব ক্লাসেই একজন থাকত যে সব সময় স্যান্ডেল পায়ে দিয়ে আসত এবং নিয়ম মাফিক পিটি স্যারের উত্তম-মধ্যম খেতে খেতে শপথ করত - কালকে থেকে জুতা পায়ে দিয়ে আসবে।
এখন মাঝে মাঝে সকালে বের হলে, ব্যাগ কাঁধে নিয়ে হাফ প্যান্টে ইন করা শার্টে ছেলেদের দেখতে পাই। দেখলে মনে পড়ে- একসময় আমিও এরকম কাক ডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠতাম। চুল আঁচড়িয়ে আগের দিন রাতে গুছিয়ে রাখা বই নিয়ে বের হতাম। রোল কলের সময় চিৎকার করে ' প্রেসেন্ট স্যার ' বলা অন্যরকম এক জীবন ছিল। যে জীবন স্কুল পালিয়ে খাঁ খাঁ রোদে রাস্তায় চষে বেড়িয়েছে।  যে জীবন শফি চাচার এক টাকার চানাচুর পয়সা না দিয়ে খেয়ে এসেছে ...! আচমকা প্রেমে পড়েছিল, যে জীবন।  
এখন তাদের সাথে দেখা হলে আমি পালিয়ে যাই। কিছু মানুষ কেবলই সৃতিতে সুন্দর  কেবলই সৃতিতে !!

Sunday 15 September 2019

বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ




প্রায়ই পত্রিকায় "বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ' নাম দিয়ে এক ধরণের নিউজ দেখা যায়।
এই নিউজগুলো দেখে আমি একটু বিরক্তই হই। কারণ কথাটা আমার কাছে পরস্পরবিরোধী মনে হয়। কেন? বলছি। প্রথমে দেখা যাক ধর্ষণ এর সংজ্ঞা কি:
অধিকাংশ বিচারব্যবস্থায় ধর্ষণ বলতে, "কোনো ব্যক্তি কর্তৃক অন্য কোনো ব্যক্তির অনুমতি ব্যতিরেকে তার সঙ্গে যৌনসঙ্গমে লিপ্ত হওয়া কিংবা অন্য কোনোভাবে তার দেহে যৌন অনুপ্রবেশ ঘটানোকে বুঝায়।"
এখন এই ঘটনা ভাবুন,

কোন পুরুষ একজন নারীর সাথে রিলেশনশিপ এ আছেন। প্রেমিক পুরুষটি যথাযথ সময় পর তার প্রেয়সীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে চাইলেন। প্রেয়সী রাজি হলেন। তবে একটা শর্ত দিয়ে যে, তাকে গ্যারান্টি দিতে হবে বিয়ে করার। প্রেমিক মহাশয় রাজি হলেন। এবং তারা করলেন শারীরিক সম্পর্ক। এবং তাদের সম্পর্কও চালিয়ে যেতে থাকল। সম্পর্ক ভালই চলছিল এবং কিছুদিন পর কোন এক কারণে তাদের ব্রেকাপও হয়ে গেল। ধরুন ব্রেকাপটা পুরুষটিই করল কোন কারণে।

আমাকে এবার বলুন। এটা কি ধর্ষণ??
এখানে তো সম্মতি দেয়াই হয়েছে। আর এই ধরণের শর্ত দিয়ে যৌনসঙ্গমকে আমি ধর্ষণ বলতে রাজি না। বড়জোর এটাকে হয়ত প্রতারণা বলা যেতে পারে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আমার নারী ও পুরুষ উভয়ের কাছেই কিছু বলার আছে।
বিয়ের আগে আপনার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে হলে যদি বিয়ের প্রতিশ্রুতি লাগে তাহলে আমার মনে হয় না আপনার বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্কে জড়ানো উচিত হবে। কারণ রিলেশনশিপ যে টিকেই থাকবে এটা কেউ গ্যারান্টি দিতে পারে না। অনেক সময় পাঁচ ছয় বছর রিলেশনশিপ এ থেকেও কেউ কাউকে সত্যিকার অর্থে বুঝতে পারে না। তাই সম্পর্ক হলেই যে এটা বিয়ে পর্যন্ত গড়াবে সেটা ধরে নেয়া হবে বোকামি। আমাকে বলুন, শুধুমাত্র শারীরিক সম্পর্কের কারণেই কি কাউকে বিয়ে করে ফেলা উচিত??
যদি সেই লোকটা আপনার সাথে কম্পাইটেবল না হয় তবে? এমন কাউকে আপনি বিয়ে করতে চান যাকে আপনি "বাধ্য" হয়ে বিয়ে করছেন বা সদিচ্ছায় করছেন না??
শুধুমাত্র "ওকে আমার সব দিয়ে দিয়েছি। তাই ও চোর বাটপার, চিট যাইই হোক ওকে বিয়ে করতে হবে।" এই ধরণের মেন্টালিটিতে আমার গা গুলিয়ে আসে।
কারণ,You are not a thing. You are a human being. কারো সাথে যৌনসঙ্গম করা মানেই তাকে "সব দিয়ে দেয়া" নয়। তাই এই ধরণের মেন্টালিটি ত্যাগ করুন।
যদি শারীরিক সম্পর্ক করতে চান তাহলে এই কথাটি মাথায় নিয়েই করুন যে এই সম্পর্ক হয়ত নাও ঠিকতে পারে। আর যৌনসম্পর্ককে যদি খুবই Sacred কিছু ভাবেন তাহলে আপনি বিয়ে পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। You can't have it both ways.... It's just a fact.
যদি এইরকম শর্তের মুখোমুখি হন তাহলে, প্রথমত আপনার দেখতে হবে,
১) এই রিলেশিনশীপে দুজনের লক্ষ্য ও প্রত্যাশা কি একই রকম?
২) শারীরিক সম্পর্ক আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ?
৩) এবং, এই শর্ত মেনে নিয়ে কাজটি করতে পারবেন কিনা?
যদি প্রত্যেকটি প্রশ্নের উত্তর হ্যাঁ হয়। তাহলে বলব, Go ahead. আর যদি একটা প্রশ্নের উত্তরও না হয়।  তাহলে আমি বলব ভাই, "Run. Run as fast as you can." এই রিলেশনশিপ আপনার জন্য নয়।  

 ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি শর্ত দিয়ে ভালোবাসা হয় না। ভালোবাসা হয় নিঃশর্ত ভাবে। ভালোবাসায় Trust জিনিসটা থাকতে হয়। আর যদি Trust না থাকে তাহলে সেটা ভালবাসা হতে পারে না। এরকম শর্ত মেনে যদি রাখতে না পারেন এবং সেই মেয়েটি আইনানুযায়ী প্রতারণা কিংবা ধর্ষণ মামলা দিয়ে দেয় তাহলে কিন্তু সারাজীবনের জন্য ফেঁসে যাবেন।
আদালতের কাছে আপনি "Innocent untill proven guilty" হলেও মানুষের কাছে আপনি "Guilty no matter what" বলেই বিবেচিত হতে পারেন। এটাই বাস্তব।
তাই এই ধরণের শর্ত একসেপ্ট করার আগে ভেবে চিন্তে নিন যে এই রিস্ক আপনি নিতে চান কিনা। কারণ রিলেশনশিপের প্রথম দিকে নিজের প্রেমিক বা প্রেমিকাকে সকল খুঁতবিহীনই মনে হয়। এসব খুঁত এবং আপনার সাথে অপর পক্ষের সামঞ্জস্যতা, অসামঞ্জস্যতা ধীরে ধীরে প্রকাশ পায়। তাই হয়ত আরো কয়েকবছর বাদ Honeymoon Phase কেটে যাওয়ার পর যদি দেখেন যে, সে আপনার জন্য নয় তাহলে কি করবেন??
আমার এই কথাগুলো হয়ত আপনাদের শুনতে ভাল লাগছে না। কিন্তু এগুলো বাস্তব সত্য। আবেগ দিয়ে চিন্তা না করে মস্তিষ্ক দিয়ে চিন্তা করুন।
আমার এক বন্ধু সবসময় বলে, 'দোস্ত, সব সময় উপরের মাথা দিয়ে চিন্তা করবি। নিচের মাথা দিয়ে না। কারণ নিচের মাথার কোন ব্রেইনই নাই।'
আরেকটা ঘটনা দেখতে পারেন।
ধরুন আমি আপনাকে চা খাওয়ার আমন্ত্রণ জানালাম। আপনি রাজিও হলেন। তারপর আপনাকে চা দেয়ার পর আপনি দুই চুমুক দিয়ে চা ফেলে দিলেন। এর পর পরই আপনি দাবি করলেন আমি আপনাকে জোর করে চা খাইয়েছি। এটা কি যৌক্তিক দাবি হল??
আপনি চা খেতে না চাইলে আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করতে পারতেন। আবার চুমুক দিয়েও ফেলে দিতে পারতেন। এটা আপনার অধিকার।
কিন্তু চা খেতে চেয়ে জোর করে চা খাইয়েছি বলতে পারেন না।
কি? এই ঘটনা শুনে রাগে গা কিলবিল করছে??
তাহলে আপনাকে আমি একটা কথাই বলব,
Facts don't care about your feelings..
ধর্ষণ তখনই বলা যেতে পারে যখন যৌনসঙ্গম এ সম্মতি থাকবে না। 'ও আমার অমুক শর্ত ভেঙেছে, তাই এটা ধর্ষণ' কোন ন্যায়বিচারপূর্ন আদালতেই ধর্ষণ বলে বিবেচিত হবে না।
আপনাকে consensual sex একজন বোধবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের মতোই নিতে হবে। আর যদি আপনি সেটা নিতে না পারেন তাহলে ওটা আপনার জন্য নয়। আমি দুজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সম্মতিপূর্বক শারীরিক সম্পর্কে আপত্তি করছি না। আপত্তি করছি এর অসচ্ছতায়। দুজনকেই সেম পেজে থেকে এই কাজটা করা উচিত। আপনাদের পার্সোনাল লাইফে আপনারা যা ইচ্ছা করতে পারেন। তবে অন্ততপক্ষে সব কিছু পরিষ্কার করে নিয়ে যাতে করেন এটাই চাওয়া। না হলে অযথাই ঝামেলা বাড়ানো হবে। আপনার জন্য ও আপনার পরিবারের জন্যও। একটাই লাইফ আপনার। Make good decisions.





পরকীয়া.. কঠিন একটা শব্দ।


কাজটা কি কঠিন.. নাকি সোজা?
সে যাই হোক না কেন, দুঃসাহসিক বটে.. সেই সাথে ভয়ংকর, বিপজ্জনক এবং লজ্জাজনকএটা একটা বিবেকবর্জিত, অনৈতিক কাজ। খুব সাধারণভাবে বলা যায়, এটা অন্যের স্ত্রী বা স্বামীর সাথে শারীরিক ও মানসিক দখলদারিত্ব বা অংশীদারিত্বের সম্পর্ক। স্বার্থপরের মত কেবল নিজে আনন্দ লাভের জন্য নিজের পরিবার, সন্তান, স্বামী বা স্ত্রীকে প্রতারিত করা বা ঠকানো ছাড়া আর কিছুই না। এটা স্রেফ ঠকানোর একটা কৌশল।
প্রতিটা সম্পর্কেই এক একটা দায়বদ্ধতার (commitment) জায়গা থাকে.. বিশেষ করে স্বামী বা স্ত্রীর ভেতর তা আরও বেশী। কেননা, এই যুগলের মাধ্যমেই সৃষ্টি, তৈরী কিংবা সূচনা হয় একটা ঘরের, একটা সংসারের। যেখানে আবেগের ওঠানামা থাকে, মান অভিমান, বিশ্বাস (trust, loyalty, sincerity) এবং ভালোবাসার বিচরণ ঘটে সর্বত্র। প্রতিটা দায়বদ্ধতার পেছনে ভালোবাসা, ভালো লাগা কাজ করে.. এখানে বিবেকও বিশাল একটা ভূমিকা পালন করে থাকে।
স্বামী বা স্ত্রীর সম্পর্কের ভেতর আবেগ আর দায়িত্ব যেন একসাথে সামন্তরাল পথে চলে।  মাঝে মাঝে আবেগে ভাটা পড়ে.. দায়িত্ব, দায়বদ্ধতা এসে আবেগকে দূরে সরিয়ে দেয় নিজের অজান্তে। যারা শুধুমাত্র অতি আবেগে ভেসে বেড়াতে চান, সব সময় নিজের এবং সংসারের দায়িত্বটাকে পাশ কাটাতে চান, রংবেরং এর মাংসাশী প্রাণীদের মত কেবল স্বাদ নিতে চান এবং নিজে সুখ রচনা করতে না পেরে অন্যের তৈরী করা সুখের রাজত্বে বিচরণ করতে চান, তারাই পরকীয়ার দিকে ধাবিত হন বেশী।  এটা চরিত্রের একটা অন্ধকার দিকও বটে।
আমরা সবসময় নিজের জীবনসঙ্গী ছাড়া অন্য কাউকে যখন বাইরে থেকে দেখি, তখন তার পরিপাটি বেশভূষাটাই চোখে পড়ে। তখন থাকে না একে অপরের প্রতি কোন দায়দায়িত্ব বা চিন্তাভাবনা। থাকে না কোন শাসন বারণ। সবসময় নিজেকে ভালোভাবে অন্যের কাছে উপস্থাপনে মত্ত থাকা। এখানে নেই কোন চাল, ডাল, তেল, নুনের হিসাব নিকাশ। নেই কোন সন্তানের ভবিষ্যৎ কিংবা বেড়ে ওঠা, পেশা কিংবা অর্থনৈতিক গল্প কথা। নেই কোন সাংসারিক দায়িত্ব বা দায়বদ্ধতার চাপ। অথচ, নিজের সঙ্গীকে আমরা বেশীরভাগই দেখি বেশভুষা আর চেহারায় কৃত্রিমতার বাইরের এক মানুষ, অনেক সময় সাংসারিক খুঁটিনাটি চিন্তায় নিমজ্জিত দায়িত্ব পালনের এক রোবাট হিসাবে। আর বাইরের মানুষটি যে কেবল চমৎকার শব্দচয়নে আবেগের গানই শোনায় না, নতুন করে স্বপ্নে বিভোর রাখে বা বিভোর করে রাখতে চায়। নানা রকম মিথ্যা এসে ভর করে। দুজন মানুষ রঙ্গিন ফানুসের মতই উড়তে থাকে। পরিণাম পরকীয়া নামক এক মরিচীকার পেছনে ছোটা! ভেঙ্গে যায় ঘরের মানুষের বিশ্বাস, ভেঙ্গে যায় নিজেদের এবং সন্তানদের স্বপ্ন, ছিন্ন হয় ভালোবাসার। মৃত্যু ঘটে একটা সংসারের, একটা ঘরের।
অথচ কোন এক সময়ে যে সংসারটার পথচলায় বন্ধু ছিলেন দুজন মানব মানবী। এ সেই একই মানুষ, যিনি জীবনের শুরুতে বিপত্তিগুলো নিজের করে নিয়েছিলেন, সঙ্গীকে আগলে রেখেছিলেন সবকিছু থেকে শত কষ্টের বিনিময়েও। হয়ত বা কখনও নিজের দিকে তাকাবারও সময় বা বিশ্রাম পাননি... একাই সামলেছেন শত ঝড় ঝাপ্টা। অথচ, আরেকজনের জন্য, কোন এক বিবেকবর্জিত, অমানুষ, ঠক, প্রতারকের জন্য একটা সংসারের সবাই কষ্ট ভোগ করেন। ভোগ করেন নানা সামাজিক চাপ, অর্থনৈতিক চাপ। সন্তানরা হারায় তাদের এক সময়ের প্রিয় বাবা অথবা মাকে। অথচ এটা তাদের প্রাপ্য ছিল না, তাদের কোন দোষও ছিল না...কারণ প্রতিটা শিশুই নিষ্পাপ। তাদেরও রয়েছে সুস্থ সুন্দরভাবে ভালোবাসায় বেড়ে ওঠার অধিকার। প্রতিটা মানুষেরই কম বেশী কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে। একজনের একটা জিনিসের ঘাটতি হলেই আরেকজনের কাছ থেকে প্রত্যাশার প্রাপ্তি খোঁজা অপরিপক্কতারই নামান্তর। বরংচ, স্বামী বা স্ত্রীর যার যা নেই, সেটার জায়গায় যার যা গুণাবলী সেটার মূল্যায়ন করলে আর তৃতীয় পক্ষের আবির্ভাব ঘটে না।

দেখুন, জীবনের এই পথচলায় আমাদের কখনো না কখনো কাউকে ভাল লাগতেই পারে। এটা দোষের কিছু না। দোষের হল আপনার সঙ্গীটিকে ঠকানো, তার জায়গাটিতে অন্যকে স্থান করে দেয়া। তাকে এবং তার ভালোবাসা, বিশ্বাসটাকে অসম্মান করা। নিজের সন্তানদের সুন্দর, চমৎকার ভবিষ্যৎটাকে অন্ধকারে ঠেলে দেয়া.. সেই সাথে প্রিয় বর্তমানকে অস্বীকার করা। মনে রাখবেন, নিজের সুখের জন্য, নিজের কামনা বাসনা চরিতার্থ করার জন্য আরেকজনকে সরিয়ে দিলে আপনিও একদিন ঠিক একইভাবে নিক্ষিপ্ত হবেন। প্রকৃতির এটাই নিয়ম।
তাই সব সময় স্বামী স্ত্রী একজন অরেকজনকে পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় দিন। নিজেদের ভালো লাগা, ভালোবাসার জায়গাগুলি ধরে রাখুন। কোন বিষয়ে খটকা লাগলে বিস্তারিত আলোচনা করুন। কথায়, কাজে সঙ্গীকে সম্মান দিন। মনে রাখবেন আপনারা কেউ কাউকে কিনে আনেননি বা আগেকার দিনের কৃতদাস নন যে, সঙ্গী আপনার বশ্যতা স্বীকার করবেন। মনে রাখবেন, প্রথমে বন্ধু হোন তারপর স্বামী বা স্ত্রী। একজন ভালো বন্ধুই পারে আরেকজনের হাতটি শক্তভাবে ধরে রাখতে।
ও হ্যা.. সেই সাথে একে অপরকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করুন, অনুভব করুন আপনার সঙ্গীটি কি চাচ্ছেন? কেন তিনি এত ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত? কেন তার বেগের মৃত্যু ঘটেছে...?! অন্যের কাছে কেবল মিথ্যা সুখ না খুঁজে বরং নিজেই নিজের ঘরকে সুখে দুঃখে সমৃদ্ধিশালী করুন, আর তাহলে তৃতীয় কোন পক্ষ বা শক্তি চাইলেও জায়গা করে নিতে পারবে না। আর যে কোন পরিস্থিতি দুজনই হাসতে হাসতেই একসাথে মোকাবেলা করতে পারবেন অনায়াসে। 

অভিশপ্ত রজনী

  মৃত মেয়েটিকে ধর্ষণ করার সময় মেয়েটি যে জীবিত হয়ে ওঠে সেটা খেয়াল করেনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় কাব্য।ধবধবে সাদা চামড়ার মেয়েটিকে ভোগ করার...