মাতামুহুরী নদী বাংলাদেশের পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের বান্দরবন ও কক্সবাজার জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ১৪৬ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১৫৪ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক মাতামুহুরী নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের নদী নং ১৩।
মাতামুহুরীর সঠিক উৎপত্তিস্থল কোনটি তা বিতর্কিত। কারো মতে লামার মাইভার পর্বতে মাতামুহুরী নদীর উৎপত্তি৷ মগ ভাষায় এই নদীটির নাম মামুরি। মাতামুহুরী নদীর নামকরণেরও একটি ইতিহাস আছে। জনশ্রুতি আছে এই নদী নাকি কোন একটি (একক উৎস নির্দিষ্ট ঝরণা) হতে সৃষ্টি নয়। এতি মাতৃস্তন সদৃশ বিভিন্ন পর্বত গাত্র হতে জল চুয়ে চুয়ে পড়েই নদীর সৃষ্টি। তাই এর নাম মাতামুহুরী। মুহুরী শব্দের অর্থ অসংখ্য ছিদ্র দিয়ে জলপড়া ঝাজর অর্থাৎ ইংরেজিতে বলে শাওয়ার (Shower)। এই নদীটি কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার পশ্চিম পাশ ঘেষে বঙ্গোপসাগর-এ পতিত হয়েছে৷ এর দৈর্ঘ্য প্রায় ২৮৭ কি.মি.৷ বঙ্গোপসাগরে মাতামুহুরীর মোহনায় যে বদ্বীপের সৃষ্টি হয়েছে তা ভোলাখাল থেকে খুটাখালি পর্যন্ত বিস্তৃত।
মাতামুহুরীর নদীর তীরে গড়ে উঠেছে চকরিয়া,লামা,আলীকদম উপজেলা শহর। পাশাপাশি পেকুয়া উপজেলার কিছু অংশের মধ্য দিয়েও এই নদী গেছে। যেমন নীল নদ মিশরের দান, ঠিক তেমনি লামা, আলীকদম ও চকরিয়া এই তিনটি উপজেলা মাতামহুরী নদীর দান বলা চলে। সুদীর্ঘ সময় এসব উপজেলার যোগাযোগ ও বাণিজ্যের প্রধান মাধ্যম মাতামুহুরী। এছাড়া উপজেলাসমূহের প্রধান গঞ্জগুলো মাতামুহুরীর তীরে অবস্থিত। নদী ধরেই লামা ও আলীকদমের মতো পার্বত্য এলাকায় মানব বসতি স্থাপন ও অভিবাসনের সূত্রপাত।
No comments:
Post a Comment