Saturday, 28 October 2017

পৃথিবীতে দুটি অনুভূতি কখনোই লিখে প্রকাশ করা যায় না।

হঠাৎ মধ্যরাতে ঘুমের ভেতরে মুখে পানি ছিটকিয়ে বলা হল- তোমার মা মারা গেছে। 'তোমার মা মারা গেছে' ব্যাকটি শুনে ছেলেটি আবার লেপের নিচে শুয়ে গেল।
সে নিজেকে বুঝিয়েছে, এটা অবশ্যই একটা স্বপ্ন। কোনভাবে একটা ঘুম দিয়ে রাত পার করে ফেললেই সব ঠিক ঠাক...!! কিছুক্ষণ পর আবার ডাকা হচ্ছে তাকে ... সে কি চোখ খুলবে??
চোখ খোলার মানে হল স্বপ্ন না সত্যি সত্যি মা মারা গেছে !
.... বাবাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হল। ডাক্তার বলল , আইসিইউ তে নিতে হবে। খরচ অনেক।
খরচের টাকা থাকা স্বত্বেও ছেলেটি সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেল।
তার ধারণা বাবার একটু প্রেশার উঠেছে... ঠিক হয়ে যাবে...আইসিইউ মানে অনেক খরচ!
যেতে যেতেই ঘণ্টা খানেক পর স্ট্রোক করে মরে গেল বাবা।
কেন টাকা থাকা স্বত্বেও বাবাকে আইসিউতে ভর্তি সে করায় নি ;ভর্তি করালে হয়ত বেঁচে যেত
এই পাপ বোধ নিয়ে যে ছেলে বেঁচে থাকে তার কষ্টের লাইন লিখা যায় না।
...ট্রাকের ধাক্কা খেয়ে থেতলে মরে পরে আছে কোন মা। মাথার খুলি চ্যাপ্টা হয়ে গেছে। মানুষজন গোল হয়ে
দাড়িয়ে আছে এবং কেউ একজন ভেনিটি ব্যাগ নিয়ে চলে গেল।
....মা বলল, বাবা এই শীতে মেলা থেকে একটা ভাল শাল কিনে দিস আমাকে। শীত চলে গেল। মেলা শেষ হল। শাল কেনা হয় নি। সেবার শালের দাম নাকি বেশি ছিল !
মাস দুয়েক পর মায়ের খুব অসুখ করল। প্রচুর খরচ। এর ভেতরেই মা একদিন বলল, আপেল খাবেন। আপেলের দাম অনেক। চারটা কলা নিয়ে বাসায় ফিরল।
কে জানত! পরদিন মা মারা যাবে !
ঘটনা গুলো সত্যি। মানুষের সত্যিকারের গল্প গুলো লেখকের চিন্তা শক্তিকেও ছাড়িয়ে যায়... এক একটি মানুষ এক একটি উপন্যাস... আমাদের সবার গল্প লিখেছেন যিনি তিনি অবশ্যই একজন ভাল ঔপন্যাসিক।
...
এক সময় প্রায় রাতে মেডিক্যাল হাসপাতালের ইমারজেন্সি গেটের সামনে দাড়িয়ে থাকতাম। কেন দাড়িয়ে থাকতাম আমি ঠিক জানি না।
আমি কোন স্বেচ্ছা ব্লাড দেবার মত ভাল কাজের সাথেও জড়িত না।
তবু দাড়িয়ে থাকতাম।
মানুষ দেখতাম। বিষে কাতরানো মানুষ। রক্ত বোঝাই মানুষ। আগুনে পোড়া মানুষ...
একদিন রাতে ঘড়ি ধরে হিসেব করে দেখলাম প্রতি দশ মিনিটে প্রায় সাত থেকে আটজন রোগী আসে। প্রতি ত্রিশ মিনিটে আপনে প্রায় তিন থেকে চারজনকে কাঁদতে দেখবেন।
মানুষের কত কষ্ট..এখানে না এলে বুঝবেন না।
একজনকে দেখলাম ডাক্তারকে বলছে , তার স্বামীকে যে কোন ভাবেই হোক অন্তত ত্রিশটা দিন যেন বাঁচিয়ে রাখে। প্রায় ত্রিশ দিন পর তার সন্তান হবে। মেয়ে সন্তান।
মেয়েটা সারাজীবন তার বাবাকে দেখবে না। এই আফসোস নিয়ে সে বড় হতে পারবে না।
তার দু দিনের মাথাতেই মানুষটি মারা গেল।
এই প্রথম বারের মত আমার মনে হচ্ছে আমি আসলে ঠিক মত লিখতে পারছি না।
পৃথিবীতে দুটি অনুভূতি কখনোই লিখে প্রকাশ করা যায় না।

পাওয়ার অনুভূতি
২ - হারানোর অনুভূতি

 https://www.facebook.com/onthisday/?source=notification&notif_id=1509250794438707&notif_t=onthisday

No comments:

Post a Comment

অভিশপ্ত রজনী

  মৃত মেয়েটিকে ধর্ষণ করার সময় মেয়েটি যে জীবিত হয়ে ওঠে সেটা খেয়াল করেনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় কাব্য।ধবধবে সাদা চামড়ার মেয়েটিকে ভোগ করার...