Thursday, 9 February 2017

(আত্মহত্যা) Ali Wamim Khan



২০১৪ সালের ২৯ মে, একটি ছেলে পাতা ( বোফাম ) ঘুমের ট্যাবলেট কিনে একটি পানির জগে মিশিয়ে দেয় ছেলেটির নাম Ali Wamim Khan
সে প্রথমে ঠিক করে নদীতে ঝাপ দিয়ে মারা যাবে পানির নিচে হাবুডুবু খাচ্ছে ; একটা অন্ধকার নদীতে তার লাশ ভেসে থাকবে এই সব ভেবে ছেলেটা কিছুটা আতংকগ্রস্ত হয়ে পড়ে
তারপর গলায় ফাঁস নেবার পরিকল্পনা করে একটা দড়ি হাতে নিয়ে ফাঁস নেয়া মুহূর্তটা সে কল্পনায় আনতেই কেমন বীভৎস একটা লাশ চোখের সামনে ভেসে উঠল
একসময় সে শান্ত হয় তার কাছে মনে হল ঘুমের ওষুধ হল সব থেকে সহজ ভাবে মরে যাবার এক মাত্র উপায় ফার্মেসী থেকে পাতা ঘুমের ট্যাবলেট কিনে এনে একটি পানির জগে মিশিয়ে দেয় পানি গুলো মুহূর্তেই ঘোলাটে সাদা হয়ে গেল
রাত তখন নয়টা ত্রিশ অভিমানি এই মানুষগুলোর বড় বড় ইচ্ছে গুলো অপূর্ণ থাকে বলেই তারা মরতে চায় একারণেই হয়ত মরে যাবার আগে ছোট ছোট দু একটা ইচ্ছে তারা মিটিয়ে যায় সেও তাই করল
তার ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় হবার শখ ছিল তাই সে মরে যাবার আগে প্রিয় ব্যাডমিন্টন একাডেমীর একটি জার্সি পরে নেয় শেষ বারের মত তার সব থেকে পছন্দের একটি গান প্লে করে এই সব সময় যে গানটিই শোনা হয় মনে হয় গানটি একান্তই তার জন্যই লেখা হয়েছে
সেদিন সে খাবার টেবিলে বাবা মায়ের সাথে অনেক বেশি সময় সময় নিয়ে কথা বলেছে চ্যানেল পাল্টানোর মত জীবনের ১৭ বছরের সব স্মৃতি একটার পর একটা চোখের সামনে ভেসে উঠল যে কথা গুলো কাউকে কোনদিন বলতে পারেনি; একটা ডাইরিতে লিখে ফেলল কত সাধের এই জীবন ! কে বল শখ করে মরতে চায় !
রাত এগারোটায় তার এক বন্ধু ( রাহাত) তাকে ফোন করে জানাল, মরে যেতে চাইলে আগামীকাল মরিস একটা আইডির নাম দিয়ে বলল আজ রাতে এই আইডিটার লেখা গুলো পড় আইডিটি আমার ছিল
নিজের কথা লিখতে আমি যথেষ্ট বিব্রত বোধ করছি আমি এমন কিছু লিখি না যেটা একজন মানুষকে মৃত্যুর আগ মুহূর্ত থেকে ফিরিয়ে আনার সামর্থ্য রাখে মুরুব্বী শ্রেণীর অনেকেই আমাকে ছীটগ্রস্ত মানুষ হিসেবে চেনে
আমার জীবনের একমাত্র এওয়ার্ড হল - একদিন রাতে একটি ছেলে আমার ছাইপাশ লেখা গুলো পড়ে সাত পাতা বোফাম মেশানো জগের পানি গুলো বেসিনে ফেলে দিয়েছে কেউ যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করে, 'জীবনে তুমি কী করেছো' আমি তাকে এই একটি গল্প হলেও বলার সুযোগ পাব
২০১৪ সালে ওয়ামিমের মরে যাবার কথা ছিল ২০১৫ তে সেই ওয়ামিমকে নিয়ে সারা বাংলাদেশে হৈচৈ পড়ে গেছে কিছুদিন আগে এই ছেলেটিকে ইনসিকিউর রেনিগ্রেশন ক্রুটি ধরিয়ে দেবার জন্য 'এ্যাপেল' থেকে এওয়ার্ড দেয়া হয় একই কারণে সে এওয়ার্ড পায় মাইক্রোসফট এবং নোকিয়া কোম্পানি থেকে
এই নিয়ে প্রথম আলো অক্টোবর , ১৬ সেপ্টেম্বর কালের কণ্ঠ ( ক্যাম্পাসের পাতা) থেকে শুরু করে অন্যান্য নিউজ চ্যানেলে অনেক নিউজ হয়েছে
ওয়ামিম ছোট বেলা থেকে সব থেকে বেশি যে কথাটা শুনে এসেছে সেটা হল ' তোমাকে দিয়ে হবে না ' মানুষের এই সব কথা শুনে পালিয়ে যাবার অর্থ হল তাদের কথা গুলোকে প্রতিষ্ঠিত করা একটা কিছু করে শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে এদের জবাব দিতে হয়
ওয়ামিম পারলে তুমি কেন পারবে না ?
আইনস্টাইনের এই কথাটা সব সময় মনে রাখবা
পৃথিবীতে সবাই জিনিয়াস; কিন্তু আপনি যদি টি মাছকে তার গাছ বেয়ে উঠার সামর্থ্যের উপর বিচার করেন তাহলে সে সারা জীবন নিজেকে শুধু অপদার্থই ভেবে যাবে

No comments:

Post a Comment

অভিশপ্ত রজনী

  মৃত মেয়েটিকে ধর্ষণ করার সময় মেয়েটি যে জীবিত হয়ে ওঠে সেটা খেয়াল করেনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় কাব্য।ধবধবে সাদা চামড়ার মেয়েটিকে ভোগ করার...