Thursday, 23 February 2017

ভাই ৫ টাকা দেন না, ভাত খাবো।


সিগারেট টানছিলাম, পাশে কেউ গেঞ্জি ধরে টানলো। ঘুড়ে দেখলাম এক ৭-৮ বছরের একটা মেয়ে।
-ভাই ৫ টাকা দেন না।
-৫ টাকায় কি হবে ?
-ভাত খাবো।
-৫ টাকায় ভাত হয় ??
-অল্প করে খাবো।
-(speechless !!) কত টাকা হলে বেশি করে খাওয়া হবে ?
-৫০ টাকা। ভাত ১০ আর তরকারি ৪০।দিবেন ?
-হুম দিতে পারবো।
-এত টাকা দিবেন !! (চোখে মুখে বিস্ময়)তয় ভাত কিইনা দেওন লাগবোনা,একটা উপকার করেন।
-কি উপকার ?
-ঐ টাকার চাউল কিনে দেন। বাসায় নিয়ে যাবো। মা সহ খাবো।
-বাসায় কে কে আছে আর তোমার ?
-মা বুইন আর একটা ভাই। মা হাটবার পারেনা। বুবু কাজ করে। বড় ভাই চা এর দোকানে থাকে। আমি ভিক্ষা করি।
- তোমার বাবা ?
-ছাইড়া গেছে অনেক আগে, মনে নাই।
-হুম। পড়াশোনা কর না ?
-পড়লে ভিক্ষা করতাম কখন ? খাওন জুটবোনা।
১ কেজি চাউল আর কিছু ডিম কিনে দিয়ে বিদায় নিলাম। ৪ জনের সংসারে একদিন চলে যাবে।
খুব অদ্ভুত ভাবে বেড়ে উঠে ওরা।খুব অল্প বয়সেই জীবনকে বুঝে নিতে শেখে।
৭ বছরে যথসম্ভব আমি কেজি/ওয়ানএ পড়তাম। এই বিকাল টাইম টাই Drawing করতাম। অবসরে ওটাই শখ ছিল। নিশ্চিন্তে Drawing করতাম। খাওন জুটবে কই থেকে এই চিন্তা অন্তঃত ছিলনা। পড়লে খাওয়োন জুটবো কই থেকেএই ধরণের প্রশ্নও মাথায় আসেনাই।এগুলো চন্তার জন্য বাবা-মা ছিল।
>> ৫ টাকায় আমি তো ছোটবেলায় কলম কিনেছি। আমার শিক্ষার উপকরণ। সে ৫ টাকায় ভাত খুজে। তার বেচে থাকার উপকরণ। বর্তমানে আমাকে অফিস থেকে কলম দেওয়া হয়, যার দাম ১৯০ টাকা। আর যেই সিগারেট টা খাচ্ছিলাম তার দাম ১০ টাকা।
পথের ধুলোয় অদ্ভুত ভাবে বেড়ে উঠার মাঝেও তাদের মধ্যে বিবেকবোধ তৈরী হয়েছে। ৫০ টাকা্য হোটেল থেকে ভাত-তরকারি কিনে খাওয়ার থেকে বাসায় পঙ্গু মা আর ভাই বোন কে নিয়ে খাওয়া বেশি তৃপ্তিজনক সেই বোধও এই ৭-৮ বছরের অশিক্ষিত মেয়ের মাঝে তৈরী হয়েছে। শিক্ষায় শুধুমাত্র বিবেকবোধ শেখায় না।
এর বয়সে রোজ সকালে আমি ভাবতাম আজ স্কুলে যেয়ে টিফিনে কি খেলব, কার পাশে বসবো, স্যারের কোন হোমওয়ার্ক আছে কিনা।
আর এই মেয়েটা ভাবে রোজ সকালে কোন রাস্তায় ভিক্ষা করলে বেশি টাকা পাবেআর ৫০ টাকা আমাদের একদিন মোবাইলে খরচ যায় আর ওদের সবাই মিলে এক বেলা খাওয়া হয়ে যায়।
একই স্রষ্টার স্রিষ্টি আমরা দুইজনই। দুইজনই দুইজনের বাবা-মা এর সন্তান। স্রষ্টা চাইলে আমার আর স্থান টাও উল্টো হতে পারতো। আমরা ভুলে যাই সব।অনেক অহংকার আমাদের। গরীব দের মানুষ ভাবিনা। কখনও তাদের গায়ে হাত তুলি। কাছে আসলে রুমাল নাকে দিই।আমাদের ভাব ভঙ্গি এমন যে আজ আমাদের যা ভালো পজিশন এর ক্রেডিট আমাদের।অথচ স্রষ্টা চাইলে আজ সে চা খাইতো আর আমি গেঞ্জি টেনে ৫ টাকা চাইতাম অল্প করে ভাত খাওয়ার জন্য।
ভালো রেখেছেন স্রষ্টা সত্যিই অনেক। নিম্নবিত্ত এই মানুষ গুলোর জীবন বৈচিত্রের সাথে তুলনা না দেওয়া পর্যন্ত সত্যিই বুঝিনা আমি কতটা সুখে আছি, কতটা ভাল আছি…………
তাই কখোনো এই সব ছোট পথ শিশুদের গায়ে হাত তুলবেন না, নাকে রুমাল দিয়ে তাদের কে তাড়িয়ে দিবেন না, তাদের ই সমবয়সী আমাদের ও আছে ভাই বোন, আজকে এই পথ শিশুর জায়গায় আপনার ছোট ভাই বা বোন থাকলে আপনি কি করতেন? নাকে রুমাল দিয়ে তাড়িয়ে দিতেন????

1 comment:

অভিশপ্ত রজনী

  মৃত মেয়েটিকে ধর্ষণ করার সময় মেয়েটি যে জীবিত হয়ে ওঠে সেটা খেয়াল করেনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় কাব্য।ধবধবে সাদা চামড়ার মেয়েটিকে ভোগ করার...