Wednesday, 15 February 2017

ছবি মনে করিয়ে দেয় মহাজাগতিক পরিমন্ডলে মানুষের অবস্থান কত নগণ্য।




1977 সালের 5 সেপ্টেম্বর 722 কিলোগ্রাম ওজনের রোবটিক স্পেস ক্রাফট ভয়েজার-1 উৎক্ষিপ্ত হয়। প্রতি ঘন্টায় 64000 মাইল বেগে ছুটে চলা এটি 1979 সালে বৃহস্পতি গ্রহ, 1980 সালে শনি গ্রহ অতিক্রম করে। 2015 সালে ভয়েজার সৌরজগতের শেষ সীমান্তে অর্থাৎ পৃথিবী থেকে প্রায় 1100 কোটি মাইল দুরবর্তীচৌম্বকীয় মহাসড়কস্তরের সন্ধান পায়। প্রায় 40 বৎসরকাল ছুটে চলছে ভয়েজার এবং এখনো গভীর মহাশুণ্য থেকে পাঠানো বার্তার মাধ্যমে পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ রেখে চলছে। বর্তমানে ভয়েজার থেকে পৃথিবীতে বার্তা আসতে সময় লাগে 18 ঘন্টারও কিছু বেশী।
1990 সালে নাসার মহাকাশযান ভয়েজার-1’ যখন আমাদের সৌরজগতের সীমা ছাড়িয়ে আন্তনাক্ষত্রিক শুণ্যতায় প্রবেশ করছিল তখন জ্যোতি বিজ্ঞানী কার্ল সাগানএর অনুরোধে ভয়েজার মাত্র একবার পেছন ফিরে পৃথিবীর একটামাত্র ছবি তুলে পাঠিয়েছিল।
600 কোটি কিঃমিঃ দুর থেকে তোলা পৃথিবীর সে ছবি বিশাল গাঢ় অন্ধকারের মাঝে কয়েকটা আলোক রেখা- তার মাঝে মলিন একটা বিন্দু। সাগানের ভাষায় পেইল ব্লু ডট’- মলিন বিন্দুটাই আমাদের 700 কোটি মানুষের বসতি পৃথিবী।
এ ছবি মনে করিয়ে দেয় মহাজাগতিক পরিমন্ডলে মানুষের অবস্থান কত নগণ্য।
কার্ল নাহার কার প্রকাশিত পেইল ব্লু ডট প্ল্যানেটবইতে লিখেছেন, বিশাল দুরত্বে পৃথিবীকে নিছক একটা বিন্দুর বেশী মনে হয় না। একটু ভাবলেই শিহরিত হতে হয়। এটাই পৃথিবী-আমাদের বসত-এটাই আমরা। যাদের আমি ভালবেসেছি, যারা আমার পরিচিত তাদের সবাই এখানে। যাদের কথা আমরা শুনেছি তারাও এখানে জীবন হারিয়েছে। আমাদের সারা জীবনের হাসি কান্না, দুঃখ কষ্ট, হাজারো ধর্ম, মতবাদ, লুন্ঠন, সাহসী, ভীরু, সভ্যতার নির্মাণ বা ধ্বংসকারী, সকল রাজা-প্রজা, প্রেমিক, বাবা মা, স্বপ্নচারী কিশোর তরুণ, রাজনীতিক, সাধু-পাপী, দূনীতিবাজ, আস্তিক নাস্তিক সবার জীবন কেটেছে এবং কাটছে আলোয় ভেসে থাকা ছোট্র ওই ধুলিকণা- মলিন বিন্দুটিতে। সীমাহীণ বিশাল মহাবিশ্বে আমাদের পৃথিবী অতি ক্ষুদ্র একটি মঞ্চ।
অতি ক্ষুদ্র এ বিন্দুর ততোধিক ক্ষুদ্র অংশ জয় করার জন্য কত রক্ত ঝরেছে- কত হিংস্রতা। আমাদের নাক উঁচু ভাব, অহমিকা, বিভ্রম, প্রশ্নবিদ্ধ অহংকারকে ধুলিসাৎ এর জন্য ভয়েজারের তোলা ক্ষুদ্র বিন্দুর চেয়ে উত্তম উদাহরণ কি হতে পারে?
বর্তমানে বিশ্বব্যাপী চলমান চাপানো যুদ্ধ বিগ্রহ, বল্গাহীন লোভ, দখলবাজী, অন্যায় আর অবিচার দেখে বিবর্ণ মলিন বিন্দু পৃথিবীর কথাই মনে হয়।

No comments:

Post a Comment

অভিশপ্ত রজনী

  মৃত মেয়েটিকে ধর্ষণ করার সময় মেয়েটি যে জীবিত হয়ে ওঠে সেটা খেয়াল করেনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় কাব্য।ধবধবে সাদা চামড়ার মেয়েটিকে ভোগ করার...