কিছু দিন আগের কথা বলছি। রাত ৩ টা ত্রিশ মিনিটে আমার কাছে একটি ফোন এল। একুশ বছরের একটি মেয়ে খুব শান্ত গলায় জানতে চাইলো, কী করছি আমি।
আমি কী করছি সেটা শোনার পর সে জানাল আর কিছুক্ষন পর সে চল্লিশটা ঘুমের ট্যাবলেট খাবে। ভোরের জন্য অপেক্ষা করছে।
এই মেয়েকে আমি চিনি। গ্রীন রোডের ছয় তলা বারান্দা থেকে সে প্রায়ই লাফ দিয়ে মরার কথা ভাবে। তার মাথায় প্রচুর সমস্যা থাকার কারণেই হয়ত তাকে আমার খুব পছন্দ।
তার সব থেকে বড় পাগলামীটা হল রাতে কাউকে কিছু না বলে রাস্তায় বের হয়ে পড়া।
ষ্টেশনে গিয়ে কোন একটা ট্রেনে উঠে পড়বে এবং ফেরার ট্রেনেই ফিরে আসবে।
সমরেশের সাতকাহনের দীপা মেয়েটিকেও তার পছন্দ না। কেন পছন্দ না সেটা আমাকে জানিয়েছে। এই মুহূর্তে মনে করতে পারছি না।
এইসব মেয়েদের অনেক সমস্যার একটা হল কথা বলার মানুষ খুঁজে পায় না। তার আশে পাশের মেয়ে গুলোকে তার কাছে বেশ মেয়েলী মনে হয়।
ছেলে গুলোকে মনে হয় এরা সারাক্ষণই আনকনসাস মাইন্ডে তাকে মুগ্ধ করার চেষ্টা করছে। মুগ্ধ করার জন্য সস্তা ফিলোসফি বলবে। সুন্দর সুন্দর লেকচার দিবে। যার সারমর্ম হল - আমি খুব অসাধারণ। আমি অন্যদের থেকে আলাদা’
কাজেই একটা পর্যায় এরা নিঃস্ব হয়ে পড়ে। অনেক মানুষের সাথে থেকে নিঃস্ব। হল ভর্তি মানুষের ভীড়ে নিঃস্ব।
যে মেয়েটির কথা আমি বলছি আমার ধারণা সে সিজোফ্রেনিয়া রোগে আক্রান্ত। মাঝে মাঝে শব্দ দেখতে পাওয়া , ভাতের ফেনার মত গোল গোল হয়ে মাটিতে নেমে আসে শব্দ। বাতাসে বাতাসে ঘুরে...
বাথরুমের জানালায় রোজ ভূত দেখা, আমাকে ফোন করে সেই ভূতের শব্দ শোনানো...
বেশ কিছু মানুষকে সে অশুভ মনে করে, এদের সাথে দেখা হলে সেই জামা আর গায়ে দিবে না। এটা এক ধরনের অবসেশন।
যারা অবসেশনে ভুগে তাদের মাথায় একটা চিন্তা আসলে সেই চিন্তা সহজে বের হবে না। তারা নিজেরাই হয়ত জানে এই চিন্তা অনর্থক; তারপরেও করবে।
প্রসঙ্গে ফিরে আসি। বেশ কিছুদিন আগে রাত ৩ টা ত্রিশ মিনিটে একুশ বছরের একটি মেয়ে আমাকে ফোন করল। সে মরে যেতে চায়।
এই ইচ্ছে তার আগেও হয়েছে। আমি জিজ্ঞেস করেছি, কেন মরে যেতে চাও?
সে বলল; জানি না।
আমাকে অবাক করে দিয়ে সে রবীন্দ্র সঙ্গীত বাজাল। মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগে মস্তিষ্কে বেজে উঠল ‘ বঁধু কোন আলো লাগল চোখে’
আমি একটা সিগারেট জ্বালালাম। লক্ষ করেছি তাকে কোন প্রকার সান্ত্বনা দিতে পারছি না। চেষ্টাও করছি না। অবশ্য কিছুদিন আগে জাফর ইকবাল স্যারের একটা লিখা পড়ে জানলাম এই সময় মানুষ উপদেশ শুনতে চায় না। মানুষ চায় তার কথাটা কেউ মন দিয়ে শুনুক। এতেই কাজ হয়।
যে মেয়েটির কথা আমি লিখছি সে মেয়েটি মরে যাবার ত্রিশ মিনিট আগে একটা সাদা শাড়ি পরেছে। আয়নার সামনে দাড়িয়ে সাজগুজ করেছে।
ঘুমের ট্যাবলেট নিয়ে ভোরের জন্য অপেক্ষা করছে। কোন এক ভোরের আজানের সময় আমার জন্ম হয়েছে। এই ব্যাপারটি তাকে জানালাম।
আরো জানালাম তোমার বেঁচে থাকা খুব জরুরী। সে একটু করে হেসে গিলে ফেলল। গিলে ফেলল বোতলে রাখা মৃত্যু গুলো।
তার ফোন রাখার পর আমি বারান্দায় দাড়িয়ে বেশ কিছুক্ষণ আকাশের দিকে তাকালাম। আজকাল আকাশ দেখা হয় না। আকাশ ভাল লাগে না। বাসা থেকে নেমে মকবুলের দোকানে নাস্তা করলাম।
সকাল ৭ টায় রুম বন্ধ করে ঘুমালাম। একবার মনে হল পুলিশের ফোন আসতে পারে। মরে যাবার আগে আমার সাথে শেষ কী কথা বলেছে... রহস্য কী! আমি পুলিশের ফোনের জন্য অপেক্ষা করলাম। লাইফে একটু ট্র্যাজেডি থাকা দরকার, একেবারে নিরামিস হয়ে যাচ্ছে।
ঘুম থেকে উঠার পর রাত দশটায় তাকে ফোন করি। ফোন বেজে যাচ্ছে... রিসিভ হচ্ছে না। এই প্রথম আমি বুকে একটা ধাক্কা খেলাম। প্রচণ্ড আঘাতের ধাক্কা পশু পাখিরা যতটা সামলাতে পারে মানুষ ততটা পারে না।
আমি কী করছি সেটা শোনার পর সে জানাল আর কিছুক্ষন পর সে চল্লিশটা ঘুমের ট্যাবলেট খাবে। ভোরের জন্য অপেক্ষা করছে।
এই মেয়েকে আমি চিনি। গ্রীন রোডের ছয় তলা বারান্দা থেকে সে প্রায়ই লাফ দিয়ে মরার কথা ভাবে। তার মাথায় প্রচুর সমস্যা থাকার কারণেই হয়ত তাকে আমার খুব পছন্দ।
তার সব থেকে বড় পাগলামীটা হল রাতে কাউকে কিছু না বলে রাস্তায় বের হয়ে পড়া।
ষ্টেশনে গিয়ে কোন একটা ট্রেনে উঠে পড়বে এবং ফেরার ট্রেনেই ফিরে আসবে।
সমরেশের সাতকাহনের দীপা মেয়েটিকেও তার পছন্দ না। কেন পছন্দ না সেটা আমাকে জানিয়েছে। এই মুহূর্তে মনে করতে পারছি না।
এইসব মেয়েদের অনেক সমস্যার একটা হল কথা বলার মানুষ খুঁজে পায় না। তার আশে পাশের মেয়ে গুলোকে তার কাছে বেশ মেয়েলী মনে হয়।
ছেলে গুলোকে মনে হয় এরা সারাক্ষণই আনকনসাস মাইন্ডে তাকে মুগ্ধ করার চেষ্টা করছে। মুগ্ধ করার জন্য সস্তা ফিলোসফি বলবে। সুন্দর সুন্দর লেকচার দিবে। যার সারমর্ম হল - আমি খুব অসাধারণ। আমি অন্যদের থেকে আলাদা’
কাজেই একটা পর্যায় এরা নিঃস্ব হয়ে পড়ে। অনেক মানুষের সাথে থেকে নিঃস্ব। হল ভর্তি মানুষের ভীড়ে নিঃস্ব।
যে মেয়েটির কথা আমি বলছি আমার ধারণা সে সিজোফ্রেনিয়া রোগে আক্রান্ত। মাঝে মাঝে শব্দ দেখতে পাওয়া , ভাতের ফেনার মত গোল গোল হয়ে মাটিতে নেমে আসে শব্দ। বাতাসে বাতাসে ঘুরে...
বাথরুমের জানালায় রোজ ভূত দেখা, আমাকে ফোন করে সেই ভূতের শব্দ শোনানো...
বেশ কিছু মানুষকে সে অশুভ মনে করে, এদের সাথে দেখা হলে সেই জামা আর গায়ে দিবে না। এটা এক ধরনের অবসেশন।
যারা অবসেশনে ভুগে তাদের মাথায় একটা চিন্তা আসলে সেই চিন্তা সহজে বের হবে না। তারা নিজেরাই হয়ত জানে এই চিন্তা অনর্থক; তারপরেও করবে।
প্রসঙ্গে ফিরে আসি। বেশ কিছুদিন আগে রাত ৩ টা ত্রিশ মিনিটে একুশ বছরের একটি মেয়ে আমাকে ফোন করল। সে মরে যেতে চায়।
এই ইচ্ছে তার আগেও হয়েছে। আমি জিজ্ঞেস করেছি, কেন মরে যেতে চাও?
সে বলল; জানি না।
আমাকে অবাক করে দিয়ে সে রবীন্দ্র সঙ্গীত বাজাল। মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগে মস্তিষ্কে বেজে উঠল ‘ বঁধু কোন আলো লাগল চোখে’
আমি একটা সিগারেট জ্বালালাম। লক্ষ করেছি তাকে কোন প্রকার সান্ত্বনা দিতে পারছি না। চেষ্টাও করছি না। অবশ্য কিছুদিন আগে জাফর ইকবাল স্যারের একটা লিখা পড়ে জানলাম এই সময় মানুষ উপদেশ শুনতে চায় না। মানুষ চায় তার কথাটা কেউ মন দিয়ে শুনুক। এতেই কাজ হয়।
যে মেয়েটির কথা আমি লিখছি সে মেয়েটি মরে যাবার ত্রিশ মিনিট আগে একটা সাদা শাড়ি পরেছে। আয়নার সামনে দাড়িয়ে সাজগুজ করেছে।
ঘুমের ট্যাবলেট নিয়ে ভোরের জন্য অপেক্ষা করছে। কোন এক ভোরের আজানের সময় আমার জন্ম হয়েছে। এই ব্যাপারটি তাকে জানালাম।
আরো জানালাম তোমার বেঁচে থাকা খুব জরুরী। সে একটু করে হেসে গিলে ফেলল। গিলে ফেলল বোতলে রাখা মৃত্যু গুলো।
তার ফোন রাখার পর আমি বারান্দায় দাড়িয়ে বেশ কিছুক্ষণ আকাশের দিকে তাকালাম। আজকাল আকাশ দেখা হয় না। আকাশ ভাল লাগে না। বাসা থেকে নেমে মকবুলের দোকানে নাস্তা করলাম।
সকাল ৭ টায় রুম বন্ধ করে ঘুমালাম। একবার মনে হল পুলিশের ফোন আসতে পারে। মরে যাবার আগে আমার সাথে শেষ কী কথা বলেছে... রহস্য কী! আমি পুলিশের ফোনের জন্য অপেক্ষা করলাম। লাইফে একটু ট্র্যাজেডি থাকা দরকার, একেবারে নিরামিস হয়ে যাচ্ছে।
ঘুম থেকে উঠার পর রাত দশটায় তাকে ফোন করি। ফোন বেজে যাচ্ছে... রিসিভ হচ্ছে না। এই প্রথম আমি বুকে একটা ধাক্কা খেলাম। প্রচণ্ড আঘাতের ধাক্কা পশু পাখিরা যতটা সামলাতে পারে মানুষ ততটা পারে না।
No comments:
Post a Comment