কখনও কখনও একত্রবাস ‘দুঃসহবাস’ও হতে পারে।
একজন নারী এবং একজন পুরুষ, এক ছাদের তলে, এক
ঘরে, এক
বাড়িতে থাকার নাম দিয়েছি সংসার। প্রায় সব লোকের ধারণা, যে
একা থাকে তার সংসার নেই। সংসার মানেই কাউকে কারও না
কারো সঙ্গে থাকতে হবে, শুতে হবে, দিন
বা রাত কিছু একটা যাপন করতে হবে। মেরিটাল সোসাইটি তাই মানুষের
সিঙ্গেল লাইফকে খুব একটা অনুমোদন করে না। ফলে
একা থাকার, নিজের
মতো বাঁচার, সংসার
করবার যুক্তির চেয়ে ‘স্বামী-স্ত্রী’ ধারণার
হাজারটা যুক্তি। কোন মেয়ে একা থাকবে? কোন ছেলে একা
বসবাস করবে এ শহরে? এ প্রায় অসম্ভব। হাজারো অশালীন, অশোভন
প্রশ্ন তার সামনে অথচ ‘একত্রবাস’ এর
ভয়ংকর, বীভৎস, গা শিউরে ওঠা সব ঘটনা-
এ সমাজেরই।
যদি প্রশ্ন করা হয়
কোনটি ভালো, ডিভোর্স নাকি
হত্যাকাণ্ড? আমি
বলব নিশ্চিতভাবে প্রথমটি; কেননা তাতে মুক্তি আছে, মৃত্যু
নেই। প্রথমটি স্বাভাবিক, দ্বিতীয়টি অস্বাভাবিক।প্রথমটিতে
অন্যায় নেই, কোনও অপরাধ নেই, দ্বিতীয়টি
নৈতিকতার বিচারে অপরাধ তো বটেই। কোন গল্প নয়, গত
কয়েকদিনে খবরের কাগজেই সংবাদ হয়েছে ঘটনাগুলো: স্বামী ও দুই সন্তানকে একটি
কক্ষে আটকে রেখে ৬ তলা ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা। ঘটনাটি
মতিঝিল ফকিরাপুলের। এ ঘটনার কিছুদিন আগে, স্ত্রীকে খাটের সাথে
বেঁধে রেখে গলায় ফাঁস দিয়েছেন স্বামী। ঘটনাটি মিরপুরের। আর আজ
লেখাটি লিখতে লিখতে, কফিতে চুমুক দিতে দিতে, একফাঁকে
চোখ যায় একটি অনলাইনে, চমকে উঠি! পরকীয়ার
কারণে স্বামীর লিঙ্গ কেটে নিয়েছেন স্ত্রী। ভাবা যায় কী ভয়াবহ! ঘটনাটি
নারায়ণগঞ্জের। ঘটনা আরও অনেক আছে। দু’তিনটি নয়, হাজার, লক্ষ, আমাদের চোখের
সামনে, চারপাশের
ঘটনা এসব। হত্যাকাণ্ড, খুন, পুড়িয়ে
মারা, ধর্ষণ, লিঙ্গ
কর্তন এসব হরহামেশাই ঘটছে। জোর করে একত্রবাস করতে গিয়েই।
সমাজ সব সময়
স্বাভাবিকতাকে অনুমোদন করে না। অস্বাভাবিকতা, অসভ্যতা, বর্বরতাও
অনুমোদন করে। সে কারণেই এমন সব ঘটনা ঘটে। ডিভোর্সকে সমাজ
ভালো চোখে দেখে না, দেখতেও দেয় না। ফলে হত্যাকাণ্ড, আত্মহত্যা, পুড়িয়ে
মারা, লিঙ্গ
কর্তন যত সহজে ঘটে, ডিভোর্স তত সহজে হয় না। হত্যাকাণ্ডকে
যত সহজে মেনে নেয়, তত সহজে ডিভোর্সকে মেনে নেয় না
সমাজ। ফলে ‘এ্যান্টি ডিভোর্স’ সোসাইটিতে
ডিভোর্স হয় না বরং রক্তপাত ঘটে, প্রাণ যায়।
মনে আছে, বছর
কয়েক আগে আলোচিত দু’টি হত্যাকাণ্ড
ঘটেছিল? জুরাইন
ট্র্যাজেডি ও সামিউল হত্যাকাণ্ড। একটু মনে করিয়ে দিতে
চাই। মিডিয়ার কল্যাণে পাঠক নানান গল্প, রঙিন গল্প পড়েছেন, পড়তে
বাধ্য হয়েছিলেন। কখনও-কখনও তা আবার শোভন-অশোভন, শালীনতা-অশালীনতার
মাত্রাকেও অতিক্রম করে গিয়েছিল। শুধু সাংবাদিকদের দোষ দিয়ে লাভ কী? তারা
তো এই সমাজেরই। আর সবার মতো তারাও তো কোনো একটি ঘটনাকে
গভীরভাবে অনুভব করেন না। বিশ্লেষণে যান না।
একপাক্ষিক, পুরুষতান্ত্রিক
চিন্তা করেন। বরং কি ধরনের শিরোনাম ও বর্ণনা
লিখলে এই ঘটনা আরও মুখরোচক হবে তাই ভাবেন। ২৮ জুন ২০১০ থেকে
প্রতিদিনই এই সংবাদ ও তার ফলোআপ ছাপা হয়ে আসছিল দেশের প্রায় সব কয়টি জাতীয়
দৈনিকে। সামিউলের লাশ উদ্ধারের পরদিন, ‘মায়ের পরকীয়ার বলি শিশু সামিউল’ এমন
শিরোনাম করেছে দৈনিকদের প্রায় সবাই। তারপর ‘কথিত
প্রেমিক আরিফকে সঙ্গে নিয়ে সামিউলকে হত্যা করেছে আয়শা হুমায়রা’-এমন সিদ্ধান্তেও চলে আসেন
সাংবাদিকরা। আরিফ গ্রেফতার হবার আগ পর্যন্ত হত্যাকারী হিসেবে প্রায় চিহ্নিত
হয়ে আসছিলেন আয়েশা হুমায়রা একাই। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অভিযুক্তের কোনও
মন্তব্য নেই, নেই
বক্তব্য। সাংবাদিকরা থানা পুলিশের বক্তব্য দিয়ে, পুলিশ
সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদ ছেপেছেন নিজ দায়িত্বে। পুলিশের বক্তব্যকে ধ্রুব
জ্ঞান করে যে তথ্য ও সংবাদ প্রকাশ করে এসেছেন তা যাচাইয়ের প্রয়োজনও মনে
করেননি। সাংবাদিকেরা একেক দিন একেক তথ্য লিখেছেন। কাউকে গ্রেফতার করলেই সে
অপরাধী হয়ে যায় না, প্রমাণ হতে হয় তার অপরাধটি।
অথচ সাংবাদিকরা কী করে অপরাধ ও অপরাধীর বিষয়ে
সিদ্ধান্তে পৌঁছে গিয়েছিলেন? তাদেরও তো দায়িত্ব ছিল অনুসন্ধানের।
শুধু সাংবাদিকদের দোষ
দিয়ে লাভ কী? তারা তো
এই সমাজেরই। আর সবার মতো তারাও তো কোনো একটি ঘটনাকে গভীরভাবে অনুভব করেন না।
বিশ্লেষণে যান না। একপাক্ষিক, পুরুষতান্ত্রিক চিন্তা
করেন। বরং কি ধরনের শিরোনাম ও বর্ণনা লিখলে এই ঘটনা আরও মুখরোচক হবে
তাই ভাবেন। হুমায়রা বিকৃত দাম্পত্যের
শিকার ছিলেন। যে দাম্পত্যে স্বামী ও স্ত্রীতে সুস্থ, স্বাভাবিক, সুন্দর
সম্পর্ক, আকর্ষণ
নেই তাকে আমি বিকৃত দাম্পত্যই বলব। এই দাম্পত্যের পীড়ন এক
সময় বিকৃতি ঘটাবে, দুর্ঘটনা ঘটবে স্বাভাবিক। আমাদের একটি
দার্শনিক দারিদ্র্য আছে। কোনও ঘটনারই গভীরে আমরা যাই না। তল স্পর্শ করি
না। আয়শা হুমায়ারা কেন অপরাধ করেছিলেন, কেন এমন অপরাধ ঘটে, তার মনস্তাত্ত্বিক, সামাজিক
বিশ্লেষণে কেউ যাইনি। সামিউলের বাবা তার মায়ের সঙ্গে
এক বাড়িতে থাকলেও একত্রে বাস করতেন না। থাকতেন যে যার মতো আলাদা, এক ঘরে
নয়, অন্য
ঘরে। স্বাভাবিক দম্পতিদের যে সম্পর্ক থাকে তা ছিল প্রায় অনুপস্থিত।
সামিউলের বাবা তার স্ত্রীর পরকীয়া, অনৈতিক সম্পর্ক এসব
জেনেও তা মেনে নিতেন, অনুমোদন করতেন। কিন্তু
কেন করতেন? কী
সমস্যা? তবে
কী সামিউলের বাবারই কোনও সমস্যা ছিল? তিনি
কী উত্তেজনাহীন, উত্থানরহিত, নিস্ক্রিয় ছিলেন?-এসব প্রশ্ন তো কেউ
করেনি। কোনো পত্রিকাও লেখেনি। মায়ের পরকীয়া যদি লেখা
যায় তবে বাবার উত্থানরহিততা লেখা যাবে না কেন? সামিউলের
মা থানায় এবং আদালতে একাধিকবার তার স্বামীর যৌন অক্ষমতার কথা, অপারগতার
কথা, উত্থানরহিততার
কথা বলেছিলেন। যা কোনও মিডিয়ায় আসেনি। আয়েশা হুমায়রাকে তার স্বামী
ডিভোর্সও দিতে চাননি। বরং আয়েশা হুমায়রা ডিভোর্স চাইলে তাকে বুঝিয়ে বাড়িতে
রেখেছিলেন। সামিউলের বাবা আসলে চাননি তার ডিভোর্স হোক, তার
অক্ষমতা, উত্থানরহিততার
কথা লোকে না জানুক। সে তার যৌন অক্ষমতাকে সুন্দরী স্ত্রী দিয়ে
আড়াল করতে চেয়েছিলেন।
হুমায়রা বিকৃত
দাম্পত্যের শিকার ছিলেন। যে দাম্পত্যে স্বামী ও স্ত্রীতে সুস্থ, স্বাভাবিক, সুন্দর
সম্পর্ক, আকর্ষণ
নেই তাকে আমি বিকৃত দাম্পত্যই বলব। এই দাম্পত্যের
পীড়ন এক সময় বিকৃতি ঘটাবে, দুর্ঘটনা ঘটবে
স্বাভাবিক। আমরা মুখে প্রগতিশীলতার কথা বলি, উদারতার
কথা বলি, ব্যক্তি
স্বাধীনতার কথা বলি। কিন্তু আধুনিকতার ‘আ’ কিংবা
প্রগতিশীলতা ‘প্র’টির লেশমাত্রও ধারণ করি না।
আর উদারতা, সে
তো নেই-ই। এসব ধার করা শব্দ আমরা বলতে ভালোবাসি। কিন্তু ধারণ
করার ন্যূনতম যোগ্যতা ও ক্ষমতা রাখি না।
আরেক চাঞ্চল্যকর
হত্যাকাণ্ড জুরাইন ট্র্যাজেডি। জুরাইনে গৃহবধূ
ফারজানা কবির রিতা তার দুই সন্তান পায়েল ও পাবনকে
নিয়ে আত্মহত্যা করলে এই ঘটনা সাড়া ফেলে সারাদেশে। ঘটনার নতুন করে কোনও
বর্ণনার প্রয়োজন নেই। কেননা মূল ঘটনার সঙ্গে ডালপালাসহ অনেক গল্পই মিডিয়া
শুনিয়েছিল। সেখানেও একের সঙ্গে অন্যের প্রেমহীনতা, ভালবাসাহীনতা, ফাঁকা
দাম্পত্য। সেখানেও মেনে নেওয়া, মানিয়ে নেওয়ার
দুর্বিসহ জীবন। সেখানেও ভাল নেই অথচ ‘ভাল
আছি, ভাল
আছি’র দুঃসহ জীবন।
কিছুদিন আগে ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক, একসময়ের
তুখোড় সাংবাদিক আসিফ নজরুলের বিয়ে ও ডিভোর্স নিয়ে হৈ
হৈ রব ওঠে। আসিফ-প্রাচী ডিভোর্স নিয়েছেন। আসিফ-শীলা বিয়ে করেছেন। আসিফ নজরুলের
প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়, সে অনেক বছর আগের কথা। দুর্বৃত্তদের
হাতে নিহত পুলিশ সার্জেন্ট আহাদ, তার স্ত্রী রোকেয়া
প্রাচীর সঙ্গে তার বন্ধুত্ব হয়। সম্পর্ক, সখ্য
গড়ে ওঠে। অতঃপর বিয়ে করেন তারা। বেশ কয়েক বছর দাম্পত্য, বৈবাহিক
জীবনের পর তারা একত্রবাসের সিদ্ধান্ত বাদ দেন। ইতি
টানতে চান দাম্পত্য সম্পর্কের। বৈবাহিক জীবনের সম্পর্কটিও ছিন্ন করেন। শীলা
আহমেদেরও স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়।
আমরা মুখে
প্রগতিশীলতার কথা বলি, উদারতার কথা
বলি, ব্যক্তি
স্বাধীনতার কথা বলি। কিন্তু আধুনিকতার ‘আ’ কিংবা প্রগতিশীলতা ‘প্র’টির লেশমাত্রও ধারণ
করি না। আর উদারতা, সে তো নেই-ই। এসব ধার
করা শব্দ আমরা বলতে ভালোবাসি। কিন্তু ধারণ করার ন্যূনতম যোগ্যতা ও ক্ষমতা
রাখি না। আমরা কিছু ভুল ধারণার মধ্যে বসবাস করি। সভ্যতা-অসভ্যতার সীমারেখা
আমরা জানি না, জানলেও
তা মানি না। অনধিকার চর্চা আমাদের অশ্লীল আনন্দ
দেয়। অন্যের দাম্পত্যে, বৈবাহিক জীবনে
অনাকাঙ্ক্ষিত অনুপ্রবেশ আমাদের পুলকিত করে। এই আনন্দ
বিকৃত আনন্দ। অন্যের অন্তর্বাসের মাপ জানতে চাওয়া যেমন
অশ্লীল, অন্যের
বেডরুমে ঢুকে যাওয়াটা যেমন অসভ্য রকমের অন্যায়, তেমনি অন্যের
দাম্পত্য জীবন নিয়ে মন্তব্য, কৌতূহলও যারপরনাই
কুরুচিপূর্ণ। যার যার জীবন তার তার। সেই জীবনের
সিদ্ধান্তও তারই। কে, কেন কী কারণে, কোন পরিস্থিতিতে
তার জীবনের কোনও সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, নিয়েছেন, সেটা
শুধু তিনিই জানেন। বাইরে থেকে দেখা যায়, ভেতরটা
বোঝা যায় না। মানুষের জীবন বড় বিচিত্র ও অসহায়। ফলে অন্যের
জীবন নিয়ে মন্তব্য না করাই ভালো। কারও জীবন, জীবনচর্চা
যদি আমার জীবনকে বাধাগ্রস্ত, ক্ষতিগ্রস্ত করে, যদি
অপরাধ সংঘটিত হয়, যা অন্যের ক্ষতিসাধন
করে কেবল তখনই তা নিয়ে আমি আপনি মন্তব্য করতে পারি, তার
আগে নয়।
আমাদের সমাজে একধরনের
ডিভোর্স ভীতি ও আপত্তি রয়েছে। এখানে অনেক সময়ই মানুষের মধ্যে মুক্ত
স্বাধীন সত্তা ও আত্মসম্মানবোধ কাজ করে না।
সামাজিক, আর্থিক
ফ্যাক্টর এ জন্য দায়ী। ‘মেনে নেওয়া, মানিয়ে
নেওয়া’-দাম্পত্য টিকিয়ে রাখার
সবচেয়ে বড় মন্ত্র বলে শেখানো হয়। আরেকটি বিষয়, কারও
জীবনে একবার বিয়ে হওয়া মানে তিনি সারাজীবনের জন্য বিবাহিত
নন। দাম্পত্য থাকলে, বৈবাহিক জীবনের মধ্যে থাকলে, তবেই
তাকে বিবাহিত বলা যায়।
মনে রাখতে হবে, বিয়ে
কেবল প্রেম ভালোবাসার সম্পর্ক নয়, আইনি
সম্পর্কও বটে। আইনি জটিলতা মিটে গেলে কেউই কারও স্বামী
বা স্ত্রী নন। বিয়ে অনেকটা অফিশিয়াল সম্পর্ক, সে
কারণেই বিয়েতে কাগজপত্র প্রয়োজন হয়। সই, সাক্ষী
লাগে। ভেঙে যেতে পারে এমন আশঙ্কা আছে বলেই প্রয়োজন
হয় কাগজপত্রের। ফলে বিয়ের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া অন্যায় নয়, অস্বাভাবিক
নয়। বরং বিয়ের পর সম্পর্কের নানান টানাপোড়েন দেখা গেলে তা ভেঙে যাওয়া
ভালো ও স্বাভাবিক।
যে সমাজে বাস করি আমরা
তা অসম্ভব রকমের ভান ও ভণিতায় ঠাসা। ভালো আছি, ভালোবাসি
এমন কৃত্রিম আচরণে ভরা। এই কৃত্রিমতা আর যাই দিক
সুখ দেয় না, দেয়
না স্বস্তি, শান্তি।
ঘরে ঘরে প্রেমহীন, ভালোবাসাহীন, আবেগহীন, শ্রদ্ধাহীন
সম্পর্ক। লোক দেখানো ‘ভালো আছি’ ধরনের
দাম্পত্যে। ভেতরে কদর্যতা, নৃশংসতা।
আমাদের সমাজে একধরনের
ডিভোর্স ভীতি ও আপত্তি রয়েছে। এখানে অনেক সময়ই মানুষের মধ্যে মুক্ত
স্বাধীন সত্তা ও আত্মসম্মানবোধ কাজ করে না।
সামাজিক, আর্থিক
ফ্যাক্টর এ জন্য দায়ী। ‘মেনে নেওয়া, মানিয়ে
নেওয়া’-দাম্পত্য টিকিয়ে রাখার
সবচেয়ে বড় মন্ত্র বলে শেখানো হয়। শুধু যৌনতা নয়, আধুনিক, প্রগতিশীল
মানুষের কাছে চিন্তা, বিশ্বাস, আদর্শের
ঐক্য, পারস্পরিক
সম্মানবোধ দাম্পত্যের সবচেয়ে বড় শর্ত। উদার, উন্নত, আধুনিক
রাষ্ট্র ও দেশগুলোতে ডিভোর্সের হার অনেক বেশি। পূবের দিকে এই হার
অনেক কম। ভারতে ডিভোর্সের হার ১.১। দুঃখজনকভাবে, আমাদের
দেশে এই হার আশঙ্কাজনক কম। মনে রাখতে হবে যেকোনওভাবে, যেকোনও
সম্পর্ক থাকার চেয়ে, রাখার চেয়ে, না
থাকা, না
রাখাই ভালো।
সমাজ যে কোনও মূল্যে
একজন নারী ও পুরুষের একত্রবাসকে ভালো থাকা মনে করে।
ফলে সমাজের দেওয়া এই ধারণার বশবর্তী হয়ে ‘একত্রবাস’-কে অনিবার্য মনে করেন
কেবল নারী নয়, অনেক
পুরুষও। শুধু তাই নয়, মূল্যবান জীবনটিকে সম্মানহীন, শ্রদ্ধাহীন, ভালবাসাহীন, আশঙ্কাপূর্ণ, ঝুঁকিপূর্ণ
করে তোলেন। কিন্তু একবার কী কেউ ভেবেছে, যদি ডিভোর্স হয় তাহলে কী
এই সব হত্যাকাণ্ড ঘটে নাকি অশ্রদ্ধা, ভালোবাসাহীনতার ধারা-
এতোদূর পর্যন্ত যায়!
No comments:
Post a Comment